আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইবার যুদ্ধ এবং একটি আশঙ্কা!

বাংলাদেশের বিজ্ঞান-তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ে আমার এক বন্ধু প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছে। ছোটবেলার বন্ধু। সে নিজেও একজন পাশ করা প্রোগ্রামার। সংগত কারনেই নাম লিখলাম না এখানে। মন্ত্রনালয়ের নামটা সম্ভবত ভুল করেছি।

তবে এ ধরণের একটি মন্ত্রনালয় বাংলাদেশে আছে, যেটির হর্তাকর্তা একজন কবি। মন্ত্রীর নাম ইয়াফেস ওসমান। কিছুটা কৌতুহল ভরেই সোমবার সকালবেলা বন্ধুকে ফোনালাম। সেও সাংবাদিকতা সংক্রান্ত এবং কাজের-অকাজের নানা তথ্যের জন্য মাঝে মাঝে আমারে ফোনায়। যেমন কাল তার ফোনে ঘুম ভাংছে।

জিগায়: রুনি-সাগরের কেস কি? আমি আমার সাধ্যমত তার কৌতুহল নিভাইছি। যাইহোক। তারে জিগাইলাম: সাইবার যুদ্ধ নিয়ে কিছু যানিস? শুনে সে আকাশ থেকে পড়লো। কয়: এইটা আবার কি? আমিতো কিছু জানিনা। জিগাইলাম: কিরে হালা, পেপার পত্রিকা কিছু পরস না! কয়: খেয়াল করবার পারি নাই।

হইছেডা কি? এরপর এ ব্যাপারে আমি আমার যাবতীয় জ্ঞান জাহির করলাম তার কাছে। জিগাইলাম: এইডা নিয়া তগো কিছু করবার আছে কিনা? সে আমারে হাতিঘোড়া দেখাইলো। কইলো এইডা আমাগো জুরিসডিকশন না। মিনিস্ট্রি ভাগ হইয়া গেছে। আইসিটি মন্ত্রনালয় হইছে।

আমাগো সরকারি সাইট তো হ্যাক হয় নাই। ইত্যাদি ইত্যাদি। বন্ধুকে সাইবার ওয়ার সংক্রান্ত কিছু লিংক এবং খবর লওয়ার উপদেশ দিয়া আপাতত রেহাই দিলাম। কাল (রবিবার) থেকেই সাইবার ওয়ার সম্পর্কে আপডেট জানতে চেষ্টা করছি সম্ভাব্য নানা সূত্র থেকে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকার্স এবং ইন্ডিশেলের ফেবু পেজেও লাইক মেরেছি।

ক্ষণে ক্ষণে চোখ বুলাচ্ছি সামুতে। ভালো লাগছে। আবার খারাপও লেগেছে। ভালো লাগছে এই ভেবে, অন্তত একটা জায়গা থেকে আমাদের তরুনেরা তাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছে। খারাপ লাগছে: নিরাপরাধ ব্যক্তিগত সাইট, ফেবু, ই-মেইল ইত্যাদি হ্যাক হচ্ছে।

হয়তো ভব্যতার সীমা ছাড়াচ্ছে কিছুটা। অবশ্য যুদ্ধাবস্থায় আর্মি মারতে গিয়া দু-একটা বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া দুনিয়ায় নতুন না। যাই হোক এগুলো সবই আমার নিজের ভেতরের বিভিন্ন সত্ত্বার পারস্পরিক দ্বন্দ্ব মাত্র। এটা নিয়া পাঠকদের উত্তেজিত না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। শংকা হচ্ছে অন্য একটা বিষয়ে।

দেখেশুনে মনে প্রশ্ন জাগছে, এই সাইবার যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত একটা বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে যাচ্ছে কিনা! হলেও অবশ্য অসুবিধা নাই। যুদ্ধ সার্বজনিন হলে, সেটা বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই যুদ্ধের যে মেরুকরণ দেখতে পাচ্ছি, তাতে কি কোনো প‌্যাটার্ণ লক্ষ্য করছেন আপনারা? সামুর একটা লেখা থেকে একটু উদ্ধৃতি দিচ্ছি: '১২ ফেব্রুয়ারি রাতে সাইবার ওয়ার রুপ নেয় বিশ্ব সাইবার যুদ্ধেঃ বাংলাদেশী হ্যাকাররা তাদের হামলার পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে অপারেশন ইন্ডিয়াঃ ফেজ-২ নামে নতুন মিশণ শুরু করে। নূতন এই মিশনে বাংলাদেশী হ্যাকারদের সকল কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করে ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার ও অন্যান্যমস। এ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সোদি-আরব,মিসর, লিবিয়ার বেশ কিছু হ্যাকার গ্রুপ যোগ দিয়ে বাংলাদেশের সাথে সমান তালে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ভারতের সাইবার জগতে।

পাকিস্তানও তাদের সাড়াশি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ভারতের হ্যাকারদের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে বাংলাদেশের সাইবার জগতে আঘাত হেনেছে ইসরাইল ও রাশিয়ার হ্যাকার গ্রুপগুলো। সাইবার ওয়ারের শুরু থেকে নজর ছিল, চীনা হ্যাকার গ্রুপগুলোর। রাশিয়া উপস্থিতি জানতে পেরে, রাতে পৃথকভাবে তারা হামলা করে ইন্ডিয়ার সাইবার জগতে। ' সূত্র: একটি আলোচিত সাইবার যুদ্ধ - অপারেশন ইন্ডিয়াঃ ফেজ-২ আমি যে প‌্যাটার্নটি পাচ্ছি, তাতে আমার কাছে মনে হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত এটা একটা ধর্মভিত্তিক যুদ্ধে পরিণত হতে যাচ্ছে।

যদিও ভিয়েতনামের জড়িত হওয়া কিংবা চীন-রুশ মেরুকরণের তথ্যটি নতুন ইংগিত দেয়। তবে শেষপর্যন্ত যদি এই হ্যাকিংযুদ্ধটা ধর্মভিত্তিক হয়ে পড়ে, তবে আমার মতো ধর্মভীরু কিন্তু উগ্রপন্থী নয়, এমন যারা এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় বাহবা দিয়ে আসছিলো, তাদের জন্য নিতান্ত মর্মপীড়ার কারন হবে এটা। আরেকটা বিষয়। আমি বিশ্বাস করি: এককালের বন্ধু ভারত হয়তোবা এখন কোনো কারণে আমাদের শত্রুপক্ষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে থাকতে পারে। হয়তো অনেক ক্ষেত্রে তারা আমাদের ক্ষতির কারন হয়ে দাড়াতে পারে।

তাই বলে পাকিস্তান কখনোই আমাদের বন্ধু নয়। শত্রুর শত্রু, আমার বন্ধু। অন্তত: পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এই যুক্তি খাটবে না। খাটতে পারে না। অসম্ভব।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.