আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আহা স্বদেশ, খুব মায়া হয় তোমার জন্য

বিচ্যুত যৌবনে জোছনা আমায় করেছে উম্মাদ কতশত মানুষইতো আছে কিন্তু সানাউল্লা নূর বাবু স্বতন্ত্র। সানাউল্লাহ বাবুকে আলাদা করে চেনা যায়। সানাউল্লাহ বাবুকে চেনে না এমন মানুষ বাংলাদেশে নাই। সানাউল্লাহ বাবু শুধু বাংলাদেশেই নয় আজ সারা বিশ্বের মানুষের কাছেও কম বেশী পরিচিত। ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান থেকে ইথিওপিয়ার মানবাধিকার কর্মি মারিও বেলিয়ানো এর কাছেও পরিচিত।

কিন্তু এ পরিচিতি কোন সুখের পরিচিতি নয়। এ পরিচিতি কোন আনন্দের নয়। এ পরিচিতি গ্লানির, ব্যার্থতার, লজ্জার। এ পরিচিতি দেশকে পরিচিত করে তুলছে অসহনীয় বিদ্বেষের বিরান ভূমি। এ পরিচিতি মানবাধিকার পরিস্থিতিকে নিয়ে গেছে অতল গহ্বরে।

এ পরিচিতি রাস্ট্রকে নিয়ে গেছে সন্ত্রাস লালন পালনের অভয়ারন্য হিসেবে। তাই শিরোনামেই বলে দিয়েছি। আহা আমার প্রিয় স্বদেশ তোমার জন্য খুব মায়া হয়। আতঙ্কিত জনপদ নাটোর : রাষ্ট্রীয় ক্ষমা ও জামিনপ্রাপ্ত খুনিদের দাপট চলছে সানাউল্লাহ বাবু হত্যা যজ্ঞ যজ্ঞ শব্দ দিয়ে আমরা বুঝাই কোন বিরাট আয়োজনকে। কোন বিশাল অনুষ্ঠান হলে আমরা সেটা যজ্ঞ বলে তার আরো বিরাটত্বকে প্রকাশ করি।

তেমনি ভাবে বাংলাদেশের একজন তরুন উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুকে যজ্ঞ করে হত্যা করা হয়। সেদিন ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর। দিনটা যে খুব খারাপ ছিলো তা নয়। প্রতিদিনের মতো নাটোরবাসী তাদের জিবনযাত্রা শুরু করেছে। গুড়ি গুড়ি বৃষষ্টি হচ্ছিলো।

বিরোধীদল নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ করছে সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের ব্যাপারে। সভা সমাবেশ হবে, এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ রাজনীতির দেশ, মিটিং মিছিলের দেশ। এভাবেই শেষ হবে মফস্বলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড। কিন্তু না, নাটোরে তা হলোনা।

কারন নাটোরে কিছু রক্ত খেকো জানোয়ারের জন্ম হয়েছে। তারা রাস্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠা রাস্ট্রের অভিবাবকদের প্রিয় সোনার ছেলে। তারা একটি হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড থেকে রাস্ট্রপতির সদ্য বিশেষ ক্ষমা প্রাপ্ত। এতোসব বিশেষ বিশেষ নিয়ে যাদের চলাফেরা তারা কতটা বিশেষ সন্ত্রাসী তা তারা ফি বছর প্রমান করে। তারা রাস্ট্রপতি কতৃক ক্ষমা প্রাপ্ত হয়ে নিষ্পাপ হওয়ার তকমা লাগিয়ে বাড়ি এসেই নির্মম ভাবে হত্যা করলো তরুন নেতা সানাউল্লাহ নূর বাবুকে।

সে ভয়ানক দৃশ্য আজো ইউটিউবে আপনি দেখতে পাবেন। কিভাবে একটা জীবিত মানুষকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একদল হায়েনার আক্রমনে কিভাবে একটি তরতাজা প্রান নিথর হয়ে গেলো, নিস্তেজ হয়ে গেলো। সানাউল্লাহ হত্যা, আসামীর জামিন সরকার কত ধরনের অপরাধী খুঁজছে এসময়ে। কত ধরনের অপরাধে দেশের রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্ধ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত কুরআনের তাফসিরকারীকে পর্যন্ত গ্রেফতার করছে।

পত্রিকার নিউজে মাননীয় শব্দটি না আসায় সম্পাদককে জেল খাটানো হলো। অথচ সানাউল্লাহ নূর বাবুর খুনীদের ভিডিও চিত্র থাকা সত্বেও তারা পার পেয়ে গেলো, জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে গুন্ডামি করে বেড়ায়? আমি জানিনা বিচারক অন্ধ কিনা। কিংবা এ বিচারকরা মূর্খ কিনা?? অথবা এরা মানুষ্য সম্প্রদায়ের না পশু সম্প্রদায়ের সে প্রশ্নও এসে যায় সংগত কারনেই। যে যুগে মানুষ স্টিভ জবসের মতো মানুষ মারা যাওয়ায় সারা বিশ্বের ৭০০ কোটি মানুষের মনে শোকের ছায়া নেমে আসতে পারে সে যুগে বাংলাদেশের সবচেয়ে এলিট শ্রেনীর লোক বিচারকরা ইউটিউভ দেখতে পারেনি এটা অন্তত আমি বিশ্বাস করিনা। হয় তারা অন্ধ না হয় তারা এক চোখা?? সরাসরি যেখানে সানাউল্লার হত্যাকারীদের ভিডিওচিত্রে দেখা যাচ্ছে সেখানে তারা কিভাবে জামিন পায়, বিচারকতো মালুম?? সর্বশেষ আপডেট বিএনপি রাজনৈতিক ভাবে তাদের এক তরুন রাজনৈতিক নেতা হত্যার বিচারের দাবি করতেই পারে।

সানাউল্লাহ বাবুর পরিবার তার জন্য একটা স্মরন সভা করতেই পারে। কিন্তু তাদের এ স্মরন সভা করতে দেওয়া হলোনা। বিএনপি যেখানে ৩ বারের চেস্টায় ও ৩বার স্থান বদল করে অবশেষে একটা জায়গায় স্মরন সভা করার অনুমতি পেলো সেখানে আওয়ামীলিগ কর্মী সভা ডেকে প্রসাশনকে দিয়ে বিএনপির সভা পন্ড করালো। হায় আফসোস, এ কোন দেশে বসবাস করি আমরা। তোমরাই খুন করবে, তোমরাই জামিন দেবে, জামিন পাবে, আবার মৃত মানুষটাকে একটু স্মরন করতে চাইলে তোমরাই বাঁধা দেবে।

এজন্যই বলছি আহা দেশটার জন্য খুব মায়া হয়। আ. লীগের কর্মীসভায় আটকে গেলো বাবুর স্মরণসভা একটা রিভার্স গল্প শোনাই, ধরুন সানাউল্লা নূরের কোন উত্তরসূরি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলো কোন দিন? সে এসে বাংলাদেশে ১৫ অগাস্ট শোক দিবস পালন করা বন্ধ করে দিলো। যত জায়গায় শেখ মুজিবের মৃত্যদিন পালন হবে তত জায়গায় পাল্টা সমাবেশ ডাকিয়ে প্রশাসন দিয়ে ভন্ডুল করে ফেলে। একটুওকি রাগ বা দুঃখ হবে না মাননীয় রাস্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী? যদি হয় তাহলে সানাউল্লার সতীর্থদের এ ব্যাথা বুঝার চেস্টা করুন। ক্ষমতায় চিরদিন থাকা যায় না।

(সুশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াই চলছে চলবে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।