আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বুশের পিঠে বাংলাদেশ- শংকিত জাতি।।

চাই শুধু নিরবিচ্ছিন্ন নিরপত্তা নিজেকে বিকশিত করার জন্য। । মাহবুব মিঠু বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আসলে কোন দিকে যাচ্ছে সেটা এখনো পরিস্কার নয়। তবে সেটা যে অতি দ্রুত খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে বুঝতে বাকি নেই। বড় দুই দলের মধ্যকার রাজনৈতিক বিভাজন রাজনৈতিক অংগন ছেড়ে প্রশাসন, সেনাবাহিনী বলতে গেলে বাড়ীর উঠোন পর্যন্ত পৌছে গেছে।

জনগণ বিরক্ত, ক্লান্ত কিন্তু দুই দলের মধ্যে এর কোন ছাপ নেই। বিভক্তির এই ধারাপাঠে সাম্প্রতিক সংযোজন দুই নেত্রীর পরস্পরকে লক্ষ্য করে হুমকী ধামকী এবং আলটিমেটাম। একদিকে রাজাকারদের নিয়ে বলবান প্রধান বিরোধী দল; অন্যদিকে রাষ্ট্রিয় যন্ত্রের পুলিশ র্যা ব নিয়ে যুদ্ধাংদেহী সরকারী দল। এ যেন কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান। এ ওকে বলছে পাকিস্তানী দালাল সে তাকে বলছে ভারতীয় দালাল।

এর মাঝে বাঙলাদেশের দালালী করার সেই দেশ প্রেমিক খুজে পাওয়া ভার। দেশের রাজনীতিতে কালো মেঘের ছায়া দিনকে দিন ঘন হচ্ছে। খালেদা জিয়া বলেছেন, আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সরকারকে থাকতে দেয়া হবে না। তার আগেই ফেলে দিয়ে নির্বাচন এবং সেই নির্বাচন অবশ্যই অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে। ওদিকে হাসিনা তার শান্তির কাফেলা শেষ করে এসেই রণ হুংকার ছেড়ে বললেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই নির্বাচন হবে... হবে... হবে।

আর জনগণ তাতেই অংশগহণ করবে... করবে... করবে। (সূত্র: ২৪ বাঙলা নিউজ)। একদিকে না না না; অন্যদিকে হ্যা হ্যা হ্যা। মাঝখানে জনগণের বাবা গো বাবা চিতকার। বিভাজন এবং হুমকী ধামকীর মহড়া বুশের রণ হুংকারকেও ছাড়িয়ে যাবার পথে।

9/11 এর পরে বুশ যেমন বলেছিল, হয় তোমরা আমেরিকার দলে না হয় তোমরা শত্রু। মাঝামাঝি কোন পক্ষ সে রাখেনি। আমাদের দেশে রাজনৈতিক বিভাজন আজ সেই পর্যায়ে চলে গিয়েছে। সহনশীলতা বলতে কিছু আর বাকী নেই। স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে পরিবারতন্ত্রের উদ্ভব হয় তখন থেকেই মূলত এই বিভাজন শুরু হয়েছিল।

৭৪ এর পট পরিবর্তনের পরে বিভিন্ন ঘটনা দূর্ঘটনার পরে রাজনীতিতে জিয়ার আবির্ভাব হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী ঘরানার বিপরীত শক্তি জিয়াকে মুজিব পরিবারের বিপরীতে সমান্তরাল জিয়া পরিবার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে। সেই ধারাবাহিকতায় এখনো চলছে আমাদের দেশ। দেশ পরিচালনার মতো বৃহত্তর রাজনৈতিক বিষযে গণতান্ত্রিক চর্চায় নেতা নির্বাচিত হবার পরিবর্তে বংশতান্ত্রিক সংকীর্ণ পরিবারতন্ত্রের সংযোজনের ফলেই রাজনীতেতে সহনশীলতার পরিবর্তে হিংসা, হানাহানির প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। দুই দলের কে আসলে জনগণকে নিয়ে ভাবে সেটা সত্যি প্রশ্নবিদ্ধ।

কারো কাজেই আসলে জন প্রতিনিধিত্ব করার কিংবা জন স্বার্থ দেখার প্রতিফলন নেই। বিরোধী দল নেত্রীর বাসা রক্ষার জন্য, তারেক জিয়ার মুক্তির জন্য, ক্ষমতায় যাবার জন্য হরতাল ডাকে। কিন্তু কাদের লিমনদের মতো প্রতিদিন যে হাজার হাজার মানুষ রাস্ট্র যন্ত্রের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে, সড়ক দূর্ঘটনায় লোক মারা যাচ্ছে তার জন্য তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। কারন ওরা তো জনগণ। ওদের জন্মই হয়েছে রাজনৈতিক প্রভুদের সেবার জন্য।

ওরা মরলে মরুক, বাচলে বাচুক। যেভাবেই হোক ক্ষমতার ফসল চাই ই চাই। অন্যদিকে ক্ষমতায় এসে সরকারী দল জনস্বার্থ না দেখে শুরু থেকেই নাম পরিবর্তন, বিরোধী দল নির্মূল এবং টেন্ডারবাজী নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আছে। জনগণের কথা ভাবার সময় কই তাদের দুই দলের। নূর হোসেনের মতো লোকজন তো বর্গাচাষীর মতো যাদের ভূমির উপর কোন মালিকানা থাকে না।

শুধু দায়িত্ব শরীরের ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলিয়ে জমির মালিকের উঠোনে মাথায় করে ধানের বোঝাটা ফেলে আসা। বর্গাচাষী তবু ফসলের একটা ভাগ পায়। কিন্তু রাজনীতির মাঠের এই বর্গাচাষী ক্ষমতা কি সেটা চেখে দেখারও সুযোগ পায় না। এ নিয়ে জনগণেরও কোন আক্ষেপ আছে বলে মনে হয় না। ওনাদের কর্তৃত্ববাদী মানসিকত আর আমাদের সেটা মেনে নেয়াতেই আনন্দ।

সামন্তবাদী প্রথা শেষ হয়েছে অনেক আগে কিন্তু তার প্রেতাত্না আমাদের সংস্কৃতিতে এখনো পুরোমাত্রায় ক্রিয়াশীল। আমরা সবাই জানি সবাই বুঝি আমাদের বড় বড় নেতা নেত্রীদের চরিত্র সম্পর্কে। তারপরেও কেউ সাহস করে সেটা বলতে পারি না। কারন এতো অবহেলার পরেও আমরা সুবোধ বালকের মতো হয় এই দলকে না হয় ঐ দলকে সমর্থন দিয়ে যাই। কার ঘাড়ে কয়টি গর্দান আছে যে নেতা নেত্রী সম্পর্কে খারাপ কথা বলবে! তবুও মিশুক মনিরের স্ত্রী স্বামী হারিয়ে শোকে সেই সাহসী কথাটা বলে ফেলেছিলেন।

ধন্যবাদ তার সাহসী উচ্চারণের জন্য। তিনি বলেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার বাবাকে বেচে, বিরোধী দলীয় নেত্রী তার স্বামীকে বেচে ব্যবসা করছেন। অত্যন্ত অত্যন্ত সত্য উচ্চারন। যে কথা অনেকে ভয়ে কিংবা লজ্জায় বলেন না সেটা তিনি বলতে পেরেছেন। সত্যি কথা এভাবে কয়জন বলতে পারেন? দেশটা আসলে জনগণের কাছ থেকে চুরি হয়ে গেছে স্বাধীনতার পরপরই।

সিরিয়াস কথা রেখে এবার একটু ফ্যান্টাসী ভুবনে ঘুরে আসা যাক। যাদুর কার্পেটের মতো কেউ যদি উধাও কার্পেট দিয়ে দেশের সব জনগণকে উধাও করে দিয়ে আমাদের দুই নেত্রীকে বলতো, দেশটা এখন পুরোপুরি তোমাদের। বেয়াদব জনগণ সব উধাও করে দিয়েছি। একদিনের ভোটের ক্ষমতা পেয়ে একবার এনাকে আরেকবার উনাকে ক্ষমতায় বসানোর মজাটা বুঝ এবার! এখন আপনারা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে দেশ চালাতে পারেন। যাদের উপরে খবরদারী করার জন্য এতো কাড়াকাড়ি, মারামারি, তারাই যখন নেই তখন স্বাদহীন ক্ষমতা পেতে ওনারা কি করেন দেখার বড় ইচ্ছে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।