আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বচন অমৃত!!

বোধি লাভ এর অপেক্ষায় শিশুদের কোমল বাণী!! আর সেটাই হল আমার কাছে বচন অমৃত!! আপুর ছোটকালে অনেক এমন মজার কথা আমি জানি বড়দের কাছ থেকে!! আমার আপু কে পহেলা বৈশাখের সময় আমার মা স্বর্ণের দুল পরায় দেয় আর সতর্ক করে যেন না হারায়.... সে অনুষ্ঠানে কিছু সময় পর আম্মু দেখল ওর কানে দুল নাই। ওকে জিজ্ঞেস করা হলে ওর উত্তর ছিল '' আম্মু কানের দুল যদি হারায় যায় তাই আমি ফেলে দিসি'' আরেকবার চিটাগং এ তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এরশাদ এলে তাঁকে বরণ করতে আমার আপু কে বলা হয় আর এর জন্য একদিন অনুশীলন ও করানো হয় বটে!! তো যথারীতি প্রেসিডেন্ট এরশাদ এলেন, আমার আপু ফুল দিল উনাকে আর দিয়েই উনাকে বলে '' তুমি না ইশশাদ? তোমাকে তো টিভি তে দেখায়। তুমি নাটক কর?? আমার আব্বু তো তোমাকে বকা দেয়! উল্লেখ্য আমার আপুর বয়স ছিল ৩ আর প্রেসিডেন্ট এরশাদ ব্যাপারটিকে খুব হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন আবার আমি হওয়ার পর ও আমর ব্যাপার অতিরিক্ত কনসার্ন ছিল (অবশ্য এখন ও আছে) আমার আম্মুর নানু অর্থাৎ আমার বড় আম্মা আমার যত্নের জন্য এসেছিলেন। উনি বাবুদের কান্না করতে উৎসাহ দিতেন কারন এতে নাকি ক্ষুধা বাড়ে আর ঘুম ভাল হয়। তো একদিন আমি কান্না করছি বিশাল শব্দ দূষন করে... আমার আপুর ও কান্না পেয়ে গেল।

ঠিক ঐ সময়েই বড় আম্মা নামাজ পড়ছেন আর আম্মু ছিল বাথরুমে। আমার আপু নামাজের মাঝে আমর বড় আম্মা কে ধাক্কা দিয়ে বলে ''বড় আম্মা প্লিজ বাবুকে কোলে নেন ওর গলা দিয়ে রক্ত পড়বে'' বড় আম্মা নামাজ না ভেংগে পড়ে যাচ্ছেন! কিছু ক্ষন চুপ হয়ে আমার আপু বলে '' হিলিইজ বড় আম্মা বাবুকে নেন'' ওর ধারনা যে বড় আম্মা শুদ্ধ বাংলার ''প্লিজ'' বুঝতে পারবেনা! তাই আন্চলিকতার চেস্টা! আর বড় আম্মার ও এহেন কৌতুকে হাসি পেয়ে নামাজ ভেংগে গেল আর আপু কে শান্ত করতে আমাকে কোলে নিয়ে চুপ করায় আবার পরে নামাজ পড়ে নিল!! এখন বলি আমার ছোট বোনের মিস্টি কথা!!যে এখন ৭ম শ্রেনিতে পড়ে!! আমার ছোট বোনের কথার বিকাশ আমার সামনেই হয়েছে আর খুব দেখে শুনে মনে রাখা হয়েছে!! ওর ৩/৪ মাস বয়স থেকে আমরা ওকে ছড়া গান গেয়ে ঘুম পাড়াতাম! এর ফলশ্রুতিতে ওর মুখের বোল ফোটার পর যখন আমরা এক লাইন বলতাম ও ২য় লাইন বলে দিতে পারতো! উদাহরন স্বরূপ, আমরা যদি বলতাম ''তাঁতীর বাড়ি ব্যাঙের বাসা '' বাবু আধো বোলে বলত, ''কোলা ব্যানের ছা'' এমন করে অনেক জলদি সে ছড়া নিজেই পুরোটা বলতে পারতো। যখন ও আড়াই বছর , তখন এক বৃস্টির দিনে জোরে জোরে বাজ পড়ছে ও আমার কোলে বসা আমি ভেবেছি ও আওয়াজে ভয় পায় কিনা, আর সে কিনা আমাকে উল্টা প্রশ্ন করে '' আকাশ কি মেঘটার সাথে কথা বলে??'' আমি অবাক আর বিহ্বল হয়ে সবাইকে বলতে লাগলাম!! এতে আমার ধারনা সে একটু লজ্জা পেয়ে গিয়েছিল!! যখন সে ৪ বছরের বাবু তখন আমের সিজনে আম গাছের দিকে তাকিয়ে আপুর বন্ধুদের বলে খুব অবাক দৃস্টি নিয়ে '' দেখ কাঁচা আমের পাশে পাকা আম ঝুলে'' যেন ব্যাপার টা খুব ই অন্যরকম! আমার এই বোনটার একটা দাঁত নড়ছিল অনেক দিন একদিন সকালে আমাকে হাঁ করে দেখাতে গেল আমি টান দিয়ে তুলে নিলাম কারোন অনেক দিন হলে আম্মু বলছিলো দাঁত উঠতে কস্ট হয় আর মাঢ়ীতে চাপ পড়ে, বাবু তখন কাঁদো কাঁদো অবস্থা কিন্তু আমি দেখি নিচে নতুন দাঁত হালকা দেখা যাচ্ছে। তখন আমি ওকে দেখালাম কোলে নিয়ে যে তোমার দাঁত উঠে যাচ্ছে! তখন সে খুশি হয়ে গেল আর বলতে লাগলো, ''আমার সকালে দাঁত পড়ে বিকালে আবার উঠে গেল'' এখন বলবো আমার আপু ৩ বছরের বাবুর বচন অমৃত!! আপুর বাবুর যখন ৭/৮ মাস তখন থেকেই প্রচন্ড রকমে আমাদের কথা আর আচরন দেখতোএখন ও বিদেশ থাকলেও ওর আমাদের কে মনের ভাব বুঝানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত যত্নশীল!! ও এখন স্কুলে যায়! ওখান কার প্রি স্কুল বলে যাকে। আর বাংলা ইংরেজি মিলিয়েই কথা বলা হয় ওর।

ইতিমধ্যে আবার ওর স্কুল বদল হয়েছে আপুদের বাসা বদলানো জন্য!! নতুন স্কুলে গিয়ে'ওর মাকে নতুন অভিজ্ঞতা বলছে এমন '' মা এখানে ও আ্যালেক্স আছে কিন্তু অন্য মুখ'' উল্লেখ্য এর আগের স্কুলে ওর এক বন্ধু ছিল আ্যলেক্স! আরেক দিন বলে ''জানো গুড মর্নিং কেমনে হয়?'' আপু জিজ্ঞেস করলো কেমনে হয় পাপা?? সে খুব জ্ঞানীর মত বলে....'' আর্থ টা লাইটের সামনে ঘুরে আসে আর তখন গুড মর্নিং হয়'' আপুর বাবু আমার আম্মুকে মোটা নানী ডাকে, আর সে সাধারনত স্কাইপে ওর মোটা নানী কেই একটু পাত্তা দেয় তার মতে ওর খালা রা সুবারু, ম্যাককুইন চিনেনা বুঝেনা কিন্তু নানি বুঝে আর সে এটাও বুঝে যে নানি কে আপনি করে বলতে হয় আর সে জন্য আলাদা বিশেষত্ব আছে! সে তার নানী কে বলে''নানী তুমি তো গার্ল তাই তোমার জন্য পিংক লিস্টিক আনবো'' ..... পিংক গার্ল দের কালার সে খুব বুঝে গেছে!! সম্প্রতি ওর একটা কথা আমাদের খুব ই নির্মল আনন্দ দিচ্ছে..... সেটা এরকম যে .. সে ২ টা চিপসের প্যাকেট দোকান থেকে এনেছে বাসায় ওর পাপার সাথে .. যার একটা প্যকেট বড় আরেকটা ছোটো .. সে নিজে বড় টা খাওয়া শুরু করলো আর ছোটো টা রেখে দিল খুব যত্ন করে ...। ওর মা ওকে জিজ্ঞেস করল ''আব্বু ছোটো চিপস টা কার জন্যে? বাবু উত্তর দিল এমন.... ''আমার একটা বেবি হবে সেই বেবিটার জন্য, আর বেবিটা আমার সিস্টার হবে'' এরকম আর ও বচন অমৃত আছে সবার জীবনে !!!এমন কি আমার ও স্টকে আরো আছে!!!! সবার প্রতি উপদেশ থাকলো!! যখন মন খারাপ লাগবে বাবু আর বাবুদের কথা মনে করবেন তাতে নিজের শৈশব তো মনে দোলা দিবেই আর মুহুর্তেই হতাশা দূর হয়ে যাবে!!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।