আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শক্তিশালী করুন আইসিটি আইন

"ধর্মীয় কুসংস্কারে যারা আবদ্ধ তারা সব সময়েই দরিদ্র থাকে। " সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশেও এর ব্যবহার প্রসারিত হয়েছে। ওই কার্যক্রমের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সব ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির সুফল পাওয়া যাবে। বিশ্বের কোথাও আইসিটিবিহীন ভবিষ্যত্ অকল্পনীয়।

যেহেতু অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির তুলনায় আইসিটির ক্ষেত্রে সম্পদের প্রয়োজনীয়তা অনেক কম, তাই বিভিন্ন কর্মসূচিতে এ প্রযুক্তিকে সম্পৃক্ত করা এবং বর্তমান পশ্চাত্পদতা কাটিয়ে আইসিটিতে অগ্রগামী দেশ হিসেবে দ্রুত উত্তরণ ঘটাতে দৃঢ় কৌশল অবলম্বন করা দরকার। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদও সীমিত। এ দেশে একমাত্র যে সম্পদের প্রাচুর্য রয়েছে, তাহলো যুবসমাজ। এই যুবসমাজই আমাদের অর্থনীতির প্রধান উপাদান।

আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তাদের কেন্দ্র করে পরিচালিত হওয়া উচিত। দেশের সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদ এবং মানবসম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। সে লক্ষ্যে সরকার এরই মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন-২০০৯ এবং জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা-২০০৯ অনুমোদন করেছে। তথ্যপ্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এর অপব্যবহার তথা সাইবার অপরাধ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও তা নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) সাইবার অপরাধীদের চার ভাগে ভাগ করেছে।

এগুলো হলো— ভেতরের লোক, অনুপ্রবেশকারী, ভাইরাসের স্রষ্টা ও অপরাধী চক্র। সাধারণত কৌতূহলবশত কিংবা বিকৃত মানসিকতা থেকেই এরা অপরাধ করে থাকে। এখন দেশে ১০০ জনের মধ্যে তিনজন ইন্টারনেট ব্যবহার করে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও ইন্টারনেট ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে। যেভাবে সবকিছু এগোচ্ছে, তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায়ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়াবে।

কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেবা দেয়ার কর্মসূচি চালু করেছে। দেশের অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফরম ইন্টারনেটে সংগ্রহ করা যায়। অনেক পরীক্ষার ফল ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়। বিভিন্ন পরিসেবার বিল ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিশোধ করার সুবিধা চালু করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই অপরাধীরা তাদের ক্ষেত্র হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহার করবে এখন।

ফলে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত প্রস্তুতি নেয়া দরকার। সম্প্রতি আশঙ্কাজনকভাবে পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে পড়ছে। সেই সঙ্গে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাও লঙ্ঘিত হচ্ছে। পর্নোগ্রাফি রোধে বর্তমান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনটি যথার্থ নয় বলে এরই মধ্যে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান আইন, পর্নোগ্রাফি রোধে যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না— জানতে চেয়ে সরকারের প্রতি রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে ওয়েবসাইট, মোবাইল ফোন, ভিসিডি, সিডি ও ম্যাগাজিনে পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেয়া বন্ধে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না— রুলে তাও জানতে চেয়েছে তারা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন-২০০৯-এর অষ্টম অধ্যায়ে (যথাক্রমে ধারা ৫৪ থেকে ৬৭, ৬৮ থেকে ৮১ এবং ৮২ থেকে ৮৪) কম্পিউটার সম্পর্কিত অপরাধ, তদন্ত, বিচার ও দণ্ড ইত্যাদি (যথাক্রমে অংশ-১: অপরাধ ও দণ্ড; অংশ-২: সাইবার ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা, অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল ইত্যাদি; অংশ-৩: সাইবার আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন ইত্যাদি) বিষয়ে বিশদ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ আইনের ৫৭ নম্বর ধারা অনুসারে— ‘ইলেকট্রনিক ফরমে মিথ্যা, অশ্লীল অথবা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ সংক্রান্ত অপরাধ এবং এর দণ্ড— ১. কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসত্ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ। ২. কোনো ব্যক্তি উপধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। ৭৬ নম্বর ধারা অনুসারে— ‘অপরাধ তদন্তের ক্ষমতা ইত্যাদি— ১. ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নিয়ন্ত্রক বা নিয়ন্ত্রক হইতে এ উদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা সাব-ইন্সপেক্টরের পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ তদন্ত করিবেন।

২. এই আইনের অধীন অপারাধসমূহ অ-আমলযোগ্য হইবে। ’ তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হলে সঠিক উপস্থাপন ও আইনের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা-২০০৯ বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেয়া অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আইন ও নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করে সময়োপযোগী সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। [লেখকঃ প্রোগ্রামার, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ঢাকা। ই-মেইলঃ ] Facebook: http://facebook.com/moyazzem24 You Can Read This Article/Column From: “The Daily Bonik Barta” Date: 14_11_2011. Subject: শক্তিশালী করুন আইসিটি আইন For Internet Version Pls. Click The Link: Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.