আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইন্ডিয়ান ফুড আর আমাদের দেশের খাবারের অস্তিত্ব

আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল বিশ্বজুড়ে “ইন্ডিয়ান-ফুড” অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবারের ধরন। পৃথিবীর বিলাসবহুল আন্তর্জাতিক হোটেলগুলো থেকে শুরু করে বেশিরভাগ রেস্তোরাগুলোর সকাল, দুপুর, রাতের খাবারের তালিকায় ভারতীয় খাবারের জন্যে একটি ভিন্ন স্থান বরাদ্দকৃত থাকেই। শহরগুলোর ইন্ডিয়ান রেস্তোরাগুলোতে তো ভিড় লেগেই থাকে দিনরাত চব্বিশটা ঘণ্টা। নিঃসন্দেহে তাদের খাবার খুবই উপাদেয় এবং ধ্রুপদী পরিবেশনায় উপভোগ্য। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে শুধু কেন, ভারতেই দেশীয়, ঐতিহ্যবাহী খাবারের উপর ভিত্তি করা রেস্তোরার সংখ্যা, আমাদের দেশের অসদৃশ, অগণিত।

এই বাস্তবতায়, আমাদের বাংলাদেশে, চাইনিজ, থাই, ইন্ডিয়ান, তুর্কি, কি নয় বিদেশি খাবারের রেস্তোরায় ভরে গেছে অলিগলি, শহরতলি, রাজপথ, উপকণ্ঠ। সেদিন খেলাম এ্যারাবিয়ান শর্মা হাউজে। উত্তরায় খেলাম খোদ-তুর্কি ব্যবস্থাপনায় চলা একটা তুর্কি রেস্টুরেন্টে। আছে ইন্ডিয়ান “ধাবা”! আছে ইতালিয়ান রেস্টুরেন্ট! বেলা ইতালিয়া নামের একটি রেস্তোরায় আমি নিজেই খেয়েছি। আর অগণিত চাইনিজ-থাই-ইন্ডিয়ান রেস্তোরাঁর কথা বাদই দিলাম।

অথচ নিজ দেশের নিজ খাবারের কোন ব্র্যান্ডিং নাই, প্রচার নাই। বিদেশে বাংলাদেশী ব্যবস্থাপনার রেস্তোরাগুলো "ইন্ডিয়ান রেস্তোরা" নামে চলে। আমি জানি না বাংলাদেশীরা, যারা এই শিল্পে আছে, তারা কি করছেন!!! ফজলী আম, নকশি কাঁথার অন্যায্য আন্তর্জাতিক ফালতু নিবন্ধনের বিরুদ্ধে দেশের ভেতর প্রতিবাদ করে লম্ফঝম্পে যতটা হয়, তার সিকি ভাগ প্রচেষ্টা যদি উদ্ভাবনী ক্ষমতায় স্বত্ব ত্যাগ করে দান করত, নিজেদের মৌলিক, প্রতিযোগিতার প্রান্তগুলোর সদ্ব্যবহারে মনোনিবেশ করত, আমি নিশ্চিত ভারতীয় খাবারের সাথে সাথে বাংলাদেশের খাবারও সহজেই একটি মৌলিক অবস্থান তৈরি করে নিত বিশ্ববাজারে। কারণ, সত্যিকার অর্থেই তো; প্রতিটি দিন বিপুল অর্থ ব্যয়ে দেশবিদেশের মানুষ যেসব খাবার কিনে কিনে তৃপ্তি-ভরে খাচ্ছে, বাংলাদেশের খাবার তার চেয়ে অনেক অনেক অনেক বেশি মজার। উদাহরণ সরূপ, আমাদের দেশের চালের রুটি আর গরুর মাংস যদি বাজারজাত করা যায় আমি নিশ্চিত সাদা-কালো-পীত-সবুজ-নীল সব রঙের মানুষ তা গোগ্রাসে গিলবে।

কারণ জিহ্বা সবারই এক। আমাদের দেশের মত স্বাদের গরুর মাংস পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় কিনা তা নিয়ে গভীর সন্দেহ প্রকাশ করি। আছে কত দেশী মাছের কত প্রকারের তরকারি (বিশেষ করে ইলিশের) ডাল, ভাত সবজি, রকমারি ভর্তা, আরও কত খাবার! মুঘল শাসকদের রান্নাঘরে আবিষ্কৃত বিরিয়ানি করে পাকিস্তানীরা, ইন্ডিয়ানরা, তুর্কিরা এমন কি মিসরীয়রাও! আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ভারতীয়রা কিংবা পাকুরা দিতে জানে খালি মসলা আর অন্যরা যা বানায় তা বিরিয়ানির নামে মস্করা। আমাদের দেশের বিরিয়ানির সংস্করণ যে কত মজা, তা আমরা, আম পৃথিবীর পোকা বাসিন্দারা জানি না। আমরা জানিই না আমাদের পৃথিবীটা কত সুস্বাদু! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.