আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার পড়া কিছু চাকমা আর আরবি প্রবাদ শেয়ার করলাম

বাংলা ব্লগের আকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা। বাংলা ব্লগকে বাঁচাতেই আমার আবির্ভাব! ১। চাকমা সমাজ পিতৃতান্ত্রিক। বিয়ের পর নারী স্বামীর গৃহে চলে যায়। সেই বাড়িই তার নিজের বাড়ী।

তখন বাবার বাড়ির চেয়ে স্বামীর বাড়ির স্বার্থর্ক্ষাই তার কাছে মুখ্য দাড়াঁয়। এ প্রসঙ্গে চাকমা সমাজে একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদঃ “যে নত উদে সে ন পানি ঈজে ” অর্থাৎ যে নৌকায় উঠে সে নৌকার পানি সেচন করে, নৌকার আরোহীকে নৌকাকে ডুবার হাত থেকে রক্ষা করতে হয়। তাই নৌকার ছিদ্র দিয়ে পানি উঠলে তা অপসারণের দায়িত্ব আরোহীর। সংসারে পরিবার হলো নৌকা সদৃশ। পরিবারের সকল সদস্যের স্বার্থ সংরক্ষণ পরিবারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।

নববধূ স্বামীর বাড়িতে এসে সে দায়িত্ব গ্রহন করে। ২। শাশুড়ি বৌকে সরাসরি কোন কিছু না বলে অনেক সময় তার কুমারী মেয়ের উপর প্রয়োগ করে ইঙ্গিতে বৌকে শিক্ষা দান করে থাকেন। আর এভাবে সৃষ্টি হয়েছে একটি চাকমা প্রবাদঃ- “ঝিয়্যরে মারি বৌরে শিগায়” ৩। নারী অপরিমিত আহার আমাদের দেশে নিন্দনীয়।

এ নিয়ে একটি চাকমা প্রবাদঃ- “মিলে রেক্ষস পিলে ডাঙর” অর্থাৎ স্ত্রী পেটুক হলে বড় হাড়িতে ভাত রান্না চাপানো থাকে। ৪। বড় ভাইয়ে বিধবা স্ত্রিকে বিয়ে করা চাকমা সমাজে বৈধ। বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও দেবর হচ্ছে খেল্যে কুটুম অর্থাৎ তাদের মধ্যে ঠাট্টার সম্পর্ক। দেবর শব্দটি বর থেকে সৃষ্ট বলে অনেকের ধারনা।

এ নিয়ে চাকমা সমাজে বহুল প্রচলিত প্রবাদঃ- “ভোজ অলদে আধা মোক” অর্থাৎ বড় ভাইয়ের স্ত্রী হলো অর্ধেক স্ত্রী। ৫। স্ত্রীকে অর্ধাঙ্গী বা Better Half বলা হয়। বস্তুত পুরুষের জীবন পূর্ণতা লাভ স্ত্রীর উপর নির্ভর করে। উপযুক্ত স্ত্রী পাওয়া সৌভাগ্যর বিষয়।

কিন্তু অনেকের ভাগ্যে যথা সময়ে বৌ জোটেনা। বয়স বেশী হইয়ে গেলে যেনতেন পাত্রীও গ্রহনে আপত্তি থাকেনা। এ নিয়ে চাকমা সমাজে প্রবাদে বলা হয়েছেঃ- ” নেই মোগত্তুন কান মোগ ভালা সবায় ন অলে রাজার ঝি ভালা” অর্থাৎ মোটেই স্ত্রী না জোটার চেয়ে কানা স্ত্রী ভালো। আর সেটিও না জুটলে রাজকন্যা ভালো। এখানে রাজার মেয়ে বলতে কাজ না জানা অকর্মণ্য নারী বোঝানো হয়েছে।

চাকমা সমাজে নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশী কঠোর পরিশ্রম করে। গৃহ কর্ম তো নারীদের অবশ্য করনীয়। রাজকন্যারা এইসব পরিশ্রম করতে পারেনা। তাই অকর্মণ্য বোঝাতে রাজ কন্যা শব্দটি প্রয়োগ। ৬।

ছেলে মেয়ের উপর বাবা-মায়ের দোষগুণ প্রভাব বিস্তার হলে এই প্রবাদটি চাকমারা বলে থাকেঃ- “বাব চা পুত চা মা চা ঝি চা” অর্থাৎ ছেলে বাবার মতো আর মেয়ে মায়ের মতো। এ জন্য বিয়ের সময় কনের মায়ের গুণ, বংশ প্রভৃতি দেখা হয়ে থাকে। ৭। সৎমা নিয়ে চাকমা সমাজে নেতিবাচক উক্তি পাওয়া যায়। সৎমা নিয়ে প্রবাদটি প্রায় বলা হয়ে থাকেঃ- “সাদাঙা হলে আদাঙা উড়ে” অর্থাৎ সৎমা বলতেই আত্মা খাঁচা ছেড়ে চলে যায়।

৮। খারাপ লোক কোনদিন ভালো হয়না। যতই চেষ্টা করা হোকনা কেন খারাপ লোক ভালো হতে পারেনা। এ নিয়ে আদিবাসী চাক্‌মাদের একটি প্রবাদ বাক্য আছেঃ- “ যে হুগুরোর লেজ বেঙা, আজার চুমোত বোরেই তলেও উজু ন অই” অর্থাৎ যে কুকুরের লেজ বাঁকা এবার কিছু আরবি প্রবাদ ❖ বুদ্ধির সীমা আছে কিন্তু বোকামীর কোন সীমা নেই। ❖ জ্ঞানী মূর্খকে চিনতে পারে কেননা সে জ্ঞানী।

পক্ষান্তরে মূর্খ জ্ঞানীকে চিনতে পারে না, কেননা সে মূর্খ। ❖ বন্ধুত্ব একটি ছাতার ন্যায়। বৃষ্টি যতই প্রবল হয় ছাতার ততই প্রয়োজন পড়ে। ❖ পা পিছলে পড়ে যাওয়া লজ্জার কথা নয়। বরং যথা সময়ে উঠে না দাঁড়ানোই লজ্জার ব্যাপার।

❖ ভূল করা দোষের কথা নয় বরং ভূলের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা দোষণীয়। ❖ মানুষের সাথে বন্ধুত্ব ছিন্ন করে অর্থ উপার্জন করতে যেও না। কারণ, বন্ধুত্ব স্থাপনই অর্থাপর্জনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ❖ মানুষের সাথে সে রূপ আচরণ কর যেমন তারা পছন্দ করে। নিজের পছন্দ মাফিক আচরণ কর না।

❖ তর্কে জেতা বুদ্ধিমানের কাজ নয় বরং বুদ্ধিমানের কাজ হল তর্কে না জড়ানো। ❖ আহমকের সাথে তর্ক কর না। কারণ, মানুষ হয়ত দুজনের মাঝে পার্থক্য করতে ভূল করবে। ❖ তোমার স্ত্রীর রুচি বোধকে অবমূল্যায়ণ কর না। কারণ, সে তোমাকে প্রথম পছন্দ করেছে।

❖ তোমার পিঠে কেউ ততক্ষণ পর্ন্তত চড়তে পারবে না যতক্ষণ না তুমি পিঠ নিচু কর। ❖ তুমি যতটা মূল্যবান ততটা সমালচানার পাত্র হবে। ❖ যে অধিকার আদায়ের পেছনে চেষ্টা চালানো হয় তা কখনই বৃথা যায় না। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।