আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এবং... অতঃপর...

দেখি তো কিছু একটু ঠিকঠাক করা যায় কিনা তাঁকে এক বছরের সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত নিজস্ব প্রতিবেদক মো. ইউসুফ আলীর ওপর পুলিশের নির্যাতন। গত বৃহস্পতিবার হরতাল সমর্থক সন্দেহে তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। রাজধানীর দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকার একটি ভবন থেকে ছবিটি তোলা। হরতালের সময় পুলিশের নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিটির এক বছরের সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর দিলকুশা এলাকায় পুলিশ তাঁর গলা ও বুকে বুট দিয়ে চেপে ধরে।

গতকাল শুক্রবার পত্রিকায় ছবিটি ছাপা হয় (বাঁ দিকে ছবি)। মতিঝিল থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম ইউসুফ আলী। থানার কাগজপত্রে তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ আলী, গ্রামের বাড়ি নীলফামারী সদরের ব্যাঙমারী ডাঙ্গাপাড়া বলে লেখা রয়েছে। বর্তমান ঠিকানা শাহজাহানপুরের ২৮/এ রেলওয়ে কলোনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দিলকুশা এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে হরতালের সমর্থনে জামায়াতের একটি মিছিল বের হয়।

পুলিশ ধাওয়া দিয়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। মিছিলকারীরা বিভিন্ন ভবনে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এ সময় মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ফটকে ইউসুফ আলীকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে সেখানে ফেলে মারধর ও বুট দিয়ে চাপা দেওয়া হয়। এ সময় ইউসুফ বলতে থাকেন, ‘ভাই, আমি মিছিল করি নাই।

’ পুলিশ তাঁর কথায় কান না দিয়ে ভ্যানে তোলার পর আবার মারধর করে। পুলিশ জানিয়েছে, থানায় আনার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ কামাল হোসেনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইউসুফকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। থানার কাগজপত্রে ইউসুফের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণীতে লেখা রয়েছে, ‘বিক্ষোভ মিছিল করে সদর রাস্তা দিয়া আসার সময় উচ্ছৃঙ্খল মিছিলকারীদের বিক্ষোভের কারণে গাড়ি চলাচল বিঘ্ন ঘটেছে ও জনমনে ভীতি ও ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছে। ’ তাঁকে দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

প্রথম আলোর নীলফামারী প্রতিনিধি ইউসুফের গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, তিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মিলন ও তৌহিদুল নামের দুজন গ্রামবাসী জানান, ইউসুফ ইসলামী ব্যাংকে চাকরি করেন। এদিকে গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলী ও ঢাকায় অবস্থানরত কেন্দ্রীয় নেতাদের জরুরি বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বিষয়টি তোলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীর। পরে এ বিষয়ে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা আলোচনা করেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে বলা হয়, এ ঘটনা সত্য হয়ে থাকলে তা সরকারের জন্য বিব্রতকর। তবে এর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। অনেকেই মনে করেন, এটা কারসাজিমূলক অথবা পরিকল্পিত। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কেউ ষড়যন্ত্রমূলক এটা করতে পারে। কারণ, হরতালের দিন বিরোধী দলের এ রকম কোনো পিকেটিং ছিল না যে পুলিশকে কঠোর কোনো ব্যবস্থায় যেতে হবে।

পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত হয়। ঘটনার সত্যতা জানতে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। যোগাযোগ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এ বিষয়ে ফোনে কথা বলতে অসম্মতি জানান। Courtesy: সরল গরল বুটের তলায় দলিত ও দণ্ডিত ইউসুফ মিজানুর রহমান খানপুলিশের বুটের তলায় পিষ্ট ও বিচারে দণ্ডিত ইউসুফের স্বজনদের সঙ্গে গতকাল টেলিফোনে কথা হয় নীলফামারীর গ্রামের বাড়িতে। কথা হয় আরও অনেকের সঙ্গে।

২৫ বছরের এই যুবক ভূমিহীন, দরিদ্র পরিবারের সন্তান। দু-এক শতক জমির ওপর তাঁদের বাঁশের বেড়া, ছিন্ন টিনের চালা। তাঁর বাবা মো. আলী নেথা বানিয়াপাড়া মসজিদে ইমামতি করেন। বেতন ৬০০ টাকা। একটি মক্তব চালিয়ে পান মুষ্টির চাল।

বড় ভাই আবদুল হালিম কটকটি ফেরি করেন। গ্রামের লোকেরা বলেছেন, ফিতরা ও জাকাতের টাকায় লেখাপড়া হয়েছে ইউসুফ আলীর। আলিম পাস করার পর দু-তিন বছর আগে মতিঝিলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে একটি ছোট চাকরি পেয়েছেন। তিনি ব্যাংককর্মী নন। এখন তদবির করতে ওই পরিবারের কারও ঢাকায় আসা সহজ কথা নয়।

তাঁরা পারিবারিকভাবে জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন করেন। আবদুল হালিম জোর দিয়ে বলেন, ‘ভাত খাবার পয়সা পাই না, আবার দল করব!’ ইউসুফের মা হালিমা আমাকে বলেছেন, ‘মোর ভালো ছাওয়া কষ্ট করি লেখাপড়া করছে। ’ টিভিতে ঘটনা জানার পর থেকে তাঁরা বিপর্যস্ত। ইউসুফ আলীর ওপর পুলিশি নির্যাতনের বিচার হয়নি। বিচার হয়েছে নির্যাতিতের।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির এটি একটি করুণ চিত্র। নির্বাচিত সংসদ সামরিক আদালতের মডেলে ২০০৯ সালে যে আদালত গঠন করেছিল, সেই আদালত তাঁর বিচার করেছেন। কর্নেল তাহেরের বিচারের ক্ষেত্রে সামরিক বিধানেরও লঙ্ঘন ঘটেছিল। মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল না, কিন্তু ভূতাপেক্ষ আইন দিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ইউসুফের দশা কিছুটা তাহেরের মতোই।

‘ক্যাঙারু কোর্ট’-এর আইনও লঙ্ঘিত হয়েছে। সামরিক শাসন চলে গেলেই সামরিক খাসলত বদলে যায় না। ইউসুফ আলীর ওপর নির্যাতন শেষে তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ডের মধ্য দিয়ে তা-ই প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থায় বিচার বিভাগ পৃথক্করণে আমলাদের আক্রোশ প্রশমিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। তখন নির্বাহী হাকিমদের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনে শুধু অর্থদণ্ডের ক্ষমতা দেওয়া হয়।

কিন্তু বর্তমান নির্বাচিত সরকার সেনা-সমর্থিত সরকারকে লজ্জা দিয়ে আমলাদের দিয়ে অনধিক দুই বছরের কারাদণ্ড প্রদানের বিধান চালু করে, যা সংবিধানের চরম লঙ্ঘন। বিশ্বের অন্য কোথাও এ ধরনের আদালতব্যবস্থা দেখা যায় না। আক্ষরিক অর্থেই একে সামরিক আদালতের সঙ্গে তুলনা করা চলে। জরুরি অবস্থায় শেরেবাংলা নগরে স্থাপিত আদালতগুলোকে আমাদের রাজনীতিকেরা হরহামেশা ক্যাঙারু কোর্ট বলতেন। কিন্তু তাঁদের হাত দিয়েই বিরোধী দল দলনে অন্য রকম ক্যাঙারু কোর্ট চালু হয়েছে।

এই আদালতে কোনো সাক্ষ্য লাগে না। অভিযুক্তের আইনজীবী থাকে না। পুরো বিচারব্যবস্থাই অভিযুক্ত ব্যক্তির তথাকথিত স্বেচ্ছা-জবানবন্দিনির্ভর। কেউ দোষ স্বীকার করলেই তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে, অস্বীকার করলে নয়; নিয়মিত মামলা দায়ের করা যায়। পত্রপত্রিকায় ইউসুফ আলীকে নির্যাতন ও মতিঝিল থানায় বসে তাঁর বিচার করার খবর বেরিয়েছে।

গতকাল প্রথম আলোতে ‘তাঁকে এক বছরের সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত’ শীর্ষক প্রকাশিত খবরে বলা হয়, পুলিশ জানিয়েছে, থানায় আনার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ কামাল হোসেনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইউসুফকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। গতকাল দুপুরে আমি মতিঝিল থানায় ফোন করি। জানতে চাইলে এসআই গোলাম হাফেজ বলেন, থানায় কোনো কোর্ট বসেনি। ঘটনাস্থলেই আদালত তাঁকে শাস্তি দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের অপরাধবিষয়ক সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, মতিঝিল অঞ্চলের সহকারী পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে তথাকথিত ওই আদালত বসেছিল।

ওই কার্যালয় ঘটনাস্থল মতিঝিল মার্কেন্টাইল ব্যাংক প্রধান অফিস থেকে কমপক্ষে আধা কিলোমিটার দূরে। এই একটিমাত্র তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের ওপর ইউসুফ আলীর ওপর কী ধরনের অবিচার করা হয়েছে, তা প্রমাণযোগ্য। ২০০৯ সালের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনে কোনো অভিযুক্তকে দণ্ডদানের ক্ষেত্রে কতগুলো শর্ত আরোপ করা হয়েছে। ওই আইনের ৪ নম্বর ধারা বলেছে, কোর্ট ‘কতিপয় অপরাধ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে আমলে নেবে’। ইউসুফ আলী যে অপরাধই করে থাকুন না কেন, তা কি নির্বাহী হাকিমের ‘সম্মুখে সংঘটিত কিংবা উদ্ঘাটিত’ হয়েছিল? এই শর্ত পূরণ না হলে ‘তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলেই আমলে গ্রহণ করে’ অভিযুক্তকে দণ্ড আরোপ করা কীভাবে সম্ভব? নির্বাহী হাকিম যদি প্রত্যক্ষদর্শী হন, তাহলেও তিনি শাস্তি দিতে পারবেন না।

অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তা স্বীকার করতে হবে। এখন এ স্বীকারোক্তি স্বতঃস্ফূর্ত ছিল কি না, তা অনুধাবনে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত আলোকচিত্রই যথেষ্ট। অবশ্য আমাদের শাসক তারকা নেতারা তা বুঝতে না পেরে বিভ্রান্ত! ইউসুফ আলীর ওপর নির্যাতন চালানোর পর তাঁর কাছ থেকে ‘স্বীকারোক্তি’ পাওয়ার যে বিবরণ নির্বাহী হাকিম শেখ কামাল হোসেন লিপিবদ্ধ করেছেন, তা জবরদস্তি ও বানোয়াট বলে ধরে নেওয়া চলে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে বলা আছে, ‘এই আইনের অধীন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করিবার সময় কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে গৃহীত হইবার পরপরই মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী একজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট সংক্ষিপ্ত অভিযোগ লিখিতভাবে গঠন করিয়া উহা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠ ও ব্যাখ্যা করিয়া শুনাইবেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি গঠিত অভিযোগ স্বীকার করেন কি না তাহা জানিতে চাহিবেন এবং স্বীকার না করিলে তিনি কেন স্বীকার করেন না উহা বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানিতে চাহিবেন। ’ ইউসুফকে হাতে ব্যান্ড বাঁধা এক পুলিশ বুট দিয়ে তাঁর বুক দলিত-মথিত করেছে।

এই আলোকচিত্র সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে যে ওই নির্বাহী হাকিম ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ওই শর্তাদি পূরণ করেননি, সাজানো বয়ান লিখেছেন। বিষয়টি গত শুক্রবার ক্ষমতাসীন দলের সম্পাদকমণ্ডলী ও ঢাকায় অবস্থানরত কেন্দ্রীয় নেতাদের জরুরি বৈঠকে আলোচিত হয়েছিল। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা হতভাগ্য ইউসুফ আলীর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। গতকাল প্রথম আলো জানাচ্ছে, ‘ওই বৈঠকে বলা হয়, এ ঘটনা সত্য হয়ে থাকলে তা সরকারের জন্য বিব্রতকর। তবে এর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়।

অনেকেই মনে করেন, এটা কারসাজিমূলক অথবা পরিকল্পিত। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কেউ ষড়যন্ত্রমূলক এটা করতে পারে। কারণ, হরতালের দিন বিরোধী দলের এ রকম কোনো পিকেটিং ছিল না যে পুলিশকে কঠোর কোনো ব্যবস্থায় যেতে হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত হয়। ঘটনার সত্যতা জানতে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।

’ আমরা আসলে কোনো অংশেই ওই তারকাখচিত মহতী সভার বিজ্ঞ সদস্যদের মতোই ষড়যন্ত্রতত্ত্বকে খাটো করতে পারি না। খটরমটর হয়তো এর পক্ষ-বিপক্ষ নির্ধারণে। ষড়যন্ত্র হলে তা অন্তত দুই কিসিমের হয়েছে। ওই নাদান পুলিশ সরকারের ভাবমূর্তি নস্যাৎ করতে কিংবা তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে তাঁর বুটজুতা দিয়ে ইউসুফের বক্ষ বিদীর্ণে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। অতঃপর নির্বাহী হাকিম নির্যাতিত ইউসুফ আলীর বক্ষপিঞ্জরে আদালতের হাতুড়ির ঘা বসিয়েছিলেন।

পুলিশ যদি ইউসুফ আলীর বুক বুট দিয়ে পলিশ করে অপরাধ করে থাকে, তাহলে নির্বাহী হাকিমকেও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা যাবে। এখন সত্যিই কী ঘটেছিল, সেটা সরকারের কোনো শরবত তদন্ত প্রতিবেদন থেকে আদৌ কখনো জানা যাবে, তেমনটা ভরসা করা কঠিন। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের সঙ্গে কদিন আগে দেখা হয়েছিল। বললাম, ‘ঢাল-তলোয়ার কবে আপনার হাতে আসবে? লড়াইয়ের ময়দানে কবে নামতে পারবেন?’ তিনি অভয় দিলেন। বললেন, ‘প্রয়োজনীয় লোকবল প্রায় হাতে পেয়ে যাচ্ছি আর কি।

’ ওই তারকা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা যদি দেখি তদন্তের দন্তই বরং উৎপাটিত হচ্ছে, তাহলে অবাক হব না। তবে যেন মানবাধিকার কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অগ্রাধিকার দেয়। বাসি বলে যেন পায়ে না দলে। আমরা অবিলম্বে ইউসুফের মুক্তি ও তাঁকে হেনস্তার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচার চাই। পাদটীকা: আমলাচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতব্যবস্থা অবশ্যই বিলুপ্ত করতে হবে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে, কিন্তু তা চালাবেন বিচারিক হাকিমেরা। পাকিস্তানে আসিফ আলী জারদারি বিরোধী দলকে ঠেঙাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। অনেকটাই বাংলাদেশ মডেলে। তবে বাংলাদেশের শাসকদের লজ্জায় ফেলেছেন জারদারি। তিনি সমালোচনার মুখে ওই অধ্যাদেশ বাতিল করেছেন।

মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক। সংসদীয় কমিটির প্রশ্ন পিকেটারের বুকে পুলিশের বুট কেন বিএনপির ডাকা হরতালে জনৈক পিকেটারের বুকে পুলিশের এক সদস্যের বুট দিয়ে চাপা দেওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই ছবিটির বিষয়ে জানতে চেয়েছে কমিটি। আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। কমিটির সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, মুজিবুল হক, হাবিবুর রহমান, নুরুল ইসলাম, সানজিদা খানম ও সফিকুল ইসলাম অংশ নেন।

স্বরাষ্ট্রসচিব আবদুস সোবহান সিকদার, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার ও ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংসদ মুজিবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, গত হরতালের সময় একজন পিকেটারের বুকে পুলিশের লাথি মারার ঘটনাটি নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পুলিশের আইজিপির কাছে পুলিশের এ আচরণ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির একাধিক সদস্য বলেন, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এ ধরনের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এ কারণে বিষয়টির অবশ্যই তদন্ত প্রয়োজন।

ব্রিফিংয়ে কমিটির সভাপতি আবদুস সালাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর অতি উত্সাহী আচরণ নিয়ে কমিটি আগে থেকেই সজাগ। কমিটির আগের বৈঠকগুলোতেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গত হরতালের বিষয়টিও তাই মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। সভায় দেশের সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল বিশেষ করে ঝিনাইদহ জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে অভিযোগপত্র দেওয়া মামলাগুলো সম্পর্কে জানতে চাওয়া ছাড়া এ বিষয়ে আলোচনা না করার সিদ্ধান্ত হয়।

এ ছাড়া বিভিন্ন বাহিনী থেকে র্যাবে পদায়নে অনুসরণযোগ্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এদিকে বৈঠকে পুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) পদটি প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করার বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এই বিষয়টি আটকে আছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।