আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ ২৭ সে মার্চ। প্রকাশ করলাম গোপন তথ্যঃ "যে কারনে কোনো মেয়েকে বাহু বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারিনি আজও

আমি আমার "বাস্তব" কর্মব্যস্ত জীবনের ফাকে একটু বিনোদনের আশায় সুধু মাত্র ফান/মজা/টাইম পাশ/বন্ধুত্ব/দুষ্টামি করার জন্যেই আমার " "ভার্চুয়াল লাইফ" ব্যাবহার করি। আমার কোনো কমেন্টে বা পোস্টে কেউ যদি আঘাত পান, তাহলে সরাসরি জানাবেন, আমি“প্রকাশ্য সরি” বলে দিব। আমার ছ্যাকা দিবস উপলক্ষে একটি "পুর্ন দৈর্ঘ্য রোমান্টিক ট্রাজেডিক সামাজিক আত্তজীবনি মুলক" পোস্ট দিলাম। .................................... .................................... রেশমী চূড়ি হাতে এলোমেলো চুল স্কুল পলাতক মেয়ে করেছে ব্যাকুল, দুরু দুরু কাঁপে বুক যদি দেখে হায় এভাবে কি তার সাথে প্রেম করা যায়, বুঝেও না বুঝে তুমি গেছো বহুদূর ব্যথায় ভরা বুক। তুমি নাই, তুমি নাই, তুমি নাই বাসরী কত ফাগুন যায় বলো কি করি।

রোজ তুমি স্কুল পলায়ে পলায় হাত দুটি ধরে মোর খুচো দিয়ে বলতে, স্কুল ব্যাগ ছুড়ে ফেলে দিয়ে সুধু গীটার গীটারে ঝড় তুলতে, শশীকে নিয়ে কিছু ভাবলে সব চাইতে বেশি মনে পড়ে নোভার ফজল ভাইর এই গান। বাস্তব অর্থেই “ও” স্কুল পালিয়ে আসত আর আমি গিটার বাজিয়ে ওকে গান শুনাতাম। আজ সেই ভয়াল ২৭শে মার্চ, যে দিন থেকে আমরা দুইজন আলাদা হয়ে যাই। আলাদা হতে হয় সেচ্ছায়। .................................... হাম্বালীগ ইলেকশনে ২০০১ সালে কৃতিত্বের সাথে ফেল মারে।

বিম্পি নির্বাচনে জয়লাভ করে, সাথে তাদের সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনিও এলাকায় আসতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে হাম্বালীগ সমর্থক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসেবে এলাকায় থাকা আমাদের জন্যে কিঞ্চিত ঝুকিপুর্ন হয়ে যায়। তাই আমরা মিরপুর শ্যাওড়াপাড়ায় চলে আসি। ৫ তলা বাড়ির ২ তলায় আমাদের নতুন ভাড়া করা ফ্লাট। আমাকে দেয়া হয় এটাস্ট বারান্দা সহ রাস্তার দিকের রুম।

ভালই লাগে, নিজের রুমে বসে সারাদিন গিটার নিয়ে কাজ করা ও ইচ্ছে করলে বারান্দায় গিয়ে বিড়ি খাওয়া। (এর আগের বাসায় আমার বারান্দা ছিল না, তাই বাসায় বিড়ি খেতে পারি নাই। এখন বারান্দা সহ রুম পেয়ে আমি ব্যাপুক আনন্দিত হইলাম) সামনে একটি দোতালা বাড়ি। যার বারান্দা ও আমার বারান্দা পাশাপাশি। মাঝ দিয়ে রিক্সা যাবার গলি।

মানে এই দিক দিয়ে হাত বাড়ালে এবং ঐ দিক দিয়ে হাত বারালে মাঝে মাত্র ২ ফিট গ্যাপ থাকতে পারে। আমি তখন আবার ব্যাপুক ভাব/মাঞ্জা মেরে চলতাম । তবে এলাকার লোকজন ইকটু আড় চোখে তাকাত। কারন হয়তোবা আমার ঘার পর্জন্ত লম্বা চুল। স্কুল লাইফে আমার একটি ব্যান্ড দল ছিল, যেটা আবার গত বছর স্টারসার্চে নমিনেশন পেয়ে পারফর্ম করার কথা ছিল।

কিন্তু পিচ্চি পিচ্চি পুলাপাই এক সাথে থাকলে যা হয় আরকি, ব্যান্ড ভেঙ্গে চুরমার। ভোকাল নিজে সোলো বের করে, ড্রামার চলে যায় অন্য ব্যান্ডে, গিটারিস্ট চলে যায় বিদেশে পড়াশুনা করতে। আমি ও কিবোর্ডিস্ট সুধু একা একা পড়ে রই। আমি আমার স্বভাব মত হেব্বি ভাব নিয়া বারান্দায় একা একা আড্ডা দেই, গান শুনি আর ভাবি কি করা যায়। যেই ব্যান্ডের জন্য এত কস্ট করলাম, পড়াশুনা চাঙ্গে উঠাইলাম, এক চান্সে ডাইরেক্ট ম্যাট্রিক পাশ করতেও পারলাম না, সেই ব্যান্ড এখন ভেঙ্গে খান খান!!! এভাবেই কেটে যাচ্ছিল আমার রাত।

দিনের বেলা কলেজে ভর্তি হবার জন্যে ছূটা ছুটি করতাম। বাসা থেকে জানে না আমার রেজাল্ট যে TTP হইছে। TTP মানে “টাইনা টুইনা পাশ”। বাসা থেকে বলা হল নটরডেমে যাই ভর্তি হও। কিসের নটরডেম, এর আগে মিশনারি স্কুলে পইড়াই আমার লাইভ “হেল” হয়ে গিয়েছে, এখন আবার সেই মিশনারি কলেজে?? ।

মাথা খারাপ!!! তাছাড়া আমার এই রেজাল্ট নিয়া ফাদার বেঞ্জামিনের কাছে গেল উনি নির্ঘাত “থাবড়া” দিব । এই রেজাল্ট উনি কোনো দিনই মেনে নিবে না। এর থেকে “ব্যাঙ্গের ছাতা” কোনো প্রাইভেট কলেজে পড়াই ভাল মনে করি। .................................... এইরুপ চিন্তা ভাবনা করে আমার দিন/রাত কেটে যাচ্ছিল। একদিন দেখিলাম সামনের বাড়ির বারান্দায় এক মেয়ে।

না না, একটি না, দুইটা মেয়ে। সম্ভাবত আমার এই “দ্বিঘল কালো দির্ঘ চুল” নিয়া হাসা হাসি করতাছে। পাত্তা দিলাম না। আমি স্বঘোষিত “টিনেজ ব্যান্ড স্টার”, আন্ডার গ্রাউন্ডে আমার কিঞ্চিৎ সুনাম আছে। আমার কি এই সব পাত্তা দিলে চলে??? .................................... এর মাঝে একদিন আমার বারান্দায় এক নতুন অতিথির আগমন ঘটে।

রাস্তায় এক আহত দেশি কুকুর ছানা ব্যাথায় কাৎরাচ্ছিল। আমার বড় বোন উহাকে কোলে তুলে আমার বারান্দায় নিয়ে আসে। এর চিকিৎসা করা ও লালন পালন করার দায়িত্ব আমার উপরে দেয়া হয়। আমিও খুশি মনে সেটা পালন করি। যাক, নতুন এলাকায় একা একা থাকার চেয়ে টাইম পাশ করার মত একটা “বন্ধু” পাওয়া গেল।

কুকুরের নাম দিলাম “মিকি”। আস্তে আস্তে প্রতিবেশিরা অবিরাম ঘেউ ঘেউ’তে “মিকি’কে” চিনিতে পারিল এবং আমাকে “কুত্তাওয়ালা” হিসেবে চিনিল। এভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিন গুল। মাঝে মাঝে ঐ বাড়ির বড় মেয়ের সাথে আমার চোখা-চুখি হয়। এর বেশি কিছু না, কারন “আমি” ও “সে” দুজনেই ব্যাপুক ভাব ও মাঞ্জা নিয়ে চলি।

.................................... এক অখ্যাত প্রাইভেট কলেজে ভর্তির কাজ শেষ করে মামার বাড়ী বেরাতে গিয়েছিলাম। ৩ দিন পরে ঢাকায় আসি। বাসায় এসে আমার বারান্দায় নীল একটি কাগজের চিরকুট পাই, খুব গুছিয়ে সুন্দর করে লিখাছিলঃ আপনি ৩ দিন ধরে কোথায় ছিলেন? বারান্দায় আসেন নাই কেন? আপনি জানেন না, আপনাকে না দেখলে আমার খারাপ লাগে? ওয়াওওওও তাহলে ... (চিৎকার) আমি কিছুটা অবাক ও প্রচন্ড খুশি হয়েছিলাম সেদিন, তারাতারি নিজের রুমের দরজায় বন্ধ করে বারান্দায় বসি আর অপেক্ষায় করি পাসের বাড়ির বারান্দায় কখন ঐ মেয়েটি আসবে? কখন তার রুমের লাইট জালাবে। আমি অপেক্ষায় করি, রাত ১১টা, ১২টা ১টা নাহ, ঐরুমের লাইট বন্ধ। আজ মনে হয় না আর জ্বলবে।

হয়ত কোথাও বেড়াতে গিয়েছে। সকালে একটু দেরি করেই ঘুম থেকে উঠলাম, আমার তো এখন আর স্কুল নেই। কলেজে ভর্তি হয়েছি মাত্র। আচ্চা, ঐ বাড়ির মানুষ কি এসেছে। দোড়ে বারান্দায় যাই।

আআআআ!!! সুন্দরি মেয়েটা দাড়িয়ে আছে যে!!!! আমি অপলক নয়নে অনেক্ষন ধরে তাকে দেখছি, আজ ওকে খুব সন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সুন্দরি মেয়েটা আজ আমার সামনে এসেছে। ও ঈশারা দিয়ে কি যেন বলছে, হ্যা, বুঝতে পারছি, মেয়েটি বের হবে, আমাকে নিচে যেতে বলছে। আমি খুব দ্রুত মুখ ধুয়ে নিচে নামি। .................................... দুজন শ্যাওড়াপাড়ার ভিতরের রাস্তায় হাটছি।

ও ইকটু সামনে, আমি পিছনে। যেন কেউ দেখে ফেললে কিছু না বুঝে। কেউ কথা বলতে পারছি না সঙ্কোচে, ভয় করছে যদি কেউ দেখে ফেলে তাহলে সর্বনাশ!!হেটে হেটে আনন্দ বাজার দিয়ে আবার ফিরতি পথ ধরলাম, তখন আমিই জিজ্ঞেস করিঃ কাল কোথায় গিয়েছিলে? শশীঃ কোথাও যাইনি তো, বাসায়ই ছিলাম। আমিঃ মানে কি? আমি তো দেখলাম তোমার রুমের লাইট নিভানো। শশীঃ ইচ্ছে করে নিভিয়ে রেখেছিলাম।

আমিঃ তার মানে তুমি ইচ্ছে করে লাইট অফ করে রেখেছিলে যাতে আমি তোমাকে দেখতে না পাই? শশীঃ হুম। আমি দেখেতে চেয়েছিলাম আপনি কি করেন। আমিঃ উফফফফ!!! আমি বোকার মত সারারাত কি কস্টই না করেছি। তোমার নাম’টা বলবে? শশীঃ শশী। আমিঃ আমার নাম সাইম।

শশীঃজানি। আমিঃ কি ভাবে? শশীঃ কিভাবে মানে? আমি জানি। আমিঃ ওওও!!!! (কথা বলার মত আর কিছু খুজে পেলাম না) আবার কিছুক্ষণ নিরবে হাটছি। কি যেন বলতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু বলতে পারছিনা। এবার শশী’ই নিরবতা ভাঙ্গলঃ আমি এই গলি দিয়ে বাসায় ফিরব।

আপনি অন্য রাস্তা দিয়ে যান। আমিঃ কাল কি তোমার স্কুল আছে? শশীঃ হু। আমিঃ আমি তোমাকে আর একটু এগিয়ে দেই? শষীঃ নাআআ!! এই রাস্তার মাথায় আমার চাচুরা আড্ডা দেয়। এক সাথে দেখলে পিটুনি দিবে। আমিঃ ঠিক আছে, কাল স্কুলে যাবার সময় আমি রাস্তায় দাড়াব।

তুমি কোন স্কুলে পড়? শশীঃআপনি যে স্কুলের পাশে ক্রিকেট খেলেন। আমিঃ মানে? তুমি অগ্রণীতে পড়? কোন ক্লাসে? শশীঃ নাইনে। আর কথা না, আপনি এখন পিছন থেকে সরে যান। নইলে চাচ্চুরা কেউ দেখবে। এই ছিল আমার প্রথম প্রেমের প্রথম দিন।

জীবনের প্রথম প্রেমের সৃ্তি । ……………….. আস্তে আস্তে সময় গড়ায়, দিন যায়, আমাদের ভালবাসা আরো গাড় হতে থাকে। আমার পুরাতন বন্ধুরা ও ব্যান্ড মেম্বাররা আজিমপুর কলনি/চায়নাগলি/ নিপোর্ট থাকে। আমি প্রায় প্রতিদিনই আজিমপুর যাই। শশী পড়ে অগ্রণী স্কুল আজিম পুরে, অর্থাৎ আমার প্রেম করাটা আরো সহজ হল।

জীবনের প্রথম প্রেম। প্রথম ভালবাসা। প্রথম কোনো মেয়েকে আপন মনে করা। আমার জগত সংসার সব কিছু এখন তাকে নিয়ে। আমার সকল চিন্তা চেতনা সুধু তাকে ঘিরে।

আমার সকল অস্তিত্ত জুরে এখন সে। যে আমি সকাল ১১টার আগে ঘুম থেকে উঠতাম না, সে আমি ভোর ৬টায় রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতাম তার জন্যে!!!! তার সাথে স্কুল পর্জন্ত যেতাম, আবার অনেক সময় তার সাথেই আসতাম। সে কখনই আমার কাছে কিছু চায় নি। আমিও কখনো কিছুই দিতে পারি নি, তাকে নিয়ে কোনো ফাস্টফুডে যেতে পারিনি, যাব কি করে??? টাকা পাব কোথায়??? আমাকে আমার কলেজে যাবার জন্য হাত খরচ দিত ২০টাকা বা বড়জোর ৫০টাকা। সেই টাকা দিয়ে তো ঠিক মত বিড়িই খেতে পারি না, আবার ফাস্টফুড???!!??? মনে পড়ে একবার সুধ তাকে একটি গোলাপ ফুল কিনে দিতে পেরেছিলাম।

সেটা ছিল এক চরম ভাল লাগার দিন। সেদিনই প্রথম শশীর হাত ধরি। স্রেফ হাতের আঙ্গুল গুল নিজের হাতের মাঝে নেই। সে লজ্জায় ও সংকোচে লাল হয়ে যায়। আমারো ভয়ে ঘাম ছুটে যায়, ইশ যদি কেউ দেখে ফেলে !!!???!! শশী আমার বাসায় আসা যাওয়া করত।

আমাদের কুকুরের সাথে খেলত। যেহেতু আমার ফ্যামিলি যথেস্ট মডারেট ও আমাদের ভাইবোনের অনেক বন্ধু বান্ধব বাসায় আসা যাওয়া করত, তাই একজন প্রতিবেশির আগমনে কেউ কিছু মনে করত না। আমি সুধু তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। কিছু বলতে পারতাম না। আমার মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হত না, শুধু একটাই শব্দই বলতে পারতাম মনে মনে, সেটা “আমি তোমাকে ভালবাসি” এভাবেই কেটে যাচ্ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ও দিন গুলি।

কিন্তু বিধাতা আমার এই সুখ সইলেন না। তিনি উপরে বসে লিখলেন আমার ভাগ্যের সব চাইতে নির্মম ইতিহাস। ....................................... রাতে একা বারান্দায় বসে আছি, শশীর রুমে লাইট জলছে কিন্তু দরজা বন্ধ। জানালায় ভারি পর্দা দেয়া। অনেক খন বসে আছি, কিন্তু “ও”র দেখা নাই।

এমন’টা কখনো হয় না। যত ব্যাস্ততা বা ঝামেলাই থাক, অন্তত দু এক বার সে বারান্দায় আসবেই। “মিকি” “মিকি” বলে আমাদের কুকুর’কে ডাকবে। এটা ছিল আমাদের সিগন্যাল। রাত ২টা পর্জন্ত বারান্দায় অপেক্ষা করে ঘুমাতে গেলাম।

মনে কোনো ভয়ের আশংকা ছিল না। ভেবেছি হয়ত সে বাসায় নাই, ফ্যামিলির সাথে বেড়াতে গিয়েছে মনে হয়। আমার আম্মু হাসপালে ভর্তি, রাতে বড়বোন আম্মুর সাথে হাসপাতালে থাকে, আর আমি দিনের বেলা থাকি। ২৭ মার্চ, সকাল ৭টা বাজে। আমি ঘুমাচ্ছিলাম।

হটাত জোরে জোরে কনিংবেল বাজতে থাকে, ইকটু অবাক হই, এত সকালে তো কারো আসার কথা না, তাহলে কে এল? চরম বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলতে গেলাম। দরজার খুলে দরজার ওপাশের মানুষ’কে দেখে আমি পুরাই “থ” হয়ে গেলাম। শশী, শশী দারিয়ে আছে!!! তবে এক অন্য চেহারায়!! পুরা মাথা আউলা ঝাউলা। চেহারায় নির্ঘুম রাত কাটানোর ক্লান্তিকর ছাপ। শশী হটাত আমার উপর ছাপিয়ে পড়ল।

ঠিক আমার উপর নয়, আমার বুকে ঝাপিয়ে পড়ল। কোনো কথা বলতে পারছে না, সুধু কান্না করছে। আমি হতবাক। আস্তে আস্তে ওকে সোফায় বসালাম, জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে? কোনো কথা বলতে পারছে না। আমি নিজেও কিছুই বুঝতে পারছিনা।

আরো ১৫ মিনিট চুপ করে থাকলাম। এরপর “ও” একটু শান্ত হয়ে আমাকে যা বলল সেটা শুনে আমি আবারো “থ” হয়ে গেলাম। এবার হয়ত আমার কান্নার পালা। পুরুষ মানুষ’কে কাঁদতে হয় না। কিন্তু তখন হয়ত “পরিপুর্ন পুরুষ” হতে পারি নাই।

কেদেছিলাম হাউমাউ করে, যেমনটি কাদে একটি বাচ্চা ছেল। গতকাল শশীর আব্বু আমাদের এই “সম্পর্কের” কথা যেনে ফেলে। এবং বাসায় তুলকালাম কান্ড ঘটায়। এক দিনের মধ্যেই উনি উনার এক বন্ধুর ছেলের সাথে শশীর বিয়ে ঠিক করেন। আজ ঘরোয়া ভাবে গায়ে হলুদ দিবে এবং আগামি কাল “কাবিন” (মানে বিয়ে) হবে।

এখন আমি/আমরা কি করব??? আমি তাকিয়ে ছিলাম শশীর দিকে, হটাত “ও” চিৎকার করে বলে “চল পালিয়ে যাই”। আমিও তৎক্ষণাৎ রাজি হই। হ্যা,হ্যা, পালিয়ে যেতে হবে। এটাই করতে হবে আমাদের, এ ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। প্লান করে ফেললাম, সেন্টমার্টিন যাব।

এক সপ্তাহ থাকব। শশী’ বাসায় গেল, সব কিছু গুছিয়ে ১ ঘন্টার ভিতর বের হয়ে শেওড়াপাড়া বাস স্টান্ড দাঁড়াবে। আমিও সব গুছিয়ে বের হব। ...................... শশীকে চলে যাবার পর চিন্তা করছি, আমার কি পালিয়ে যাবার উচিৎ হবে? শশী বড়লোকের মেয়ে, সে কি আমার সাথে থাকতে পারবে? আমি পালিয়ে কোথায় থাকব? কত দিন থাকতে পারব? আমি টাকা পাব কোথায়?আমি কি কাজ করব? কে আমাকে কাজ দিবে? আমার আম্মু হাসপাতালে, বড় বোন অফিসে, আব্বু গ্রামের বাড়ীতে গিয়েছেন। আমি যদি পালিয়ে যাই তাহলে আমার বাসার কি হবে? পরিবারের কি হবে? শশীর আব্বু কি থানায় অভিযোগ করবে? আমার পরিবার’কে অপমান করবে, আমার জন্যে এলাকায় বিচার বসবে, আমার পরিবারের সদেস্যদের লাঞ্ছিত করবে, আমার বড় বোনের বিয়ের প্রবলেম হবে সুধু আমার জন্যে।

চিন্তা করছি, কি করব? আমার এখন কি করা উচিৎ? .................................... অবশেষে বাসা থেকে বেড় হলাম। না, বাস স্টান্ড যাচ্ছি না। চোরের মত বাড়ির পিছনের দেয়াল টপকে পালিয়ে যাচ্ছি। একা। হ্যা, আমি একা পালিয়ে যাচ্ছি ।

পালিয়ে যাচ্ছি শশীর কাছ থেকে, চিরতরে। আমার ভালবাসাকে একা ফেলে চলে যাচ্ছি। আর হয়ত দেখা হবে না, কথা হবে না। আর কখনই “ওর” হাত ধরতে পারব না, একটু আদর করতে পারব না আমার “জান পাখিটাকে”। এক সপ্তাহ বাসায় যাই নি।

পরে পরিবারের সাথে শেয়ার করলাম সব কিছু, আম্মু তড়িঘড়ি করে বাসা ছেড়ে দিলেন। বাসায় ফিরে বাসা চেন্স করার প্রস্তুতি নিলাম। হটাত খেয়াল করলাম, দরজায় কিছু আচোরের দাগ, কিছু একটা লেখা। ভাল করে চেয়ে দেখি ছোট্ট একটি শব্দঃ “কাপুরুষ”। .......................................... আমি আর কোনো দিন বারান্দায় যাইনি, যাবার সাহস হয় নি।

আজ পর্জন্ত কোনো বাসারই বারান্দায় যাই না, একটুও বসি না। এমন কি ছাদেও আর ঊঠা হয় না। আজ অবদি “কাপুরুষের”মতই বেচে আছি। অন্য কোনো মেয়ের সাথে পরিচয় হলে, একটু ঘনিষ্ট হলেই তার মাঝে খুজে ফিরি শশীর মুখ। এ কারনে হয়তবা আজো একা আছি।

................................................ আজ এত বছর পরেও মনে মনে ভাবি, আমি কি সেদিন “সঠিক সিধ্যান্ত” নিয়েছিলাম? পালিয়ে গেলে কি এমন ক্ষতি হত? এক সপ্তাহ পরে হয়ত সবাই মেনে নিত। আমি পেতাম আমার ভালবাসাকে, সফল হত আমাদের প্রেম। সারা জীবন কাছে পেতাম আমার “জান পাখিটাকে”। আবার ভাবি, আমি যা করেছি সেটাই সঠিক। একটি কলেজ পড়ুয়া বেকার কিশোর ছেলের যা করা উচিৎ ছিল সেটাই আমি করেছি।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৮ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।