আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কি কইতে কি খাইয়্যা ফালাই... মাসুম বিল্লাহ

একজন নির্বোধের বয়ান আমাগে গ্রামের মধ্যি কামাল নামের এক পোলা আছে। তো পোলাডা কি করে জানেন, খালি আগ বাড়াইয়া গিয়ে কথা কয়, ধরেন গিয়ে দুইজন বইসে কথা কচ্ছে কামাল সেইখানে প্রথমে গিয়া দাঁড়াবে, তাদের কথা কান-মন দিয়া শুনবে। তারপর আতকা একটা কথা বইলে বসপে। তো এই নিয়া ছেলেডা অনেক গালিগালাজ শুইনেছে। কান ধইরে উঠবস পর্যন্ত করানো হইছে তারে।

ওর বেঁফাস কথার কারণে অনেক বড় ধরনের গ্যানজাম লাইগা পর্যন্ত গেছে। আপনারা কী আমার কথা বিশ্বাস করতিছেন না? ভাবতিছেন যে মিথ্যা কথা কচ্ছি? ভাইগো সত্যি কতিছি, এক তোলাও মিথ্যা নাই। আবার ভাইবেন না যে, আমি আর কোন মানুষরে নিয়া রঙঢঙ করতিছি। তয় মানুষে মানুষে মিলে যাতিই পারে। তো কামাল চেলেডারে দেই্যখা আর কেউ কিছু না শিখলেও আমি কিন্তু একটা বিষয় শিখছি যে, ‘বেঁফাস কথা বলার চাইতে মুখে তালা মাইরে বইসে থাকা অনেক ভাল।

’ কারণ কি কতি, কী কথা বইলে,ফেলবানি, তার ঠিক আছে? বাংলা সিনেমার কৌতুক অভিনেতা মতি, তো মতি একটা সিনেমা সংলাপ আওড়াইতেছিল, ‘কি কইতে গিয়া কী খাইয়া ফালাই। কী খাইতে গিয়া কী কইয়া ফালাই। ’ এখন নিজ গ্রাম থেকে শহরে প্রবেশ করি। গ্রাম-গঞ্জের মানুষ খুব একটা পত্রিকা পড়ে না, পড়লে জানতো যে তাদের কামালের মত আরো কত কামাল দেশের উপরতলায় বসে পান চিবুচ্ছে। তার হঠাত হঠাত একদিন কি সব কথা বলে ফেলে তাই নিয়ে দেশজুড়ে হাসাহাসির রোল পড়ে যায়।

এই বঙ্গ দেশে কবে কোন কালে এক মন্ত্রী নাকি ছিল (স্বরাষ্ট মন্ত্রী টাইপ কেউ একজন হবেন বোধহয়) তো তাকে নিয়ে তখন বেশ হাসির রোলও একই সাথে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। কারণ, বাবার কোলে থাকা শিশু হঠাৎ ছুটে আসা গুলিতে মারা যাওয়ার পর সেই মন্ত্রী বলেছিলেন,‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন। ’ আমাদের তখন কোন কিছু করার উপায় ছিল না। যদি থাকত তাহলে তাকেও কারো কোলে চড়িয়ে দিয়ে তারপর ঠুস করে দিয়ে বলা হয়-‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে। ’ এতে তাঁর পরিবার শান্তি পেত কারণ এর চেয়ে সান্ত্বনার বাণী আর কী হতে পারে? কিছুদিন আগে আমাদের খাওয়া-দাওয়া বিষয়ক মন্ত্রী খান সাহেব বলেছেন,‘বাজারে কম যাবেন।

কম খাবেন। ’ তাহলে নাকি জিনিসপত্রের দাম কমে যাবে। কিন্তু আপনার আমার কী সাধ্য আছে খান সাহেবের বাসায় গিয়ে তার খাবার টেবিলে সাজানো রকমারী খাদ্যের বাটিগুলো একে একে তাঁর চোখের সামনে থেকে সরিয়ে নেয়ার? আমাদের তো মাছ বাত হলেই চলে তাও আবার পরিমিত। হায় আমাদের কোন কিছুই করার ক্ষমতা নেই। আরেক মন্ত্রী লঞ্চ ডুবিতে কেউ মারা গেলে নিহতের পরিবারকে একটি করে ছাগল উপহার হিসেবে ঘোষনা দিয়েছিলেন।

এবার নতুন দূর্ঘটনার জন্য শুধু মাত্র চালকদের দায়ী করতে নারাজ। অশিক্ষিত অদক্ষ চালকের ভুয়া লাইন্সেস প্রদান করতে মন্ত্রী নির্দেশ পালিত হয়। ভাগ্যিস এই মন্ত্রী মৃত্যু হাত থেকে বাঁচতে বলেন নাই, ‘বাসা থেকে কম বের হবেন। ’ তো সকল কিছু ছাপিয়ে নতুন আর এক আল্লাহর মালের উদয় ঘটেছে বাংলাদেশে। যিনি পরিবারের কল্যান বিষয়ক মন্ত্রী।

সারাদেশের পরিবারের কল্যান আনার দায়িত্ব তাঁর উপর। কিন্তু তিঁনি অকাল মৃত্যু বলে কোন মৃত্যু থাকতে পারে বলে বিশ্বাস করে না। তো এখন আমাদের কি করা উচিত? একটা ঠেলা গাড়ি নিয়ে উনাকে ধাক্কা দেই। ঠেলা গাড়ির ধাক্কায় উনার মৃত্যু হোক। তাহলে তো আমাদের দোষ থাকে না।

কারণ মৃত্যু তো পূর্ব নির্ধারিত। এখানে আমাদের কোন দোষ থাকবে না।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.