আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামী জ্ঞান (১-৯৯)

হাসিতে মুক্ত ঝরে ১. প্রশ্নঃ আমাদের সৃষ্টিকর্তার নাম কি?উত্তরঃ আল্লাহ্। ২. প্রশ্নঃ আল্লাহর কতগুলো নাম রয়েছে? উত্তরঃ আল্লাহ তা’আলার নাম অসংখ্য-অগণিত। ৩. প্রশ্নঃ আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ কোথায় আছেন? উত্তরঃ সপ্তাকাশের উপর আরশে আযীমে। (সূরা ত্বহাঃ ৫) ৪. প্রশ্নঃ আল্লাহর আরশ কোথায় আছে? উত্তরঃ সাত আসমানের উপর। ৫. প্রশ্নঃ আল্লাহ কি সর্বস্থানে বিরাজমান? উত্তরঃ না।

আল্লাহ্ সবজায়গায় বিরাজমান নন। তিনি সপ্তকাশের উপর সুমহান আরশে সমুন্নত। (সূরা ত্বাহাঃ ৫) ৬. প্রশ্নঃ আল্লাহর কাজ কি? উত্তরঃ সৃষ্টি করা, রিযিক প্রদান, বৃষ্টি বর্ষণ, লালন-পালন করা, সাহায্য করা, জীবন-মৃত্যু প্রদান, পরিচালনা করা, সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব করা, তত্বাবধান করা ইত্যাদি। ৭. প্রশ্নঃ তাওহীদ কাকে বলে? উত্তরঃ তাওহীদ অর্থ একত্ববাদ। পরিভাষায়ঃ ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহকে একক নির্দিষ্ট করার নাম তাওহীদ।

৮. প্রশ্নঃ তাওহীদ কত প্রকার? উত্তরঃ তাওহীদ ৩ প্রকার। ৯. প্রশ্নঃ তিন প্রকার তাওহীদ কি কি? উত্তরঃ (১) তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্ বা কর্ম ও পরিচালনার একত্ববাদ (২) তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্ বা দাসত্বের একত্ববাদ (৩) তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাত বা নাম ও গুণাবলীর একত্ববাদ। ১০. প্রশ্নঃ তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্ কাকে বলে? উত্তরঃ আল্লাহ্ তাঁর কর্ম সমূহে একক- তাঁর কোন শরীক নেই, একথা মেনে নেয়ার নাম তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্ ১১. প্রশ্নঃ তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্ কাকে বলে? উত্তরঃ বান্দার ইবাদত-বন্দেগী ও দাসত্ব এককভাবে আল্লাহর জন্যে নির্দিষ্ট করার নাম তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্। ১২. প্রশ্নঃ তাওহীদে আসমা ওয়াস্ সিফাত কাকে বলে? উত্তরঃ কুরআন ও হাদীছে আল্লাহর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলী উল্লেখ রয়েছে, যা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও পরিপূর্ণতার প্রমাণ বহন করে, সেগুলোকে কোন প্রকার ধরণ-গঠন নির্ধারণ না করে বা অস্বীকার না করে সেভাবেই মেনে নেয়ার নাম তাওহীদে আসমা ওয়াস্ সিফাত। ১৩. প্রশ্নঃ তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্র উদাহরণ কি? উত্তরঃ সৃষ্টি করা, রিযিক দেয়া, বৃষ্টি দেয়া, লালন-পালন করা, সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব করা, তত্বাবধান করা ইত্যাদি।

১৪. প্রশ্নঃ তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্র উদাহরণ কি? উত্তরঃ ঈমান, ভয়-ভীতি, আশা-আকাঙ্খা, ভালবাসা, দু’আ-প্রার্থনা, সাহায্য কামনা, উদ্ধার কামনা, রুকূ-সিজদা ইত্যাদি। ১৫. প্রশ্নঃ তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাতের উদাহরণ কি? উত্তরঃ الرحمن আর্ রাহমান, السميع আস্ সামী’ (শ্রবণকারী) البصير আল বাছীর (মহাদ্রষ্টা), العلو আল ঊলু (সুউচ্চ) ইত্যাদি। ১৬. প্রশ্নঃ আল্লাহর ৯৯টি নাম মুখস- করার ফযীলত কি? উত্তরঃ মুখস- করে আমল করলে বিনিময় জান্নাত। ১৭. প্রশ্নঃ ‘মুমিনের কলব আল্লাহর আরশ’ এটা কার কথা? উত্তরঃ এটা মানুষের বানানো কথা। আল্লাহ বা রাসূলের কথা নয়।

(জাল হাদীছ) ১৮. প্রশ্নঃ আল্লাহ কি নিরাকার? উত্তরঃ না। কেননা তাঁর অসি-ত্ব ও সত্তা আছে। যার সত্তা ও অসি-ত্ব থাকে তাকে নিরাকার বলা যায় না। ১৯. প্রশ্নঃ “আল্লাহ সর্বস’ানে বিরাজমান নন, তিনি সপ্তকাশের উপর আরশে থাকেন। ” একটি যুক্তি দিয়ে কথাটি বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ “আল্লাহ্ কোথায় আছেন?” এ প্রশ্নটি ছোট্ট একটি শিশুকে জিজ্ঞেস করলে, তার নিষ্পাপ মুখ থেকে জবাব আসবে ‘তিনি উপরে বা আকাশে আছেন’- সে কখনোই বলবে না ‘আল্লাহ্ সবজায়গায় আছেন’। ২০. প্রশ্নঃ আল্লাহ যদি নিরাকার না হন, তবে তাঁকে কি দেখা সম্ভব? উত্তরঃ হ্যাঁ, তাঁকে দেখা সম্ভব। তবে এ দুনিয়ায় চর্ম চোখে সম্ভব নয়। আখেরাতে জান্নাতীগণ আল্লাহকে দেখবেন। (সূরা ক্বিয়ামাহ্ঃ ২২-২৩, বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ) ২১. প্রশ্নঃ ঈমান কাকে বলে? উত্তরঃ ঈমান মানে বিশ্বাস।

পরিভাষায়ঃ অন-রে বিশ্বাস, মুখে স্বীকার ও কর্মে বাস-বায়নকে ঈমান বলে। ২২. প্রশ্নঃ ঈমান কি কমে ও বাড়ে? উত্তরঃ হ্যাঁ, ঈমান কমে ও বাড়ে। ২৩. প্রশ্নঃ কিভাবে ঈমান কমে বাড়ে? উত্তরঃ সৎকাজের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে, আর অসৎ কাজ করলে ঈমান কমে। ২৪. প্রশ্নঃ ঈমানের শাখা কতটি? উত্তরঃ সত্তরের অধিক। ২৫. প্রশ্নঃ ঈমানের সর্বোচ্চ স-র কি? উত্তরঃ কালেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ পাঠ করা।

২৬. প্রশ্নঃ ঈমানের সর্বনিম্ন শাখা কি? উত্তরঃ রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা। ২৭. প্রশ্নঃ ঈমানের স্তম্ভ কয়টি? কি কি? উত্তরঃ ঈমানের স্তম্ভ ৬টি। সেগুলো হচ্ছেঃ (১) আল্লাহ (২) ফেরেশতাকুল (৩) আসমানী কিতাব (৪) নবী-রাসূল (৫) শেষ দিবস ও (৬) তক্বদীরের ভাল-মন্দের প্রতি ঈমান ২৮. প্রশ্নঃ ইসলাম কাকে বলে? উত্তরঃ ইসলাম অর্থ, আত্মসমর্পন। পরিভাষায়ঃ তাওহীদ ও আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পন করা এবং শির্ক ও মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা। ২৯. প্রশ্নঃ ইসলামের স-ম্ভ কয়টি ও কি কি? উত্তরঃ ইসলামের স-ম্ভ ৫টি।

সেগুলো হচ্ছেঃ (১) কালেমায়ে শাহাদাত উচ্চারণ করা, (২) নামায প্রতিষ্ঠা করা, (৩) যাকাত প্রদান করা (৪) রামাযান মাসে রোযা রাখা (৫) সামর্থ থাকলে আল্লাহর ঘরের হজ্জ আদায় করা। ৩০. প্রশ্নঃ আল্লাহর ফেরেশতাগণ কিসের তৈরী? উত্তরঃ তাঁরা নূরের তৈরী? ৩১. প্রশ্নঃ ফেরেশতাদের সংখ্যা কত? উত্তরঃ তাঁদের সংখ্যা কত তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। ৩২. প্রশ্নঃ প্রধান চার ফেরেশতার নাম কি? উত্তরঃ জিবরাঈল, ইসরাফীল, মীকাঈল ও মালাকুল মওত (আঃ)। ৩৩. প্রশ্নঃ ওহী নাযিল করার দায়িত্ব কোন ফেরেশতার ছিল? উত্তরঃ জিবরাঈল (আঃ) এর। ৩৪. প্রশ্নঃ কোন ফেরেশতাকে সকল ফেরেশতার সরদার বলা হয়? উত্তরঃ জিবরাঈল (আঃ) কে।

৩৫. প্রশ্নঃ ইসরাফীল (আঃ) এর দায়িত্ব কি? উত্তরঃ আল্লাহর নির্দেশ ক্রমে শিংগায় ফুৎকার দেয়া। ৩৬. প্রশ্নঃ মীকাঈল ফেরেশতার কাজ কি? উত্তরঃ তিনি বৃষ্টি বর্ষণ, উদ্ভিদ উৎপাদন প্রভৃতি কাজে নিয়োজিত। ৩৭. প্রশ্নঃ প্রাণীকুলের জান কবজের কাজে নিয়োজিত ফেরেশতার নাম কি? উত্তরঃ মালাকুল মওত। (আজরাঈল নাম বিশুদ্ধ নয়) ৩৮. প্রশ্নঃ কোন ফেরেশতা কি মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ করতে পারে? উত্তরঃ না, আল্লাহ্ ছাড়া কেউ কারো কোন কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক নয়- ফেরেশতা, জিন, মানুষ- নবী, ওলী কেউ না। ৩৯. প্রশ্নঃ প্রসিদ্ধ আসমানী কিতাব কতখানা? উত্তরঃ ৪ খানা।

৪০. প্রশ্নঃ কোন্ কিতাব কোন্ নবীর উপর নাযিল হয়েছে? উত্তরঃ কুরআন- মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর উপর, তাওরাত- মূসা (আঃ)এর উপর, ইঞ্জিল- ঈসা (আঃ) এর উপর এবং যাবূর- দাউদ (আঃ)এর উপর। ৪১. প্রশ্নঃ সর্বশেষ আসমানী কিতাবের নাম কি? উত্তরঃ কুরআনুল কারীম। ৪২. প্রশ্নঃ কালেমা “লাইলাহা ইল্লাল্লাহু’ এর অর্থ কি? উত্তরঃ আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই। ৪৩. প্রশ্নঃ আল্লাহ্ আমাদের কেন সৃষ্টি করেছেন? উত্তরঃ শুধু তাঁর ইবাদত করার জন্য। (সূরা যারিয়াত- ৫৬) ৪৪. প্রশ্নঃ মানুষ মৃত্যু বরণ করলে, কবরে তাকে তিনটি প্রশ্ন করা হবে।

সেগুলো কি কি? উত্তরঃ প্রশ্ন করা হবে- তোমার রব কে? তোমার নবী কে? তোমার দ্বীন কি? ৪৫. প্রশ্নঃ ইবাদত কাকে বলে? উত্তরঃ আল্লাহ পছন্দ করেন এমন প্রত্যেক গোপন ও প্রকাশ্য কথা ও কাজকে ইবাদত বলা হয়। ৪৬. প্রশ্নঃ ইবাদত কবূল হওয়ার শর্ত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃ ইবাদত কবূল হওয়ার শর্ত দু’টিঃ (১) ইবাদতটি একনিষ্টভাবে আল্লাহর জন্য করা (২) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাত মোতাবেক করা। ৪৭. প্রশ্নঃ সঠিক ইবাদতের মূল ভিত্তি কয়টি ও কি কি? উত্তরঃ যে কোন ইবাদত সঠিক হওয়ার জন্য তিনটি মূল ভিত্তি রয়েছে। (১) আল্লাহর প্রতি ভালবাসা, (২) তাঁকে ভয় করা ও (৩) তাঁর কাছে আশা-আকাংখা করা ৪৮. প্রশ্নঃ শির্ক কাকে বলে? উত্তরঃ ইবাদতের কোন একটি বিষয় আল্লাহ ছাড়া অন্যের উদ্দেশ্যে সম্পাদন করা। ৪৯. প্রশ্নঃ শির্ক কত প্রকার ও কি কি? উত্তরঃ শির্ক দু’প্রকারঃ বড় শির্ক ও ছোট শির্ক।

৫০. প্রশ্নঃ বড় শির্ক কাকে বলে? উত্তরঃ আল্লাহর ইবাদতে অন্য কাউকে অংশী করাকে বড় শির্ক বলে। ৫১. প্রশ্নঃ বড় শির্কের উদাহরণ কি? উত্তরঃ এর অনেক উদাহরণ রয়েছেঃ যেমনঃ আল্লাহ ছাড়া কাউকে সিজদা করা, আল্লাহ ছাড়া অন্যকে ডাকা, সাহায্য প্রার্থনা, সন-ান কামনা করা, বিপদাপদে উদ্ধার কামনা করা, গাইরুল্লাহর উদ্দশ্যে কুরবানী করা, কবর-মাজারে নযর-মান্নত করা ইত্যাদি। ৫২. প্রশ্নঃ বড় শির্কের পরিণাম কি? উত্তরঃ ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে এবং তওবা না করে মৃত্যু বরণ করলে, চিরকাল জাহান্নামের অধিবাসী হবে। (সূরা মায়েদাঃ ৭২) ৫৩. প্রশ্নঃ কোন্ পাপ নিয়ে তওবা ছাড়া মৃত্যু বরণ করলে চিরকাল জাহান্নামে থাকতে হবে? উত্তরঃ শির্ক। ৫৪. প্রশ্নঃ নবী-ওলীকে উসীলা করে দু’আ করার বিধান কি? উত্তরঃ নবী, ওলী, ফেরেশতা বা যে কোন মানুষকে উসীলা করে দু’আ করা বড় শির্ক।

৫৫. প্রশ্নঃ মক্কার কাফেরগণ কি মোটেও আল্লাহকে বিশ্বাস করত না? উত্তরঃ তারা তাওহীদে রুবুবিয়্যার প্রতি বিশ্বাস রাখত। ৫৬. প্রশ্নঃ মক্কার কাফেরগণ তাওহীদে রুবুবিয়্যার প্রতি বিশ্বাস রাখত, একথার প্রমাণ কি? উত্তরঃ আল্লাহ্ বলেন, “তাদের যদি জিজ্ঞেস কর যে, কে আসমান যমীন সৃষ্টি করেছে, তবে তারা জবাবে অবশ্যই বলবে, আল্লাহ্। ” (সূরা লোকমান- ৩১) ৫৭. প্রশ্নঃ মক্কার কাফেরগণ কি কোনই ইবাদত করত না? উত্তরঃ তারা বিভিন্নভাবে আল্লাহর ইবাদত করত। যেমন, তারা কা’বা ঘরের তওয়াফ করত। হজ্জ পালন করত ইত্যাদি।

৫৮. প্রশ্নঃ মক্কার কাফেরগণকে মুশরিক বলার কারণ কি? উত্তরঃ কেননা তারা মুর্তি পুজা করত। ৫৯. প্রশ্নঃ তাদের মুর্তি পুজার ধরণ কিরূপ ছিল? উত্তরঃ তারা মুর্তিগুলোকে আল্লাহর কাছে পৌঁছার মাধ্যম বা উসীলা মনে করত। ৬০. প্রশ্নঃ বিপদ-মুসীবতে পড়লে কাফেরদের অবস’া কেমন হত? উত্তরঃ বিপদ-মুসীবতে পড়লে তারা শির্ক করত না। তখন তারা একনিষ্টভাবে আল্লাহকে ডাকত। ৬১. প্রশ্নঃ বর্তমান যুগে অনেক লোক বিপদ-মুসীবতে পড়লে কী করে থাকে? উত্তরঃ এ অবস’ায় অনেক মানুষ শির্কে লিপ্ত হয়।

মাজারে দরবারে ধর্ণা দেয়। পীরের দরগায় নযর-মান্নত করে থাকে। তাবীজ-কবচ ব্যবহার কও ইেত্যাদি। ৬২. প্রশ্নঃ নবী-রাসূলগণের দা’ওয়াতের মূল বক্তব্য কী ছিল? উত্তরঃ “হে আমার সমপ্রদায়ের লোকেরা, তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের সত্য কোন মা’বূদ নেই।

” (সূরা আ’রাফঃ ৫৯) ৬৩. প্রশ্নঃ ছোট শির্ক কাকে বলে? উত্তরঃ যে সমস- কাজকে শরীয়তে শির্ক নামে আখ্যা দেয়া হয়েছে, কিন’ উহা বড় শির্কের পর্যায়ভুক্ত নয়। ৬৪. প্রশ্নঃ ছোট শির্কের উদাহরণ কি? উত্তরঃ মানুষকে দেখানো কিংবা প্রশংসা কুড়ানো কিংবা দুনিয়া অর্জনের উদ্দেশ্যে ইবাদত করা, তাবিজ-কবচ ব্যবহার করা, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করা, গণক-জ্যোতিষীর কাছে যাওয়া ইত্যাদি। ৬৫. প্রশ্নঃ তাবিজ-কবচ ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামের হুকুম কি? উত্তরঃ এ কাজ ছোট শির্কের অন-র্ভূক্ত। তবে এটাকেই ত্রাণকর্তা ও আরোগ্য দাতা বিশ্বাস করলে বড় শির্ক। ৬৬. প্রশ্নঃ ছোট শির্কে লিপ্ত হলে তার পরিণতি কি? উত্তরঃ সে ইসলাম থেকে বের হবে না।

তবে তার এই কাজ কাবীরা গুনাহের চাইতে বড় গুনাহ। ৬৭. প্রশ্নঃ পিতা-মাতা, সন-ান, মসজিদ, কা’বা প্রভৃতির নামে শপথ করার হুকুম কি? উত্তরঃ এরূপ শপথ বা কসম করা ছোট শির্কের অন-র্ভূক্ত। ৬৮. প্রশ্নঃ আব্দুর রাসূল (রাসূলের বান্দা), আবদুন্ নবী, গোলাম মোস-ফা, আব্দুল মুত্তালেব (মুত্তালেবের বান্দা) প্রভৃতি নাম রাখা কি? উত্তরঃ এরূপ নাম রাখা ছোট শির্কের অন-র্ভূক্ত। ৬৯. প্রশ্নঃ ইবাদতে ‘রিয়া’ বলতে কী বুঝায়? উত্তরঃ মানুষকে দেখানো বা তাদের প্রশংসা ও ভালবাসা পাওয়ার উদ্দেশ্যে কোন ইবাদত সম্পাদন করা। ৭০. প্রশ্নঃ গণক বা জ্যোতীষীদের কাছে যাওয়ার ক্ষতি কি? উত্তরঃ তাদের কাছে গিয়ে কোন কিছু জিজ্ঞেস করলে ৪০দিনের নামায কবূল হবে না।

(মুসলিম) ৭১. প্রশ্নঃ গণক বা জ্যোতীষীদের কথা বিশ্বাস করার পরিণাম কি? উত্তরঃ তাদের কথা বিশ্বাস করলে নবী (সাঃ)এর নিকট প্রেরীত কুরআনের সাথে কুফরী করা হবে। (মুসলিম) ৭২. প্রশ্নঃ কোন মানুষ ভুলবশতঃ কুফরী কাজ করে ফেললে বা কথা বলে ফেললে তার কি হবে? উত্তরঃ তার কোন গুনাহ হবে না। তবে তার ভুল শুধরে দিতে হবে। ৭৩. প্রশ্নঃ অসুখ-বিসুখ হলে ঝাড়-ফুঁক করার হুকুম কি? উত্তরঃ কুরআনের আয়াত ও হাদীছের দু’আ পড়ে ঝাড়-ফুঁক করা জায়েয। ৭৪. প্রশ্নঃ কুরআনের আয়াত লিখে তাবিজ ব্যবহারের হুকুম কি? উত্তরঃ নাজায়েয।

কেননা এটা জায়েয হওয়ার পক্ষে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) বা সাহাবা-তাবেঈনের কারো থেকে কোন দলীল নেই। তাছাড়া কুরআনকে এভাবে ব্যবহার করলে, কুরআনের অবমাননা হয়। ৭৫. প্রশ্নঃ বিদআত কাকে বলে? উত্তরঃ ছোয়াবের নিয়ত করে যে ইবাদত করা হয়; অথচ তার পক্ষে শরীয়তে দলীল পাওয়া যায় না, তাকেই বিদআত বলে। ৭৬. প্রশ্নঃ বর্তমানে প্রচলিত কিছু বিদআতের উদাহরণ কি? উত্তরঃ নামাযে মুখে নিয়ত পাঠ, মীলাদুন্নবী উদযাপন, দলবদ্ধভাবে যিকির, কুলখানি, চল্লিশা, খতমে জালালী, খতমে ইউনুস, ফাতেহাখানি, জন্মবার্ষীকি, মৃত্যুবার্ষীকি, শবে বরাত উদযাপন ইত্যাদি। ৭৭. প্রশ্নঃ বিদআত দু’প্রকারঃ ভাল বিদআত ও মন্দ বিদআত।

এ সম্পর্কে আপনার মত কি? উত্তরঃ এরূপ ভাগ করার কোন দলীল নেই। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা। ” (মুসলিম) ৭৮. প্রশ্নঃ সাইকেল, বাস, ট্রেন, প্লেনে চড়া, বিদ্যুৎ, মাইক ব্যবহার ইত্যাদি কি বিদআত নয়? উত্তরঃ না, কেননা একাজগুলো ইবাদত মনে করে ছোয়াবের উদ্দেশ্যে করা হয় না। এগুলো দুনিয়াবী কাজ। ৭৯. প্রশ্নঃ জিন জাতি কিসের তৈরী ? উত্তরঃ আগুনের তৈরী।

৮০. প্রশ্নঃ জিনদেরকে আল্লাহ্ কেন তৈরী করেছেন? উত্তরঃ তাঁর ইবাদত করার জন্য। (সূরা যারিয়াতঃ ৫৬) ৮১. প্রশ্নঃ জিনেরা কি মানুষের ভাল-মন্দ করতে পারে? উত্তরঃ না, আল্লাহ্ ছাড়া কেউ কারো ভাল-মন্দ করতে পারে না। ৮২. প্রশ্নঃ জিনদের নিকট থেকে সাহায্য নেয়া জায়েয আছে কি? উত্তরঃ না, তাদের থেকে কোন সাহায্য নেয়া জায়েয নেই। ৮৩. প্রশ্নঃ জিন তাবে করার হুকুম কি? উত্তরঃ জিন তাবে করা জায়েয নেই। ৮৪. প্রশ্নঃ সর্বপ্রথম আল্লাহ্ তা’আলা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম)এর নূর সৃষ্টি করেন, একথাটি কি ঠিক? উত্তরঃ না, কেননা এ সম্পর্কে সহীহ্ কোন হাদীছ নেই।

জাল (বানোয়াট) হাদীছের ভিত্তিতে অনেকে একথাটি বলে থাকে। ৮৫. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি নূর থেকে সৃষ্টি? উত্তরঃ না, আদম সন-ান যে উপাদানে সৃষ্টি, তিনিও সেই উপাদানে সৃষ্টি। (সূরা কাহাফঃ ১১০) ৮৬. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি গায়েব জানতেন? উত্তরঃ না, তিনি কোন গায়েব জানতেন না। (সূরা আনআমঃ ৫০) ৮৭. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি জীবিত? উত্তরঃ না, তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন। (সূরা যুমারঃ৩০) ৮৮ প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি হাযের-নাযের (অর্থাৎ সবখানে তিনি উপসি’ত হতে পারেন, এরূপ বিশ্বাস করা কি)? উত্তরঃ না, তিনি হাযের-নাযের নন।

এরূপ বিশ্বাস করা কুফরী। ৮৯. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি কারো উপকার-অপকারের ক্ষমতা রাখেন? উত্তরঃ না। (সূরা জিনঃ ২১) ৯০. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্ম দিবস উপলক্ষে ঈদে মীলাদুন্নবী উদযাপন করার হুকুম কি? উত্তরঃ নাজায়েয, বিদআত। ৯১. প্রশ্নঃ কোন মুসলমানকে কাফের বলার পরিণতি কি? উত্তরঃ ঐ ব্যক্তি কাফের না হলে, কথাটি যে বলেছে তার উপর পতিত হবে। ৯২. প্রশ্নঃ ফাসেক ব্যক্তির ইমামতিতে নামায পড়া জায়েয কি? উত্তরঃ ফাসেককে ইমাম নিযুক্ত করা জায়েয নয়; তবে সে ইমাম হয়ে গেলে তার পিছনে নামায পড়া জায়েয।

৯৩. প্রশ্নঃ মুসলামনদের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোন কাফেরকে হত্যা করার হুকুম কি? উত্তরঃ হারাম। এরকম কাফেরকে যে ব্যক্তি হত্যা করবে, সে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাবে না। ৯৪. প্রশ্নঃ হিন্দু, ইহুদী, খৃষ্টান প্রভৃতি কাফেরকে কেউ যদি কাফের না বলে, তাতে কোন ক্ষতি আছে কি? উত্তরঃ তাদেরকে যে ব্যক্তি কাফের বিশ্বাস করবে না বা তাদেরকে কাফের বলতে দ্বিধা করবে, সে কাফের হয়ে যাবে। ৯৫. প্রশ্নঃ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত কারা? উত্তরঃ যারা আকীদা ও আমলের ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরে থাকে এবং তার উপর ঐক্যবদ্ধ থাকে। আর সাহাবায়ে কেরাম তথা সালাফে সালেহীনের রীতি-নীতিকে অনুসরণ করে।

৯৬. প্রশ্নঃ ইসলাম বা তার কোন বিষয় নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করলে, পরিণতি কি? উত্তরঃ যে এরূপ করবে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। ৯৭. প্রশ্নঃ বৈধ অসীলা কত প্রকার ও কি কি? উত্তরঃ তিন প্রকারঃ (১) আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর অসীলা (২) নেক আমলের অসীলা (৩) সৎ ব্যক্তির দু’আর অসীলা। ৯৮. প্রশ্নঃ অবৈধ অসীলার উদাহরণ কি? উত্তরঃ যেমনঃ নবী-রাসূল, ফেরেশতা, ওলী-আউলিয়া ইত্যাদির অসীলা করা। মৃত ব্যক্তির কাছে দু’আ চাওয়াও নিষিদ্ধ অসীলার অন-র্ভূক্ত। ৯৯. প্রশ্নঃ কবরে বা মাজারে বা কোন পীরের উদ্দেশ্যে মানত করার হুকুম কি? উত্তরঃ শির্ক।

…………প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান (১-৯৯) প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান (১০০-১৫০) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.