আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

।। ইব্রাহিম নাসরাল্লাহ'র কবিতা ।।

বাঙলা কবিতা । । ইব্রাহিম নাসরাল্লাহ'র কবিতা । । _________________ ।

হতভম্ব । শুরুতে ঘোড়ারা বললো, সমভূমি চাই আমাদের ঈগলগুলো বললো, আমাদের চাই বৃক্ষচূড়া সাপেরা বললো, গর্তসমূহই আমাদের চাওয়া অথচ, হতভম্বের মত দাঁড়িয়ে রইলো মানুষগুলি । দিনগুলি । প্রথম দিন হাতের এমন একটা ভঙ্গি করলাম, যেন কফিন বোঝাতে চাইছি অতএব তারা আমার জন্য একটা পুষ্পমাল্য পাঠালো দ্বিতীয় দিন একটা ফুল বোঝানোর মত ভঙ্গিমা করলাম কাজেই, ওরা পাঠিয়ে দিলো কফিন তেসরা দিন চিৎকার তুলে বললাম বাঁচতে চাই আমি কাজে কাজেই, আমার উদ্দেক্যে এক খুনিকে পাঠালো তারা । কবিরা ।

মনোরম আর দূরের সেই শহরে ঘাসে-ছাওয়া চত্বর জুড়ে এমন সঙ্গীত-মূর্চ্ছনা, যেন গান গাইছে বস্তুসকলও, আর তালে তালে নাচছে উপস্থিত প্রত্যেকেই সে বললো : যাও, ওই হস্তিনী ছুকরিটাকে নাচতে বলো শরম লাগছিলো আমার সে বললো : কবিরা হেরে গেলে দুনিয়াটা কিছুই জিতবে না । স্বীকারোক্তি । হ্যাঁ দরোজা-জানালা সমেত বাড়িটাই একটা কবর শোবার ঘরটা আধা-কাফন আর বিছানাটা, অর্ধ-শবাধার ও মেয়ে, তুমিই পারো, আর কেউ পারবে না দৃশ্যটা পাল্টে দাও! । স্বাধীনতা । গৃহবধুদের কাচি আর ফুলদানী গুলো থেকে বেশ কিছুটা ফাঁকে গোরস্তানগুলোর গোলাপ-ঝাড়েরা কানাঘুঁষা করে : বড়ই বেদনাময়--- এখানে--- দিনগুজরান--- কিন্তু দ্যাখো ওই কুঁড়ি গুলোকে, ভয় বলতে কিছুই জানে না ওরা ।

বালকবেলা । ছোট্ট, ফুটফুটে তিনটে স্বপ্ন, হেঁটে যাচ্ছিলো নিঃসঙ্গ রাত্রি জুড়ে একটা গৃহ খুঁজছিলো ওরা; ঠিক সেই মুহূর্তে, যখন একটা গোলা এসে গুঁড়িয়ে দিলো, শিশুটির হৃৎপিণ্ড । মাতৃভূমি । আমাদের সকালসমূহের জোয়াল-তলে ভেঙ্গে খান খান হয়ে পড়ছে সূর্যটা আর আমাদের প্রতিটি ধাপের তলায় যে অন্ধকার সেখানে, হাঁপাতে হাঁপাতে ফেলা আমাদের নিঃশ্বাসগুলো দাউ দাউ করে পুড়ছে আগুনে এইসব অগঠিত মাতৃভূমি, যেখানে উদয় হবার বাসনা আমাদের এরা তো, যুদ্ধবন্দিদের চেয়ে আলাদা কিছু নয়! _______________ [ইব্রাহিম নাসরাল্লাহ (১৯৫৪-) : ফিলিস্তিনী কবি, উপন্যাস-রচয়িতা, অধ্যাপক, চিত্রকর ও চিত্রগ্রাহক। জর্দানের এক ফিলিস্তিনী-উদ্বাস্তু শিবিরে জন্ম।

] ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।