আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সন্ধানে

my country creat me a ginipig নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সন্ধানে ড. তারেক শামসুর রেহমান শ্লোগানের ভাষা স্পষ্ট। যারা নিউইয়র্কের ওয়াল স্ট্রিটের পাশে অবস্থিত জুকোট্টি পার্ক দখলকারীদের খবরাখবর টিভি ও সংবাদ মাধ্যমে অনুসরণ করছেন তারা শ্লোগানগুলোর সাথে মোটামুটিভাবে পরিচিত। `We are 99%, America Land of Free’, `Greed is Our Policy’, `Occupy together’. বেকার নয়া গ্রাজুয়েট কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর একটা অংশের ঠাঁই হয়েছে জুকোট্টি পার্কে। সংবাদপত্রগুলোর ভাষায় এই আন্দোলনকে চিহ্নত করা হয়েছে ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ আন্দোলন। এই আন্দোলন হচ্ছে অসমতা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিবাদ।

আজ যখন এই প্রতিবাদ এক দেশ থেকে অন্য দেশে ছড়িয়ে যায় তখন সংগত কারণেই সে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দেয়, তা হচ্ছে একটি নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তন। যুক্তরাষ্ট্র বড় অর্থনীতির দেশ। কিন্তু সেখানে সাধারণ মানুষের সাথে ধনী শ্রেণী হিসেবে পরিচিত এক শ্রেণীর মানুষের বৈষম্য যখন স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে, তখন বুঝতে হবে পুঁজিবাদী সমাজেও ফাঁটল সৃষ্টি হয়েছে। এটাও কোন সমাধান নয়। এক সময় সমাজতান্ত্রিক সমাজকে বলা হত বৈষম্যহীন সমাজ, অর্থাৎ সেখানে মানুষে মানুষে কোন বৈষম্য নেই।

কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা গেল তথাকথিত পার্টির কার্ডধারীরা বিশেষ সুবিধাভোগী। ১৯৮৯ সালে পূর্ব ইউরোপে যখন সমাজতন্ত্রের ভাঙন শরু হয়েছিল, তখন আমার অভিজ্ঞতা হয়েছিল সেই সমাজ প্রত্যক্ষ করার। সমাজে বিরাজমান দ্বন্দ্ব, এক শ্রেণীর ক্ষমতা কারায়ত্ত করার কারণেই সমাজতন্ত্রের পতন ঘটলো। সমাজতন্ত্রও কোন সমাধান বয়ে আনতে পারেনি। এক সময় দুর্ভীক্ষপীড়িত, অধিক জনসংখ্যা, কর্মহীন, শিক্ষাহীন এবং সুশাসনহীন দেশ সোমালিয়া ও সুদানকে বলা হত অকার্যকর রাষ্ট্র।

অর্থাৎ রাষ্ট্র অকার্যকর। আজ ইউরোপের একটি রাষ্ট্র গ্রীসও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ইউরোপের ধনী রাষ্ট্রগুলো গ্রীসকে ১১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েও গ্রীসের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। এক সময় ইউরোপে এক মুদ্রা ইউরো চালু হয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৯টি দেশের মাঝে ১৫টি দেশ ইউরো চালু করেছিল।

কিন্তু সেই এক মুদ্রা ইউরো এখন কাজ করছে না। গেল অক্টোবর মাসের শেষের দিকে ইউরোপের ভয়াবহ ঋণ সঙ্কট কাটাতে ইউরোপিয়ান ফিন্যানসিয়াল স্ট্যাবিলিটি ফান্ড গঠন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তির অংশ হিসেবে গ্রীসের ঋণের ওপর ৫০ শতাংশ লোকসানের দায় নেবে ইউরো জোনের ব্যাংকগুলো। কিন্তু এই উদ্যোগ ইউরোপের অর্থনৈতিক সঙ্কটকে মোকাবেলা করতে আদৌ কোন সাহায্য করবে কি না, তা শুধু আগামী দিনগুলোই বলতে পারে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা একটা বড় ধরনের সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এর সমাধান কোন পথে? যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি গত প্রায় দু’বছর যাবৎ ভালো যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে সেখানে বেশ কিছু ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে। চাকরির বাজারও ভালো নয়। তরুণ গ্রাজুয়েটরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেড়িয়ে কোন চাকরি পাচ্ছে না।

এদের একটা অংশই এখন জুকোট্টি পার্কে জমায়েত হয়েছে। শুধু জুকোট্টি পার্ক কেন? ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ এর মতো অকুপাই শিকাগো, কিংবা অকুপাই ক্যালিফোর্নিয়ার মতো আন্দোলন এক শহর থেকে অন্য শহরে ছড়িয়ে পড়ছে। এ থেকেই বোঝা যায় মার্কিনি অর্থনীতি ভালো নয়। আমেরিকার বাজেট ঘাটতির পরিমাণ এখন এক লাখ চল্লিশ হাজার কোটি ডলার, আর তাদের ঋণের পরিমাণ ১৫ হাজার মিলিয়ন ডলার। অথচ ওবামা প্রশাসন কোটি কোটি ডলার খরচ করছে যুদ্ধের পেছনে।

ইরাকে প্রতি সেকেন্ডে মার্কিন সামরিক ব্যয়ের পরিমাণ এক হাজার বিলিয়ন ডলারের ওপর। পরিসংখ্যান বলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় অর্থনীতির দেশে যেখানে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের পেছনে (ইরাক ও আফগানিস্তান) ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করছে (প্রতিমাসে ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার), সেখানে জনগোষ্ঠীর ৯ দশমিক ১ ভাগের কোন চাকরি নেই। শতকরা ১৫ ভাগ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে। যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদের ৫ ভাগের ১ ভাগ মালিক হচ্ছে জনগোষ্ঠীর মাত্র ১ ভাগ মানুষ। ক্ষোভটা তাই ওয়াল স্ট্রিটকে ঘিরেই।

ওয়াল স্ট্রিটকে ধরা হয় পুঁজিবাদের একটা সিম্বল হিসেবে। প্রধান প্রধান কর্পোরেট হাউসগুলোর অফিস সেখানে। স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনও এখানে অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রে পুঁজিবাদী সমাজে ১৯৭০ সালে ধনীশ্রেণী হিসেবে পরিচিতদের হাতে যুক্তরাষ্ট্রের মোট আয়ের ৮ থেকে ৯ ভাগ অর্থ সঞ্চিত হত। আজ ২০১১ সালে তারা ভোগ করে মোট সম্পদের ২৩ দশমিক ৫ ভাগ।

ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের (ব্রাকলে) অধ্যাপক এমানুয়েল সাজ তার এক গবেষণায় দেখিয়েছেন কিভাবে আমেরিকান সমাজে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। তার মতে ১০ ভাগ আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রের মোট বেতনের ৪৯ দশমিক ৭ ভাগ গ্রহণ করে। ডেভিট গ্র তার এক প্রবন্ধে (The Richest TV Have Captured America’s Wealth, Alternet) উল্লেখ করেছেন আমেরিকান ধনীদের মোট সম্পদের পরিমাণ ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা কি না যুক্তরাষ্ট্রের গরিব জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের মোট সম্পদের চাইতে বেশি। অর্থাৎ ১৫৫ বিলিয়ন জনগোষ্ঠীর সম্পদের চাইতে বেশি। তার মতে শীর্ষে থাকা ১ ভাগ ধনী যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৭০ ভাগের মালিক।

যদিও নোবেল পুরস্কার বিজীয় অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিস্ট মনে করেন শীর্ষে থাকা ওই এক ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে যুক্তরাষ্ট্রের মোট সম্পদের ৪০ ভাগ। অথচ ২৫ বছর আগে ধনীরা নিয়ন্ত্রণ করতো মাত্র ১২ ভাগ সম্পদ (By the 1% for the 1% Vanityfare) অপর এক গবেষক রবার্ট রিচ এর মতে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ বেতনভোগী মানুষদের মাঝে ৫ ভাগ, ৩৭ ভাগ ভোগ্যপণ্যের ত্রে“তা। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয় যুক্তরাষ্ট্রে একটি শ্রেণী ধনী থেকে আরো ধনী হচ্ছে, আর অপর শ্রেণী গরিব থেকে আরো গরিব হচ্ছে। যাদের ক্রয় ক্ষমতা কম, সম্পদের পরিমাণও কম। যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটি সমাজ ব্যবস্থার জন্ম হয়েছে, যাকে বলা হচ্ছে Casino Capitalism অর্থাৎ ক্যাসিনো নির্ভর একটি অর্থনীতি, যেখানে এক রাতে লক্ষ ডলার জুয়া খেলায় হেরে যান অনেক আমেরিকান।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ধনীরা ব্যক্তিগত প্লেন নিয়ে আটলানটায় যান। ক্যাসিনোগুলোর নিজস্ব ফাইভ স্টার হোটেল আছে। সেখানে থাকেন। সারারাত জুয়া খেলে রোববার যার যার শহরে চলে যান। ওখানে এক দিকে ক্যাসিনোগুলোর জৌলুস, অন্যদিকে ক্যাসিনোগুলোর কিছুটা দূরে জরাজীর্ণ পুরনো বাড়ি, সেখানে বাস করে ব্লাক আমেরিকানরা, তাদের অনেকেরই চাকরি নেই।

স্বাস্থ্য সেবাও তারা পান না। কী বৈসাদৃশ্য একই দেশের নাগরিক। একজন যেখানে এক রাতে জুয়া খেলে হেরে যান কয়েক হাজার ডলার, অন্যজন সারা মাসেও যার রোজগার নেই মাত্র এক হাজার ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের এই সমাজ ব্যাবস্থায় বৈষম্য তৈরি হয়েছে। পশ্চিম ইউরোপের সমাজ ব্যবস্থায় ‘সোস্যাল ডেমোক্রেসির’ ধারণা সেখানে গরিবদের ন্যূনতম অধিকার (স্বাস্থ্য, শিক্ষা) নিশ্চিত করেছে।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এই অধিকার নিশ্চিত হয়নি। রাষ্ট্র সব নাগরিকের ন্যূনতম অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। আমি যুক্তরাষ্ট্রে গৃহহীন মানুষ দেখেছি। ভিক্ষা করে এমন লোকও আমি সাবওয়েতে দেখেছি। গায়িকা ম্যাডোনার ভাইও গৃহহীনদের একজন এ খবরও ছাপা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পত্রপত্রিকায়।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী সেখানে ১৬ দশমিক ৪ মিলিয়ন, অর্থাৎ ১ কোটি ৬৪ লক্ষ শিশু রয়েছে অত্যন্ত গরিব। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার দরিদ্র পরিবারের যে সীমা নির্ধারণ করেছে (অর্থাৎ ২২ হাজার ৫০ ডলার বছরে), সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ২১ ভাগ শিশু সন্তান (প্রতি ৫ জনে ১ জন) ওই সব পরিবারে বসবাস করে। জীবনের কোন এক সময় ৯০ ভাগ কৃষ্ণাঙ্গ শিশু ফুড স্ট্যাম্প (বিনে পয়সায় খাদ্য) এর ওপর নির্ভরশীল ছিল। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য পাস করা একজন গ্রাজুয়েট কোন চাকরির সংস্থান করতে পারছে না। সেখানে ২০১০ সালে কর্পোরেট হাউসগুলোর প্রধান নির্বাহীর বেতন বেড়েছে শতকরা ২৩ ভাগ।

জুকোট্টি পার্কে যারা দিনের পর দিন অবস্থান করে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন, তাদের অনেকেরই চাকরি নেই। অথচ সরকারি হিসাব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র বছরে ৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করে আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণের জন্য। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে যুদ্ধের জন্য ব্যয় করেছে ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার। অথচ এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে অনেকের চাকরির সংস্থান করা যেত। শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বাড়ানো যেত।

বাড়ানো যেত ‘সামাজিক নেট’ এর পরিধি (ফুড স্ট্যাম্প, হাউজিং ইত্যাদি)। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তা করেনি। ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধ সেখানে যখন কোন সামাধান বয়ে আনতে পারেনি, তখন লিবিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ‘তৃতীয় যুদ্ধ’ এর সূচনা করেছিল। গাদ্দাফির হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়েছে বটে, কিন্তু লিবিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী একটি অস্থিতিশীলতার জন্ম হল। লিবিয়ায় ‘আরেকটি আফগানিস্তান’ কিংবা আরেকটি সোমালিয়া জন্ম হওয়া বিচিত্র কিছু নয়।

যুক্তরাষ্ট্র সেখানে জড়িয়ে গেছে। এখন জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় সেখানে যুদ্ধের খরচ মেটাতে হচ্ছে। এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে যুক্তরাষ্ট্র সমাজে এই যে বৈষম্য, এই বৈষম্যের কারণেই সেখানে ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’র মতো আন্দোলনের জন্ম হয়েছে। যদিও পুঁজিবাদী সমাজে এই বৈষম্য নতুন কিছু নয়। পুঁজিবাদী সমাজে পুঁজিই হল আসল কথা।

এই সমাজে যে ধনী সে আরো ধনী হয়। পুঁজি এখানে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। এমনকি এটাও বলা হয় মার্কিন কংগ্রেস হচ্ছে `Billionaire friendly’ অর্থাৎ কংগ্রেসে যারা সদস্য তারা ধনীদের প্রতিনিধিত্ব করেন। তারা নিজেরাও ধনী। সুতরাং ধনীদের সাহায্যে তারা কাজ করবেন।

কর্পোরেট হাউসগুলো যাতে ব্যবসা পায়, সেই উদ্যোগই তারা নেবেন। কেননা নির্বাচনের সময় ওই কর্পোরেট হাউসগুলো তাদের চাঁদা দেয়, যার পরিমাণ মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। আজ জুকোট্টি পার্কে যারা সমবেত হয়ে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিচ্ছেন তারা বাহ্যত ক্ষমতার পটপরিবর্তনে খুব একটা ভূমিকা রাখেন না। অসমতা আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে আজ সারা বিশ্বব্যাপীই চলছে আন্দোলন। চিলিতে (সান্তিয়াগো শহরে) আন্দোকারীরা স্কুলগুলো দখল করে বিনা বেতনে শিক্ষার দাবিতে আন্দোলন করছে।

ইসরাইলে আন্দোলন হচ্ছে জীবন-যাত্রার মানের ঊর্ধ্বগতি আর অতিরিক্ত বাড়ি ভাড়ার কারণে। যেখানে শতকরা ৫০ জন যুবক বেকার সেখানে আন্দোলন হচ্ছে বেকারত্বের বিরুদ্ধে। যুক্তরাজ্যে বিশেষ করে লন্ডন শহরে আন্দোলন হচ্ছে শিক্ষায় বাজেট কমানোর প্রতিবাদে। জার্মানি ফ্র্যাঙ্কফুর্টে আন্দোলন হচ্ছে অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রতিবাদে। অকল্যান্ড, তাইপে আর সিউলের বিক্ষোভের ধরনও অনেকটা তেমনি।

মূল সুরটা এক জায়গায় বাধা- তা হচ্ছে বৈষম্য আর অসমতা। বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা মানুষের মাঝে অসমতা দূর করতে পারেনি। বরং কোথাও কোথাও মানুষ আরো গরিব হয়েছে। সুতরাং একুশ শতকে এসে একটি নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যত তাড়াতাড়ি এ দিকটার দিকে নজর দেবেন, ততই আমাদের জন্য মঙ্গল।

আমাদের মতো দেশ বিশ্ব মন্দায় এখন অব্দি আক্রান্ত হয়নি। তবে অচিরেই আমরা উপলব্ধি করতে শুরু করবো। মন্দার কারণে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের তৈরি পোশাকের বাজার সংকুচিত হয়ে আসবে। বিদেশ থেকে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমে আসবে। দেশে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে।

সরকার যদি কৃচ্ছ্রসাধন না করে, তাহলে এক বড় ধরনের সঙ্কটের মুখে পড়বে দেশ। নিউইর্কের ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ আন্দোলন আমাদের দেখিয়ে দিল সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এখনই। লেখক : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।