আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছবি ব্লগ : সুইজারল্যান্ড!

অভিলাসী মন চন্দ্রে না পাক, জোছনায় পাক সামান্য ঠাই সুইজারল্যান্ড দেশটা সুন্দর। পাহাড় ও লেকে ভরা দেশ। সবাই মোটামুটি এর প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলীর সাথে পরিচিত আছেন। আমি গত গ্রীষ্মে ২ মাসের জন্য গিয়েছিলাম সেখানে। চলার পথে আমার দেখা সুইজারল্যান্ডকে সামুতে শেয়ার করলাম।

কান্ট্রি সাইড! সুন্দর, কিন্তু কেমন যেন নিষ্প্রান! আসলে প্রাণ মানেই মানুষ, মানুষ না থাকলে ছবি আর বাস্তবের মাঝে ব্যাবধান খুবই কম। কান্ট্রি রোডস!ফাঁকা রাস্তা হলেও প্রচুর গতিরোধক ক্যামেরা থাকায় নিরাপদ সড়ক। উঁচু-নিচু-ঢালু সড়কে চলতে চলতে সুন্দর গান শুনতে বেশী মজা লাগে। রোড সাইড! একটা কমন ভিউ। সুইস জুড়ে এমন জায়গা অসংখ্য।

কৃষকের খামার বাড়ি। দুধ,চিজ বানানোর জন্য খামার ও ফ্যাক্টরী সবই এক জায়াগায়! মাঝে মাঝে মনে হয় , ধুর! কিসের জন্য এত হাউকাউ! এত প্ল্যান এত স্বপ্ন? এমন একটা খামার বানিয়ে বিয়ে শাদি করে বাচ্চা-কাচ্চা মানুষ করি। দিনে খামারে কাজ করবো রাতে বৌ এর সাথে ঝগড়া করবো। খাবার টেবিলে বাচ্চাদের চুমু-ধমক দিব! শান্তি এভাবেই ধরা দিবে। রাইনের ওপাশে জার্মানী! একটা নৌকা আর ছিপ থাকলে চমৎকার সময় কাটে নদীটায়।

মজার বিষয় হলো, কেউ বলে না দিলে বুঝাই যায় না যে এটা জার্মানীর মত একটা দেশের বর্ডার! এটা বাদেন শহরের একাংশ। পাহাড়ি ও লেকের শহর বাদেন। এখানে টিনএজারদের বেশী বেশী চোখে পড়ে। ঘটনাটা বুঝতে না পারলেও শহরটার প্রাচিন দর্শনটা ভাল লাগে। চার্চের চুড়া! আমি এজন্যই বলি সাংবিধানিক সেক্যুলার হয়ে যাওয়াই ভাল! এরা এত সেক্যুলার কিন্তু জায়গায় জায়গায় চার্চ, সেগুলোতে মানুষও বেশ! আবার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সেক্যুলার হয়ে আছে! আমরাও কাগজে কলমে সেক্যুলার হয়ে যাই।

অন্তরে ধর্ম থাকুক। ইউনিভার্সিটি অব জেনেভা! এখানেই গিয়েছিলাম ২ মাসের জন্য ফ্রেঞ্চ শিখতে। বেশ কিছু মজার বিষয়ের সাথে একটা চরম আবিষ্কার করলাম! জোশ শব্দের উৎপত্তি! জ্বী ফ্রেঞ্চে I dare= j'ose । বাংলার জোশ শব্দটা একটু বিবর্তিত হয়ে ডেয়ার=উৎসাহ হয়ে গেছে! সুইস রেল উইন্ডো! এইটা একটা ঘটনা! ওদের রেলওয়ে চমৎকার। অত্যন্ত ব্যায়বহুল কিন্তু হেন কোন জায়গা নেই যেখানে রেল যায় না! আর চমৎকার সার্ভিস।

দোতালা রেলগুলো বেশী ভাল কারন ঝাকিবিহীন স্মুথ ১ তলা রেল যখন হাইস্পিডে থাকে তখন কাৎ-চিৎ হয় ব্যাপক। সেটা আতংকের সাথে মাথা ঘুরানোর জন্য উত্তম! রেলওয়ে ভিউ! আমাদের নরসিংদি-ঘোড়াশাল-ব্রাক্ষনবাড়িয়ার দিকের তিতাসের পাড়গুলো যদি শুধু পরিষ্কার করে রাখা যেত তাহলে কি এর চেয়ে কম সুন্দর লাগতো? স্লোপি সুইস! এটা একটা বিশাল বাঁকের একাংশ। নিচের ছবিগুলোও এই বাঁকেরই। চমৎকার জায়গা। আমি মুগ্ধ হয়েছি।

এর বর্ণনায় গেলাম না। যার যার তার তার মনের মাধুরী মিশিয়ে বর্ণনা করুন! লেক জেনেভা! আমার ওয়ালপেপার !! সুন্দর না? সুইস গ্রাম! আচ্ছা আমাদের দেশের কাঁচা ঘরবাড়িগুলো একদিন সব ইট-কাঠের দালান হয়ে যাবে তাই না? গ্রামের মাঠ! বিলের পাড়ের আমাদের মাঠগুলো এর চেয়ে কত সুন্দর। লেক জেনেভা! লেক জেনেভা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ আরেকটি ছবি ব্লগ পোস্ট করেছি আগেই। পূর্ণিমা রাতে লেক! শহরের নামটা মনে আসছে না! সুইস লগ্ন মাধুরী। আমার কাছে লগ্ন মাধুরী বেশী ভাল লাগে! একদম দেশের কথা মনে করায় দেয়।

জেনেভা ফেস্টিভ্যালের একটা রাইড! আপাতত আর ছবি আপলোড হচ্ছে না। ২ মাসের এই ট্রিপে অনেক অনেক ছবি তুলেছি। লেক জেনেভা Click This Link ও জেনেভা ফেস্টিভ্যাল নিয়ে Click This Link আগে ২ টা ব্লগ পোস্ট করেছিলাম। আরো ছবি রয়ে গেছে। অনেকগুলো সাইজে বড় তাই সামুতে দেয়া যায় না।

সেগুলো ফেসবুকে দিয়ে রেখেছি। ছবিগুলো একদমই অরিজিনাল মানে বিন্দুমাত্র এডিটিং করা হয় নাই। সুইজারল্যান্ডের সৌন্দর্যের চেয়ে বেশী আকর্ষনীয় লেগেছে পরিচ্ছন্নতা! এতটাই যে আমি মাঝে মাঝে ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ভেবেছি যে, শালারা কি জ্বীন কব্জা করে ফেললো নাকি? জঙ্গলে বা প্রত্যন্ত এলাকাতেও কোন কাগজের ঠোঙ্গা মোঙ্গা তো নাইই ঝড়া পাতাও দেখলাম না! জ্বীন চালান না দিলে এমন পরিচ্ছন্নতা ধরে রাখা সম্ভব না মনে হয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।