আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াত-শিবিরই বড় নাস্তিক তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে...

জামায়াত-শিবির মহানবী (সা.) ও সাহাবাদের নামে কটূক্তি করেছে উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ তৌহিদী জনতা সংহতি পরিষদ। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম ও পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ গতকাল শনিবার ঢাকায় এক সমাবেশে বলেন, জামায়াত-শিবিরই বড় নাস্তিক, মুরতাদ। তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে শোলাকিয়ার ইমাম জামায়াতকে কোনো ইসলামী দল নয় বলে উল্লেখ করেন।

মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, 'এখনই জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। এর আগে তাদের প্রাণভোমরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করতে হবে এবং এগুলো জনগণের মালিকানায় নিয়ে নিতে হবে। ' তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, 'জামায়াতের কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অর্থ রাখা মানে শয়তানকে সাহায্য করা, বিধর্মীদের সহায়তা করা। ' ইসলামের নামে প্রতিষ্ঠান গঠন করে জামায়াত-শিবির আড়ালে সুদ-ঘুষ নেয় উল্লেখ করে মাওলানা মাসউদ বলেন, এমন প্রতিষ্ঠানে যারা টাকা রাখে তারা জাহান্নামে পুড়ে মরবে। সমাবেশ শেষে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন শোলাকিয়ার ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

এর আগে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রতিনিধিরা সমাবেশে বক্তব্য দেন। মোনাজাতের পর আবারও বক্তব্য শুরু করে আল্লামা মাসউদ জামায়াত-শিবিরের গুণ্ডাদের হাতে নিজের শাহাদাত কামনা করে বলেন, 'তবে আমি শহীদী মর্যাদা পাব এবং সাহাবায়ে কেরামদের সঙ্গে আমার হাশর হবে। ' ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকার কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সমাবেশের সুযোগ করে দেওয়া হয়। জনসভা শুরু হয় বিকেল আড়াইটার পরে। বিকেল ৪টার দিকে বক্তব্য শুরু করেন শোলাকিয়ার ইমাম।

সমাবেশে প্রয়াত রাষ্ট্রপতির রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মাওলানা মাসউদ সমাবেশে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, 'জামায়াতের আদর্শ হলো মওদুদী আদর্শ। আর মওদুদী ছিলেন একজন সাংবাদিক। কোনো আলেম নন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মওদুদী আল্লাহ-রাসুলকে অবমাননা করেছেন।

জামায়াত তাঁর আদর্শ লালন করছে। জামায়াত-শিবির কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারা সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদী সংগঠন। আল্লাহ ও রাসুলকে অবমাননা করে তারাই আজ বড় নাস্তিক ও মুরতাদে পরিণত হয়েছে। তাই তাদের প্রতিহত করতে হবে। ' শোলাকিয়ার ইমাম আরো বলেন, 'মহাসমাবেশ না করার জন্য নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছিল।

প্রতিহত করার হুংকার দিয়েছিল কয়েকটি সংগঠন। মহাসমাবেশে পথে আসার সময় বিভিন্ন জায়গায় হামলার শিকার হয়েছে অনেক কর্মী। হাসপাতালে তাদের একজনের অপারেশন চলছে। নানা রকম হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে এই সমাবেশ আসা প্রমাণ করে, জামায়াতের দিন শেষ। তাদের রক্ষা নেই।

' মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, 'প্রধানত দুটো ওয়াদার ওপর এ দেশের জনগণ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে। এক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, আরেকটি হলো কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী আইন প্রণয়ন না করা। ' তিনি শিক্ষানীতি ও নারীনীতিতে যেসব ধারা কোরআন-হাদীসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, দেশের বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের পরামর্শে তা অবিলম্বে সংশোধনের দাবি জানান। মুষ্টিমেয় কিছু ব্লগার ইসলামের অবমাননা করছে বলেও অভিযোগ করেন শোলাকিয়ার ইমাম। তিনি বলেন, 'এই ব্লগারদের উচিত তওবা করে সঠিক পথে ফিরে আসা।

' অনেক দেশেই ধর্ম অবমাননা রোধের আইন আছে উল্লেখ করে আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, বাংলাদেশে এ ধরনের আইন প্রণয়ন করতে হবে। তাহলে ধর্ম সম্পর্কে কটূক্তি করার সাহস কেউ দেখাবে না। ফরিদ উদ্দিন মাসউদ কওমি মাদ্রাসার সনদের সরকারি স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে বলেন, ব্লগে ইসলামের অবমাননাকারীদের চিহ্নিত করতে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাতে দেশের কওমি, আলিয়া ও হাক্কানি পীর-মাশায়েখদের থেকে প্রতিনিধি সংযুক্ত করতে হবে। ঢালাওভাবে দাড়ি-টুপিওয়ালাদের পুলিশি হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন, 'মওদুদীরা দাড়ি রাখে না, পাগড়ি পরে না। তারা পাঞ্জাবির সঙ্গে প্যান্ট পরে।

দাড়ি-টুপি দেখলেই ধরবেন না। ধরলে আল্লাহর গজব পড়বে। ' তিনি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ, যুদ্ধপরাধীদের বিচার দ্রুত করা,আল্ল?াহর রাসুলের অবমাননাকারীদের শাস্তি, কওমি মদ্রাসার স্বীকৃতি, ভারতে দেওবন্দ মাদ্রাসায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য ভিসা চালু, কওমি মাদ্রাসার আলেমদের ঢালাওভাবে জামায়াতি চিহ্নিত ও ধরপাকড় বন্ধসহ ১০ দফা দাবি জানান। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ তৌহিদী জনতা সংহতি পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আল্লামা দেলোয়ার হুসাইন সাইফী, মুফতি মুহাম্মদ আলী, খুলনার মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুফতি কেফায়েতুল্লাহ, কিশোরগঞ্জের মুফতি আবদুল কাইয়ুম খান, ঢাবি শিক্ষক মাওলানা হুসাইনুল বান্না, সিলেটের মাওলানা আবুল হোসেন চতুলী, দিনাজপুরের মাওলানা আইয়ুব আনসারী, রংপুরের মাওলানা হুসাইন আহমদ, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মাওলানা আরীফ উদ্দীন মারুফ, মাওলানা ফারুক হুসাইন প্রমুখ। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।