আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১০০ ভাগ মুসলিম দেশ, তবু একটি পশুও কোরবানি হয়নি মালদ্বীপে !

পৃথিবীর কাছে তুমি হয়তো কিছুই নও, কিন্তু কারও কাছে তুমিই তার পৃথিবী" বিশ্বের অন্যান্য দেশের মুসলমানদের মতো মালদ্বীপের মুসলমানরাও পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করেছেন। তবে অন্যান্য দেশের মতো মালদ্বীপের মুসলমানরা পশু কোরবানি করেননি। স্থানীয় জনগণ ও সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এবারের ঈদে মালদ্বীপে একটি পশুও কোরবানি হয়নি। আসন্ন সপ্তদশ সার্ক সম্মেলনের প্রস্তুতিতে নিয়োজিত মালদ্বীপের সরকারি কর্মকর্তা আমির হুসেইন বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘আমরা মালদ্বীপবাসী পুরোপুরিই আমদানি করা হিমায়িত মাংসের ওপর নির্ভরশীল। গরু বা ছাগল তো দূরের কথা, আমরা একটি মুরগি পর্যন্ত জবাই করতে পারি না।

’ ১০-১১ নভেম্বর ছবির মতো সুন্দর এ দ্বীপটিতে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমির হুসেইন জানান, মালদ্বীপের শতকরা ১০০ ভাগ মানুষ মুসলমান এবং তারা পুরোপুরি মুসলিম সংস্কৃতির একনিষ্ঠ অনুসারী। কিন্তু এ দ্বীপ দেশটিতে কোনো পশুপালন করা হয় না, তাই এর অধিবাসীরা কোরবানি করতে পারেন না। ভারত মহাসাগরে ১০০টিরও বেশি ক্ষুদ্র দ্বীপ নিয়ে মালদ্বীপ রাষ্ট্র গঠিত। দেশটির মোট আয়তন ৩০০ বর্গ কিলোমিটার।

দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় চার লাখ। প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুসারে তিনটি দেশ মালদ্বীপ, সৌদি আরব ও সোমালিয়ার জনসংখ্যার শতকরা ১০০ ভাগ মুসলমান। বাকি দুটি দেশে অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো পবিত্র ঈদুল আজহার সময় পশু কোরবানি করা হয়। কিন্তু মুসলিম বিশ্বে মালদ্বীপই একমাত্র ব্যতিক্রম। কথা প্রসঙ্গে ফাতিমা নামের মালদ্বীপের এক তরুণী বাসসকে জানান, স্থানীয় চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সম্প্রতি তাঁর পরিবার হিতাডুতে পশুপালনের একটি উদ্যোগ নিয়েছে।

ওই তরুণী বলেন, আগে শুধু গবাদিপশুর অভাবে কোরবানি করতে পারতেন না—এমন নয়। বরং তাদের অর্থনৈতিক অবস্থাও ছিল খারাপ। এ ছাড়া গবাদিপশুর জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় গাছপালা ও পশুখাদ্যের অভাব ছিল অন্যতম কারণ। তিনি জানান, সম্প্রতি মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অনেকেই ঈদের সময় আল্লাহকে খুশি করতে কোরবানি করার উদ্দেশে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা বা ভারত থেকে পশু আমদানি করার কথা ভাবছেন। ফাতিমা আরও জানান, মালদ্বীপের অধিবাসীদের মাথাপিছু গড় আয় বর্তমানে বাংলাদেশের মুদ্রায় ৪০ হাজার টাকা (আট হাজার রুপাইয়া)।

পর্যটনশিল্পের ব্যাপক প্রসারের ফলে অদূর ভবিষ্যতে এ আয় আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ফাতিমা জানান, মালদ্বীপের কিছু গ্রামবাসী শখের বশে ও নিজেদের চাহিদা পূরণ করার জন্য হাঁস-মুরগি পালন করে। যখন কোনো ছেলেশিশু জন্মগ্রহণ করে, তখন সেগুলো জবাই করে। কিন্তু মেয়েশিশু জন্মালে কোনো মুরগি জবাই করা হয় না। তিনি বলেন, মালদ্বীপে বর্তমানে পুরুষ ও নারীর সংখ্যার মধ্যে অসাম্য বিরাজ করছে।

দেশটিতে পুরুষের সংখ্যা দুই লাখ ৩৪ হাজার এবং বিপরীতে নারীর সংখ্যা এক লাখ ৬৬ হাজার। মালদ্বীপের জাতীয় আয়ের বেশির ভাগই আসে পর্যটন খাত থেকে। দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো আঞ্চলিক সহযোগিতাকে ত্বরান্বিত করার জন্য পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে কৃষি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পণ্য ও সেবার সাধারণ মান, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি সহযোগিতা-সম্পর্কিত নতুন চুক্তিতে উপনীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সার্কের আটটি সদস্য দেশ হলো আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশের ঢাকায় সার্কের প্রতিষ্ঠার পর এ বছর তৃতীয়বার মালদ্বীপে সংস্থার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

বাসস। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।