আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এখন কী হবে? দণ্ড ঘোষণার আগে গোলাম আযম

সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে গোলাম আযমের টানা ৯০ বছর অথবা আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে।
ঐতিহাসিক এই রায়ে বলা হয়, অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি পাওনা হলেও বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় আসামিকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এর আগে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে এই জামায়াত নেতাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্জন হল সংলগ্ন গেট দিয়ে ঢোকে তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি। পরে হাজতখানা সংলগ্ন গেট দিয়ে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করিয়ে হাজতে রাখা হয়।

সেখানে ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, যিনিও যুদ্ধাপরাধের মামলায় বিচারের মুখোমুখি।
এ সময় তাদেরকে দীর্ঘক্ষণ অন্তরঙ্গ আলাপে দেখা যায়। পরে ১০টা ৪২ মিনিটের দিকে গোলাম আযমকে নেয়া হয় কাঠগড়ায়।
দণ্ড ঘোষণার পুরো সময় ট্রাইব্যুনালের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে থাকা কাঠগড়ার সামনে বসেছিলেন গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। ভাতিজা সালেহ, আত্মীয় হামজা এবং তার দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত সহকারী শাহাদও একই সারিতে ছিলেন।


সাদা নেটের টুপি, সাদা পাঞ্জাবি, লুঙ্গি পরা গোলাম আযমকে বসানো হয় একটি চেয়ারে। তার চেয়ারে ‘ঘাটাইল গলফ ক্লাবের’ একটি কাগজের ব্যাগ দেখা যায়।
কাঠগড়ায় বসানোর পর এই প্যারামিলিশিয়া গঠনের ষড়যন্ত্রকারীর সঙ্গে স্বজনরা কথা বলেন।
বিচারকরা এজলাসে বসার পর বড় বড় চোখে অনেকটা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন গোলাম আযম। বেলা ১২টার দিকে আস্তে আস্তে দৃষ্টি নেমে আসে গোলাম আযমের।

তিনি এজলাসের পরিবর্তে কাঠগড়া সংলগ্ন সামনের দিকে তাকান।
এ সময় আযমীকে চেয়ারে হেলান দিয়ে ‍ঘুমাতে দেখা যায়। অভিযোগ পড়া শুরুর পর ১টা ২৫ মিনিটের দিকে গোলাম আযম বলেন, ‘খুব খারাপ লাগতেছে। ’
তার কথা শুনে উঠে আসেন আযমী। জিজ্ঞেস করেন, কী হয়েছে?
জবাবে গোলাম আযমকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার খুব খারাপ লাগতেছে’।


তখন স্লিপ নিয়ে কিছু একটা লিখে আযমী সেটা দিয়ে আসেন তাদের আইনজীবীদের কাছে। বিভিন্ন আইনজীবীর হাত ঘুরে সেই স্লিপ নিয়ে ১টা ৩৭ মিনিটের দিকে বিচারকক্ষের ডায়াসে দাঁড়ান তাদের আইনজীবী সাইফুর রহমান।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান ফজলে কবীর তখন পড়ছিলেন রায়ের শেষাংশ। ১৫ সেকেন্ডের মত দাঁড়িয়ে থেকে সাইফুর আবার নিজ আসনে ফিরে আসেন।
এ সময় সেখানে থাকা পুলিশকে গোলাম আযম জিজ্ঞেস করেন, এখন কী হবে?
জবাবে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য বলেন, এখন রায় হবে।


এদিকে ওই সময় গোলাম আযমের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত সহকারী শাহাদকে কাঠগড়ার সামনে গিয়ে বসতে বলেন আযমী। শাহাদ সেখানে বসলে অনেকটা রাগতস্বরে গোলাম আযম জিজ্ঞেস করেন, এখানে বসে থাকলে কী হবে?
রায় পড়ার বেশিরভাগ সময়ই ঘাড় নিচু করে সামনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন গোলাম আযম।  
রায় শুনে হাসতে হাসতে বাবার কাছে গিয়ে আযমীকে বলতে শোনা যায়, সব ঠিক আছে, ফাঁসি হয়নি।
পরে পুলিশ তাকে নিয়ে এসে হাজতখানায় রাখে। সেখানে থাকা জামায়াত নেতা আজহার সাবেক আমির গোলাম আযমকে চেয়ার এগিয়ে দেন।


পরে সেখানে তারা কিছুক্ষণ কথাও বলেন। এর বেশ কিছুক্ষণ পর গোলাম আযমকে ট্রাইব্যুনাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
সকালে এই হাসপাতাল থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেয়া হয়েছিল ৯১ বছর বয়সি গোলাম আযমকে। দেড় বছর আগে গ্রেপ্তারের পর থেকে এখানেই রয়েছেন তিনি।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।