আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লুব্রিকেশন : গাড়ির ইঞ্জিনের সুরক্ষা

Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience গাড়ির ইঞ্জিন গাড়ির জীবন। পুরো গাড়িকে গতিপ্রাপ্ত করে ইঞ্জিন এবং এ ইঞ্জিনের সাহায্যেই চলে গাড়ি। এজন্য গাড়ির যত্নের পাশাপাশি ইঞ্জিনের প্রতিটি অংশের স্থায়িত্ব বাড়ানোর প্রচেষ্টা করতে হবে। ইঞ্জিন চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর অংশগুলো ঘুরতে শুরু করে। ঘুরলে যে কোনো যন্ত্রাংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

ইঞ্জিনের অংশগুলো ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে পিচ্ছিল তেলে ভিজিয়ে রাখতে হয়। এই পিচ্ছিল তেলে ভিজিয়ে রাখার পদ্ধতিকেই বলা হয় ইঞ্জিনের লুব্রিকেটিং সিস্টেম। নিয়মিত ইঞ্জিনের অংশগুলোতে লুব্রিকেটিং করলে ইঞ্জিন ভালো থাকে এবং কর্মক্ষমতা বাড়ে। লুব্রিকেটিং ব্যতীত ইঞ্জিনের অংশগুলোর কর্মক্ষমতা বাড়ে না এবং ইঞ্জিন দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। তাই ইঞ্জিনের দীর্ঘস্থায়িত্ব রক্ষায় লুব্রিকেটিংয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

লুব্রিকেটিং দুভাবে করা যায়- ১. অয়েল পাম্পের সাহায্যে এবং ২. ফ্লাস সিস্টেমের মাধ্যমে ১. অয়েল পাম্পের মাধ্যমে ইঞ্জিন গাড়ির শক্তি উৎপাদন করে। ইঞ্জিনের নিচে অয়েল চেম্বারে থাকে মবিল। ইঞ্জিনের ক্যাম শ্যাফটের সঙ্গে অয়েল পাম্পের শ্যাফট পিনিয়ন যুক্ত থাকে। এর ফলে ইঞ্জিন চালু হলেই সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম শ্যাফট চালু হয়ে যায়। পাশাপাশি অয়েল পাম্প চালু হয়ে যায়।

অয়েল পাম্প চালু হওয়ার পর মবিল অয়েল চেম্বার থেকে টেনে এনে পাইপের মাধ্যমে ইঞ্জিনের বাল্ব, পুশ রড, রকার শ্যাফট, মেন বিয়ারিং, ক্যাম শ্যাফট বিয়ারিং, বিগ অ্যান্ড বিয়ারিং এবং সিলিন্ডারের গায়ে পৌঁছে দেয়। ইঞ্জিন চলা ও ঘর্ষণের কারণে ইঞ্জিনের প্রতিটি অংশে যে তাপের সৃষ্টি হয়, এই লুব্রিকেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে তাপ প্রশমিত করে ক্ষয়ের হাত থেকে ইঞ্জিনকে রক্ষা করে। ইঞ্জিনের অংশগুলোতে নিয়মিত লুব্রিকেটিং হলে একদিকে ইঞ্জিন যেমন ক্ষয় থেকে রক্ষা পায়, অন্যদিকে ইঞ্জিনের অংশগুলোও অধিক মাত্রায় সচল থাকে। ২. ফ্লাস সিস্টেমের মাধ্যমে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশগুলোর লুব্রিকেটিং হয়ে পাশাপাশি পুরো ইঞ্জিন ঠাণ্ডা থাকে। এই ফ্লাস সিস্টেমের মাধ্যমে পিষ্টনের সাহায্যে মবিলকে ইঞ্জিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশে পৌঁছে দেয়।

ইঞ্জিনে স্থির অবস্থায় থাকে সিলিন্ডার। এই সিলিন্ডারের মধ্য দিয়ে ওঠানামা করে পিষ্টন। ব্লকে স্থির করা থাকে বিয়ারিং। এই বিয়ারিংয়ের ওপর ঘোরে ক্র্যাঙ্কশ্যাফট ও কামশ্যাফট। ঘূর্ণায়মান অংশগুলো যখন স্থির অংশগুলোর সংস্পর্শে আসে তখন পরস্পর ঘর্ষণের ফলে প্রচণ্ড তাপের সৃষ্টি হয়, লুব্রিকেশন সিস্টেম মূলত এই সৃষ্ট তাপ থেকে গাড়ির ইঞ্জিনের পার্টসগুলাকে রক্ষা করে থাকে।

বর্তমানে বাজারে যেসব লুব্রিকেটিং অয়েল পাওয়া যায়, সেগুলো ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশগুলো রক্ষা করার উপযোগী করে তৈরি করা হয়। লুব্রিকেটিং সঠিকভাবে সম্পাদন করার জন্য বিশেষভাবে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। প্রথমেই যে বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে সেটি হচ্ছে লুব্রিকেন্ট তেলের ঘনত্বের ওপর। সঠিক ঘনত্বের তেল ব্যবহার করলে ইঞ্জিনের ক্ষয় হওয়ার বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত থাকা যায়। বাজারে অনেক নামিদামি কোম্পানি আছে, যাদের তেল ব্যবহারে গাড়ির ইঞ্জিন ভালো থাকে।

তেলের ঘনত্ব সঠিক না থাকলে ইঞ্জিনের পার্টস নষ্ট হতে থাকবে। সব সময় লক্ষ্য রাখতে হবে, পাম্পের ভেতরে তেলের স্তর যেন ঠিক থাকে। তেলের স্তর ঠিক থাকলে গাড়ির ইঞ্জিন ভালো থাকবে। গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান গাড়ি বাজারজাত করার সময় একটি গাইডলাইন বই দিয়ে থাকে, উক্ত গাইডলাইন বইয়ে কত সময় অন্তর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ প্রদান করা থাকে। গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ মোতাবেক নির্দিষ্ট সময় পর পর গাড়ির তেল লুব্রিকেন্ট পরিবর্তন করতে হবে।

তবে ইঞ্জিন অয়েল যতই ভালো হোক না কেন, তার কর্মক্ষমতার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে। নির্দিষ্ট সময় পর ইঞ্জিন অয়েলের গুণ কমে যায়। তেলের গুণাগুণ কমে যাওয়ার পরও যদি সে তেল ব্যবহার করা হয়, তাহলে ইঞ্জিনের শক্তি নিশ্চিতভাবেই কমে যাবে, লুব্রিকেটিং ঠিকমতো হবে না। যার ফলে ইঞ্জিনের অংশগুলো দ্রুত ক্ষয় হয়ে যাবে। সাধারণত গাড়ি চালাতে প্রতি তিন হাজার মাইলে একবার তেল পাল্টানো উচিত।

দূরপাল্লার গাড়ি চালালে প্রতি ৫ হাজার মাইল পর একবার তেল বদলালে ঝুঁকি থাকবে না।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.