আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একই গাছে ছয় মাসে দু’বার ধান !!

.... জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরীর উদ্ভাবন: একবার ধান চাষ করলে দুইবার ফসল পাওয়া যাবে। প্রথমবার ধান কাটার পর ঐ গাছ থেকেই পুনরায় ধান হবে। মাত্র ছয় মাসেই কৃষকের ঘরে ফসল উঠবে দুইবার। ব্যতিক্রমী এ ধান উত্পাদন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে সাড়া সৃষ্টি করেছেন বিশিষ্ট জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী। কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কানিহাটি গ্রামে ড. আবেদ পরীক্ষামূলকভাবে এ ধান চাষ করেন।

সম্প্রতি ঐ ক্ষেত ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। জানা গেছে, ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে কানিহাটি গ্রামে ২৫ বর্গমিটারের একটি ক্ষেতে বোরো ধানের চারা রোপণ করেন ড. আবেদ। ক্ষেতে পরিমাণমত ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা হয়। সঠিকভাবে সেচ ও পরিচর্যা করার পর ১৩০ দিনের মধ্যে ৮৫ সেন্টিমিটার থেকে ১ মিটার উচ্চতার গাছে প্রথমবারের মত ফসল (ধান) বেরিয়ে আসে। পরে মাটি থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পরিকল্পিতভাবে ঐ ধান কেটে ফেলা হয়।

ক্ষেতে নতুন করে চাষাবাদ ছাড়াই পরিমাণমত ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে মাত্র ৫২ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বার আসে ফসল। প্রথমবার ধান কেটে নেয়ার পর দেখা যায় হেক্টর প্রতি এ ধান উত্পাদন হয়েছে ৬ দশমিক ৪ টন। দ্বিতীয়বার হেক্টরপ্রতি ধান উত্পাদন হয় ৩ টন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী দেশে হেক্টরপ্রতি ধান উত্পাদন হয়ে থাকে ৩ থেকে ৪ টন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. আবেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সাধারণত কোন জমিতে একবার ফসল, কোন জমিতে দুইবার ফসল আবার কোন জমিতে তিনবার ধান উত্পাদন হয়ে থাকে।

এসব জমিতে প্রতিবারই ধান কেটে নিয়ে নতুন করে জমি চাষাবাদের পর সার প্রয়োগ করে সেচ দিয়ে ধান উত্পাদন করতে হয়। আর ধান কেটে নেয়ার পর জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা ধানের মোথা (নেরা) থেকে চিটা মিশ্রিত অল্প কিছু ধান হয়ে থাকে। এসব ধানকে স্থানীয়ভাবে মোথার ধান বলা হয়। এগুলো গবাদি পশুর খাবার হিসাবে ব্যবহার করে থাকে কৃষকরা। তিনি মনে করেন তার উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ধান চাষ করে কৃষকরা তাদের খাদ্য ঘাটতি মিটাতে পারবে।

আবেদ চৌধুরী জানান, নতুন উদ্ভাবিত এ ধানের এখনো কোন নাম দেয়া হয়নি। শুধু সাংকেতিক নম্বর দেয়া হয়েছে। কৃষকরা সাধারণত ধান ক্ষেতে ধানের যে চারা রোপণ করেন তার উচ্চতা হয় ১০ সেন্টিমিটারের মত। ড. আবেদের উদ্ভাবিত ধান গাছ থেকে ফসল তোলার সময় গোড়া থেকে না কেটে ৩৫ সেন্টিমিটার উপরে কেটে ফেলায় ক্ষেতে মোটামুটি উচ্চতার ধান গাছ থেকে যায়। বোরো ধান কেটে নেয়ার পর বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে বন্যা হয়ে থাকে।

তখন ক্ষেতে থাকা নতুন উদ্ভাবিত এ ধান গাছ বন্যা প্রতিরোধেও কাজ করবে। ড. আবেদ জানান, এ ধানের চারা ৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে রোপণ করতে হয়। ফলে গাছটি মাটি থেকে ভালভাবে শক্তি নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে এবং একটি ধান গাছ থেকে আরো বেশ কয়েকটি ধান গাছ গজাতে থাকে। ১৩০ দিনের মধ্যে প্রথম ফসল গাছের ৩৫ সেন্টিমিটার উপর থেকে কেটে নিলে গোছায় অপেক্ষমাণ ঘুমন্ত বাকি গাছগুলো থেকে মাত্র ৫২ দিনের মাথায় দ্বিতীয় ফসল বেরিয়ে আসে। বিঘাপ্রতি মাত্র ৩০০ টাকার সার প্রয়োগ করলে দ্বিতীয় ফসল পাওয়া যায়।

দ্বিতীয়বার ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণ কম হয়। । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।