আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক বীরের বীরত্বের অবিশ্রুত কাহিনী শুনো

নয়া যামানার নয়া পথিক,পথ হারিয়ে ছুটনা দিক্বিদিক যখন দয়ার নবীর ডাকে সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস,মুস'আব ইবনে উমায়ের মত মক্কার সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তানেরা ইসলাম গ্রহণ করছিল তখন তিনি ইসলামের শত্রুতায় ছিলেন অগ্রগামী,আর এ শ্ত্রুতার পিছনে মূল হোতা ছিল তার পিতা। তাহলে চিন্তা করে দেখ,কে ছিল তার পিতা?! নিশ্চয় সে ছিল মক্কার সর্বোচ্চ প্রবল পরাক্রান্ত শক্তির অধিকারী,শিরকের পতাকাবাহী প্রথম নেতা,মুসলমানদের নির্মম শাস্তিদানেরর হোতা। যার দ্বারা আল্লাহ্‌ মু'মিনদের ঈমানের পরীক্ষা করেছেন। ফলে তারা সুদৃঢ় রয়েছেন। যার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তা,আলা সত্যাশ্রয়ীদের সততার পরীক্ষা করেছেন।

ফলে তারা সততায় অবিচল রয়েছেন। সে হল আবু জাহল.........ব্যস এতটুকুই যথেষ্ট। সে হল তার পিতা আর তিনি হলেন ইকরামা ইবনে আবু জাহল। কোরাইশদের হাতেগোনা নেতৃস্থানীয় লোকদের একজন । কোরাইশদের শীর্ষস্থানীয় অশ্বারোহী যোদ্ধাদের অন্যতম।

**** ইকরামা ইবনে আবু জাহল তার পিতার নেতৃত্বের সুবাদে রাসুলের শ্ত্রুতায় ভেসে গেল। রাসুলের ঘোর শ্ত্রুতায় লিপ্ত হল এবং সাহাবীদের নির্মমভাবে কষ্ট দিল। ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে এমন নিপীড়ন শুরু করল যা দেখে তার পিতার চোখ শীতল হল। বদরে যুদ্ধে তার পিতা শিরকের পক্ষে নেতৃত্ব দিল। লাত ও উযযার কসম খেয়ে বলল ,মুহাম্মদকে পরাজিত না করে মক্কায় আর ফিরে আসবে না।

বদরে অবতীর্ণ হলে তিনদিন সেখানে থাকল। উট যবাহ করে খেল,মদপান করল। গায়িকারা তাকে আনন্দ দিয়ে বাদ্য বাজিয়ে গান গাইল। কিন্তু লাত ও উযযা আবু জাহলের ডাকে সাড়া দিল না,কারণ তার তো শোনে না...... রণক্ষেত্রে তাকে সাহায্য করল না,কারণ তারা অক্ষম। তাই বদরের প্রান্তেই সে লুটিয়ে পড়ল।

আর ইকরামা স্বচক্ষে দেখল, মুসলমানদের তীর তার রক্ত চুষে খাচ্ছে। নিজ কানে শুনল,তার ওষ্ঠাধর চিরে জীবনের শেষ চিৎকার বেরিয়ে আসছে। **** ইকরামা তার পিতা আবু জাহলের লাশ নিয়ে ফিরে আসতে পারল না বরং সে নিজের জীবন নিয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হল। মুসলমানেরা অন্যান্য নিহত মুশরিকদের সাথে তাকেও বদরের কূপে নিক্ষেপ করল এবং তাতে বালি ঢেলে দিল। সেদিন থেকে ইসলামের সাথে ইকরামা ইবনে আবু জাহলের অন্য অবস্থা সৃষ্টি হল, শুরুতে পিতের আত্মমর্যাদা বোধের কারণে ইসলামের সাথে শত্রুতা পোষণ করত।

আজ থেকে প্রতিশোধমূলকভাবে ইসলামের সাথে শত্রুতা পোষণ করতে লাগল। ইকরামা ও যাদের পিতাদের বদরে হত্যা করা হয়েছে তারা রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বিরুদ্ধে মুশরিকদের অন্তরে শ্ত্রুতার আগুন প্রজ্জ্বলিত করতে লাগল। বিদ্বেষের আগুন জ্বালাতে লাগল। ফলে উহুদের যুদ্ধ সংঘটিত হল। উহুদের যুদ্ধে ইকরামা ইবনে আবু জাহল যোগদান করল,সাথে তার স্ত্রী উম্মে হাকীমও গেল।

**** কুরাইশরা তাদের অশ্বারোহী যোদ্ধাদের ডান পাশের সেনাপতিত্ব খালেদ ইবনে ওয়ালিদকে দিল এবং বাম পাশের সেনাপতিত্ব ইকরামা ইবনে আবু জাহলকে দিল। সেদিন সেই অশ্বারোহী দুই যোদ্ধা এমন মরণপণ যুদ্ধ করল যে, মুহাম্মাদ(সাঃ) ও তাঁর সাথীদের উপর কুরাইশদের পাল্লা ভারী করে ফেলল এবং মুশরিকদের জন্য বিরাট বিজয় বাস্তবায়িত করল। ফলে আবু সুফিয়ান বলতে লাগল,'এটা হল বদর যুদ্ধের বিনিময়। ' **** খন্দকের যুদ্ধে মুশরিকরা দীর্ঘদীন মদিনা অবরোধ করে রাখল। তখন ইকরামা ইবনে আবু জাহলের ধৈর্য নিঃশেষ হয়ে গেল এবং দীর্ঘ অবরোধে অতিষ্ঠ হয়ে গেল।

খন্দকে একটি সংকীর্ণ স্থান দেখে সেখানেই সে তার ঘোড়া নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ল এবং খন্দক অতিক্রম করল। তার সাথে সাথে অত্যন্ত দুঃসাহসী কয়েকজন খন্দক অতিক্রম করল। তখন আমর ইবনে আবদে উদ্দ আমেরী নহত হল ও ইকরামা ইবনে আবু জাহল পালিয়ে এসে প্রাণ বাঁচাল। **** মক্কা বিজয়ের দিন কুরাইশরা দেখল, মুহাম্মাদ (সাঃ) ও তাঁর সাথীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মত শক্তি তাদের নেই। তাই তারা মক্কার পথ তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার সিদ্ধান্ত করল।

তার শুনতে পেল, রাসুলুল্লাহ(সাঃ) তাঁর সেনাপতিদের নির্দেশ দিয়েছেন, মক্কাবাসীদের যারা যুদ্ধ করতে এগিয়ে আসবে শুধু কেবল তাদের সাথেই যুদ্ধ হবে। এ বিষয়টি তাদের ঐ সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করল। **** কিন্তু ইকরামা ইবনে আবু জাহল ও তার কয়েকজন সাথী কুরাইশদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল এবং মুসলমানদের বিশাল বাহিনীর মুখোমুখি দাঁড়াল। তখন একটি ছোট যুদ্ধে খালেদ ইবনে ওয়ালিদ(রাঃ) তাদের পরাজিত করলেন। সে যুদ্ধে যাদের নিহত হওয়ার ছিল তারা নিহত হল,আর যারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হল তারা পালিয়ে গেল।

পলায়নকারীদের মাঝে ছিল ইকরামা ইবনে আবু জাহল। **** তখন ইকরামা আত্মানুশোচনায় নিমজ্জিত হল। মুসলমান্দের হাতে মক্কার পতন হওয়ার পর সেখানে আর তার অবস্থানের সুযোগ রইল না। এদিকে কুরাইশরা রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এর সাথে যা করেছিল তিনি তা মাফ করে দিলেন। তবে তিনি তাদের কয়েকজনকে তাদের থেকে বাদ দিলেন।

তিনি তাদের নাম ঘোষণা করে দিলেন এবং নির্দেশ দিলেন, কাবার গিলাফের নিচেও তাদের পাওয়া গেলে হত্যা করা হবে। এই দলের শীর্ষে ছিলেন ইকরামা ইবনে আবু জাহল। তাই অত্যন্ত সন্তর্পণে আত্মগোপ্ন করে মক্কা থেকে বেরিয়ে পড়ল এবং ইয়ামেনের পথে ছুটে চলল। কারণ সেখানে তার আর কোন আশ্রয়স্থল ছিল না। **** তখন ইকরামার স্ত্রী উম্মে হাকীম এবং আবুসুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করতে যায়।

তাদের সাথে ছিল আরো দশজন মহিলা। তারা সকলেই ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম গ্রহণ করার পর ইকরামার স্ত্রী উম্মে হাকীম দাঁড়িয়ে বলেন-'ইয়া রাসূলুল্লাহ ! ইকরামা ইয়ামেনে পালিয়ে গেছে। আপনি তাকে হত্যা করবেন এই তার ভয়। সুতরাং আপনি তাকে অভয় দিন, আল্লাহ্‌ আপনাকে অভয় দান করবেন।

' তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, ' সে নিরাপদ '। সাথে সাথে উম্মে হাকীম তার স্বামীর সন্ধানে বেরিয়ে পড়লেন । অনেক খুঁজাখুঁজির পর তিনি ইকরামাকে তিহমা অঞ্চলের নদীর তীরে পেলেন। তিনি ইকরামাকে মক্কায় ফিরিয়ে নিতে চাইলেন,কিন্তু ইকরামা যেতে চাইল না,কারণ সে তার প্রাণ নাশের আশংকা করছিল। কিন্তু যখন উম্মে হাকীম তাকে বলল যে ,সে নিজে সরাসরি মহানবী(সাঃ) এর কাছ থেকে তার জন্য নিরাপত্তার আশ্বাস নিয়ে এসেছেন, তখন ইকরামা রাজি হল।

পথে তারা একটি বাড়িতে বিশ্রামের জন্য অবস্থান করছিলেন, তখন ইকরামা স্ত্রীসম্ভোগের ইচ্ছা করলে উম্মে হাকীম অত্যন্ত কঠিনভাবে তা প্রত্যাখ্যান করলেন। বললেন, আমি একজন মুসলমান নারী আর তুমি একজন মুশরিক পুরুষ। ইকরামা তার কথায় বিস্মিত হয়ে বলল, তোমার আর আমার মাঝে যে বিষয়টি অন্তরায় সৃষ্টি করেছে নিশ্চয় তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইকরামা যখন মক্কার নকটবর্তী হলেন, তখন রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বললেন-" ঈমান এনে হিজরত করে সত্বর ইকরামা ইবনে আবু জাহল তোমাদের নিকট আসবে। তোমরা তার পিতাকে গালমন্দ করো না।

নিশ্চয় মৃত ব্যক্তিকে গালমন্দ করা জীবিত ব্যক্তিকে কষ্ট দেয়। আর তোমাদের গালমন্দ মৃত ব্যক্তির নিকট পৌঁছে না। ' এর কিছুক্ষন পরেই ইকরামা ও তার স্ত্রী রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এর মজলিসে গিয়ে পৌঁছলেন। নবী (সাঃ) তাকে দেখে আনন্দে চাদর ফেলেই তার দিকে ছুটলেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বসলে ইকরামা তাঁর সামনে বসলেন এবং বললেন-" হে মুহাম্মাদ ! উম্মে হাকীম আমাকে সংবাদ দিয়েছে, আপনি আমাকে অভয় দিয়েছেন।

" রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, সে সত্য বলেছে, তুমি নিরাপদ নির্ভয়। ইকরামা বলল, হে মুহাম্মাদ! আপনি কিসের দিকে আহ্বান করছেন। রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বললেন আমি তোমাকে এ দিকে আহ্বান কিরছি যে, তুমি বলবে,"আল্লাহ্‌ ছাড়া কোন ইলাহ নেই আর আমি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। তুমি নামাজ কায়েম করবে ,যাকাত আদায় করবে......এভাবে ইসলামের পাঁচটি আরকানের কথা বললেন। ইকরামা বললেন, আল্লাহর কসম খেয়ে বলছি, আপনি তো সত্যের দিকেই আহ্বান করছেন।

কল্যাণের নির্দেশ দিচ্ছেন। তারপর বলতে লাগলেন, ইসলামের দিকে আহ্বান করার পূর্বেও তো আপনি আমাদের মাঝে সত্যবাদী ও পুণ্যবান ছিলেন। তারপর ইকরামা তার হাত প্রসারিত করলেন এবং বললেন-"আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে ,আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি তার বান্দা ও রাসূল। " এভাবে ইকরামা ইবনে আবু জাহল ইসলাম গ্রহণ করলেন। ইসলাম গ্রহণ্ করার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন,'আজ যদি তুমি আমার নিকট এমন কিছু চাও যা অন্যকে দিয়েছি তাহলে আমি তা তোমাকে দিব।

' ইকরামা বললেন,'আপনি আমার ঐ শত্রুতার জন্য আল্লাহ পাকের দরবারে আমার হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন যা আমি আপনার বিরুদ্ধে করেছি এবং এমন যুদ্ধের জন্য যা আমি আপনার বিরুদ্ধে করেছি এবং এমন কথার জন্য যা আপনার সম্মুখে বা পশ্চাতে বলেছি। ' তখন রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বললেন, হে আল্লাহ !তার প্রত্যেক শত্রুতাকে ক্ষমা করে দিন যা সে আমার বিরুদ্ধে করেছে। প্রত্যেক যুদ্ধের পাপকেও মাফ করে দিন যা সে আপনার নূরকে নির্বাপিত করার জন্য করেছে। আমার মানহানীকর যা কিছু সে আমার সামনে বা পিছনে বলেছে তা আপনি মাফ করে দিন। ' তখন ইকরামার চেহারা আলোকময় হয়ে উঠল।

বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ! আমি কসম করে বলছি, আল্লাহর পথের বিরুদ্ধে আমি যা কিছু খরচ করেছি তার দ্বিগুণ এখন আমি আল্লাহর রাস্তার খরচ করব। আল্লাহর পথের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধবিগ্রহ করেছি, তার দ্বিগুণ আল্লাহর পথে করব। **** সেদিন থেকে দাওয়াতের কাফেলায়, রণক্ষেত্রে দুঃসাহসী এক অশ্বারোহী এসে যোগদান করলেন। রাত জেগে মসজিদে আল্লাহর কিতাব পাঠকারী এক আবেদ এসে যোগদান করলেন। তিনি আল্লাহর কিতাবকে চেহারায় রেখে আল্লাহর ভয়ে কেঁদে কেঁদে বলতেন, এ আমার রবের কালাম...... এ আমার রবের কালাম।

...... **** ইকরামা ইবনে আবু জাহল রাসূলুল্লাহ(সাঃ) সাথে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তা যথাযথভাবে পালন করেছিলে। তাঁর ইসলাম গ্রহণের পর মুসলমানগণ যত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন ইকরামাও তাতে অংশগ্রহণ করেছেন। আর প্রত্যেক যুদ্ধে তিনি অগ্রগামী বাহিনীতে ছিলেন। প্রচন্ড গরমের দিনে শীতল পানির দিকে পিপাসার্ত ব্যক্তির ছুটে যাওয়ার ন্যায় ইকরামা(রাঃ) ইয়ারমুকের যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়লেন। যুদ্ধের একপর্যায়ে মুসলমানদের পরাজয়বরণ করার উপক্রম হল।

এমনকি অনেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল। সাধারণ দৃষ্টিতে মুসলমানদের পরাজয় স্বাভাবিক ছিল,কারণ মুসলমানেরা সর্বসাকুল্যে ছিল ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশ হাজার আর রোমানরা ছিল এক থেকে দেড় লাখ। যুদ্ধের মাত্রা তীব্র হলে ইকরামা(রাঃ) ঘোড়া থেকে নেমে পড়লেন। তরবারীর খাপ ভেঙে ফেললেন এবং রোমানদের ব্যুহে ঢুকে পড়লেন। তখন খালিদ ইবনে ওয়ালীদ (রা) তাঁর দিকে এগিয়ে এসে বললেন, হে ইকরামা! এমন কাজ করো না।

কারণ তা মুসলমানদের জন্য কষ্টদায়ক হবে। তখন ইকরামা(রা) বললেন, হে খালেদ ! আমার ব্যাপারে চিন্তা করবেন না। কারণ রাসূলের সাহচর্য আপনি আমার চেয়ে বেশী পেয়েছেন। আর আমি ও আমার পিতা তো রাসূলুল্লাহ(সা) এর ঘোর দুশমন ছিলাম। তাই আমাকে পূর্বের পাপমোচন করার সুযোগ দিন।

তারপর বললেন-" বহু রণক্ষেত্রে রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। আর আজ বুঝি রোমানদের থেকে পালিয়ে যাব? নিশ্চয় তা কিছুতেই হবে না। " তারপর মুসলমানদের মাঝে আহ্বান করলেন, কে মৃত্যুর বাইয়াত গ্রহণ করবে? তখন তার চাচা হারেস ইবনে হিসাম, যিরার ইবনে আযওয়ারসহ চারশত মুসলমান তাঁর হাতে বাইয়াত করলেন। তারা খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রাঃ) এর নেতৃত্বের বাইরে মরণপণ যুদ্ধ করলেন এবং প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুললেন। তারা রোমানবাহিনীর ভেতরে ঢুকে গেলেন এবং পুরো রোমানবাহিনীর ভিত নাড়িয়ে দিলেন।

তাদের এ অভাবনীয় প্রতিরোধের ফলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেল এবং অবশেষে বিজয় মুসলমানদের হল কিন্তু সেই চারশত জনের প্রায় সকলেই শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করলেন। মুসলমানদের এই বিশাল বিজয় লাভের পর যখন ইয়ারমুকের রণাঙ্গন শান্ত হয়ে গেল, তখন দেখা গেল ইয়ারমুকের রণাঙ্গনে তিনজন মুজাহিদ পড়ে আছেন। ক্ষতস্থানগুলো তাদের অত্যন্ত দুর্বল করে ফেলেছে। তারা হলেন, হারেস ইবনে হিসাম, আইয়াস ইবনে আবী রবীয়া ও ইকরামা ইবনে আবু জাহল(রা)। পান করার জন্য হারেস পানি চাইলেন।

তাকে পানি দেয়া হলে ইকরামা তাঁর দিকে তাকালেন। হারেস তখন বললেন, তাকে পানি দাও। ইকরামার নিকট পানি নেওয়া হলে আইয়াস তা দেখলেন। ইকরামা তখন বললেন, আইয়াসকে পানি দাও। আইয়াসের নিকটবর্তী হলে দেখা গেল তিনি ইন্তেকাল করেছেন।

তারপর তার সাথীদ্বয়ের নিকট এলে দেখা গেল তারাও ইন্তেকাল করেছেন। আল্লাহ তাঁদের হাউজে কাউসারের পানি পান করান। যার পর তারা আর পিপাসার্ত হবেন না। আল্লাহ তাঁদের জান্নাতুল ফেরদাউসের সবুজ শ্যমল বাগিচা দান করুন। যেখানে তাঁরা চিরকাল আনন্দ-উল্লাসে থাকবেন।

ইয়ারমুক প্রান্তর  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।