আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিডনি-লিভার পাচার হচ্ছে বিদেশেও: যারা ঢাকার বড় হাসপাতালগুলোতে পেটের ভিতরকার কোন প্রকার অপারেশন করিয়েছেন, তাদের কিডনি জায়গা মত আছেতো???

আমি বেশ চুপচাপ!! জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার কিডনী ও লিভার কেনাবেচার দালাল চক্রের হোতা তারেক আজম ও সাইফুল ইসলাম দাউদ আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দীর সূত্র ধরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুল করিম কালাই থানা পুলিশের একটি দল ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার পান্থপথে ”কলম্বিয়া এশিয়া আন্তর্জাতিক সেবা কেন্দ্র বাংলাদেশ’ নামে একটি অফিস থেকে কিডনি-লিভার বিক্রির আন্তর্জাতিক এজেন্ট নাফিজ মাহমুদ (৩২) ও কলাবাগান এলাকার একটি বাসা খেকে কিডনী কেনাবেচার দালাল চক্রের সদস্য মাহমুদুর রহমান সুজন ওরফে মাহমুদ (৩১) কে গ্রেফতার করেছে। জয়পুরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা থেকে গ্রেফতাকৃত কলম্বিয়া এশিয়ান হাসপাতালের বাংলাদেশী এজেন্ট নাফিজ মাহমুদ এবং তার সহযোগী মাহমুদ সুজন এসব কথা বলেন। কিডনি-লিভার বিক্রির আন্তর্জাতিক এজেন্ট ঢাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া নাফিজ মাহমুদ পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন তার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে তার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোগী পাঠায় এবং কিডনি লিভারসহ বিভিন্ন মানব অঙ্গ-প্রতঙ্গ তাদের হাসপাতালে সংযোজন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুল করিম জানান, পূর্বের গ্রেফতারকৃত কিডনী ও লিভার কেনাবেচার দালাল চক্রের হোতা তারেক আজম ও সাইফুল ইসলাম দাউদ আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দীর সূত্র ধরে ঢাকায় জয়পুরহাট পুলিশ সুপার সহ ৭ সদস্যের একটি দল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় ৪৮ ঘন্টা কৌশলী অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করেছেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে তবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের জন্য তাদের রিমান্ডে নেয়া হতে পারে বলেও তিনি জানান। তিনি আরো জানান, নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা থানার উত্তর চাষাঢ়ার নাসির উদ্দিনের পুত্র নাফিজ মাহমুদ রাজধানীর পান্থপথের ওই প্রতিষ্ঠানে বসে বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কিডনি কেনাবেচা করতেন। কিডনি ক্রেতা ও বিক্রেতার পাসপোর্ট, ভিসাসহ সব ব্যবস্থা করে দিতেন এই নাফিজ। কিডনী ও লিভার কেনাবেচার দালাল চক্রের হোতা তারেক আজম ও সাইফুল ইসলাম দাউদ আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দীতে কিডনি ব্যবসার দালাল চক্রের হোতা হিসাবে নাফিজের নাম বলেছিলেন। আর কিডনী কেনাবেচার দালাল চক্রের সদস্য হিসেবে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া বিনধারা গ্রামের মৃত ইব্রাহীম হোসেনের পুত্র মাহমুদুর রহমান সুজন ওরফে মাহমুদের নাম বলেছিলেন।

কলম্বিয়া এশিয়ার প্রধান অফিস ভারতে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই নামে আরো ৮টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভারতের প্রধান অফিস থেকে নাফিজ মাহমুদকে ঢাকার পান্থপথের অফিসের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাফিজ মাহফুদ জানায়, ২০১০ সালের মে মাস থেকে সে কলম্বিয়া এশিয়া আন্তর্জাতিক তথ্য সেবা কেন্দ্র বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত। তার মাসিক বেতন ৩০ হাজার টাকা এবং অফিস ভাড়া দেন ৩৫ হাজার টাকা।

এছাড়া ঢাকার অফিসে আরো ৩ জন কর্মচারী রয়েছে। তাদেরও মাসে ১০ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়া হয়। তার দায়িত্ব বিভিন্ন প্রকার রোগিদের সাথে যোগাযোগ করে তার হাসপাতাল সম্পর্কে ধারণা দেয়া। বাংলাদেশে রোগিদের কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়না। তার প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স থাকলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোন অনুমোদন নাই বলে জানান।

তিনি জানান, গত দুই বছরে ঢাকার অফিস থেকে এ পর্যন্ত ১০১ জনকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে এবং ৭জনের কিডনি নেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতসহ অন্যান্য দেশে তাদের হাসপাতালের ৩৪ টি শাখা রয়েছে এরমধ্যে ভারতের কলকাতার সল্ট লেকে, পাঞ্জাব, দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর মহিশুর মিলে ৮টি হাসপাতাল রয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তারদের চাহিদা অনুযায়ী রোগী পাঠানো হয় বলে ও তিনি জানান তবে এসবের বিনিময়ে তিনি বাড়তি টাকা পাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। গ্রেফতারকৃত অপর আসামী মাহমুদ সুজন জানায়, সে তার সংসারের অভাবের তাড়নায় একটি কিডনি বিক্রি করেছেন ঢাকার আন্তর্জাতিক দালাল তারেক আযিমের মাধ্যমে। মাত্র ১লাখ ২৫ হাজার টাকায় তার কিডনি বিক্রি করেছেন ব্যাঙ্গালোরের একটি হাসপাতালে।

এরপর তারেকের পরামর্শে সে বিভিন্ন রোগিকে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গাইড করার দায়িত্ব পান। সে হেলথ কেয়ার ফার্মসিউটিক্যালের ইস্কাটনে কাজ করেন বলে জানান। জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক জানান, তার নেতৃত্বে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুল করিমসহ পুলিশের একটি দল ঢাকার পান্থপথের গ্রীণ রোডের ৭০/ডি এসএস ভবনের ৪র্থ তলা কলম্বিয়া এশিয়ান হাসপাতালের এজেন্সী অফিস থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলার উত্তর চাষারা গ্রামের নাসির উদ্দীন মাহমুদের ছেলে নাফিজ মাহমুদকে এবং এ চক্রের অপর হোতা শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার বিনধারা গ্রামের মাহমুদ সুজনকে(৩১)ঢাকার ২/ক-লেকসার্কাস কলাবাগানের বাসা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতদের জিগাসাবাদের ভিত্তিতে এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে, জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় দীর্ঘদিন ধরে তারা কিডনি ও লিভার কেনাবেচার ব্যবসা করে আসছিল।

তারা অভাবী মানুষকে ফুঁসলিয়ে টাকার বিনিময়ে কিডনি ও লিভার বিক্রি করতে প্ররোচিত করতো। এদিকে কালাই উপজেলায় কিডনি বেচাকেনার কারন উদঘাটনে প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের নিকট প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্তে কিডনি ও লিভার বিক্রির সাতটি কারন শনাক্ত করা হয়েছ। কারনের মধ্যে আছে প্রলোভন, দারিদ্র্য, সচেতনতার অভাব প্রভৃতি। প্রতিবেদনে সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ১০ দফা সুপারিশও করা হয়েছ।

পুলিশ জানায়, গত ২৮ আগষ্ট জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার প্রায় শতাধিক গরীব মানুষের কিডনি ও ১ জনের লিভার বিক্রির সাথে জড়িত থাকার দায়ে কালাই উপজেলার বহুতি গ্রামের আব্দুস সাত্তার, আব্দুল করিম ও গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ এরপর তাদের স্বীকারোক্তিতে ৩ সেপ্টেম্বর মোশারফ হোসেন, ৬ সেপ্টম্বর বাগেরহাট থেকে সাইফুল ইসলাম এবং সর্বশেষ ঢাকা থেকে কিডনি পাচারের মূল হোতা তারেক আযিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কালাই থানায় কিডনি পাচার বিষয়ে মামলা রয়েছে। এর আগে এ চক্রের আরো ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। [link|http://www.banglatimes24.com/?p=38367| সত্যতায় ঢু মারেন এখানে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।