আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার অমীমাংসিত রহস্যগুলো -৪

বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d ঘটনাটি ২০০৭ সালের। স্থান উত্তরা। আমার কাজিন তাহসিন (ছদ্দনাম) ঢাকা উত্তরার একটি বেসরকারী মেডিকেলে পড়তো। ওর বাবা মা দেশের বাহিরে থাকেন।

বেশিরভাগ ছুটির দিনগুলোতে যেমন বৃহস্পতিবার গুলোতে ক্লাশ শেষে সে হোষ্টেল থেকে আমার বাসায় চলে আসতো। আবার শনিবার চলে যেতো। একদিন সে আমাকে ফোন করল "ভাইয়া আজ আমার আইটেম পরীক্ষা শেষ হলো, আমি তোমার বাসায় আসবো। তবে আসতে রাত ৮/৯ টা বাজবে। " কিন্তু ত‍াহসিন সেই রাতে আসলো না।

আসলো পরের দিন। তার মুখ থেকেই শোনা কথাগুলো আপনাদের বলছি। ঘটনার দিন, পরীক্ষা শেষে ওরা কয়েক ফ্রেন্ড মিলে উত্তরার মাসকাট প্লাজার সামনে আড্ডা দিচ্ছিল। আড্ডা চলতে থাকায় ওরা বুঝতে পারেনি যে অনেক রাত হয়ে গেছে। তখন প্রায় রাত সাড়ে দশটা।

হঠাৎ তাহসিনের মনে হলো আজকে তো ভাইয়ার বাসায় যাওয়ার কথা। এমন সময় দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি শুরু হলো। বিদ্যুত চলে যায়। সব মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়। সব বন্ধুরা যে যার মত বাসায় ফিরতে শুরু করে।

তাহসিন ওর হোষ্টেলে ফেরার জন্য পা বাড়ায়। চারিদিকে কোথাও রিক্সা নেই। হেঁটে হেঁটেই রওনা দেয় ও। রাস্তা একদম ফাঁকা। দুই একজন দৌড়িয়ে যাচ্ছে।

বৃষ্টির বেগ বাড়ছে। একটা রিক্সা পেয়ে তাহসিন বেশী ভাড়াতে ঠিক করে হোষ্টেলে পৌঁছিয়ে দেয়ার জন্য। রিক্সা যখন ডানে মোড় নিবে তখন সে দেখে নীপা (ছদ্দনাম) মোড়ের উপরে দাঁড়িয়ে আছে। নীপা, তাহসিনের দুই ব্যাচ সিনিয়ার ছিল। তাহসিন নীপাকে প্রশ্ন করাতে সে বলে, এক বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিল জন্মদিনের দাওয়াত খেতে।

সেখান থেকে ফেরার পথেই ঝড় উঠলো। রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। তাহসিন তাকে ওর নিজের রিক্সায় উঠিয়ে নিলো আর বললো, চলেন আমি আপনাকে নামিয়ে দিবো আপনার হোষ্টেলের সামনে। রিক্সায় নীপা এমন ভাবে লাফিয়ে উঠলো যেন সে তাহসিনের জন্যই ওয়েট করছিল। তারা রিক্সায় উঠার পরে পড়াশুনা নিয়ে কিছু কথাবার্তা বলে।

এভাবে কয়েকমিনিট পরেই নীপা হঠাৎ রিক্সাকে থামতে বলে এবং নেমে ডান দিকে একটা চিকন গলির দিকে হাটা দেয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যে গলির মধ্যে ঢুকে গেল এবং তাহসিনের দৃষ্টির বাহিরে চলে গেল। তাহসিন চিৎকার করে নীপাকে ডাকছিল আর ঐ গলিতে ঢুকতে নিষেধ করছিল। কারণ ঐ গলিটা নাকি খারাপ ছিল। ঐ গলিটাতে নাকি প্রায়ই ছিনতাই হয়।

তাহসিন তখন রিক্সাওয়ালাকে অনুরোধ করে ঐ গলিতে ঢোকার জন্য। রিক্সাওয়ালা রাজি হয়নি। তখন সে রিক্সা থেকে নেমে গলির দিকে রওনা দেওয়ার জন্য পা বাড়াতেই রিক্সাওয়ালা ওকে যেতে নিষেধ করে। আর বলে, ভাই আপনি ঐ গলিতে যাবেন না। তাহসিন তাকে প্রশ্ন করাতে বলে, "ভাই ঐ মেয়েটি বোধ হয় মানুষ না, আমি তার চোখদুটো পুরো সাদা দেখেছি, তার চোখের কোন মনি ছিল না।

আপনি ওনাকে খুঁজতে যাবেন না। বিপদে পড়বেন। চলেন আপনাকে আপনার জায়গায় নামিয়ে দেই। " তাহসিন ওর কথাকে অতটা আমল না দিয়ে রিক্সায় চড়ে ওর হোষ্টেলে পৌঁছালো এবং রাতে ঘুমিয়ে পড়লো। পরের দিন কলেজে গিয়ে আমার কাজিন নীপাকে খুঁজে কিন্তু পায় না, তার বান্ধবীদের জিজ্ঞাসা করাতে তারা জানায় নীপা তো অসুস্থ।

তার বেশ কয়েকদিন পরে তাহসিন নীপার দেখা পেল কলেজে। কয়েকদিন কলেজে না আসার কারণ জিজ্ঞাসা করতেই নীপা বললো তার জন্ডিস হয়েছিল এবং সে প্রায় ৭/৮ দিন বাড়ীতে ছিল। কলেজ করতে পারেনি। তাহসিন নীপার উত্তরে একেবারে ভড়কে যায়। কিন্তু নীপাকে বুঝতে দেয় না কিছুই।

তবে কি রিক্সাওয়ালার কথাই ঠিক? তাহসিন এতটুকু নিশ্চিত যে, নীপা মিথ্যা কথা বলছে না। তবে আসল রহস্যটা কি? ব্যাপারটি শোনার পর থেকেই আমি মিলাতে পারছিনা। আমার কাছে এখনও এটা অমীমাংসিত। [পাঠক/পাঠিকার উপরে এই লেখার বিষয়বস্তু বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের ব্যাপারে কোন চাপ নেই] ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।