আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কফি হাউজের সুজাতা অথবা আমাদের লিজা আপুর গল্প

মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়| বেঁচে থাকলে বদলায়| কারণে অকারণে বদলায়........ আজ হতে এক যুগেরও বেশী আগের ঘটনা| আমি চট্টগ্রামের হালিশহরে থাকতাম,বি-ব্লকের ছয় নম্বর রোডে| আজ যদি আপনি ছয় নম্বর রোডে যান, তাহলে ঢুকেই হাতের বাম দিকে একটা দোতলা পরিত্যক্ত বাডি দেখতে পাবেন| ভাঙ্গা জানালা, খসে পডা পলেস্তার আর ঘুরঘুটে অন্ধকার বাডিটিতে আজ| কিন্তু আজ হতে বারো বছর আগে ঐ বাডিটি এমন ছিল না| এলাকার বিখ্যাত লাভার বয় মিল্লাদ থাকত ওখানে| থাকত বাপ্পি নামের এই অধম পুত্রটি| আরো থাকত মৌ নামের একটি চপল মেয়ে এবং সর্বসাকূল্যে মোট পাঁচটি পরিবার| যাই হোক,আমার লেখাটির বিষয়বস্তু হল-আমার বাল্যবান্ধবী লিজা । আমি যে স্কুলটিতে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছিলাম-তার নাম ছিল "চাইল্ড ফেয়ার একাডেমী"| আমাদের স্কুলড্রেস ছিল লাল প্যান্ট(মেয়েদের স্কার্ট), সাদা শার্ট আর লাল টাই| আমরা সবাই কমবেশি Ragging শব্দটির সাথে পরিচিত| বিশেষ করে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই বস্তুটি বিরাজমান| কিন্তু আমি এই বিষয়টির স্বীকার হয়েছি ক্লাস ওয়ানে থাকতেই| আমারই এক ক্লাসমেটের হাতে| তাও আবার সে ছিল একটি মেয়ে| আমি স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম ক্লাস শুরু হওয়ার একমাস পরে| আমি ভর্তি হয়ে দেখি, সবাই সবার সাথে পরিচিত| যাদের যাদের বন্ধুত্ব হওয়ার কথা,হয়ে গেছে| প্রথম কয়েকদিন ক্লাসে আমার অবস্থান হয় দল থেকে ছুটে যাওয়া একটি বাছুরের মত| তবে কয়েকদিনের মধ্যেই আমার কয়েকজন বন্ধু তৈরি হয়| এতদিন পর তাদের সবার নাম মনে পডছে না, তবে দু'জনকে বেশ ভালভাবেই মনে আছে|একজন হল শাহরিয়ার,আরেকজন রাসেল| শাহরিয়ারের চেহারা ছিল অত্যাধিক ফর্সা| ক্লাসের ছেলেরা ওকে জ্বীনের বাচ্চা বলে ক্ষেপানোর চেষ্টা করত| আর রাসেলের মুখে সারাক্ষণ ববি দেওয়াল অভিনীত "সোলজার" ছবিটির একটা গান বাজতো- "সোলজার,সোলজার, মিঠে বাতে বোলকার, দিল তো চুরা লে গায়া...." ওহে যোদ্ধা, তুমি মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে আমার মন চুরি করেছ| একসময় আমি একটি ব্যাপার লক্ষ্য করলাম| সেটা হল-আমাদের ক্লাসের ক্যাপ্টেইন যেই হোক না কেন, ক্লাসের অলিখিত স্থায়ী নেতা, থুরি নেত্রী ছিল লিজা| সে ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ| শুধু বয়সেই নয়, মেধায়,বুদ্ধিতে এবং শারীরিক শক্তিতেও| লিজাকে যদি কেউ "লিজা আপ" না বলে শুধু "লিজা" ডাকতো তাহলে সে ধরে মার লাগাতো| হোক সে ছেলে কিংবা মেয়ে| যাই হোক, যে দিন লিজার Ragging এর শিকার হলাম,সেদিনের কথা| আমি টিফিন আওয়ারে বসে বসে চাচা চৌধুরীর কমিক্স পডছিলাম| তখন লিজা আমার সামনের বেন্চে বসল| বলল, -"তুমি বাপ্পী না? দা নিউ বয়?" -হ্যা, কেন? -ইংরেজী হোমওয়ার্ক করেছ? -হ্যা,করেছি| -গুড,আমার খাতায় তুলে দাও| লিজা ওর খাতা বাডিয়ে দিল আমার দিকে| আমি খুব ভীতু কিংবা সাহসী ছিলাম না ঠিকই, কিন্তু আমার আত্নসম্মানবোধ টনটনে ছিল সেই সময়টাতে (এখনও আছে)| -যদি না দেই? -তাহলে ঘুসি মেরে তোমার নাক ফাঁটিয়ে দেব! -কি বললে লিজা,আমি এখনি ম্যাডামকে বলে দিচ্ছি দাডাও|(আমি আবার একটু আঁতেল ছিলাম কিনা!) -কি! তুমি আমাকে নাম ধরে ডেকেছ?? সে দু'হাত দিয়ে আমার চুল ধরে টান দিল| আমি বাঁধা দেব কি, ব্যাথায় চোখে পানি চলে এল| ঠিক এই সময় রাসেল আর শাহরিয়ার ছুটে এল আমাকে বাঁচাতে| শাহরিয়ার বলল, -লিজা আপু,ওকে ছেডে দাও| আমরা তোমার হোমওয়ার্ক করে দিচ্ছি| সেই ছিল আমার প্রথম Ragging | হয়তো বলবেন, ধুর, এইডা কিসু হইল? তাদেরকে বলি, হ্যা| ক্লাস ওয়ানের প্রেক্ষিতে এটাই বেশ বড বিষয়| যাই হোক, সেদিনের পর লিজার হাতে আরো দু'একবার মার খেয়েছিলাম| বেশ কয়েকবার লিজার হোমওয়ার্ক করতে হয়েছিল| ক্লাসে লিজার রোল ছিল তিন| সেটা কোন পরীক্ষাতেই বাডতে/কমতে দেখিনি| লিজার স্বাধীনচেতা মনোভাব আর স্বেচ্ছাচারিতা শিক্ষিকাদের ও মনযোগ কেডেছিল (আমাদের কোন পুরুষ শিক্ষক ছিল না)| লিজাকে অনেকবার শাস্তি দেয়া হয়েছে, একে ওকে ধরে পেটানোর অভিযোগে | একবার স্কুলের হেড ম্যা'ম আমাদের ক্লাসে এসে বলেছিলেন,"শুনলাম তোমরা লিজাকে লিজা আপু বলে ডাক? কেন?" আমরা লিজার ভয়ে কিছু বলিনি সেদিন| তবে লিজা যত দস্যি মেয়েই হোক না কেন, মনে মনে ছাত্র,ছাত্রী, শিক্ষিকা সবাই ওকে বেশ ভালবাসত| একটা ঘটনার কথা বেশ মনে পডছে| ঈদের দীর্ঘ ছুটির পর সেদিন স্কুল খুলেছিল| এসেম্বলি শুরু হল| সকাল বেলা এসেম্বলিতে লিজা সবসময় মেয়েদের লাইনের সবার সামনে দাডাতো| সেদিনও দাডাল| এমনিতে লিজাকে কখনোই সাঁজ-গোজ করতে দেখি নি| কিন্তু সেদিন দেখেছিলাম| সেদিনের আগে বা পরে কখনোই সে আর সাঁজে নি| তো যা বলছিলাম, লিজা সে দিন স্কুল ড্রেস পডে আসে নি| ঈদের জামা পডে এসেছিল| হয়তো বন্ধুদেরকে ঈদের জামা দেখানোর উদ্দেশ্যেই| তবে ইউনিফর্ম না পডে লাইনের সামনে দাডানোটাকে এক ম্যাডাম ভাল চোখে দেখলেন না| তিনি বেশ রূডভাবে বললেন,"এই মেয়ে,তোমার ড্রেস কই? ড্রেস নেই আবার লাইনের সামনে দাডিয়েছ? যাও একদম পিছনে গিয়ে দাডাও| না হলে ক্লাসে গিয়ে বসে থাক|" সেদিন লিজা যে কাজটি করেছিল, সেটা খুব অপ্রত্যাশিত ছিল আমাদের কাছে| সে লাইন থেকে একটু সরে এসে "ভ্যা...." করে কেঁদে দিয়েছিল| ওর মত টাফ-ক্যারেক্টার যে এ ধরণের কিছু করতে পারে, তা ছিল আমাদের ধারণাতীত| তার এই কান্ড দেখে ম্যাডাম নিজেই তার হাত ধরে তাকে পূর্বের জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল| মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দু'একটা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে তার অভিমান ভাঙিয়েছিল| এভাবেই বছরটা কেটে যায়| ক্লাস ওয়ান শেষ হলে আমি ঐ স্কুল থেকে চলে এসে দক্ষিণ কাট্টলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই| তারপর কতগুলো বছর চলে গেল| কোথায়া সেই লিজা ,শাহরিয়ার কিংবা রাসেল! জীবনের উথ্থান-পতন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির ভীরে কে কাকে মনে রাখে? আমিও রাখিনি| কেটে গেল বারটি বছর| কথা হলো,এতদিন পর এত নস্টালজিক হয়ে পডলাম কেন? আসছি সে কথায়| সাম্প্রতিক সময়| ঢাকা যাচ্ছিলাম রাতের তূর্ণা নিশিতায় চডে| আমার সাথে ছিল আমার কয়েকজন বন্ধু| আমার সিটের পাশের জন আর কয়েক বন্ধু মিলে ট্রেনের শেষের দিকে বসে আড্ডা দিচ্ছিল| আমি একটু টায়ার্ড ছিলাম বলে যাইনি| এমন সময় একটি মেয়ে এসে বলল,"এক্সকিউজ মি, আপনার বন্ধু আপনাকে বাপ্পী নামে ডাকছিল| আপনি কি বাপ্পী?" আমি তার কথা শুনে মনের কোণায় হাতাচ্ছিলাম তার পরিচয় বের করার জন্য| আমি বললাম, -আপনি আমাকে চেনেন? -মমম.... ঠিক বুঝতে পারছি না! আপনি কি চাইল্ড ফেয়ার একাডেমীতে পডতেন? -হ্যা| আপনি...... -আমি লিজা| -লিজা|! আমি ছোটবেলার সেই শ্যামবর্ণের যুদ্ধাংদেহী মেয়েটাকে খুঁজে পেলাম না| লিজার চেহারার রং অনেকটা খোলতাই হয়েছে, বেশ ফর্সাই বলা যায়| আঠারো-উনিশ বছর বয়সী তরুণীর মত নয়,তাকে দেখাচ্ছে পঁচিশ-ছাব্বিশ বছর বয়সী রমণীর মত| চেহারায় লাবণ্য এসেছে| তার পরনে দামী শাডী| হাতের চুডিগুলো সোনার কিনা বুঝতে পারছি না| সোনা আর ইমিটেশনের পার্থক্য বোঝার মত ম্যাচিউরিটি এখনো হয় নি আমার| যাই হোক, সে রাতটা সে পাশাপাশি বসে গল্প করে কাটিয়ে দিয়েছিল| কথায় কথায় জানতে পারলাম,তার বিয়ে হয়ে গেছে এক বছর আগে| আমার ঐ কথাটা শুনে একটা কথাই মনে হল| মান্নাদের সেই বিখ্যাত গানটির অংশ- "সুজাতাই আজ শুধু সবচেয়ে সুখে আছে,শুনেছি যে লাখপতি স্বামী তার, হীরে আর জহরতে আগা গোডা মোডা সে,গাডি বাডি সব কিছু দামী তার|" তবে সুজাতা আর লিজার মধ্যে পার্থক্য হল-লিজার স্বামী লাখপতি নয়, কোটিপতি| বিয়ে করার জন্য মাঝখানে বছর দুয়েক ড্রপ দিয়ে লিজা এখন আবার পডাশোনা চালিয়ে যাচ্ছে| সে এখন ধানমন্ডি থাকে| ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামে খালার বাডিতে বেডাতে এসেছিল| এখন ফিরে যাচ্ছে আবার শ্বশুরবাডিতে| ওখানে থেকেই পডাশোনা করছে| এ সব কথা শুনে মাথায় অনেকগুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগল| আমার যতটুকু মনে পডে, লিজারা বেশ ধনী ও শিক্ষিত ছিল| সাধারণত এ সব পরিবারে মেয়েরা অনেক দেরী করে বিয়ে করে| কিন্তু লিজা এত তারাতারি করল কেন? লিজাকে প্রশ্নটা করলাম| যা উত্তর পেলাম সেটা মোটেই সুখকর ছিল না| বরং উত্তরটা শুনে অত্যাধিক ভাবাতুর হয়ে পডেছিলাম| মূলত এ বিষয়ে কিছু ব্যক্তিগত ধারণা প্রকাশ করার জন্যই লেখাটা লিখলাম| লিজার কথা শুনে জানতে পারলাম- লিজা ছিল ওর পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান| ওর বড ভাই ছিল একজন| লিজার বাবা আর মায়ের বয়সের পার্থক্য ছিল দশ বছর| এ কারণে নাকি অন্য কোন কারণে, যে কারণেই হোক,তাদের মধ্যে আন্ডারএস্টিমেন্টের ব্যাপক ঘাটতি ছিল| ফলে খুবই বিব্রতজনক একটা পরিস্থিতির উদ্রেগ হল তাদের পরিবারে| লিজার মা-বাবার প্রায়ই ঝগডা হত| লিজার মা ছিল শিক্ষিতা ও স্বাবলম্বী| এসব ক্ষেত্রে যা হয়- পরকীয়া| লিজার মা তার কলিগের প্রেমে পডলো| না, ডিভোর্স দেয় নি সে লিজার বাবাকে| পালিয়ে গিয়েছিল প্রেমিকের হাত ধরে| রেখে গিয়েছিল একটি চিরকূট| লিজার বাবা এরপর থেকে খুব ইন্ট্রোভার্ট হয়ে যায়,যতটা না বিবাহ বিচ্ছেদে-তার চেয়ে বেশি সামাজিক কলঙ্কে| এসব ঘটে যখন লিজা ক্লাস নাইনের ছাত্রী| এর পর ওদের পরিবারটা বিচ্ছিন্ন সুতোর মত ঝুলতে থাকে| এরপর স্বাভাবিকভাবেই পারিবারিক অশান্তি মারাত্মক আকার ধারণ করে| তাই বিয়ের প্রস্তাব পেতে লিজাও অমত করে নি|তাছাডা লিজার বাবার ধারণা ছিল এতবড পারিবারিক স্ক্যান্ডাল জেনেও কেউ লিজাকে বিয়ে করতে আগ্রহী হবে না| তাই সেও লিজাকে চাপ দিচ্ছিল বিয়েতে রাজী হওয়ার জন্য| ভাবছেন বরের নিশ্চয়ই কোন দুর্বলতা ছিল? যেহেতু কোটিপতি হয়েও ওদের পরিবারের সাথে সম্পর্ক করতে চেয়েছে ( এবং যেহেতু এটা বাংলাদেশ)? হ্যা ছিল|বরের বয়স লিজার দেরগুন|তাছাডা বর ছিল বিপত্নীক| যাই হোক,ট্রেন স্টেশনে আসলে আমরা বিডায় নেই। ****** ********* ******** কমলাপুর থেকে যাত্রাবাডীর দিকে রিকশায় যেতে যেতে আমি লিজার কথাগুলো ভাবছিলাম| অনেকগুলো আক্ষেপ ও দর্শন জন্মালো মনে| কোথায় সেই ছোটবেলার দুর্দান্ত-দস্যি মেয়ে লিজা,আর কোথায় আজকের জীবনযুদ্ধে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত বাঙালী বধু|সময় আমাদের অনেক কিছু কেডে নেয়|আডালে বসে ঈশ্বর নাটক পরিচালনা করেন,আর অভিনেতাদের অপরিপক্কতা দেখে হাসেন| অনেকগুলো ছোট ছোট ডাইমেনশন তৈরি করেন তিনি,আবার অনেকগুলো ডাইমেনশন একত্র করে একটা বড ডাইমেনশন তৈরি করেন| সেগুলোকে ভাঙ্গেন,গডেন, তারপর আবার জোডা লাগান| নিয়তি আর ইচ্ছাকে নামিয়ে দেন বুলফাইট রিংয়ে| জয়-পরাজয়ের হিসেব হয়তো সে বা আমরা, কেউই রাখি না| যাক সে প্রসঙ্গ, আসি পারিবারিক বিদ্বেষের প্রসঙ্গে| প্রেম-হতেই পারে| জৈবিক তাডনা,মানসিক তাডনা এসব অসঙ্গত কোন আচরণ নয়| কিন্তু স্থান,কাল,পাত্র ভেদে এর রূপরেখা ভিন্ন হতে হয়| কিছু স্বাধীনতা আর বিধিনিষেধ আরোপ করে বর্ধন করা হয় প্রেমের সৌন্দর্য্য| একইভাবে,দু'জন মানুষের মানসিকতা ও চিন্তা-চেতনার মিল বা পার্থক্য দু'জনকে যেমন অনেক কাছে আনতে পারে,তেমনি ঠেলে দিতে পারে যোজন যোজন দূরত্বে| তাই এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই বিবাহ-বিচ্ছেদ ধর্মীয় ও সামাজিক ভাবে অনুমোদন করা হয়েছে| কিন্তু বিয়ের পর,সন্তান-সন্ততি হওয়ার পর, সামাজিক পরিচয় ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর,বিয়েটা কি শুধু স্বামী-স্ত্রীর মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে? ধরলাম,সামাজিকতা এখানে গুরুত্বহীন,কিন্তু ছেলে-মেয়েগুলো যে একটা বিচ্ছেদময় পরিবেশে প্রব্লেম চাইল্ড হিসেবে বেডে উঠবে, সে সমস্যার সমাধান কি কেউ করতে পারে?নিজের বাবা-মা'র পরকিয়া ছেলেমেয়েদের মনে যে বিক্ষত অনুভূতি তৈরি করে,সে অনুভূতিটা যে কত বিষাক্ত,কতটা তিক্ত,তীব্র তা কি কেউ অনুধাবন করতে পারেন?জ্বলন্ত অঙ্গারের মত বিধ্বগ্ধ হ্রদয় নিয়ে বেডে ওঠা এই শিশুগুলোর জন্য কোন সমাধান কি তৈরি করা সম্ভব? যে সব বিবাহিত বাবা-মা বিচ্ছেদের নেশায় মেতে উঠেছেন, তাদের বলি, আপনাদের নিজেদের আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের সমস্যার জন্য যে তিক্ততার বিষ আপনাদের ছেলে-মেয়েদের মনে ছডিয়ে দিচ্ছেন তারা কি সেটা ডেজার্ভ করে? কিংবা সেটা সামলে নেয়ার মানসিক শক্তি রাখে? একটু ভাবুন| বিবাহ-বিচ্ছেদ করার আগে একবার ভেবে দেখুন! আপনি যদি মুসলমান হোন, তাহলে নিশ্চই জানেন,ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে গর্হিত কাজ হল তালাক ও ভিক্ষা? না জানলে জানুন| পাশ্চাত্য সংস্কারের নিয়ন্ত্রণহীন জীবনে ভেসে যাওয়ার আগে একবার তাকিয়ে দেখুন নিষ্পাপ চেহারাগুলোর দিকে| নারী অধিকার-শিশু অধিকার ইত্যাদি কথাগুলো সেদিন ফাঁকা বুলির খোলস ছেডে বেডিয়ে আসবে, যেদিন লিজার মত প্রব্লেম চাইল্ড আমাদের সমাজে আর থাকবেনা| পরিশেষে, মান্না দে'র কাছে একটা প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করছে| সুজাতা কি সত্যিই সুখে আছে? *

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৫২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।