আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইংলিশ মুভি বাংলা রিভিউ- “The Adventures of Tintin”

প্রায় দুই বছর আগে জানতে পারি কমিক জগতের সবচাইতে জনপ্রিয় চরিত্র টিনটিন আসতে চলেছে রুপালি পর্দায়। তাও আবার সাথে রয়েছেন Steven Spielberg নির্মাণ। শুনতেই একেবারে শিউরে উঠি। দুবছরের প্রতিক্ষার পর দেখলাম সেই দুরন্ত টিনটিনকে সাথে তার সঙ্গী Snowy ( কুট্টুস)। দুর্দান্ত টেকনোলজির মাধ্যমে ফুটিয়ে আনা হয়েছে টিনটিন, কুট্টুস, ক্যাপ্টেন হ্যাডককে।

কিন্তু কেন জানি মনে হলো একটা কার্টুন দেখলাম। মুভিটি The Crab with the Golden Claws (কাঁকড়া রহস্য), The Secret of the Unicorn ( বোম্বেটে জাহাজ) এবং Red Rackham’s Treasure ( লাল বোম্বেটের গুপ্তধন) এই তিনটির কাহিনী নিয়ে এক খিচুড়ী রাধা হয়েছে। খিচুড়ীতে মশলা লবণ সব পরিমাণ মত হলেও হলুদ দিতে ভুলে গেছে। তাই তৈরী হয়ে সাদা খিচুড়ী। সাদা রংয়ের খিচুড়ীকে খেতে খিচুড়ী লাগলেও দেখতে তো খিচুড়ী লাগেনা।

কাহিনী জানা যাক । টিনটিন ( Jamie Bell) ও তার পোষা কুকুর Snowy ( কুট্টুস) একদিন নীলক্ষেতের মোড়ে এক ভয়ংকর সুন্দর জাহাজের মডেল দেখে অভিভূত হয়ে যায়। সাথে সাথে কিনে ফেলে। কিন্তু সাথে সাথে আরো দুজন ঝাপিয়ে পড়ে সেই জাহাজ টিনটিনের কাছ থেকে কেনার জন্য। তার একজন ছিলেন ইভান সাখারিন (Daniel Craig)।

আজব ব্যাপার ঘটনা কী? কি আছে এই জাহাজে? টিনটিন গন্ধ পায় এক রহস্যের । কুট্টুসের দুষ্টামির কল্যাণে জাহাজটি পড়ে গিয়ে ভেঙে যায়। জাহাজের মডেলের ভিতর ছিল এক চিরকুট যার মধ্যে ছিল কিছু গোপন সংকেত। এরপর কয়েকদিন পর জাহাজটা যায় চুরি হয়ে। কিন্তু চোর জাহাজ পেলেও চিরকুট পায়নি।

যেটা টিনটিন পেয়ে যায়। জাহাজটি নিশ্চয়ই সাখারিন সরিয়েছে। টিনটিন গোপনে ঢুকে সাখারিনের বাসায়। গিয়ে দেখে তার জাহাজকে। কিন্তু আসলে জাহাজটি সাখারিনেরই ।

আসলে জাহাজের মোট তিনটি মডেল আছে যে তিনটির চিরকুট মিলে এক গুপ্তধনের খোঁজ দেয়। কার গুপ্তধন হচ্ছে স্যার ফ্রান্সিস হ্যাডকের । যার সর্বশেষ বংশধর ক্যাপ্টেন হ্যাডক ( Andy Serkis) কে বন্দী করে রেখেছে সাখারিন। কীভাবে হ্যাডকের সাথে মিলে টিনটিন গুপ্তধনের রহস্য উদ্ধার করে সেটারাই কাহিনী চলতে থাকে। রিভিউতে কাহিনীর ভাগটা লিখতে গিয়েই মেজাজটা খারাপ হয়েগেল।

অসাধারণ মানের তিনটি কাহিনী মিলে এক কথায় যাতা বানাইসে। অনেক দৃশ্যতে মনে হয় কাহিনীটি সম্পূর্ণ অমূলক। কোন যুক্তি নেই। যাই হোক যারা টিনটিনের ভক্ত তাদের তো সব কাহিনী জানা। তাদের মূল আকর্ষণ হলো টিনটিন , কুট্টুস এবং হ্যাডককে রুপালী পর্দায় জীবন্ত ভাবে দেখা।

কিন্তু এইখানে পেজগি লাগাইসে শালা Spielberg। আমিও James Cameron এর চাইতেও বস। Cameron , Avatar বানাইসে Motion Capture দিয়া। আমিও বানামু। আরে ব্যাটা! টিনটিন কি অন্য গ্রহের প্রাণী নাকি? যদিও আগে থেকে বলে রাখি ।

কমিক বইয়ের টিনটিনের চেহারাটা আসলে একটু উদ্ভট ধরণের। এরকম চেহারার মানুষ পাওয়া কঠিন। আর কুট্টুসের মত সুন্দর কুকুর পাওয়া আসলেই অসম্ভব। সেকারণে মুভিটিতে টিনটিন ও কুট্টুসকে খারাপ লাগে নাই। কিন্তু এছাড়া প্রত্যেকটি চরিত্রকে একেকটি পুতুল লেগেছে।

যখন আমার দাড়ি উঠা শুরু হয় ভেবেছিলাম ক্যাপ্টেন হ্যাডকের মত দাড়ি রাখবো। ক্যাপ্টেন হ্যাডকের ভক্ত নিঃসন্দেহে টিনটিনেরর ভক্তদের চাইতে বেশি। কিন্তু সেই ক্যাপ্টেন হ্যাডককে একটা সার্কাসের জোকার লাগসে। ইয়া বিশাল একটা নাক। মোটা একটা ব্যাটা।

মুভিটি সাধারণ একটি মুভি হলে অনেক গুণ ভালো লাগতো দেখতে। মুভিটিতে কেউ যে আসলেই অভিনয় করেছে বলে মনেই হয়নি। পুরাই কার্টুন লাগসে। যদিও মুভিটিতে ক্যাপ্টেন হ্যাডক ও কুট্টুসের অসাধারণ কিছু দৃশ্য আছে। বিয়াংকা কাস্তাফিয়োরের দৃশ্যটি দুর্দান্ত রকমের হাসির।

কিছু একশান বেশ ভালো লেগেছে। টিনটিনকে এখানে একজন নায়ক বলেই মনে হয়েছে। Spielberg এর কাছে একটু বেশি সবাই আশা করতেই পারি। টিনটিন মার্ভেল কমিকসের কোন বেকুব মার্কা চরিত্র নয়। সেই জন্য তার আবেদন অনেক বেশী।

টিনটিনের creator , Georges Herge Remi কেও মুভিটিতে এক দৃশ্যে দেখা গেছে। সব মিলিয়ে একজন টিনটিন ভক্তের মন ভরাতে পারেনি। রেটিং- ১.৫/ ৫ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.