আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদ স্পেশাল ভূত ব্লগ...

অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেন,তাহার বক্ষে বেদনা অপার; আমার বন্ধু রিয়াজ মাহমুদ রেডিও ফূর্তির ভূত এফ.এম এ অনুপ্রানিত হয়ে কিছুদিন ভূত ব্লগ লিখত। বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছিল। সম্প্রতি তিনি ভূত(গার্লফ্রেন্ড) লইয়া এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে ভূত ব্লগ লিখতে পারছেন না...কিন্তু চিন্তার কিছুই নাই। আমি আছি না। আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে আসছি এক অদ্ভুত ভূতুড়ে গল্প।

মনে করি রেডিওতে এটি প্রচার করা হচ্ছে... তা কেমন হইতে পারে দেখি... আর.জে.ঃ হেই ডিয়ার ভিউয়ার্স...ইউ সবাই কেমন আছো...য়ামি আর.জে মর্জিনা আবারো চলে এসেছি ভূত এফ.এম নিয়ে তোমাদের মাঝে। ঈদ স্পেশাল ভূত এফ.এম এ আজ ঠোমাদেরকে প্রেজেন্ট করব এক ভয়ঙ্কর গোস্ট স্টোরি। তো আজকের স্টোরি বলতে স্টুডিওতে আছেন মি.মফিজ। হাই মফিজ। মফিজঃ হাই মর্জিনা... মর্জিনাঃ কল মি মর্জ অনলি...ওকে ডিয়ার ভিউয়ার্স...আমরা আর ওয়েট না করে এখুনি চলে যাব আমাদের স্টোরিতে।

স্টোরিটি তার রিয়েল অভিজ্ঞতা থেকে বলবেন মফিজ...তা মফিজ আপনি লাইফ এ কয় বার গোস্টের কবলে পড়েছিলেন...??? মফিজঃ অনেকবার। গুইন্যা রাখি নাই... মর্জিনাঃতাহলে তো আপনার গোস্ট বিষয়ে অনেক এক্সপেরিয়েন্স... মফিজঃ জ্বি। মর্জিনাঃ তাহলে আপনি আমাদের আপনার সব থেকে ভয়ঙ্কর এক্সপেরিয়েন্সটা আমাদের সাথে শেয়ার করুন... মফিজঃ ঠিক আছে...আজ থেইক্যা দশ বছর আগের ঘটনা। কুরবানির ঈদের সময়। দুই দিন পর কুরবানীর ঈদ।

গরুর হাট ছিল সেই দিন। গরু কিনা হয় নাই...আমরা আবার কুরবানীর ঈদে চাইরটা গরু কুরবানী দেই। খানদানী বংশ তো। তা গরু কিন্যা আমাগো বাড়ির চাকর আর কয়েকজনরে দিয়া পাঠায়া দিলাম...ঈদের দুই দিন বাকি...বাজার সরগরম। বন্ধুবান্ধবের লগে আড্ডা দিতে দিতে অনেক রাইত হইয়া গেল...তো বাড়ি ফেরত যামু।

এলাকার কেউরে পাইলাম না। তো একলাই বাড়ির দিকে রওনা হইলাম। ছোট বেলা থেইকাই আমার অনেক সাহস। পথে চাচার সাথে দেখা হইল। চাচার হাতে দেখলাম বোয়াল মাছ।

চাচা মাছটা হাতে দিয়া কইল আজকে আমি দোকানে থাকুম তো। তোমার চাচীরে মাছটা নিয়া দিতে পারবা না। আমি কইলাম কেন পারুম না চাচা। তো মাছ নিয়া রওনা হইলাম...হাট থেইক্যা বাড়ি দুই কিলো পথ। আষাঢ় মাস।

পথ ভালো না। হাতে ছয় ব্যাটারীর টর্চ নিয়া রওনা হইলাম...তারপর...... কিছুক্ষণ নীরবতা... ...ইয়ে মানে আপনাদের বাথরুমটা কোনদিকে? মর্জিনাঃ ওইতো ওই রাইটে গিয়ে লেফটে পড়বে। কেন? মফিজঃ না মানে... অনেক ভয়ের গল্পতো। ব্লাডারে প্রেসার পড়ছে... মর্জিনাঃ ওকে...ডিয়ার ভিউয়ার্স...আমাদের আজকের গেস্ট মফিজ আমাদের শোনাচ্ছিলেন তার গোস্টের স্টোরি...গল্পটা এতই ভয়ের যে মফিজ এর টয়লেট পেয়েছে। তিনি টয়লেটে গেছেন।

আমরা এই ফাকে একটা বিজ্ঞাপন বিরতি নিয়ে নেই... বিরতির পর... মর্জিনাঃ হে আমরা শুনছিলাম গোস্ট স্টোরি বাই মফিজ অন ভূত এফ.এম। আমরা এখন চলে যাব মফিজের কাছে। মফিজঃ কোথায় যেন থামছিলাম? মর্জিনাঃ ওই যে আপনি মাছ নিয়ে ফেরত যাচ্ছেন... মফিজঃ হু। অমাবস্যার রাইত...চাইরদিকে ঘুটঘুইট্যা অন্ধকার...টর্চে নতুন ব্যটারি লাগাইসি। আধা কিলোর মত আসছি...হঠাৎ মর্জিনাঃ আপনি না বললেন ঈদের দুই দিন আগে...ওই দিন কি অমাবস্যা থাকে নাকি... মফিজঃ ওই মিয়া এত্ত কথা কন কে?রোজার ঈদের দুই দিন আগে যে অমাবস্যা থাকে এইডাও জানেন না...এত্ত বুঝলে আফনেই ভূতের গল্প কন মিয়া...আমারে ডাইক্যা আনছেন কেন? মর্জিনাঃ না।

না রাগ করবেন না। আপনি বলেন। মফিজঃ হ্যা। যা বলতেছিলাম...বৈশাখ মাস...নিশুথী রাইত। চাইরদিক শুনশান।

অমাবস্যার রাইত...ছয় ব্যাটারির টর্চ দিয়াও তিন হাত দূরে দেখা যায় না। আধ কিলোর মত আইছি...সামনে একটা বাশ-ঝাড়...মাঝখান দিয়া রাস্তা...হঠাত কইরা টর্চ আর জ্বলে না। নতুন ব্যাটারি লাগাইছি না জ্বলার তো কথা না। এই দিকে হাতে আবার ইলিশ মাছ। তয় আগেই কইছি আমার অনেক সাহস।

জীবনেও ডরাই নাই। গ্রামের রাস্তা সবই চিনি। পুরা মুখস্ত। হাটা ধরলাম। হঠাত মনে হইল কে জানি ডাকল, “মঁফিঁজঁ...কঁইঁ যাঁসঁ”...আমি তো ডরায়া গেলাম...ইলিশ মাছ আবার তেনাগোর খুব পছন্দ।

মনে মনে দোয়া দুরুদ পড়তে শুরু করলাম...আর কইতে লাগলাম... “ভূত আমার পুত পেত্নি আমার ঝি...আল্লা রসূল সঙ্গে থাকলে ভূতে করব কি??”এই দিকে বাশ-ঝাড়ের আড়ালে মবে হইল সাদা পাঞ্জাবী পড়া কে জানি। দেইখা জিগাইলাম কে কে ওইডা...??সাদা পাঞ্জাবী পড়া মানুষটা কইল “আমি আবুল”। গলা চিনতে পারলাম। আমাগো পাশের বাড়ির আবুল। ছোটবেলা থেইক্যা একলগে বড় হইছি...আবুলরে জিগাইলাম এত রাইতে তুই ঝাড়ের চিপায় কি করস...আবুল কইল বাজার থেইক্যা যাইতেছিলাম হঠাত পেটটায় মোচড় দিল তো...দুই জনে মিল্যা কথা কইতে কইতে হাটা ধরলাম।

শরত মাস...আসমান পুরা পরিস্কার...পূর্ণিমার রাইত...দুই জনে মিল্যা হাটতাছি...হটাত আবুলে কইল খাড়া মুইত্যা লই...আমারো চাপচিল। দুইজনে রাস্তার দুই দিকে দাড়ায়া পড়লাম। কাজ সাইরা পিছে ফিরা দেখি আবুল নাই...কোনখানেই দেখা যায় না...হঠাত খেয়াল হইল আমার সাথে মাছ ছিল...চাইয়া দেখি হাতে খালি মাছের রশিটা আছে। মাছ নাই...বুইঝা ফালাইলাম...উনারা আবুলের বেশে আইছিল...আমি তো ডরে...বাড়ির দিকে দিলাম দৌড়...বাড়ির কাছাকাছি আইসা পড়ছি হঠাত দেখলাম আবুল আমার সামনে দাড়ায়া আছে...ওর হাতে ইলিশ মাছ...?আমি তো চোখ বন্ধ কইরা চিক্কুইর পাড়তে পাড়তে বাইত দৌড় দিলাম... “ভূতে আমারে মাইরা ফালাইলো রে...”। বাড়িত গিয়া তো আমি অজ্ঞান...এই বার বুঝেন অবস্থা... মর্জিনাঃডিয়ার ভিউয়ার্স আমরা এতক্ষন লিসেন করলাম মফিজের মারাত্মক ভয়ঙ্কর ভূতের সত্য স্টোরি...আমরা আবার ফিরে আসব নেক্সট উইকে সেইম চ্যানেলে...সেইম টাইম...সেই পর্যন্ত বাই-বাই এন্ড টাটা... (এই গল্পের সকল চরিত্র এবং ঘটনা কাল্পনিক।

জীবিত কিংবা বিবাহিত কারো সাথে এর কোন মিল পাওয়া গেলে তা অনভিপ্রেত কাকতাল মাত্র। এর জন্য লেখক দায়ী নহে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।