আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সায়েন্স ফিকশন ছোট গল্পঃ সাঙ্ঘাতিক ভূল

লিখতে মজা লাগে :P জেনারেল ক্বীন অবাক হয়ে তার সামনে বসে থাকা হালকা পাতলা ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছেন। ছেলেটার মাথার এক পাশ থেকে রক্তের একটা চিকন ধারা বেয়ে পড়ছে...নাকটা বিশ্রী ভাবে বেঁকে আছে...সারা শরীরে ধস্তাধস্তির স্পষ্ট চিহ্ন। কিন্তু ছেলেটার চোখের দিকে তাকালে বাকি সব তুচ্ছ হয়ে যায়, হালকা নীল চোখে কিসের যেন প্রশান্তি। জেনারেল ক্বীন ভেবেই পাচ্ছেন না,নিশ্চিত ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিণতি জানার পরও সে এতটা রিলাক্স থাকছে কিভাবে... "আপনি রিগ কে কোথায় রেখেছেন? আমার ধারণা সার্বিয়ায়। " জেনারেল থতমত খেয়ে গেলেন।

তার সামনে বসে এক আহত বন্দি এ কি সুরে কথা বললো? এত বড় সাহস...তবে নিজেকে সামলালেন তিনি। মৃদু হেসে বললেন, "রিগকে বাঁচিয়ে রাখা হবে,এই ধারণা তোমার হল কেন?" "আপনাদের মত গবেটদের দলের জন্য তার মাথার নিউরাল নেটওয়ার্কটা খুব মূল্যবান বিবেচিত হবার কথা। খুব সম্ভবত তার মাথায় একটা নিউরাল আউটপুট মডিউল লাগানো হয়েছে। " প্রথমে ভয়ানক চটে উঠলেও মনেমনে বেশ চমৎকৃত হলেন জেনারেল। "তোমার সম্পর্কে যতটুকু শুনেছি তার তূলনায় অনেক বেশি বুদ্ধিমান তুমি, কুষান।

তোমার অনুমান ঠিকই আছে, এরকমই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কিন্তু,তখনই আমাদের হাতে ট্রান্সপোর্সিয়াল আগ্রেগেটিভ প্রযুক্তিটা এসে পরে। " কুষাণ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে দেখে মৃদু হাসলেন জেনারেল," নতুন ঠেকছে নাকি শব্দটা?" কুষাণ কিছু বললো না। তিনি আবার শুরু করলেন,"আচ্ছা,খুব ভালো করে খেয়াল করোতো, বছরের পর বছর তুমি আমাদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলে,তারপর কথা নাই বার্তা নাই,কোনো রকম কিছু বোঝার আগেই তোমার আস্তানায় হানা দেই আমরা-কিভাবে এত সহজে ট্রেস করে ফেললাম তোমাকে,অবাক হওনি?" কুষান মুখ শক্ত করে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ তার চেহারার দিকে তাকিয়ে থেকে হাহা করে হেসে উঠলেন জেনারেল।

"তোমাকে ধরার জন্য যে "অপারেশন সাইলেন্ট কিল" পরিচালনা করা হয়,তার নেতৃত্বে ছিল কে জান? মেজর রিহানুস রিগান"। ভয়ানক চমকে উঠল কুষাণ। "কি বলতে চাচ্ছেন? রিগ? মানে কি..." তাকে থামিয়ে জেনারেল বলতে শুরু করলেন," নিউরাল নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করে কোনো লিভিং ব্রেইনের ইউজ অনেক ঝামেলার ব্যাপার। প্রায়ই সিস্টেম ফেইল করে,ব্রেইন ড্যামেজের উচ্চ হার তো আছেই...তাই আমরা নতুন এই প্রযুক্তি দিয়ে একটাছোট চতুর্থ প্রজন্মের কপোট্রন কারো মস্তিষ্কে বসিয়ে দেই। সে খন সম্পূর্ণ আমাদের কন্ট্রোলে এসে পড়ে।

তোমার জানের বন্ধু রিগ এখন ফেডারেশনের একজন বিশ্বস্ত সৈনিক, রেসিস্টেন্সের যম। " কুষাণের মুখটা হতাশায় বিকৃত হয়ে পড়ে। তা দেখে মনে মনে বেশ তৃপ্তি লাভ করেন জেনারেল ক্বিন। হাসি মুখে বলেন, "তোমার জন্য আরো সুখবর আছে, তোমার ইন্টেরোগেশন, নিউরাল কপি,এক্সিকিউশন পুরোটা তদারক করবে মেজর রিগান। খারাপ নয় কি বলো? শেষ সময়ে প্রিয় বন্ধুর কাছে থাকা?" হাসতে হাসতে তিনি ভিডি টিউবটা কাছে টেনে নিয়ে মৃদু সুরে মেহর রিগানকে পাঠিয়ে দেবার নির্দেশ দেন।

সারা শরীর আর্মারে ঢাকা, মাথায় চকচকে সাদা হেলমেটে রিগান কক্ষে প্রবেশ করে। কুষাণ তাকিয়ে আছে তার দিকে,কি যেন বোঝার চেষ্টা করছে। "Order no 00805, Item no 67, interrogation, if needed Neural copying, Gas chamber Execution" নির্বিকার ভাবে অফিসিয়াল অর্ডার গুলো আওরে যান জেনারেল। রিগ কুষাণকে ধরে হিচড়ে উঠায়। হঠাৎ মরিয়া হয়ে কুষাণ রিগের কানের কাছে গিয়ে চিৎকার করে "নগারি সনুহারি-নগারি সুহানাআ' শব্দ দুইটা উচ্চারণ করে।

সাথে সাথে রিগ ছিটকে দূরে সরে যায়, চিৎকার করে মাথা চেপে ধরে। একাটানে হেলমেট খুলে ফেলে। এদিকে জেনারেল কি ঘটছে কিছুই বুঝতে না পেরে হতভম্ব হয়ে গেছেন। রিগ চোখ পিটপিট করে এদিক উদিক তাকাচ্ছিলো...কুষাণের দিকে তাকিয়ে অস্ফুট স্বরে বলে উঠলো,"কুষাণ,তুই?' জনারেল বলে উঠলেন," কি হচ্ছে এখানে?" তার স্বরে দিশেহারাভাব স্পষ্ট। মাথা ঝাড়তে ঝাড়তে রিগ কুষাণের পাসে এসে দাঁড়ালো, তার হাতের ছোট রে গানটা কুষানের হাতে, সেটা জেনারেলের ঠিক কপালের মাঝে লক করা আছে।

ব্যাপারটা বুঝতে পেরে জেনারেল নড়াচড়া করছেন না। এবার কুষাণ বলা শুরু করে, "মানুষের মস্তিষ্কে কপোট্রন বসানোর প্রযুক্তিটা কিন্তু আমাদের ক্যাম্পেরই এক প্রতিভাবান বিজ্ঞানীর আবিষ্কার,কয়েক হাত ঘুরে তোমাদের হাতে এসেছে। নিজেরা নতুন নাম দিয়েছ,কিন্তু এটার খুটিনাটি সব জানতে পারো নি? কপোট্রনের কন্ট্রোল ওভারড্রাইভ করার জন্য অটোসাজেশন দেয়া যায় যে কাউকে,আমাদের সবাইকে পরীক্ষা মূলক ভাবে দেওয়া ছিল। রিগের টা তার আর তার বাবার নাম উলটো করে,ভাগ্যিস মনে ছিলো..." এবার জেনারেলের চেহারাটা হলো দেখার মত। কুষাণ রিগের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বললো, "এই পেট মোটা জেনারেলকে নিয়ে কি করি বলতো?" "কত কিছু করা যায়...আপাতত বেটার কথাবার্তা বন্ধ করে দেই" নার্ভ ট্রাংকুলাইজার পিন হাতে রিগ জেনারেল ক্বিণের দিকে এগিয়ে যায়।

তার জুলফিতে তখন চিকন ঘাম ! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.