আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুভ লগ্নের শুভ ক্ষণে .........

ক্যালেন্ডারের পাতাটা এখনও আছে। ঝুলছে দেয়ালে। পাতায় থাকা বছরটা নব্বুই সাল.....আর মাসটা সেপ্টেম্বর । ছবিটায় কার জানি জন্মদিনের ছবি দেয়া আছে। মেয়েটা বড় ।

তবে এই পাতাটা যখন ঝুলেছিল সেই সময়ে আরেকজনের জন্ম হয়েছিল..রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে......২৪.৯.৯০....রাত ন’টায়......সেও ছিল মেয়ে । মেয়েটার বাবা-মা ক্যালেন্ডারটাকে নষ্ট হতে দেয়নি । রেখে দিয়েছে অক্ষত । মেয়েটার বাবা-মা আজো তাকে আগলে রেখেছে সেই ছোট্ট শিশুটির মতন......যখন জন্ম হয়েছিল তখনকার মতন । ...... ........... ...................... .............................. দিন আসে ....চলে যায়.........মাস , বছর এভাবে পার হয়ে যায়.........কত যে সময় কেটে যায়........সব কিছুই পাল্টে যায়.....কিন্তু পাল্টাবে না , বদলাবে না তুমি...শুধু তুমি ।

তুমি সেই আগের মতই । তুমি আমার সব কিছু......তুমি আমার কষ্ট মোচনের আঁধার ......তুমি আমার পিছুটান ...তুমি আমার শক্ত বাঁধন । আমায় তুমি আঁচল দিয়ে ঢেকে রেখেছ .....কোন কষ্ট যাতে ছুঁতে না পারে । সারাটা জীবন তুমি কষ্ট করে গেছ.....শুধুই আমার জন্যে। তিল তিল করে বড় করে তুলেছ.......আমাকে গড়েছও তুমি ।

শিক্ষাজীবনের প্রথম হাতে-খড়িটাও তোমার কাছেই । নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছ...তোমার হাতের অমৃতের স্বাদ এখনো আমি ভুলতে পারি না .......এখনো তোমার হাতে না খেলে আমার পরান জুড়ায় না ! আমার অসুখ হলে মনে হত যেন তোমার ই অসুখ হয়েছে । আমাকে সুস্থ করতে সে কি ব্যস্ততা! খাইতে চাইতাম না ....কত কি বানাতে আর জোর করে খাওয়াতে ! তোমার হাতের পরশ পেয়ে আমার অসুখ ভাল হয়ে যেত । এখন অসুখ হলে তোমার হাতের পরশ পেতে ইচ্ছে করে ! মনে হয় , তোমার হাতের পরশ না পেলে আমার অসুখ সারবে না । তাইতো অসুখ হলে ছুটি থাকলে টলতে টলতে বাড়ি চলে আসি শুধু তোমার একটু পরশ পেতে ! আমার জীবনের প্রথম বোর্ড পরীক্ষা যখন ঘনিয়ে এল তখন রুমের দরজা আটকিয়ে নির্জনে বসে লেখা-পড়া করতাম ....খাওয়া-দাওয়া তো শিকেয় তোলা ছিল ! তুমি খাবার নিয়ে এসে মাখিয়ে মুখে তুলে দিতে ! আমি খেতে চেতাম না..জোর করে ঢুকিয়ে দিতে মুখে .....বলতে , না খেলে পড়বি কিভাবে ? যখন রেজাল্ট বের হল সবচেয়ে খুশি হয়েছিলে তোমরা দু’জন ।

তোমাদের আদর-ভালবাসা আর মমতায় গড়া এই আমি বাইরে পড়তে চাইলাম । উৎসাহ দিলে তুমি। কিন্ত ......বুঝতে পারি নি যে, তোমার হৃদয় ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে । তোমার উৎসাহে আমি পড়লাম...পরীক্ষা দিলাম ......স্বপ্নের ঢাবিতে চান্সও পেলাম ! বাড়ি থেকে যখন বের হয়ে এলাম কান্নায় ভেঙ্গে পড়লে .....তবুও আমায় একটুও বুঝতে দিলে না.........আমাকে ঢাবিতে রেখে গেলে ! তোমার দোয়ায় আজ আমি লেখা-পড়ার প্রায় শেষপ্রান্তে .......তোমার দোয়ায় আমার রেজাল্টও বৃথা যায় নি .....এখনো যখন কোন পরীক্ষা দিতে যাই তোমাকেই আগে ফোন টা করি.....পরীক্ষা দিয়ে এসে তোমাকেই আগে...রেজাল্ট বের হলে তোমাকেই আগে জানাই ..........তোমার ছবিটা আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে মাগো জাগ্রত কিংবা ঘুমে....২৪ ঘন্টাই ! তোমার উৎসাহ না পেলে এতটা পথ আসা হত না আমার....! তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি মাগো...... তুমি আমার প্রেরণাময়ী......মমতাময়ী মা, মাগো , আমাকে এই দিনে জন্ম দিয়ে পৃথিবীর অদ্ভুত আলো দেখিয়েছ...... তোমার জন্যেই আজকের এই দিনটা শুধুই আমার......!  ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।