আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হোক না ওই আয়োজক প্রতিষ্ঠানটা প্রশ্নসাপেক্ষ, সুন্দরবনকে নিয়ে তো আমাদের কোনো প্রশ্ন নেই। বাংলাদেশকে নিয়ে তো আমাদের ভালোবাসায় কোনো কমতি নেই। আসুন, ভালোবাসি এবং ভোট দিই।

তাশফী মাহমুদ আমি জানি, প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচন নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন আছে। আয়োজক প্রতিষ্ঠানটার আসল উদ্দেশ্য বাণিজ্য। ওটা ঠিক জাতিসংঘের মতো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান নয়। এই দুনিয়ায় লাভ ছাড়া কেউ কিছু করে না। আমাদের বিবেচ্য, যদি সুন্দরবনকে আমরা ভোট দিয়ে সেরা প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় আনতে পারি, আমাদের লাভ হবে? নাকি ক্ষতি হবে? অবশ্যই লাভ হবে।

প্রতিটি দেশই তার ইতিবাচক দিক তুলে ধরতে চায়। আমরা যে অলিম্পিকে সোনা জিততে চাই, সেই সোনার কী-বা এমন দাম? বাজারে তো সস্তায় সোনার দলা পাওয়া যায়, কেন সবাই অনেক কষ্ট করে দল গঠন করে ট্রেনিং নিয়ে সোনার জন্যে ছোটে? কারণ দেশের নাম হয়। কেন আমেরিকা-ভারত-জার্মানি-ফ্রান্স পয়সা খরচ করে এই দেশে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চালায়? তাদের দেশের ছবি দেখায়? পৃথিবীটা চলছে ব্রান্ডিংয়ের ওপরে। আমাদের দেশের ভাবমূর্তি খুব খারাপ—দুর্ভিক্ষের দেশ, বন্যার দেশ, সাইক্লোনের দেশ। সুন্দরবন যদি প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্যের একটা হয়, তাহলে আমরা সত্যি একটা নতুন পরিচয় তুলে ধরতে পারব।

আমাদের গৌরব বাড়বে। আমরা যে বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনা নিয়ে মাতামাতি করি, ওই মৌসুমে অন্তত চার-পাঁচজন বাংলাদেশি খেলার উত্তেজনায় মারা যান, কেন? একটা আনন্দ, একটা বিজয়ের গৌরব, একটা জয়-পরাজয়ের উত্তেজনা কাজ করে আমাদের মধ্যে। নইলে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হলেই কী, না হলেই বা কী? মেসি আমার কে হয়? কিন্তু আমরা উত্তেজিত হই, কারণ তা আমাদের অর্থহীন নিরানন্দ জীবনকে আনন্দপূর্ণ করে তোলে। কাজেই ওই আনন্দকে কখনো আমি খারাপ চোখে দেখি না। তেমনি একটা প্রতিযোগিতা হচ্ছে, না হয় ধরেই নিলাম, খুব তুচ্ছ একটা প্রতিযোগিতা, একেবারেই কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আয়োজিত নয়, তবুও তো বাংলাদেশের সুন্দরবন তাতে আছে।

আমরা কি চাইব না, সুন্দরবন জয়লাভ করুক? এতে তো আমাদের কোনো ক্ষতি নেই। পৃথিবীর সব দেশই নিজের ইমেজ বৃদ্ধির জন্য অনেক টাকা খরচ করে। সুন্দরবনকে যদি জেতাতে পারি, সবচেয়ে কম টাকা খরচ করে বাংলাদেশের গৌরব বৃদ্ধি করা যাবে সবচেয়ে ভালোভাবে। এটা যদি এতই ফালতু হতো, তাহলে তাজমহলের জন্য ভারত কেন ভোট চেয়ে টিভিতে বিজ্ঞাপন দিল। আজকে তো নতুন সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় তাজমহল স্বীকৃত ও গণ্য হয়ে গেছে।

আর আমরা সেই সুন্দরবনকে একটা প্রতিযোগিতায় এত দূর পর্যন্ত এনে ভোট না দিয়ে হেরে যেতে দেব? কক্ষনো না। শুনতে পেলাম, মেয়েদের ভোট সুন্দরবনের পক্ষে কম পড়েছে। নারীরা বেশি করে নিজেদের ই-মেইল থেকে ভোট দিন। নারীর নামে নেওয়া সিম থেকে ভোট দিন। বারবার করে ভোট দিন সুন্দরবনকে।

হোক না ওই আয়োজক প্রতিষ্ঠানটা প্রশ্নসাপেক্ষ, সুন্দরবনকে নিয়ে তো আমাদের কোনো প্রশ্ন নেই। বাংলাদেশকে নিয়ে তো আমাদের ভালোবাসায় কোনো কমতি নেই। আসুন, ভালোবাসি এবং ভোট দিই। ১১ নভেম্বর ২০১১ ভোট দেওয়ার শেষ দিন। ভোট দেওয়া যাবে তিনভাবে প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে সুন্দরবনকে তিনটি মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ আছে।

এক. ইন্টারনেটে এই http://www.new7wonders.com ঠিকানার ওয়েবসাইটে গিয়ে Vote-এ ক্লিক করে ২৮টি স্থানের মধ্যে সাতটি স্থান পছন্দ করে ভোট দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে একটি ই-মেইল ঠিকানা থেকে একটি ভোট দেওয়ার সুবিধা রয়েছে। দুই. টেলিফোন করে শুধু সুন্দরবনকে ভোট দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে +১ ৮৬৯ ৭৬০ ৫৯৯০, +১ ৬৪৯ ৩৩৯ ৮০৮০, +৪৪ ৭৫৮ ৯০০ ১২৯০ এই তিনটি নম্বরের যেকোনো একটিতে কল করলে বার্তা শোনা যাবে। বার্তার পর একটি সংকেত দেওয়া হবে।

এর পর ৭৭২৪ নম্বর চেপে সুন্দরবনের পক্ষে ভোট দেওয়া যাবে। তিন. মুঠোফোনের খুদেবার্তার (এসএমএস) মাধ্যমেও ভোট দেওয়া যাবে। যেকোনো মুঠোফোনে SB লিখে পাঠাতে হবে ১৬৩৩৩ নম্বরে। প্রতি এসএমএসের জন্য দুই টাকা ৩০ পয়সা খরচ হবে। আর প্রতিটি এসএমএস ভোটই গণনা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

View this link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।