আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাগর-রুনি আর পিংক সিটি

দূর! পত্রিকা খুললেই প্রথম পাতায় মূল খবর সাগর আর রুনি হত্যা৷ এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে হৈ চৈ আর খবরের ছড়াছড়ি দেখে মনে হওয়াটা স্বাভাবিক যে সাগর-রুনির জন্য দুঃখে-দুশ্চিন্তায়-সহানুভূতিতে মানুষের ঘুম নষ্ট হয়ে গেছে৷ পত্রিকার পাতায় এটাই যেমন লিড নিউজ, তেমনি ব্লগে এই নিয়ে হাজারো পোষ্ট৷ অথচ এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আসলে এতো হৈ চৈ কেনো? কেনো প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর হৈ চৈ হয় তারপর সব থিতিয়ে যায়? সত্যিকার দুঃখ, সহানুভূতি যদি থাকে তাহলে এতো সহজে তো সেটা থিতিয়ে যাওয়ার কথা না৷ তবে? এইসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে রোমহর্ষক কাহিনীর সন্ধান পাওয়া যায়৷ সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে সেই রোমহর্ষতা যেনো একটু বেশি৷ হত্যার উদ্দেশ্য উদ্ধার করতে গিয়ে এমনিতে শার্লক হোমস হয়ে গিয়েছে সবাই৷ তারপর আবার এটার সাথে একটু সুরসুরি জাতিয় গল্পের সম্ভাবনাও থাকতে পারে৷ রোমহর্ষক কাহিনী এমনিতেই মানুষ পছন্দ করে৷ যে কারণে বইমেলা বাজে ভৌতিক গল্পে সয়লাব৷ এর সাথে যদি সুরসুরি যুক্ত হয়, তাহলে তো যাকে বলে সোনায় সোহাগা৷ আজকে কালের কণ্ঠ খুলে শেষ পাতায় দেখি- “পিংক সিটিতে অস্ত্রের মুখে ২৫০ পরিবার! কেটে দেওয়া হয়েছে পানি ও বিদ্যুৎ লাইন৷” কালের কণ্ঠ থেকে খবরের কিছু অংশ কপি করে দেই- “রাজধানীর খিলক্ষেত থানার ডুমনিতে অবস্থিত পিংক সিটি জ্যানোভেলি প্রকল্পের আড়াই শ পরিবার অস্ত্রের মুখে অবরুদ্ধ। সশস্ত্র আনসার, নিরাপত্তার নামে গড়ে তোলা নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলার মুখে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। মুহুর্মুহু আক্রমণে পিংক সিটির বাসিন্দারা ভুগছেন চরম নিরাপত্তাহীনতায়। কেটে দেওয়া হয়েছে প্রকল্পের বিদ্যুৎ ও পানির লাইন। সব মিলিয়ে পুরো এলাকা যেন পরিণত হয়েছে একটি যুদ্ধক্ষেত্রে।

ঘটনার শুরু সোমবার সকালে। ওই দিন সকাল ৬টা ১০ মিনিটের দিকে এলোপাতাড়ি গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে পিংক সিটি। এলাকাবাসী ভয়ে চিৎকার করে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। সন্ত্রাসীরা বিরামহীন গুলি ছুড়তে থাকায় অনেকে ফজরের নামাজ পর্যন্ত পড়তে পারেননি। সবাই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন।

” পত্রিকা পড়ে পরিস্থিতি যতো ভয়াবহ মনে হচ্ছে অবস্থা যদি সত্যিই তেমন হয় তবে অবাক হতেই হয়৷ কি আশ্চর্য, এমন একটা খবর, যেখানে ২৫০ পরিবারকে অস্ত্রের মুখে অবরুদ্ধ করে বিদ্যুৎ পানির লাইন কেটে দেয়া হয়েছে, সেটার তেমন কোনো গুরুত্ব নেই? শেষ পাতায় ছোট করে সে খবরটা দিতে হবে? সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি, সে খবরটা প্রথম পাতার লিড নিউজ (তাতে আপত্তির কিছু নেই), আর এই খবর হেলাফেলা করে শেষের পাতায়? তাও সোমবার যেটা শুরু হয়েছে পত্রিকায় সেটা বৃহষ্পতিবার৷ তাহলে এ খবর গুরুত্ব পাবে কখন? যখন পিংক সিটিতে দু'চারজন মরবে? ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর প্রতিবাদে ফেটে পরে বিচার চাইবে? ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য কিছু করবে না? আশ্চর্য, বড়ই আশ্চর্য৷ শুধুমাত্র রোমহর্ষক মৃত্যুর পরেই খবরের মূল্য আছে! মৃত্যু যাতে না ঘটে তার জন্য কোনো চেষ্টা নেই, কোনো প্রতিরোধ নেই৷ প্রথম আলোতে খবরটা খুজেই পেলাম না৷ কি আশ্চর্য! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।