আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নবী পরিবারের(আঃ) শানে পবিত্র কোরানের আয়াত

আসুন আমরা ২টি ভারী বস্তু আল্লাহর কুরান ও রাসুলের(সাঃ) পরিবারকে(আঃ) অনুসরন করি। সুরা মায়েদা,আয়াত# ৩ “আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য পরিপুর্ন করিয়া দিলাম। তোমাদের উপর আমার অনুগ্রহ সম্পন্ন করিলাম। আর তোমাদের জন্য ইসলামকে পরিপুর্ন দ্বীন হিসাবে মনোনীত করিলাম। “ গাদীরে খুমে যখন রাসুল(সাঃ) হযরত আলীকে খেলাফত ও ইমামতের উপর সরাসরি নিজের স্থলাভিষিক্ত নিযুক্ত করিলেন তখন এই আয়াত পাক নাজিল হইলো।

আল্লাহর রাসুল(সাঃ) ফরমাইলেনঃখোদা পাক অতি মহান এবং প্রশংসার যোগ্য যিনি দ্বীনকে পরিপুর্ন করিলেন,নিজের অবদানকে সপুর্ন করিলেন। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি হইলো আমার রেসালাতের উপর ও আমার পর আলীর বেলায়েতের উপর। (তাফসীরে ইবনে কাসীর,২য় খন্ড,পৃঃ১৪; দুররুল মানসুর,২য় খন্ড,পৃঃ২৫৯;আল-বিদায়া ওয়ান নেহায়া,৫ম খন্ড,পৃঃ২১০;রুহুল মায়ানি,২য় খন্ড,পৃঃ২৪৯;আল-গাদীর,১ম খন্ড,পৃঃ২৩০;আল-মুরাজেয়াত,পৃঃ৫৭;শাওয়াহেদুত তানজিল,১ম খন্ড,পৃঃ১৫৬)। সুরা নিসা,আয়াত# ৫৪ “তাহারা কি মানুষের প্রতি বিদ্বেষ পোষন করে সেটারই উপর যাহা আল্লাহ পাক তাহাদেরকে নিজ অনুগ্রহ থেকে দান করিয়াছেন। সুতরাং আমি তো ইব্রাহিমের বংশধরগনকে কিতাব ও হেকমাত দান করিয়াছি।

“ আয়াশী বিভিন্ন রেওয়ায়েতে ইমামগন হইতে বর্ননা করিয়াছেন যে, তাঁহারা বলিয়াছেন,যাহাদের সংগে বিদ্বেষ পোষন করা হইয়াছে এই আয়াতে তাহারা হইলেন আমরাই। আল্লাহতায়ালা নিজের মেহেরবানীতে আমাদের ইমামতি দান করিয়াছেন। হযরত ইমাম বাকের(আ হইতে বর্নিত হইয়াছে যে,ইহা দ্বারা আল্লাহতায়ালার উদ্দেশ্য এই যে, তিনি ইবারহিমের বংশধর হইতে নবীগন,রাসুলগন এবং ইমামগন(১২ ইমাম) সৃষ্টি করিয়াছেন। তাহাদের ব্যাপারে সকলের নিকট হইতে শপথ গ্রহন করাইয়াছে। তিনি বলিয়াছেন যে,হযরত মুহাম্মদের বংশধরকে যেন কেহ অস্বীকার না করে।

আর বিশাল সাম্রাজ্য দ্বারা ইমামত বুঝানো হইয়াছে। ইমামের আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্য। আর ইমামের আদেশ অমান্য আল্লহর আদেশ অমান্যের সমতুল্য। (সুত্রঃ তাফসীরে কুমী,১ম খন্ড,পৃঃ১০;ইয়ানাবিউল মাওয়াদ্দাহ, পৃঃ১২১;কেফাইয়াতুল মোওয়াহহেদীন, ২য় খন্ড,পৃঃ২০৪;মাজমাউল বায়ান,৩য় খন্ড,পৃঃ৬১;মুরাজেয়াত,পৃঃ৫৯; শাওয়াহেদুত তানজিল,১ম খন্ড,পৃঃ১৪৩;মানাকেবে ইবনে মাগাজেলী,পৃঃ২৬৭;সাওয়েকে মুহরেকা,পৃঃ১৫০)। সুরা নিসা,আয়াত# ৮৩ “যদি তাহারা উহা রাসুল কিংবা তাহাদের মধ্যে যাহারা ক্ষমতার অধিকারী তাহাদের গোচরে আনিত,তবে তাহাদের মধ্যে যাহারা তথ্য অনুসন্দ্বান করে তাহারা উহার যথার্থতা নির্নয় করিতে পারিত।

“ হযরত ইমাম বাকের(আঃ) ফরমাইয়াছেন যে,যাহারা বাস্তবতা জানেন আর যাহারা ক্ষমতাসম্পন্ন তাহারা হইলেন হযরত মুহাম্মাদের(সাঃ) বংশধর। আয়াশী হযরত ইমাম রেজা(আঃ) হইতে বর্ননা করিয়াছেন যে, ইহা দ্বারা হযরত নবী করিমের(সাঃ) বংশধরকে বুঝানো হইয়াছে। কারন তাহারা হইলেন ঐ সব ব্যক্তি যাঁহারা কোরানের বাস্তব তথ্য ব্যাখ্যা করিয়া থাকেন। তাঁহারাই হালাল ও হারামের উপর অবগত হইয়াছেন। আর তাহারাই সৃষ্টির উপর আল্লাহতায়ালার হুজ্জাত বা অকাট্য প্রমানস্বরুপ।

(সুত্রঃ তাফসীরে কুমী,১ম খন্ড,পৃঃ১৪৫;রাওয়ানে যাভেদ,২য় খন্ড,পৃঃ৯২;বয়ানুস সায়াদাহ,২য় খন্ড,পৃঃ৪০)। সুরা মায়েদা,আয়াত# ৫৫ “তোমাদের বন্দ্বু তো আল্লাহ,তাঁহার রাসুল ও মু’মিনগন-যাহারা সালাত কায়েম করে ও রুকুর অবস্থায় যাকাত দেয়”। হযরত আবু যর গিফারী(রাঃ) এইভাবে বর্ননা করিয়াছেনঃএকদিন আমি রাসুলের(সাঃ) সঙ্গে মসজিদে যোহরের সালাত আদায় করিলাম। একজন ভিক্ষুক মসজিদে আসিয়া ভিক্ষা চাহিল। কেহ তাহাকে কিছুই দিল না।

ঐ ভিক্ষুক তাহার ২ হাত আকাশের দিকে উত্তোলন করিয়া বলিলঃহে ল্লাহ!আমি তোমার পয়গাম্বরের মসজিদে আসিয়া ভিক্ষা চাহিলাম,কিন্তু কেহ আমাকে কিছুই দিল না। এই সময় আলী(আঃ)সালাতে রুকুর অবস্থায় ছিলেন। তিনি নিজের আঙ্গুলের ইশারায় ভিক্ষুককে ইঙ্গিত করিলেন। হযরত আলী(আঃ)এর ডান হাতের আঙ্গুলে আংটি ছিল। ভিক্ষুকটি অগ্রসর হইয়া হযরত আলীর(আঃ) আঙ্গুলের আংটি খুলিয়া নিল।

আল্লাহর রাসুল(সাঃ) এই ঘটনা দেখিয়া নিজের মাথা আকাশের দিকে ঘুরাইয়া বলিলেনঃহে আল্লাহ! হযরত মুসা(আঃ) আপনার প্রার্থনা করিয়াছিলেন যে,হে আল্লাহ আমার বক্ষ প্রসারিত করিয়া দাও আর আর আমার জাক আমার জন্য সহজ করিয়া দাও এবং আমার জিহবার জড়তা দূর করিয়া দাও যাহাতে লোকেরা আমার কথা বুঝিতে পারে। আর আমার বংশ হতে আমার ভাই হযরত হারুনকে(আঃ) সাহায্যকারী করিয়া দাও,যেন সে আমার শক্তিকে দৃঢ় করে। আমার কাজে আমার সঙ্গী করিয়া দাও। আল্লাহতায়ালা হযরত মুসাকে(আঃ) বলিলেন,আমি তোমার ভাই দ্বারা তোমার শক্তি তোমার শক্তিকে দৃঢ় করিয়া দিলাম। তোমাকে রাজত্ব দান করিলাম।

হে আল্লাহতায়ালা!আমি মুহাম্মাদ তোমার প্রিয় রাসুল। হে আল্লাহ আমার বক্ষকে প্রসারিত করুন,আমার কাজ সহজ করুন এবং আমার বংশধরকে আমার সাহায্যকারী নিযুক্ত করুন। আমার পৃষ্টকে আলী দ্বারা শক্তিশালী করুন। হযরত আবুযর গিফারী বলিলেন যে,আল্লাহর রাসুলের(সাঃ) কথা তখনো শেষ হয় নাই ,এমতাবস্থায় হযরত জিব্রাঈল(আঃ) এই আয়াতে পাক নিয়ে হুজুর (সাঃ)এর নিকট উপস্থিত হইলেন। (সুত্রঃ তাফসীরে ইবনে কাসীর,২য় খন্ড,পৃঃ৭১;তাফসীরে ত্বাবারী,৬ষ্ট খন্ড,পৃঃ১৬৫;তাফসীরে রাজী,৩য় খন্ড,পৃঃ৪৩১;তাফসীরে খাজিন,১ম খন্ড,পৃঃ৪৯৬;তাফসীরেআবুল বারাকাত,১ম খন্ড,পৃঃ ৪৯৬;তাফসীরে নিশাপুরী,৩য় খন্ড,পৃঃ৪৬১; আল-বিদায়া ওয়ান নেহায়া,৭ম খন্ড,পৃঃ৩৫৭;রুহুল মায়ানি,২য় খন্ড,পৃঃ৩২৯;আল-গাদীর,৩য় খন্ড,পৃঃ১৫৬ ও ১৬২;আল-মুরাজেয়াত,পৃঃ৫৭;শাওয়াহেদুত তানজিল,১ম খন্ড,পৃঃ১৬১।

সুরা মায়েদা,আয়াত# ৬৭ “হে রাসুল!পৌছাইয়া দিন যাহা কিছু আপনার প্রতি অবতীর্ন হইয়াছে আপনার প্রতি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ হইতে। যদি এমন না হয় তবে আপনি তাহার কোন সংবাদই পৌছাইলেন না। আর আল্লাহতায়ালা আপনাকে রক্ষা করিবেন মানুষের অনিষ্ট হইতে”। সমস্ত মোফাসসের এবং ঐতিহাসিকগন একমত যে,এই আয়াত গাদীরে খুম নামক স্থানে হযরত আলী(আঃ)এর শানে নাজিল হইয়াছে। রাসুল(সাঃ) উটের পালান দ্বারা একটি মিম্বর বানানোর জন্য আদেশ দিলেন এবং সেই মিম্বরের উপর দাড়াইয়া রাসুল(সাঃ) ফরমাইলেন যে,আমি যাহার নেতা ,এই আলীও তাহার নেতা।

(সুত্রঃআল-গাদীর,১ম খন্ড,পৃঃ২১৪ ও ২২৯;জাযবায়ে বেলায়েত,পৃঃ১৩৮;মুরাজেয়াত,পৃঃ৫৭;আসবাবুল নযুল,পৃঃ১৩৫;শাওয়াহেদুত তাঞ্জিল,১ম খন্ড,পৃঃ১৮৭)। সুরা আ’রাফ,আয়াত# ১৭২ “হে নবী স্মরন করুন! যখন আপনার প্রতিপালক আদম সন্তানদের পৃষ্টদেশ হইতে তাহাদের বংশধরগনকে বাহির করিলেন”। হোযাইফা বিন ইয়ামানী বর্ননা করিয়াছেন যে, আল্লাহর রাসুল(সাঃ) ফরমাইলেনঃযদি মানুষ জানিত যে,আলী কখন হইতে আমিরুল মু’মিনিন,তবে কখনো তাঁহার মরযাদাকে অস্বীকার করিত না। হযরত আলী তখন থেকেই আমিরুল মু’মিনিন যখন হযরত আদমের শরীর ও আত্না মাটি ও পানির মধ্যে ছিল। আল্লাহপাক ফরমাইলেনঃযখন আদমের পৃষ্টদেশ হতে সমস্ত আত্নাকে বাহির করা হইলো,তাহাদের উপর সাক্ষী করা হইলো এবং জিজ্ঞাসা করা হইলো যে,আমি কি তাহাদের প্রভু নই?ফেরেশ্তারা বলিলঃঅবশ্যই,আমরা সাক্ষী থাকিলাম।

তারপর আল্লাহতায়ালা ফরমাইলেনঃআমি তোমাদের প্রভু,মুহাম্মাদ তোমাদের রাসুল এবং আলী তোমাদের আমীর। (সুত্রঃ জাযবায়ে বেলায়েত,পৃঃ১৫৮;রাওয়ান জাভেদ,২য় খন্ড,পৃঃ৪৯১;মুরাজেয়াত,পৃঃ৫৯;বয়ানুস সায়াদাহ,২য় খন্ড,পৃঃ২১৬;মানাকেবে ইবনে মাগাজেলী,পৃঃ২৭১)। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।