আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুই নেত্রীর সংলাপের দাবিতে আগামী ২৭শে মার্চ সকাল ৭ ঘটিকায় ৭ জন

নতজানু হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে , দাঁড়িয়ে মৃত্যু বরণ করা অনেক ভালো । পুড়ছে দেশ, মরছে মানুষ। সরকার ও বিরোধী দলের জিগাংসায় দেশ এগিয়ে চলেছে সংঘাতের পথে। হরতাল, সড়ক– অবরোধ, অগ্নিসংযোগ, গুলি ও বোমায় ক্ষতবিক্ষত দেশ। ঝরে পড়েছে অসংখ্য প্রান।

অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ আর আতঙ্ক গ্রাস করেছে সাধারন আমজনতাকে। জনসাধারণের মনে একটাই প্রশ্ন একের পর এক হরতালকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা ও নৈরাজ্য চলছে তার শেষ কোথায়? সরকার করছেটা কি?? আর বিরোধীদল কি এই সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে সমাধানের পথ না খুঁজে? নাকি জামায়াতের দেশে গৃহযুদ্ধ বাধানোর হুমকি সত্য হয়ে দেখা দিবে??? নজিরবিহীন সহিংসতায় এই গত কয়েকদিনে যানবাহন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক- বীমা, হাসপাতাল, ঘরবাড়ি, পুড়ানো হয়েছে। প্রায় দুশো মন্দিরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চরমপন্থিদের আগুন থেকে রক্ষা পায় নি জাতীয় মসজিদের নামাজের কার্পেট, জায়নামাজ এমনকি জাতীয় পতাকাও। ভাংচুর করা হয়েছে শহীদ মিনার।

ফাঁড়িতে আগুন দিয়ে সাত পুলিশ সদস্যকে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করেছে জামাত- শিবির যুদ্ধাপরাধীদের দল। পুলিশও বসে থাকে নি। তারাও গুলি ছুড়েছে নির্বিচারে, গুলি আর সংঘাতে সারা দেশে জামাত-শিবির সমর্থক, পুলিশ সহ মারা গেছে অসংখ্য সাধারন মানুষ। এই নজিরবিহীন সহিংসতায় সাধারন জনগণ সময় কাটাচ্ছে উদ্বেগ, আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে। সবার মনে আজ একটাই প্রশ্ন, রাজনীতিবিদরা দেশকে কোথায় নিয়ে যাবেন?? এই সংঘাতের শেষ কোথায়? সরকার লাশের দায় চাপায় বি এন পি- জামাতের উপর।

বি এন পি- জামাত দায় চাপায় সরকারের উপর। মাঝখানে লাশ হয়ে পড়ে থাকে এই আমজনতা। কবে বন্ধ হবে এই লাশের রাজনীতি??? এই সহিংসতায় আজ দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের চাকা স্তব্ধ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আশংকা এমন যে, সমঝোতার শেষ সম্ভাবনাটুকুও কি শেষ হয়ে যাচ্ছে??? ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, “সমস্যা সমাধানে আলোচনার বিকল্প নেই। বিরোধি দল সম্মত হলে আওয়ামীলীগ আলোচনায় বসতে প্রস্তুত”।

এই গুলো কি শুধুই মুখের কথা?? সাধারন জনগণ এই কথাগুলো কত টুকু বিশ্বাস করবে?? আলোচনায় বসার জন্য সরকার ও বিরোধীদল কি আসলেই আন্তরিক??? প্রধান বিরোধী দলের দপ্তরে পুলিশি তল্লাশি, নেতাদের গণগ্রেপ্তার করে সরকার বুঝিয়ে দিয়েছে সংলাপে বসার জন্য তারা কত আন্তরিক! এদিকে মানিকগঞ্জের জনসভায় বেগম খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন, “ এই সরকারের সঙ্গে কোন সংলাপ নয়। সরকার পতনই একমাত্র দাবি”। সরকার ও বিরোধিদলের এই মুখোমুখি অবস্থান পরিস্থিতির উন্নতি তো করছেই না বরং সংঘাতময় পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলছে। দেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত। স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া আজ অসম্ভব হয়ে আসছে।

বিরোধী দল ধর্মকে ব্যবহার করে সরকারকে বিপাকে ফেলতে চাইছে। যার সুযোগে সহিংসতা ছড়াতে চাইছে জামায়াত-শিবির। দেশি-বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাও যে এই সবে ইন্ধন জোগাবে না তা কি কেউ আগাম বলতে পারে? এমন পরিস্থিতিতে সরকার ও বিরোধিদল মুখোমুখি লড়াইয়ে ধাবিত হচ্ছে। তাহলে এখন কি হবে? সরকার কি করবে? বিরোধী দল কি করবে? সুশীল সমাজের ভুমিকা কি হবে? আবারো কি একটি ১/১১ ধেয়ে আসছে??? সবাই এই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে চায়। পত্র পত্রিকা টকশোতে এই সব প্রশ্নের ছড়াছড়ি।

কিন্তু আসল প্রশ্নটা কেউ করে না। কেউ জানতে চায় না জনগণ কি চায়? আমজনতা কি চায়? আমজনতা সংঘাত চায় না। আমজনতা শান্তি চায়। আমজনতা চায় সরকার এই সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অগ্রনী ভুমিকা পালন করুক। আমজনতা চায় বিরোধী দল তাদের বিরোধ পূর্ণ মনোভাব পরিবর্তন করে সরকারের সাথে আলোচনায় বসুক।

তারা সংসদে এসে জনগণের জন্য কথা বলুক। আমজনতা চায় দেশের শান্তির স্বার্থে দুই নেত্রী যেন সংলাপে বসেন। আমজনতা বিশ্বাস করে সংঘাত কোন সমাধান বয়ে আনতে পারে না। শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের পথ পাওয়া যাবে। আমরা যদি সংবাদপত্র সমূহের অনলাইন জরিপগুলোর দিকে নজর বুলাই তাহলে আমজনতার চাওয়া সম্পর্কে একটু হলেও ধারনা পাব।

১৫ মার্চ ২০১৩ তারিখে একটি কাগজের জরিপ – “রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংঘাতের পরিবর্তে সংলাপে বসতে দুই দলকে বিশিষ্ট নাগরিকরা যে আহবান জানিয়েছেন আপনি কি তার সাথে একমত”? ----- হ্যাঁ – ৮২ % , না ---- ১৭ % ১৪ মার্চ ২০১৩ তারিখে সকালের খবর পত্রিকায় জরিপে – “সহিংসতা প্রতিবাদের কোন পথ নয় এবং এর মাধ্যমে কোন সমাধান আসবে না--- যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের এ বক্তব্যের সাথে আপনি কি একমত? হ্যাঁ --- ৮৩.২৬ % , না ---- ১৫.৩৮ % তাছাড়া এরকম হাজারো জনমত জরিপ ছাড়াও লাইভ অনুষ্ঠান, টকশো তে ফোনে, পত্রিকায় পাতায় জনসাধারণ যে যেখানে পারছে তারা তাদের মতামত ব্যক্ত করছে। আমরা সংঘাত চাই না। আমরা শান্তি চাই। আমজনতা চায় দুই নেত্রী দেশের স্বার্থে সংলাপে বসুন। কিন্তু দেশের আমজনতা চিৎকার চেঁচামেচি করে মরে যাক, যাদের সাড়া দেওয়ার কথা তারা সাড়া দিচ্ছেন না।

অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বিরোধী দল বল করছে, সরকারি দল ব্যাট করছে আর দেশের জনগণ ফিল্ডিং করে মরছে। যার হাতে ক্ষমতা তার হাতে ব্যাট আর ক্ষমতাহীন আমজনতা তোমরা ফিল্ডিং করে মরো। কিন্তু নেতারা একটা কথা ভুলে যান যে এই আমজনতার ভোটেই তারা ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করেছেন। জনতা চাইলেই তাদের টেনে ছুড়ে দিতে পারে। বাংলাদেশের ইতিহাস জনতা বিনির্মিত।

ভাষার জন্য আত্নত্যাগের ইতিহাস,স্বাধীনতার জন্য আত্নত্যাগের ইতিহাস, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আত্নত্যাগের ইতিহাস। সবই জনতার আত্নত্যাগের ফলে বিনির্মিত। এই আমজনতা যখন জেগে উঠে তখন নষ্টদের গড়া ক্ষমতার পাহাড়ও টলে যায়। বাংলাদেশের ইতিহাস তার সাক্ষী। আমজনতার দাবির মুখে রাজনীতিবিদদের নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে এগিয়ে আসতে হবে।

আমজনতা তাদের বাধ্য করবে। আর দেশের এই সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে দুই নেত্রীর সংলাপ। তাই দেশের সকল রাজনৈতিক সমস্যা আলোচনের মাধ্যমে সমাধানের দাবিতে আগামী ২৭শে মার্চ সকাল ৭ ঘটিকায় ৭ জন "আমজনতা"র ৭১ ঘন্টা অনশন শুরু হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদের সম্মুখে। আমাদের একমাত্র দাবি সংঘাত নয় বরং দুই নেত্রীর সংলাপ, অন্তত একবার মুখ দেখাদেখি হোক...! Event Link : Click This Link (আপনিও যোগ দিন) জনগণের সেবার জন্য নেতা নির্বাচন করা হয় এই আশা নিয়ে যে তারা আমাদের সুখ দুঃখের খবর নিবেন, বিপদে আপদে পাশে থাকবেন। প্রতিটি প্রাণ মূল্যবান, দেশের প্রতিটি সম্পদ মূল্যবান, আপনার কাছে যা সামান্য একটি প্রাণ কিংবা সামান্য কিছু টাকার সম্পদ সে সম্পদই কারো কারো কাছে তার পৃথিবী।

উন্নত বিশ্বেও রাজনীতি আছে, সরকারী দল- বিরোধীদল আছে, তাদের কেউ আমাদের মতো সংঘাতমূলক রাজনীতি করে জনজীবন অচল করে রাখে না, তাদের দেশের মানুষকে কষ্টে রাখে না, তাদের উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতির ক্রমাগত চর্চায় সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত সব সংকট সমাধান করে নেয়, বিজিত প্রার্থী হাসিমুখে দেশের চাবি বুঝিয়ে দেয় বিজয়ীর হাতে। আমাদের দেশের নোংরা ধ্বংসাত্নক রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনেক পুরনো, যে গেছে লঙ্কায় সে ই হয়েছে রাবণ, সরকারী দলের কোন কার্যক্রম পছন্দ না হলে বিরোধীদল সেই রাগ ঝেড়েছে রাস্তায় সাধারণ মানুষের উপর, পুড়িয়েছে গাড়ি, অচল করেছে জনজীবন, যার কোনকিছুই কোন সভ্য দেশের কর্মকান্ডের সাথে যায়না। যেকোন রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য রয়েছে লুই আই কানের অসাধারণ সৃষ্টি জাতীয় সংসদ ভবন, সেখানকার এসির শীতল বাতাস ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসে দলগুলো নিজেরাও কষ্ট করে আর সাধারণ মানুষকেও ভোগান্তিতে ফেলে। রাজনৈতিক দলগুলো উন্নত দিনের স্বপ্ন দেখায়, দেশকে গড়বে বলে বড় বড় কথা বলে, অথচ ধ্বংসাত্নক কর্মকান্ড করে দেশকে পেছনে ঠেলে দিতে দ্বিধা করেনা। যে দেশের সরকার দলীয় নেত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেত্রীর মুখ দেখাদেখি বন্ধ সে দেশ কিভাবে উন্নত হয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা তুলবে আমাদের বুঝে আসে না।

এই ফেসবুক ব্লগের যুগে যেখানে অন্যান্য দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে তখন আমরাও পিছিয়ে থাকতে চাইনা, আমরা চাই দুই নেত্রী একত্রে বসে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে দেশের সকল সঙ্কট নিরসন করুন, এবং এই নোংরা রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিনাশ হোক। এই ইভেন্টের সাথে আপনি কিভাবে সম্পৃক্ত হতে পারেনঃ আমাদের সকলেরই প্রাণের দাবি ধ্বংসাত্নক রাজনীতি পরিহার করা, এর প্রতিবাদে আপনারা সবাই সোচ্চার হতে পারেন অনলাইনে অফলাইনে, ব্যানার- পোস্টার সহকারে কিংবা সামান্য একটি সাদা রুমাল হাতে আমাদের সাথে একাত্নতা জানিয়ে যেতে পারেন সেখানে, কয়েক ঘন্টার প্রতীকি অনশনের মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করতে পারেন আমাদের সাথে। সব মিলিয়ে যদি আমজনতার গণরোষের খবর পৌঁছে দেয়া যায় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তবে তাদের টনক নড়লেও নড়তে পারে...! যোগ দিন ইভেন্টে ঃ Click This Link ইনভাইট করুন আপনার বন্ধু পরিচিতজনদের, পোস্টটি ছড়িয়ে দিন সব খানে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।