আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৫০ পাকিস্তানি জঙ্গি ঢাকায়!

পাকিস্তানের দুটি জঙ্গি সংগঠনের ৫০ জন সক্রিয় সদস্য অতি সম্প্রতি ঢাকায় ঢুকেছে। তারা বিস্ফোরকদ্রব্যে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বলে জানা গেছে। এদের সঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানরত হরকাতুল জিহাদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের পরিকল্পনায় রয়েছে এ দেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থাপনা এবং থানায় হামলা চালানো। গত রবিবার রাতে বিমানবন্দর-সংশ্লিষ্ট একটি গোয়েন্দা সূত্রে এই খবর নিশ্চিত করে পুলিশ।

এর পরপরই পুলিশ মহলে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। ওই রাতেই পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করেন এবং রাজধানীর সব থানাকেই বিশেষভাবে সতর্ক করে দেন। এদিকে সাম্প্রতিক সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পর একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনকেন্দ্রিক সেনা, পুলিশ, এসএসএফ, পিজিআরসহ বিভিন্ন সংস্থা নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় তাঁদের বর্তমান নিরাপত্তাব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত নিরাপত্তা সদস্যরা।

শুধু বাসভবন নয়, তাঁদের চলাচলের সময়ও সড়কপথের নিরাপত্তা আরো বেশি জোরদার করা হয়েছে। পাকিস্তানি জঙ্গিদের ঢাকায় ঢুকে পড়ার ব্যাপারে সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, রবিবার রাতে তাঁদের কাছে একটি খবর আসে, পাকিস্তানকেন্দ্রিক দুটি ইসলামী জঙ্গি সংগঠনের ৫০ জন সদস্য সম্প্রতি ঢাকায় এসেছে। এদের মধ্যে হরকাতুল জিহাদ (পাকিস্তান) ও কাশ্মীরের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সদস্যও রয়েছে। টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমায় যোগদানের কথা বলে ধর্মীয় লেবাস ধরেই তারা ঢাকায় ঢুকেছে। বিমানবন্দর সূত্র থেকেও তারা এই জঙ্গি সদস্যদের এ দেশে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

রবিবার রাতে এই খবর পাওয়ার পরপরই তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে রাজধানীর সব থানাকেই মৌখিকভাবে সতর্ক করে দেন। ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরো জানান, তাঁরা এই তথ্য পাওয়ার পর থেকেই দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। তাঁরা জানতে পেরেছেন, এই জঙ্গিদের উদ্দেশ্য রাজধানীর কয়েকটি থানাসহ সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থাপনায় হামলা চালানো। গত ২২ জানুয়ারিতেই তাদের এই হামলা চালানোর কথা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তারা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

তবে এ দেশের পুলিশ ও গোয়েন্দারা যে বিষয়টি টের পেয়ে গেছেন, সেটা তারা জেনে গেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরো জানান, তাঁরা এই জঙ্গিচক্রকে ধরার জন্য ইতিমধ্যেই একাধিক বিশেষ দল গঠন করে মাঠে নেমে পড়েছেন। সোর্স নেটওয়ার্কও বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম গতকাল সোমবার কালের কণ্ঠকে জানান, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে কেন্দ্র করে একটি মহলের বিরোধিতা নিয়ে বিরাজমান উত্তেজনা, সরকার উৎখাতের নানামুখী ষড়যন্ত্রসহ আরো বেশ কিছু কারণে সম্প্রতি রাজধানীতে পুলিশের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। তবে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমোডর সোহায়েল গত রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, তাঁরাও বিভিন্ন সূত্র থেকে এ রকম খবর পেয়েছেন।

কিন্তু তাঁরা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি বলে খবরটি 'ঠিক না' ধরে নেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা জোরদার : গণভবন আর বঙ্গভবনের নিরাপত্তা জোরদারের ব্যাপারে সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, মূলত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়গুলো দেখেন এসএসএফ ও পিজিআর সদস্যরা। তবে পুলিশের সিআইডি, এসবি, ডিবি, এপিবিএন, সংশ্লিষ্ট থানা, ট্রাফিক পুলিশ এবং ফায়ার ব্রিগেডও তাদের অবস্থান থেকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব পালন করে। এ ছাড়া রাষ্ট্র ও সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাও এই নিরাপত্তার দায়িত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা এবং বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তাঁদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরো জোরালো করা হয়েছে।

পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এক বাক্যে শেষ করার মতো কথা হচ্ছে সঠিক ও যথাযথ নিরাপত্তা দিতে যতটা সতর্ক, শক্তিশালী আর দায়িত্বশীল হওয়া দরকার, পুলিশ সেই অবস্থানেই আছে। ' তিনি এর বাইরে আর কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান। নিরাপত্তা সম্পৃক্ত একাধিক সূত্র কালের কণ্ঠকে জানায়, রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবন আর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনের নিরাপত্তা এমনিতেই সব সময় জোরালো থাকে। তবে সম্প্রতি সেনাবাহিনীতে ঘটে যাওয়া কিছু অপচেষ্টা ও মানবতাবিরোধী বিচারকে কেন্দ্র করে একটি মৌলবাদী চক্রের নানা অপতৎপরতাসহ গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের কারণে গত ১০ জানুয়ারি থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো বাড়ানো হয়েছে। চন্দ্রিমা উদ্যানেও অতিরিক্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গণভবনকেন্দ্রিক পুলিশ ফোর্সও দ্বিগুণ করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়। রাত ১১টার পর গণভবনের পাশের সড়কে সাধারণের চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী সাখাওয়াত হোসেন গতকাল টেলিফোনে কালের কণ্ঠকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আরো বেশি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।