আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাঈদীর আইনজীবীর জেরা : একাত্তরে সাক্ষীর বয়স ছিল ১২ বছর

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্যদানকারী প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদারের বয়স ১৯৭১ সালে ছিল ১২ বছর। আজ মঙ্গলবার মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীর জেরার জবাবে তিনি জানান এসএসসি’র নিবন্ধনে তার জন্ম তারিখ ছিল ২০ মার্চ ১৯৫৯ সাল। অথচ গত ৭ নভেম্বর তিনি যখন আদালতে সাক্ষ্য দেন তখন তিনি তার বয়স উল্লেখ করেছিলেন ৬০ বছর। সে হিসেবে ১৯৭১ সালে তার বয়স হয় ২০ বছর এবং জন্ম তারিখ হওয়ার কথা ১৯৫১ সাল। জন্মসাল ১৯৫৯ হওয়ার বিষয়ে মাহবুবুল আলম জেরার সময় বলেন, লেখাপড়ার ক্ষেত্রে বয়স এরকম হতে পারে।

তিনি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন তবে পাশ করতে পারেননি বলে জানান। তাছাড়া তিনি তার প্রথম স্ত্রী ফিরোজা বেগমের দায়ের করা যৌতুক মামলা এবং অপর একটি চুরির মামলায় হাজতবাস এবং জেল খেটেছেন বলে আদালতে স্বীকার করেন জেরার সময়। প্রথম স্ত্রীর যৌতুক মামলা বিষয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, সেটা ছিল একটি ষড়যন্ত্র মামলা এবং বর্তমানে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন। চুরির মামলায় সাজা ভোগের বিষয়ে তিনি জানান, সুভাষ চন্দ্র নামের এক লোক তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছিলেন। তিনি যে ওই মামলায় আরো কয়েকজনের সাথে আসামী- তা তিনি জানতেন না।

পরে ওই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বলে জানান। চুরির মামলায় রায় দেয়ার সময় তিনি আদালতে হাজির ছিলেন কিনা আইনজীবীর এ প্রশ্নের পর আদালত বলেন, মামলা থেকে খালাস পাওয়ার পর আর কিছু থাকেনা। তাই এ নিয়ে আর প্রশ্ন করার দরকার নেই। তখন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম বলেন, রায়ের দিন আদালতে হাজির থাকা এবং রায়ের পর আবার জেলে পাঠানোর ভিন্ন মানে আছে। সাজা হয়েছিল বিধায়ই তো খালাসের প্রশ্ন আসে।

এছাড়া স্ত্রীর যৌতুক মামলা বিষয়ে জেরার সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে আপত্তি উত্থাপন করা হলে তখন মাওলানা সাঈদীর অপর আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, যে লোক স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করেন সে লোকতো আরো অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অনেক কিছু করতে পারেন। যৌতুক দাবি একটি ফৌজদারি অপরাধ এবং তিনি তাতে কনভিকটেড হয়েছেন। কাজেই এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অপরিহার্য। এ সময় অপর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, আমার মক্কেল আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে তিনি অনেক জঘন্য অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু তিনি নিজে কোন ধরনের লোক, তার চরিত্র কি রকম সেটা জানা অবশ্যই দরকার।

তখন আদালত এ বিষয়ে জেরার অনুমতি দেন আপত্তিসহকারে। মাহবুবুল আলম প্রথম দিন সাক্ষ্যে নিজেকে গোটা পিরোজপুর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা গোয়েন্দা দাবি করলেও আজকের জেরায় তিনি পিরোজপুরের রাজাকার কমান্ডার কে ছিলেন তা বলতে পারেননি। পিরোজপুর সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি কে ছিলেন তাও বলতে পারেননি। জেরাকালে তিনি স্বীকার করেছেন জিয়ানগরে রাজাকার আল বদর, আল শামসের কোনো লোক ছিলনা। স্বাধীনতার পর দালাল আইনে পিরোপজুর এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগে তিন শতাধিক লোকের বিরুদ্ধে মামলা হলেও সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।

তিনি তখন মাওলানা সঈদীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা, জিডি বা কোথাও কোন অভিযোগ করেননি বলে স্বীকার করেন। তাছাড়া স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের শাসনামল, এরপর এরশাদের শাসনামল এবং তারপরে আবার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলেও তিনি মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। ১৯৯২ সালে গণআদালত গঠিত হলে সেখানেও তিনি তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি বলে স্বীকার করেন জেরায়। ২০০৯ সালে তিনি কার দ্বারা প্ররোচিত হয়ে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলা করেন এ প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুল আলম বলেন নিজ উদ্যোগে মামলা করেছেন। (বিস্তারিত আসছে)।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.