আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কখন যে ভালবেসেছি তোমাকে !! (পর্ব ০২)

আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! ১ম পর্ব আমার দিকে একটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল “প্লিজ নিন” । আমি খানিকটা অবাক হওয়ার ভান করলাম একটু খুশিও হলাম । “Thank you” “আপনি কি এমন কাজ প্রায়ই করেন?” “কি রকম কাজ?” আমি না বোঝার ভান করি । “এই যে একটু আগে যা করলেন “ আমি হাসি । বলি “আসলে ব্যপারটা ওরকম না ।

কেউ যদি আমার কাছে কিছু চায় আর সেটা যদি আমার কাছে থাকে তাহলে কেন জানি দিয়ে দেই”। “কিন্তু তাই বলে পকেট খালি করে দেওয়া তো ঠিক না “। ‘ঠিক না । তবুও । দেখুন এই যে ঐ বাচ্চা গুলো আইসক্রিম পেয়ে যে আনন্দিত হয়েছে , ওদের মুখে যে হাসি এসেছে , এর কি কোন তুলনা আছে বলুন? কাউকে কষ্ট দেওয়া খুব সহজ কিন্তু কাউকে আনন্দ দেওয়া খুব কঠিন ।

কারো মুখে একটু হাসি আনতে যদি আমার খানিকটা কষ্ট হয় , হোক না” । আমার কথা গুলো মনে হল অনুশেখার পছন্দ হয়েছে । ও হাসলো । সত্যি খুব সুন্দর করে হাসল । যদিও আমার সব কিছু প্লান করা তবুও কেন জানি অনুশেখার হাসি দেখে বুকের মাঝে একট অদ্ভুদ অচেনা অনুভূতি হল ।

“আপনার হাসিটা অনেক সুন্দর” । ও আবার হাসলো । “আপনি কোথায় থাকেন?’ কি কথার কি উত্তর । “আমি থাকি আজিমপুর” । “ওমা সে তো অনেক দুরে ।

আপনি যাবেন কিভাবে?” “বাসে|” । “কিন্তু আপনার কাছে তো টাকা নাই” । নিজের জ্বিব কাটলাম । তাইতো ভুল হয়ে যাচ্ছিল । বললাম “সমস্যা নাই ।

চলে যাবো” । “যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আমি আপনাকে পৌছে দেই ? আমার সাথে গাড়ি আছে” । আমি একটু খুশি হলাম । বললাম “আপনার বাসা কি ঐ দিকেই । না ঐ দিকে না ।

এইতো কাছেই” । “না না তাহলে যাওয়ার দরকার নাই । সত্যিই বলছি একদমই প্রয়োজন নাই” । “তাহলে এতো দুর আপনি কিভাবে যাবেন ? আপনার কাছে তো কোন টাকা নেই” । আমি মনে মনে খানিকটা অবাক না হয়ে পারলাম না ।

এই মেয়েটা আসলেই এরকম কেন ? আমি অপরিচিত একটা মানুষ আধা ঘন্টাও হয়নি এর সাথে কথা বলছি । তবুও আমি কিভাবে বাড়ি যাবো তা নিয়ে সে চিন্তিত । কেন? এরকম মানুষ কি আছে আজকাল? “কি ভাবছেন” ? “ভাবছি .... আচ্ছা আমার নাম কি বলুন তো?” “ নাম তো বলেন নি আপনি ! কি নাম আপনার?” “ আমরা কথা বলছি কতক্ষন?” “ এই ২০ মিনিট প্রায়” । “তাহলে একজন অপরিচিত মানুষের জন্য এতো চিন্তিত?” অনুশেখা কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থাকল । তারপর বলল “চিন্তা করছি কারন আমার কাছে মনে হয়েছে আপনি একজন ভাল মানুষ ।

একজন ভাল মানুষের একটু উপকার করতে পারলে আমার খুব ভাল লাগবে” । “এতো তাড়াতাড়ি কিন্তু মানুষকে চেনা যায় না” । অনুশেখা হাসল । “আমার মন বলছে আপনি ভাল মানুষ” । “ওকে ওকে মেনে নিলাম আমি ভাল মানুষ ।

তাহলে আমার একটা উপকার করুন” । “বলুন প্লিজ । আমাকে ২২ টাকা দিন আর আপনার মোবাইল নাম্বরটা” । অনুশেখা খানিকটা অবাক হল । “২২ টাকা?” “ব্যাখ্যা করছি ।

২২ টাকা হল বাস ভাড়া । মোবাইল নাম্বরটা হল ঐ ২২ ফেরত্ দেবার জন্য” । অনুশেখা হেসে ফেলল । বলল “আপনি যে ভাল মানুষ তার প্রমান কিন্তু আবার দিলেন । “কিভাবে দিলাম ।

আমি নিজেই তো বুঝলাম না” । ও কিছু বলল না । ব্যাগ থেকে চকচকে একটা ১০০ টাকার নোট বের করে দিল । “২২ টাকা” । “সরি এর থেকে ছোট নোট আমার কাছে নেই” ।

তারপর ও মোবাইল নাম্বার দিল । বলল “আমার নাম অনুশেখা । আপনার ?” “ইফতেখার হাসান । তবে অপু বলে ডাকলে ভালো হয়” । তারপর আমি চলে আসি ওখান থেকে ।

ঐ দিন বিকালেই ১০০ টাকা অনুশেখার নাম্বরে পাঠিয়ে দিই । কিন্তু ওকে কল করি না । কেন জানি খুব ইচ্ছা করছিল ওর সাথে কথা বলার জন্য । কিন্তু করি না । অনুশেখাকে ফোন করি আরো ৩ দিন পর ।

মেয়েদের সাইকোলজি আমি মোটামুটি ভাল বুঝি । তাই আমি জানতাম আমার সাথে কথা বলার জন্য অনুশেখা অপেক্ষা করে আছে । ফোন দিলাম আমি “হ্যালো? অনুশেখা?” “ওহ্ আপনি? আমিতো ভেবেছিলাম আপনি হয়তো আমাকে আর ফোনই করবে না । টাকা পাবার পর আমি ওয়েট করছিলাম যে আপনি ফোন করবেন” । “সরি ।

আসলে সত্যি বলতে কি আমারও খুব ইচ্ছা করছিল আপনাকে ফোন করি । কিন্তু দ্বিধার কারনে করতে পারি নি । আপনি কি না কি মনে করেন?” “বলেছে আপনাকে ! কিছু মনে করলে কি আপনাকে ফোন নম্বর দিতাম বলুন ? আমি সত্যি আপনার ফোনের জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম” । কিছুক্ষন নিরবতা । “আপনার কি আজ বিকালে একটু সময় হবে?” “আমি বলি কেন বলুন তো?” “আমি আপনার সাথে একটু দেখা করতে চাচ্ছিলাম” ।

“বিকালে তো আমার একটু কাজ আছে” । “ও” অনুশেখাকে মনে হল যেন একটু হতাশ হল । “তবে” । “তবে?” “আপনি ইচ্ছা করলে এখন আমার সাথে দেখা করতে পারেন । আমি এখন ঐখানেই আছি যেখানে আমাদের দেখা হয়েছিল” ।

… “সত্যি?” “আপনি একটু দাড়ান আমি এক্ষুনি আসছি। " (চলবে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।