আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

(Part-৬) 'ট্রানজিট'-এর সহজপাঠ। ট্রানজিট ও করিডোর কি, ভারতকে ট্রানজিট না করিডোর দেওয়া হলো?

16. বাংলাদেশের প্রতি ভারতের ভূমিকা কতটা বন্ধুত্বপূর্ণ? ট্রানজিট বা করিডর সুবিধার মধ্য দিয়ে ভারত তার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে পণ্য পরিবহনে ১২ থেকে ৮০ ভাগ পর্যন্ত খরচ কমাতে পারবে বলে বাংলাদেশের ট্যারিফ কমিশনের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, বাংলাদেশ তার যে প্রতিবেশীকে এত বড় দীর্ঘস্থায়ী সুবিধা দিতে যাচ্ছে সে বাংলাদেশের প্রতি কতটা বন্ধুভাবাপন্ন? এক্ষেত্রে সমসাময়িক কালের বহু নেতিবাচক উদাহরণ তুলে ধরা যায়। এক্ষেত্রে কেবল সীমান্তে কাঁটাতার নির্মাণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা যায়। অনেকেই জানেন যে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দুটি আলাদা রাষ্ট্রের অসিত্ব ঘোষণা করলেও স্থানীয় জনপদ ততটা আলাদা নয়। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম সীমান্তে হাজার হাজার পরিবার সীমান্তের দু পাড়ে কৃত্রিমভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ে আছেন।

সীমান্তের দু পাড়েই এসব পরিবারের আত্মীয়তার বন্ধন। এসব বিবেচনা সত্ত্বেও ১৯৮৬ সাল থেকে ভারত বাংলাদেশের চারিদিকে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার প্রকল্প নেয়। এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। ভারতে তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করে ২০০৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর স্থানীয় নাগরিকরা এ সম্পর্কিত যেসব তথ্য প্রকাশে সরকারকে বাধ্য করা হয়েছে তাতে দেখা যায়, দেশটি বাংলাদেশকে ঘেরাও করে ফেলার জন্য ৫২০৫.৪৫ কোটি রুপি অর্থ বরাদ্দ করেছে এবং সর্বমোট ৩৪৩৬. ৫৯ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হবে। কোন ধরনের আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মধ্যদিয়ে নয়, স্রেফ প্রশাসনিক উদ্যোগে ভারত বাংলাদেশকে ঘেরাও করে ফেলার এইরূপ একটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, যার সঙ্গে কেবল তুলনা চলে ইসরায়েল কর্তৃক প্যালেস্টাইনী অঞ্চলের চারিদিকে দেয়াল নির্মাণের কর্মসূচির।

অথচ এইরূপ কর্মসূচি চলাকালেই এবং সে বিষয়ে নিরবতা বজায় রেখেই বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা ভারতকে করিডর সুবিধা দেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ভারত অতীতে বাংলাদেশের কাছে কয়লা বিক্রির ক্ষেত্রে অদ্ভুত ও নজিরবিহীন কারন দেখিয়ে কয়েকগুন বেশি মূল্য দিতে বাধ্য করে। তা ছিল নিম্নরূপ: ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন পিসি আলেকজান্ডার গত সত্তরের দশকের প্রথমার্ধে। তিনি খুব তুখোড় অফিসার ছিলেন। তাছাড়া ছিলেন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম।

একসময় কথা ওঠে, তাকে কেবিনেট সচিব অথবা প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব করা হোক। সে সময় একজন ভারতীয় ঝানু সাংবাদিককে আক্ষেপ করে বলতে শুনেছিলাম, বহির্বাণিজ্য বিষয়ে পিসি আলেকজান্ডারের মতো অভিজ্ঞ অফিসারকে কিছুতেই অন্য কোনো পদে সরানো উচিত নয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন করা আর অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য, দরকষাকষির জন্য তার মতো অভিজ্ঞ ও দক্ষ লোক খুবই দরকার। শেষ পর্যন্ত ভারতের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও বহির্বাণিজ্য বিভাগ দুটোকে প্রশাসনিকভাবে এক করে ফেলা হয় এবং পিসি আলেকজান্ডারকে পররাষ্ট্র সচিবের মতো 'বাণিজ্য সচিব' নামে অভিহিত করে সেগুলোর দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়। তাকে সহায়তা করার জন্য তার সঙ্গে একজন সচিবও নিয়োগ করা হয়।

রাজনৈতিক কর্তৃত্ব বহাল রাখার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তো থাকলেনই। এই দক্ষ অফিসারদের হাতে বাংলাদেশকে একবার বেশ নাজেহাল হতে হয়েছিল। বাংলাদেশের Coal Controller (কয়লা নিয়ন্ত্রণ দফতরের শীর্ষ ব্যক্তি) নাজিরুল্লাহ নয়াদিলি্ল এলেন ভারতের কাছ থেকে কয়লা কেনার জন্য। বাংলাদেশ সে সময় তার কয়লার প্রয়োজনের বড় অংশ নিচ্ছিল ভারতের কাছ থেকে। কয়লা কেনা নিয়ে বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যে প্রথম দিনের আলোচনা ভালোই হলো, তবে দ্বিতীয় দিন কয়লার দাম ঠিক করার সময় বাংলাদেশ পক্ষের আক্কেলগুড়ূম হয়ে গেল।

সেদিন বৈঠকের প্রথমদিকে ভারত কিছুটা মোচড়া-মোচড়ি করে খনিমুখে কয়লার যে মূল্য, সেই দামে কয়লা দিতে রাজি হলো। তবে খনি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত কয়লা পরিবহনের খরচ বাংলাদেশকে দিতে হবে। এটা তো ন্যায্য কথা। বাংলাদেশ পক্ষ তাতে রাজি হয়ে গেল। এরপর ভারতীয় প্রতিনিধিরা তাদের একটা বাড়তি দাবি টেবিলে রাখল।

তা হলো, কয়লার দাম আর পরিবহন খরচের সঙ্গে প্রতি টনের মূল্যের সঙ্গে আরও বেশ কয়েক ডলার যোগ করতে হবে। কিন্তু তা কেন? বাড়তি দামের জন্য ভারতীয়দের যুক্তিটা ছিল এ রকম - বাংলাদেশ যদি ভারতের কাছে কয়লা না পেত তাহলে তাকে কিনতে হতো পোল্যান্ড অথবা অস্ট্রেলিয়া থেকে। (চীনের সঙ্গে তখন বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ) সে ক্ষেত্রে পোল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আমদানিতে বাংলাদেশের পরিবহন খরচ হতো অনেক টাকা। অর্থাৎ ভারতে কয়লা কিনতে পেরে পরিবহন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক সাশ্রয় হচ্ছে।

ভারতীয় পক্ষ এই সাশ্রয়কে Proximity benefit বা কাছাকাছি অবস্থানের উপকার হিসেবে বর্ণনা করে দাবি করল, এই উপকার থেকে কিছু লাভ তাদের পাওয়া উচিত। তারা বলল, পোল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আনতে প্রতি টনে বাংলাদেশের যা খরচ হতো, তার অর্ধেক ভারতের কয়লার দামের সঙ্গে যোগ করতে হবে। তারা হিসাব কষে দেখল, তারপরও বাংলাদেশের অনেক লাভ হচ্ছে। এই দাবি ও যুক্তি শুনে বাংলাদেশ পক্ষ হতভম্ব হয়ে যায় এবং সেদিনের মতো আলোচনা স্থগিত করে। ওইদিন বিকেলে কয়লা কেনার খবর সংগ্রহ করার জন্য সাংবাদিকরা নাজিরুল্লাহর কাছে গেলে ভারতীয় পক্ষের এই প্যাঁচ কষার খবর পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ভারতের কাছ থেকেই সেবার কয়লা কিনেছিল। নাজিরুদ্দিন সাহেব অনেক চেষ্টা করে দামও কিছু কমাতে পেরেছিলেন। তবে প্রথমে যে দামে পাবেন ভেবেছিলেন, তার চেয়ে প্রতি টনে দুই-তিন ডলার বেশি দিতে হয়েছিল। ভারতীয় পক্ষ ওই দরকষাকষি থেকে যে বাড়তি লাভটা করেছিল তা হলো 'sharing of proximity benefi' বা নৈকট্যের লাভের ভাগাভাগি ফর্মুলাটা চালু করতে পেরেছিল। এখনও ওই হিসাবটা চালু আছে কি-না আমার জানা নেই।

বিশ্ববাণিজ্য প্রসারিত হওয়ার ফলে অনেক পুরনো ব্যবস্থা ও ধারণা পরিত্যাগ করা হয়েছে, নতুন বাণিজ্য কৌশল প্রবর্তিত হয়েছে। তবে সে যা-ই হোক, যে কোনো দেশেরই বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে লেনদেন ও সম্পর্ক গড়ার ব্যাপারে অভিজ্ঞ ও দক্ষ প্রতিনিধি থাকা খুব প্রয়োজন। ভারতকে সড়কপথে ট্রানজিট দেওয়ার জন্য যেসব প্রস্তাব এসেছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় এক নিবন্ধে সাবেক সচিব রেজাউল হায়াত অভিজ্ঞ প্রতিনিধি (experienced negotiator) থাকার বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। আরও অনেকের মতো তিনিও দুঃখ করেন, বর্তমান বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এ বিষয়ে দক্ষতার অভাব রয়েছে। 17. ট্রানজিটের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিধিবিধান: ভারত কি কখনো অন্য প্রতিবেশীদের ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে? কোনরূপ দরকষাকষি ও অর্থনৈতিক বিবেচনাকে বাদ দিয়ে ভারতে ট্রানজিট বা করিডোর সুবিধা দিয়ে দেয়ার পক্ষে যারা সরবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের একটি ‘যুক্তি’ হলো, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিধি বিধানের আলোকেই ভারতের এইরূপ সুবিধা প্রাপ্য।

এক্ষেত্রে আসলে সত্য-মিথ্যার মিশেল ঘটানো হচ্ছে। প্রথমত, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কথিত বিধি (অ্যার্টিক্যাল ৫) অনুযায়ী কেবল ল্যান্ড-লক (অন্যদেশ দ্বারা বেষ্টিত, বন্দরহীন) দেশগুলোর জন্যই প্রতিবেশী কর্তৃক ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার সুপারিশ রয়েছে এবং এই বিধানও এখনো চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়নি। অর্থাৎ বিধানটি অনুমোদিত হলেও ভারতের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না। কারণ ভারত কোন ল্যান্ড-লক দেশ নয়। উপরন্ত ভারত নিজে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ল্যান্ড-লক দেশ নেপালকে কখনো ট্রানজিট সুবিধা দেয় নি।

যে কারণে নেপাল বহুপূর্বে বাংলাদেশের কাছ থেকে ট্রানজিট সুবিধার নীতিগত সম্মতি পেলেও ভারতের বৈরিতায় তা আজো কার্যকর করতে পারেনি। সুতরাং যারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কথা বলে ভারতকে শর্তহীনভাবে ট্রানজিট বা করিডর সুবিধা দিতে বলছেন তারা আসলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে সচেষ্ট। জনগণ এবং সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্যই এই চিহ্নিত দেশবিরোধী মহল বিভিন্ন সময়ে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশ এবং EFTA ভুক্ত চারটি দেশের (Iceland, Norway, Liechtenstein, Switzerland) মধ্যকার ট্রানজিট চুক্তির বিষয় উথাপন করে থাকে। এটি একটি বহুপাক্ষিক চুক্তি এবং এই চুক্তির ফলে সংশ্লিষ্ট সব দেশ সমভাবে উপকৃত হচ্ছে। অপরপক্ষে ভারতের ট্রানজিট একটি দ্বিপক্ষীয় বিষয়ই শুধু নয়; এই চুক্তির উদ্দেশ্যই হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তাজনিত স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে ভারতকে একতরফাভাবে লাভবান করা।

উপরোক্ত ধাঁচে সত্য-মিথ্যার ধূম্রজাল সৃষ্টি করেই নব্বুয়ের দশকের শেষার্ধে তাড়াহুড়ার মধ্য দিয়ে এবং জনগণকে অন্ধকারে রেখে বাংলাদেশ গঙ্গার পানির হিস্যা নিয়ে একটি চুক্তি করেছিল ভারতের সাথে। কিন্তু দীর্ঘ এক যুগ শেষে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ সেক্ষেত্রে চুক্তিতে কথিত পানি পায়নি। ভারত-বাংলাদেশ অতীতের সকল দ্বিপক্ষীয় চুক্তির অভিজ্ঞতাই এ রকম হতাশাজনক। সুতরাং ট্রানজিট বিষয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আগ্রহী সব দেশ নিয়ে বহুপক্ষীয়ভাবে না বসে বাংলাদেশ আবারও কেন কেবল ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট বিষয়ে কথা বলছে তাও আঞ্চলিক পর্যায়ে এক বড় প্রশ্ন। এ রকম অনেক প্রশ্নেরই সরকারি-বেসরকারি কোনো তরফ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।

অথচ এসব বিষয় অমীমাংসিত রেখেই ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার একটা তোড়জোড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে সরকারের একটা অংশের মাঝে। বেসরকারি একটি মহলও এই প্রবণতাকে শক্তি যোগাচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের বড় বড় ব্যবসায়ী সমিতিগুলো। ট্রানজিট সুবিধা পেলে ভারত তার পণ্য উত্তর-পূর্ব ভারতে নিয়ে যাবে যেখানে সবে বাংলাদেশের পণ্যের একটি বাজার গড়ে উঠছিল। আমাদের যে ব্যবসায়ী সমিতিগুলো ট্রানজিট দ্রুততর করার জন্য জোরদার ভূমিকা রাখছে- তারা এক্ষেত্রে কোন দেশের এবং কাদের বাণিজ্যিক সুবিধা বৃদ্ধির জন্য লড়ছেন? উপরন্ত এইরূপ ট্রানজিট সুবিধার মধ্যদিয়ে ভারত-বাংলাদেশ বর্তমান বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা বাড়বে বৈ কমবে কি? 18. ট্রানজিট বিষয়ক সরকারি কমিটিগুলোর সামর্থ্য বিশ্লষণ: বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় বাণিজ্যিক সুবিধার আদান-প্রদান এবং আন্ত:রাষ্ট্রীয় যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় সকলের সম্পৃক্তি অনিবার্য এবং অবধারিত।

এরূপ সব সম্পৃক্তি এবং সহযোগিতাই অনুসন্ধান, মূল্যায়ন এবং রাষ্ট্রীয় লাভালাভের ভিত্তিতে বিবেচনা করে থাকে সকল দেশ। ট্রানজিট বাণিজ্যিক সুবিধার একটি বিশ্বজনীন মডেল। কিন্তু কোনো রাষ্ট্রই দরকষাকষি, অনুসন্ধান, মূল্যায়ন এবং পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া এরূপ প্রকল্পে প্রবেশ করে না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয়ের সুযোগ নেই। কেবল ‘ল্যান্ডলক কান্ট্রি’গুলো পার্শ্ববর্তী দেশের বন্দর সুবিধা এবং ট্রানজিট সুবিধা পাওয়ার জন্য বিশেষ অধিকার লালন করে।

অন্যদের ক্ষেত্রে তা পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহযোগিতার আদান-প্রদান এবং বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়েই পেতে হয়। ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় বোঝাপড়া, দরকষাকষি, সহযোগিতার আদান-প্রদান এবং নিজস্ব প্রাপ্তি বিষয়ে আদৌ নিশ্চিত হতে পেরেছে কি না এবং এ বিষয়ক জরুরি প্রশ্নগুলো নিয়ে আদৌ কোনো সদুত্তরে পৌঁছুতে পেরেছে কি না সেটিই আমাদের উদ্বেগের বিষয়। আমরা মনে করি, দেশের সবাইকে এ বিষয়ে ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে, প্রশ্ন তোলার প্রয়োজন রয়েছে এবং উত্তর পাওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে। আর প্রশ্ন ও উত্তরের প্রক্রিয়াটি হতে হবে নিরপেক্ষ এবং বাস্তবতা নির্ভর সম্প্রতি (ডেইলি স্টার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১০)। আমরা দেখেছি, সরকার ট্রানজিট বিষয়ে বিবিধ দিকনির্দেশনার জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি কোর কমিটি এবং পাঁচটি সাব-কমিটি করেছে।

কিন্তু সাব-কমিটি গুলোতে প্রধান হিসেবে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা সবাই গত এক দশক ধরে অন্ধভাবে বিনা দরকষাকষিতে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার পক্ষে গণমাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া ব্যক্তি। যেমন, ট্রানজিট রুট ও ব্যয়ভার নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে এম. রহমতুল্লাহকে, ট্রানজিটের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে কলাম লেখক সাদিক আহমেদকে, ট্রানজিট প্রক্রিয়ার মুখ্য বিষয়গুলো নির্ধারণের জন্য গঠিত কমিটির প্রধান করা হয়েছে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানকে। উপরোক্ত ব্যক্তিরা গণমাধ্যমে গত এক দশক ধরে ট্রানজিট বিষয়ে যেসব বক্তব্য রেখেছেন তাতে বোধগম্য কারণেই প্রশ্ন তোলা যায় তাদের মাধ্যমে ট্রানজিট বিষয়ে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ কোনো নিরপেক্ষ, পেশাদার গবষেণা ফলাফল পেতে ব্যর্থ হবে। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃত্ব কীভাবে স্বাধীন ও যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমর্থ হবে? আমাদের উদ্বেগ এখানেই। একবার আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদিত হয়ে গেলে বাংলাদেশের মতো একটি দুর্বল দেশের পক্ষে তাকে রদ করা যে আর সম্ভব হয় না, তার উত্কৃষ্ট প্রমাণ ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের আমলে প্রণীত বাণিজ্য চুক্তি এবং নৌ-ট্রানজিট চুক্তি।

১৯৭২ সালের ২৮ মার্চ তারিখে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য চুক্তির পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদের সুযোগ নিয়ে পরবর্তীকালে বাংলাদেশের কাছ থেকে ভারত একে একে তার সব ট্রানজিট চাহিদা পূরণ করে নিয়েছে। চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পরবর্তী দীর্ঘ ৩৯ বছরে আওয়ামী লীগ ছাড়া জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ, বেগম খালেদা জিয়া এবং জেনারেল মইনের সরকার দেশ শাসন করলেও কোনো সরকারের পক্ষেই ওই চুক্তি কিংবা আর্টিকেল পাঁচ রদ বা পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি। বরং ২০০৭-০৮ সময়কালে মইনের জরুরি সরকার দেশবাসীকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে বেআইনিভাবে ভারতকে আকাশপথে ট্রানজিটও দিয়ে দিয়েছে। ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিন সরকারের এই ধরনের চুক্তি করার কোনো সাংবিধানিক অধিকার না থাকলেও মার্কিন-ভারতের সহায়তায় কেবল ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তত্কালীন শাসকরা দেশের স্বার্থ অকাতরে বিকিয়ে দিয়েছেন এবং পরবর্তী সময়ে যোগসাজশের মাধ্যমে একটি ভারতবান্ধব সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে পিঠ বাঁচাতে দল বেঁধে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। সেই সময় নয়া দিগন্ত পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রতিবাদ করে একাধিক কলাম লিখলেও এসব দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে জেনারেল মইন ও ড. ফখরুদ্দীন আহমদকে নিবৃত্ত করতে পারিনি।

বাংলাদেশের জনগণও নেশাগ্রস্তের মতো চোখ বুজে কেবল আপন সংসারধর্ম পালনের মধ্যে ব্যাপৃত থেকেছেন। এত আত্মকেন্দ্রিকতায় বিভোর থেকে একটি দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করা যায় না। 19. ট্রানজিট নীতিমালা চূড়ান্ত: অবশেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে ট্রানজিট নীতিমালা। এতে কোন ধরনের শুল্ক ফি আদায় না করার কথা বলা হয়েছে। তবে রাস্তা, রেল ও নৌপথের অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের খরচের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ খাতে প্রতি ১০০ কিলোমিটারে ১টি ট্রাকের ফি ধরা হয়েছে ১১ ডলার। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পণ্যবাহী কোন যানবাহনে তল্লাশি করা যাবে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে। ৪৭ পৃষ্ঠার এই ট্রানজিট নীতিমালায় রুট নির্ধারণ, রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নেয়া এবং কাস্টমস ফি না নেয়ার পক্ষে অনেক যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। আর অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা।

তবে কবে নাগাদ এ অর্থ উসুল হবে তার কোন সম্ভাব্য সময় উল্লেখ নেই রিপোর্টে। 20. শুল্ক ফি না নেয়ার পক্ষে যুক্তি: এতে বলা হয়েছে, ভৌগোলিক কারণেই ট্রানজিট ফি নেয়া ঠিক নয়। কারণ, ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর পানি প্রবাহে ফি নেয়া হলে নিম্নাঞ্চলের দেশগুলো চলতে পারে না। তেমনি এ বিষয়টিও সেভাবে বিবেচনা করা উচিত। তা ছাড়া ভারতের কাছ থেকে ফি আদায় করা হলে নেপাল, ভুটান ও চীনও আমাদের কাছ থেকে ফি নিতে পারে।

এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ট্রানজিট সংক্রান্ত যে সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করেছে তাতে বলা হয়েছে, শুরুতে প্রতি বছর ভারতীয় পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট ফি থেকে বাংলাদেশের আয় হবে ৫ কোটি ডলার বা ৩৫০ কোটি টাকা। ৫ বছরের মধ্যে যদি ট্রানজিটের উপযোগী অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়, তাহলে পরবর্তী বছরগুলোয় আয় হবে ৫০ কোটি ডলার বা ৩৫০০ কোটি টাকা। আর দীর্ঘমেয়াদে এ আয় বেড়ে দাঁড়াবে ১০০ কোটি ডলার বা প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। ট্রানজিট নীতিমালায় উল্লিখিত নতুন এ যুক্তির কারণে ট্রানজিটের সম্ভাব্য আয় থেকে বাংলাদেশ অনেকটা বঞ্চিত থাকছে।

21. অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নেয়ার পদ্ধতি: রাস্তা মেরামত, দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ এবং পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির জন্য যে খরচ নেয়া হবে তাই ট্রানজিট ফি হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রতি ১০০ কিলোমিটারের জন্য ট্রাক প্রতি ১১ দশমিক ২ ডলার এবং যাত্রী বহনকারী বড় বাসের জন্য ৫ ডলার নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু নৌপথে জাহাজ চলাচলের ওপর ফি নেয়ার বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই এ নীতিমালায়। অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয়: সড়ক, রেল ও নৌ-রুট এবং স্থল ও সমুদ্র বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিচালন ব্যয় উত্তোলন ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ হাজার ৯২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সড়ক পথের উন্নয়নে ১১ হাজার ৯৪১ কোটি ২০ লাখ টাকা, রেলপথ উন্নয়নে ৩২ হাজার ২৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা, নৌপথ উন্নয়নে ১১৭১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ১৮৫০ কোটি ৯০ লাখ টাকা, মংলা সমুদ্র্র্রবন্দরের উন্নয়নে ২৭৯৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং স্থলবন্দরের উন্নয়নে ১৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। 22. ট্রানজিট রুট: সাতটি সড়ক রুট, ছয়টি রেল রুট, তিনটি নৌ রুট এবং স্থলবন্দরের জন্য সাতটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়ক রুটের রূপরেখা হলো- ১. কলকাতা-পেট্রাপোল/ বেনাপোল-ঢাকা-আখাউড়া-আগরতলা, ২. আগরতলা-আখাউড়া-চট্টগ্রাম, ৩. শিলচর-সুতাকান্দি-চট্টগ্রাম বন্দর, ৪. শিলচর-সুতাকান্দি-পাটুরিয়া ফেরিঘাট-বেনাপোল/পেট্রাপোল-কলকাতা। এ ছাড়া রুট নং ৫. প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে সংযোগ সড়ক তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছে। এর আওতায় ভুটানের ওপর দিয়ে স্যামড্রপ জনখার- গুয়াহাটি-শিলং-তামাবিল-সিলেট-চট্টগ্রাম রুট উন্নয়নের ওপর গুরুত্বআরোপ করা হয়েছে।

আর রুট নং ৬. ভারত-বাংলাদেশ- নেপালের মধ্য দিয়ে কাঠমুন্ডু-কাকারভিটা/ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধা-মংলা-চট্টগ্রাম সড়ক এবং ৭. নং-এর আওতায় ভুটান-ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে থিম্পু-ফুয়েন্টশলিং-জয়াগঞ্জ/বুড়িমারি-মংলা/চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কোর কমিটির সম্ভাব্য প্রস্তাবিত রেল রুটের রূপরেখা হলো- ১. ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শিলচর-মহিশ্বসন/শাহবাজপুর-ঢাকা আইসিডি-ধীরাত্তম বাংলাবান্ধা ব্রিজ-দর্শনা/গেজ-কলকাতা, ২. শিলচর-মহিশ্বসন/শাহবাজপুর-চট্টগ্রাম বন্দর, ৩. আগরতলা-আখাউড়া-ঢাকা আইসিডি-ধীরাত্তম বাংলাবান্ধা ব্রিজ-দর্শনা গেজ-কলকাতা, ৪. আগরতলা-আখাউড়া-চট্টগ্রাম বন্দর, ৫. কলকাতা-পেট্রাপোল/বেনাপোল-খুলনা-মংলা বন্দর এবং ৬. নেপাল ও বাংলাদেশের সংযোগের জন্য বীরগঞ্জ-রাক্সউয়াল-কাটিহার-সিঙ্গাবাদ/রোহানপুর খুলনা-মংলা পোর্ট। অদূর ভবিষ্যতে ভারত-বাংলাদেশ-নেপাল ও ভুটানের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়নের ভিত্তিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আগরতলা-আখাউড়া-ঢাকা আইসিডি-ধীরাত্তম-পদ্মা সেতু-বেনাপোল/পেট্রাপোল-কলকাতার রেল যোগাযোগের উন্নয়নের ওপর জোর দেয়ার জন্য রাজনৈতিক সরকারগুলোকে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একইভাবে নেপাল-বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের ভিত্তিতে জগবানি-বিরাটনগর-রাধিকাপুর/বিরল-পার্বতীপুর পর্যন্ত রেল পথের বিস্তৃতকরণ এবং ভুটান-বাংলাদেশের মধ্যে হাসিমারা-হলদিবাড়ী-শিলাহাটি-পার্বতীপুর-খুলনা পর্যন্ত রেলপথের প্রশস্তকরণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। রেল ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের কাজ শেষ করতে আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মতো সময় লাগবে।

তাই এর পুরো উন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত ট্রানজিটের আওতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সীমিত আকারে বিদেশী পণ্য পরিবহন চলাচলের পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। নৌ-রুট: ১. ভারতের ত্রিপুরা-মিজোরামের মধ্যে নৌ যোগাযোগের উন্নয়নে কলকাতা-নামখাতা-শেখবাড়িয়া-মংলা-কাউখালী-বরিশাল-চাঁদপুর-ভৈরববাজার-আশুগঞ্জ-শেরপুর জকিগঞ্জ-করিমগঞ্জ পর্যন্ত, ২. বাংলাদেশের সঙ্গে আসামের গুয়াহাটি পর্যন্ত নৌপথ বিস্তৃত করতে কলকাতা-নামখাতা- শেখবাড়িয়া-মংলা-কাউখালী-বরিশাল-চাঁদপুর-মাওয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাট-সিরাজগঞ্জ-চিলমারী-দইখাওয়া-ডুবুরি-পান্ডু-সিলঘাট এবং ৩. ত্রিপুরা-মিজোরামের মধ্যকার প্রস্তাবিত কলকাতা-নামখাতা-শেখবাড়িয়া-মংলা-কাউখালী-বরিশাল-চাঁদপুর থেকে নদীপথে আশুগঞ্জ এবং আশুগঞ্জ থেকে সড়ক পথে আখাউড়া পর্যন্ত মাল্টিমডাল রুট চালু করার প্রস্তাব করেছে কোর কমিটি। এ রুট তিনটি বর্তমানে রয়েছে। এ ছাড়া ভবিষ্যৎ সম্পর্কোন্নয়নের ভিত্তিতে আসামের দক্ষিণাঞ্চল এবং ভুটানের পূর্বাঞ্চলে আরও দুটি নৌ-রুট চালু করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- - প্রথমত, ধুলিয়ান-গোদাগাড়ী-রাজশাহী-পাকশী-দৌলতদিয়া-মাওয়া-ভৈরববাজার/আশুগঞ্জ/ শেরপুর-জকিগঞ্জ-করিমগঞ্জ পর্যন্ত।

- দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের পূর্বাঞ্চলের নৌ যোগাযোগের আরও উন্নয়নে মংলা-কাউখালী-বরিশাল-চাঁদপুর-মাওয়া-পাটুরিয়া-সিরাজগঞ্জ-চিলমারী-দইখাওয়া-ডুবুরি নৌপথ এবং এর পরে সড়ক পথে ভুটানে প্রবেশের পথ নির্মাণ প্রস্তাব করা হয়েছে। এদিকে ট্রানজিট বিধিমালা চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের আগেই ভারতের ত্রিপুরার পালটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দর হয়ে ভারি যন্ত্রপাতি (ওভার ডাইমেনশনাল কনসাইনমেন্ট) পরিবহনের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট কার্যকর হয়েছে গত সপ্তাহে। চলবে.................... পূর্বের পর্ব সমূহ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।