আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এখন অনেক নির্ভার সাকিব

দুঃখ আমার সাথেই আছে তবু দেখো দুখি আমি নইতো... মাঝে চলে গেছে ৯ টেস্ট, ৪৯ ওয়ানডে আর ৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ব্যবধানটা দুই বছরেরও বেশি। অধিনায়কত্বের মুকুট নেই মাথায়, সাকিব আল হাসান এখন আবার দলের এক সাধারণ খেলোয়াড়। সিরিজ চলাকালীন অধিনায়কেরা সাধারণত ম্যাচের আগের দিন বা ম্যাচ শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন। বাকি দিনগুলোতে পালা করে মাইক্রোফোনের সামনে পাঠানো হয় অন্য খেলোয়াড়দের।

জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর অধিনায়কত্ব হারানো সাকিব কাল সেই ‘অন্য’ খেলোয়াড়দের একজন। অনেক নির্ভার, নিশ্চিন্ত মনে হলো তাঁকে। অধিনায়ককে নিজের আগে দল নিয়ে ভাবতে হয়। এখন আর সেই দায় নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে সাকিবের একটু হালকাই লাগার কথা।

‘বেশ নির্ভার লাগছে। নিজেরটা নিয়ে অনেক কিছু ভাবতে পারছি...’—বলছিলেন সাকিব। ২০০৯-এর জুলাইয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার ইনজুরি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব তুলে দেয় সাকিবের কাঁধে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে দায়িত্ব পান গত বিশ্বকাপের আগে। ওই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পর থেকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত সিরিজ ধরে ধরেই তাঁকে অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়েছে বোর্ড।

মাঝে একবার ইনজুরি থেকে ফিরে মাশরাফি অধিনায়কত্ব করেছেন শুধু ২০১০-এর জুলাইয়ে যুক্তরাজ্য সফরের পাঁচ ওয়ানডেতে। অধিনায়কত্বের প্রথম প্রহরের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ আবারও সামনে। তবে সাকিব যেমন এখন আর অধিনায়ক নন, সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজও একই দল নয়। ক্রিকেটারদের বিদ্রোহের সুবাদে ২০০৯-এ ক্যারিবীয় দলটা দুর্বলই হয়ে পড়েছিল। এবারের দল সে তুলনায় অনেক শক্তিশালী এবং বলা হচ্ছে, তাদের পেস আক্রমণ আর শর্ট বলই নাকি বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

তবে সাকিব এটা পুরোপুরি মানছেন না, ‘আমরা ইংল্যান্ডে খেলে এসেছি, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম সিরিজ খেলেছি। মনে হয় না শর্ট বলে খুব সমস্যা হবে। ওটা নিয়ে চিন্তাও করছি না। আমাদের কাজ রান করা। বোলারদের কাজ ভালো জায়গায় বল করা।

উইকেট পেলে ভালো, না হলে রান আটকাও। আমাদের পরিকল্পনা এ রকমই। ’ আগামীকাল টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ। কিন্তু ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্র সংস্করণেই যে বাংলাদেশ দলের যত দুর্বলতা! এ পর্যন্ত ১৬ ম্যাচ খেলে মাত্র তিনটি জয়, দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামা পাঁচ বছর পর। টি-টোয়েন্টির দুর্বলতা ঘোচাতে বেশি বেশি ম্যাচ খেলার বিকল্প দেখছেন না সাবেক অধিনায়ক, ‘আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি আমরা তিন মাস-ছয় মাস পর একটা খেলি।

এভাবে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। ্রপ্রতি সিরিজে অন্তত একটা করে হলেও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেললে ভালো হয়। ’ সাকিবের নিজের অবশ্য অনভ্যস্ত হওয়ার কথা নয় টি-টোয়েন্টিতে। আইপিএল, চ্যাম্পিয়নস লিগে কম ম্যাচ তো খেলেননি! সদ্য চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলে এসে তিনি কোনোভাবে ক্লান্তি অনুভব করছেন কি না, সেটাই বরং প্রশ্ন। সাকিব অবশ্য উড়িয়ে দিলেন আলোচনাটা, ‘ভালোই ফ্রেশ আছি।

এ নিয়ে খুব একটা চিন্তা নেই। কখনোই মনে হয় না যে মানসিক বা শারীরিকভাবে আমি ক্লান্ত। ’ চ্যাম্পিয়নস লিগের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রস্তুতিতে শুরু থেকে ছিলেন না। তবে দেশে ফিরে অনুশীলনে যোগ দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত যা দেখেছেন, তাতে সন্তুষ্ট সাকিব, ‘আমরা বেশ কয়েকটা ম্যাচ খেলেছি, একটা টুর্নামেন্ট হয়েছে। প্র্যাকটিস সেশনগুলোতে সবাই অনেক পরিশ্রম করছে।

অন্তত জিম্বাবুয়ে সিরিজের চেয়ে ভালো প্রস্তুতি বলে মনে হচ্ছে। ’ আগে ব্যাট করলে মিরপুর স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতার জন্য ১৫০ থেকে ১৬০ রানই তাঁর কাছে যথেষ্ট মনে হচ্ছে। ক্যারিবীয় পেসারদের গতি আর বাউন্সের সামনেও ওই রান করা সম্ভব বলছেন সাকিব, ‘খুব ভালো কিছু করতে হলে ওদের পেস বোলারদের বিপক্ষে আমাদের ব্যাটসম্যানদের সতর্ক থাকতে হবে, সুশৃঙ্খল থাকতে হবে। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস আছে যে তারা ভালো করতে পারবে। ’ পেস শুধু নয়, দেবেন্দ্র বিশুর লেগ স্পিনটাও এই সিরিজে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের ভোগাবে বলে আশঙ্কা।

অন্যদিকে সাকিবের বাঁহাতি স্পিন নিয়েও কম চিন্তা নয় ক্যারিবীয়দের। পেসার বনাম স্পিনারদের লড়াইয়ের আড়ালে সাকিব বনাম বিশুর লড়াইও কি তাহলে হচ্ছে? লড়াইয়ে কে জিতবে? সাকিবের কূটনৈতিক উত্তর, ‘বলা মুশকিল। তবে আমি দলের জন্য অবদান রাখতে পারলেই খুশি থাকব। ’ অধিনায়কত্বের চাপ নিয়েও কম অবদান রাখেননি। নির্ভার সাকিবের জন্য তো কাজটা আরও সহজই হওয়ার কথা।

খবরটা আজকের প্রথম আলোতে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।