আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিত্রনায়িকা মৌসুমি ও ছেঁড়া দ্বীপের একটি পাথরের পেছনের গোপন ইতিহাসের সন্ধানে...

একজন ভীরু মানুষ... জীবনের প্রথম যে মেয়েটিকে দেখে মনে হয়েছিল এই মেয়েকে আমার চাই-ই চাই, যে মেয়েটিকে দেখে সকল লাজ লজ্জাকে পরাজিত করে মা-কে বলেছিলাম- “মা আমি এই মেয়েকে বিয়ে করবো” (বিশেষ দ্রষ্টব্য তখন আমি দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম ); সেই মনমোহিনী স্বপ্নচারিণীর নাম চিত্রনায়িকা মৌসুমি, আমার চাওয়া প্রথম নারী। প্রথম যেবার সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাই সেটা ছিল এক অবিস্বরণীয় রোমাঞ্চ সফর। সম্বল ছিল তিন বন্ধুর ৪০০ করে সাকূল্য ১২০০ টাকা এবং ট্রেনের ফুল-ফ্রী পাশ, যা নিয়ে শুরু হয় আমাদের সমুদ্রযাত্রা । লক্ষ্য ছিল এই টাকার মধ্যে ঢাকা থেকে সেন্টমার্টিন আইল্যান্ড ঘুরে আবার ঢাকায় ফিরে আসা। কিন্তু সেন্টমার্টিন পৌছানোর পর অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়ালো যে আমরা পেটের চাহিদা মিটাইলে আর চট্টগ্রাম পৌছাইতে পারবো না ।

এই সময় দৈবযোগে আমাদের পরিচয় হয় একজন উদারমন কোষ্টগার্ড সদস্যের সঙ্গে, যিনি দেবদূতের মত আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন । তাঁর বাড়ি ছিল উত্তরবঙ্গের বগুড়া জেলায় (বগুড়ার মানুষের আতিথিয়তা আসলেই অতুলনীয় যা এই ঘটনার পরেও পেয়েছি)। তিনি আমাদের তিনজনকে আইল্যান্ডের চারিপাশ বোটে করে ঘুরিয়েছিলেন, দু’বেলা পেটপুরে সমুদ্রের টাটকা মাছ আর শুটকি দিয়ে ভাত খাইয়েছিলেন তারপর আবার টেকনাফ পর্যন্ত ফ্রী পৌছার ব্যবস্থাও করেছিলেন। আর ভ্রমণের সময় উপরি হিসেবে শুনিয়েছিলেন নানা কেচ্ছা-কাহিনী; কোনটা ভূতের, কোনটা জল-দেও(!) এর, কোনটা মানুষ পাথর হয়ে যাবার, কোনটা আবার ছিল তার কোষ্টগার্ড জীবনের সত্যিকারের রোমহর্ষক কাহিনী । তাঁর সাথে আমরা ছেঁড়া দ্বীপে যায়, কাঁচের মত স্বচ্ছ পানি আর তাতে বিচিত্র সব প্রবাল ও শৈবাল আমাকে মুগ্ধ করে দেয় তবে তাঁর গল্প বলা ও গল্পের বিষয়গুলো ছিল গরম ভাতে ঘি-এর মত।

তাঁর বক্তব্য অনুসারে, ছেঁড়া দ্বীপটা দেখে মনে হয় কেউ এই ছোট্ট দ্বীপটাকে সেন্টমার্টিন থেকে ছিঁড়ে এনে এখানে বসিয়ে দিয়েছে তাই এর নাম ‘ছেঁড়া দ্বীপ’। সেখানে তিনি আমাদের প্রমাণ সাইজের একটি মাঝ ভাঙ্গা পাথর দেখিয়ে বলেন এই পাথরটির নাম “মৌসুমি পাথর”; আমি ভাবলাম হয়তো মৌসুমের একটা নির্দিষ্ট সময় এই পাথরটা ডুবে থাকে তাই এর নাম এমন কিন্তু তিনি তাঁর স্বভাব সুলভ রসমিশ্রিত ভঙ্গিতে ঘোষণা করলেন যে চিত্রনায়িকা মৌসুমি কোন এক ছবির শূটিং পারপাসে ঐ পাথরটায় ওঠে আর তার ভার সইতে না পেরে ভেঙ্গে যায় পাথরটি আর তারপর থেকেই ঐ পাথরটির নাম হয়ে যায় “মৌসুমি পাথর” । এই কথা শুনে আমার মন সাগরে উথাল পাথাল ঢেউ উঠল, ভেঙ্গে চুরমার হয়ে আসলো প্রেমিক মন ভুলে যাওয়া প্রায় এক প্রেমিকার অপমানে। এতবড় বাজে কথা আমার মৌসুমিকে নিয়ে??? হয়তো সে মাঝে একটু স্বাস্থ্যবতী হয়েছিল কিন্তু কেউ কি অস্বীকার করতে পারবে তার মত সুন্দরী ও অভিনয় পারদর্শী নায়িকা খুব কমই আছে বাংলা সিনেমায়। আমি মানতে পারিনি আমার আমার স্বপ্নচারিণীর নামে এই অপবাদ, তাই জাতির কাছে প্রশ্ন রাখতে চায়- কি ঘটেছিল সেই পাথরের সাথে? কেন তার নাম ‘মৌসুমি পাথর’? ঘটনা কতখানি সত্য? পোষ্টের শেষে সেই কোষ্টগার্ড ভাইয়ের প্রতি রইলো আকুন্ঠ শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

তাঁর মত মানুষেরা আছে বলেই এখনো পৃথিবী বাসযোগ্য আছে। এই পোষ্টকে কেউ ‘ফানপুষ্ট’ মনে করলে লেখক তার ‘সেন্স অব হিউমারে’ ভ্রুকুঞ্চিত দৃষ্টিতে তাকাইবে।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.