আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোটর সাইকেলের ডায়রী: গাজীপুরের কালীগঞ্জ ভ্রমণ

গণতন্ত্র হল এমন এক অস্তিত্বহীন মদ, যাতে সবাই মাতাল, কিন্তু কেউ কখনো পান করে নি। রাস্তায় জ্যাম না থাকার কারনে নির্দিষ্ট সময়ের দশ মিনিট আগে মালিবাগ রেল গেটে পৌছে গেলাম। ফোন করে জানলাম লেনিন ভাইয়ের আসতে আরও ৪০ মিনিট লাগবে। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথের পাশে টুলে বসে ভাবতে লাগলাম এই ৪০ মিনিট কি করে কাটানো যায়। ভাবতে ভাবতে বিশ মিনিট কেটে গেল।

সিদ্ধান্ত হল মৌচাকের দিক থেকে ঘুরে আসি। যথা সময়ে ফিরতে লেনিন ভাই চলে এলেন। আমরা যাব রামপুরা-বাড্ডা, টঙ্গী হয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জের দিকে। লক্ষ্য পূবাইল হতে কালীগঞ্জ পর্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা। এই দিকের রাস্তায় মনোরম জ্যাম।

মোটর সাইকেল হওয়ায় চিপা চাপা দিয়ে বেরিয়ে যেতে লাগলাম। টঙ্গী থেকে ডানে মোড় নিলাম। টঙ্গী থেকে পূবাইল পর্যন্ত সৈয়দ বংশীয় রাস্তা। রাস্তার কোথাও কোথাও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দাবী আছে, কোথাও চিটাগাং হিল ট্র্যাকসের। রাস্তার দুই পাশে বিল, পানি আর সবুজ।

এই বিল পুরোটাই চলে যাবে ‘পূর্বাচলে’র পেটে। ডেভলপাররা (!) দখল নিতে সাইনবোর্ড গেথে রেখেছে, শান্তি সুখের স্বর্গীয় ভবিষ্যতের প্রলোভন। ইচ্ছে ছিল প্রথমে যাব নাগরীর দিকে। পূবাইলের পরে রাস্তা ভাল। ভাল রাস্তার আরাম পেয়ে খেয়াল ছিল না যে পূবাইলের পরেই নাগরীর রাস্তা, খেয়াল হল তুমিলিয়া গিয়ে।

এটা একটি মহাসড়ক, খুবই ব্যাস্ত। দিনরাত বড় বড় ট্রাক-বাস চলে। কিন্তু রাস্তা অপ্রশস্ত হওয়ায় সবসময় জ্যাম লেগেই থাকে। একটা বৃজের কাছে গিয়ে ডানে তাকাতেই গীর্জা মতো কি যেনো দেখলাম। ভাল করে তাকাতে মনে হল এটার ছবি ফেসবুকে দেখেছি, তুমিলিয়ার নবনির্মিত গীর্জা।

মোটর সাইকেল ঘুরিয়ে আমরা গীর্জায় ঢুকলাম। সেখানে রয়েছে একটি মিলনায়তন, কবরস্থান, গ্রোটো, ও নতুন গীর্জা ভবন। গীর্জাটি ১৮৪৪ খৃস্টব্দে প্রতিষ্ঠিত। এই এলাকার মানুষ প্রায় সাড়ে তিনশত বছর ধরে খৃস্ট ধর্ম চর্চা করে আসছে। পর্তূগীজদের মাধ্যমে এখানে খৃষ্ট ধর্মের যাত্রা শুরু।

এই গীর্জাটির বয়স ১৬৭ বছর। গীর্জার একজন কর্মকর্তার কাছে জেনেছি গীর্জাটি প্রতিষ্ঠার পর শুরুর দিকে এখানে পর্তূগীজ ফাদার থাকতেন। গীর্জার নাম Saint John the Baptist’s Church, বাংলায় লেখা হয়েছে ‘দীক্ষাগুরু সাধু যোহনের গীর্জা’। কিন্তু ইংরেজী John-এর বাংলা রুপ হল ‘জন’, ‘যোহন’ নয়। ‘ইয়াহিয়া’র বাইবেলিক উচ্চারণ ‘জন’।

কুরআনে বর্ণিত হযরত ইয়াহিয়া (আ)-ই এই জন দ্য ব্যাপটিস্ট। গীর্জার ভেতরে পুরোনো গীর্জাটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, সেটি ছিলে বর্তামানটির পাশেই। কিছু অংশের উপর বর্তমান গীর্জাটি রয়েছে। যিনি নতুন গীর্জা ভবন নির্মাণের দায়িত্বে আছেন, তিনি আমাদের জানালেন এই ভবনটির ১০ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পেও টিকে থাকার ক্ষমতা রয়েছে, এর ভিত্তি ৭৫ ফুট গভীরে প্রোথিত। গীর্জার দেয়ালে লাগানোর জন্য গ্লাস পেইন্টিং আনা হয়েছে ভারত থেকে।

এটি নির্মানে খরচ হচ্ছে প্রায় চার কোটি টাকা, শুরুতে বাজেট ছিল এক কোটি টাকা। গীর্জার পেছনে রয়েছে একটি চমৎকার পুকুর, গোসল করার মতো লোভনীয় পানি। সেই কর্মকর্তা আমাদের নাগরী হয়ে ঢাকা যাবার ব্যাপরের গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিলেন। তিনি জানালেন এটার পর আর কোন গীর্জা নেই। তাই আমাদের পরিকল্পনা পাল্টালাম, কালীগঞ্জের দিকে আর গেলাম না।

এবার গন্তব্য রাঙ্গামাটিয়া। গাজীপুরের অনেক এলাকার মাটি লাল, কিন্তু রাঙ্গামাটিয়ার মাটি রাঙ্গা নয়। এইবেলা চালকের আসনটা একটু পরিবর্তন করলাম। রাঙ্গামাটিয়া মহাসড়কের উত্তর পাশে। আঁকা বাঁকা পথ আর রেল লাইন পেরিয়ে পৌছে গেলাম রাঙ্গমাটিয়ার গীর্জায়।

কোথাও কোথাও রাস্তার পাশে বিল, কচুরিপানায় ভারা। খালের একপাশে কবরস্থান আর এক পাশে গীর্জা। খালটি এখান থেকে তিন দিকে চলে গেছে। দুইপাড় থেকে গাছগুলো খালের উপরে এসে প্রকৃতিক টানেল তৈরী করেছে, এমন পানি ভরা খাল দেখলে নৌকা চালাতে ইচ্ছে করে। নেশাটা ১৯৯৮ সালের।

গীর্জায় কেউ ছিল না। কোন পরিচিতিমূলক প্লেট দেখলাম না, তাই এর নির্মাণকাল ও নাম জানতে পারি নি। বেল টাওয়ারটি দর্শনীয়, তবে গীর্জাটি সাদামাটা, নির্দিষ্ট কোনো ভিউ নেই। সুপারী গাছে ঘেরা এলাকাটির শান্তু সবুজ নির্জনতা উপভোগ্য। রাঙ্গামাটিয়ার গীর্জা ফেরার সময় হঠাৎ চোখে পড়ল তাল গাছ কুঁদে তৈরী করা নৌকা।

দ্রুত পেরিয়ে আসায় আর লেনিন ভাইকে বলতে পারি নি। তিনি আফসোস করেছেন না দেখতে পারার কারনে। চলতে চলতে পথে তুলতে হল ছবি নাগরী যাবার পথে আরেকটা রেলপথ পেরুতে হয়। গাজীপুরের এইপাশটা বিল এলাকা, তাই বিলের ছড়াছড়ি। আগের বার যখন দেখেছিলাম তখন এগুলো ছিল ধানী জমি, আর এখন জলমহাল; কচুরিপানার রাজত্ব।

নাগরীর গীর্জার ফটক বন্ধ, লেনিন ভাইয়ের কপাল খারাপ। দেখতে পারলেন না বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত পঞ্চম গীর্জাটি। এর নাম সেন্ট নিকোলাস অব তলেন্তিনো, ১৬৯৫ সালে এটি পর্তূগীজ অগাস্টানিয়ান মিশনারীরা স্থাপন করে। তারা এর আগে নারিন্দায় ঢাকার প্রথম ও বর্তমান বাংলাদেশ অঞ্চলের চতূর্থ গীর্জা স্থাপন করে। পুরোনো গীর্জাটি এখনো আছে।

সেটির ধারণক্ষমতা সময়োপযোগী না হওয়ায় নতুন গীর্জাটি বানানো হয়েছে। প্রায় পঞ্চভূজ আকারের নতুন গীর্জাটি খুবই দর্শনীয়। পাশেই রয়েছে একটা বড় দীঘি। ছবিটা আগের সফরে তোলা, লেনিন ভাইয়ের জন্য এর ইতিহাস নিয়ে আমি একটু ধন্ধে আছি। মাগুরা জেলার ভূষণার জমিদারপূত্র দোম আন্তোনিও দো রোজারিওকে ১৬৬৩ সালে পর্তূগীজ জলদস্যুরা অপহরণ করে চট্টগ্রামের দাসবাজারে পাদ্রী মানুয়ল ডি রোজারিওর কাছে বেচে দেয়।

খৃস্ট ধর্ম গ্রহণ শর্তে পাদ্রী তাকে মুক্তি দেন। জমিদারীতে ফিরে সে সময় তিনি বিশ থেকে ত্রিশ হাজার নিন্মবর্ণের প্রজাদের খৃস্টধর্মে দীক্ষিত করেন তিনি। ভূষণার কোথাও কোষাভাঙা নামে একটি গ্রাম ছিল। সে গ্রামে সেন্ট নিকোলাস অব তলেন্তিনো গীর্জা ও মিশন স্থাপন করেন। পরে ভূষণা থেকে গীর্জা ও মিশন ঢাকার ভাওয়াল পরগনার নাগরী গ্রামে সরিয়ে নেওয়া হয়, সম্ভবত দোম আন্তোনিও দো রোজারিও-এর মৃত্যুর পর।

প্রশ্ন হল সেই সদূর মাগুরা থেকে একটি গীর্জার কার্যক্রম এত দূর কি করে সরানো হল, কেন হল? এই গীর্জার একজন যাজক ছিলেন ম্যানুয়েল দ্য আসুম্পসাও (Manuel da Assumpção)। ইনি সর্বপ্রথম বাংলা ভাষার ব্যাকরণ রচনা করেন, তবে তা বাংলা ভাষায় নয়, পর্তুগীজ ভাষায়। তার বইয়ের নাম ছিলো Vocabolario em idioma Bengalla, e Portuguez dividido em duas partes(ইংরেজি : Vocabulary of Bangla language and Portuguese, divided in two parts). ১৭৩৪ সাল হতে ১৭৪২ সালের মধ্যে তিনি এই বইটি লিখেছিলেন। পর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে এই বইটি প্রকাশিত হয়েছিলো ১৭৪৩ সালে। ল্যাটিন ব্যাকরণের আদলে লিখিত এই প্রথম বাংলা বইটিতে বাংলা শব্দগুলো লেখা হয়েছিলো রোমান হরফে।

এছাড়া বাংলা ভাষায় লেখা প্রথমদিককার ছাপা হওয়া অন্যতম বই ‘কৃপাশাস্ত্রের অর্থভেদ’-এর লেখকও ছিলেন ম্যানুয়েল দ্য আসুম্পসাও, প্রকাশকাল ১৭৩৫ সাল। এটিও রোমান হরফে ছাপানো হয়েছিলো। এই বইদুটো এই নাগরীতেই বসে লিখেছিলেন তিনি। বাংলা এলাকায় খৃস্ট ধর্ম প্রচারে ভাষগত বাধা দূর করতে তারা ব্যাপক বাংলা চর্চা ও গবেষণা করেছিলেন। তবে তার পুরোটাই করেছিলেন রোমান হরফে।

ভাগ্যিস তাদের চর্চার অনেক আগেই বাংলাভাষার একটি লিখিত রূপ ও ব্যাকরণ কাঠামো দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, নইলে বাংলার অবস্থা হতো সাঁওতালী ভাষার মত। এইটাও আগের সফরে তোলা, আসুম্পসাউ কি এখানে বসেই লিখেছিলেন? গীর্জা প্রাঙ্গনে যাবার একটা পায়ে হাটা পথ আছে বটে, বাইক নিয়ে সেটা আর খোঁজার ঝামেলায় গেলাম না। এর থেকে আরেকটু এগোলেই পানজোরা গীর্জা, নাম ‘সাধু আন্তনী’র তীর্থস্থান। এটি আসলে চ্যাপেল। চ্যাপেল হল ছোট আকারের গীর্জা।

এটি বিশাল ভূমির উপরে স্থাপিত, আকারে ছোট কিন্তু দর্শনীয়। সাইনবোর্ডে লেখা আছে শুধু প্রার্থনার জন্য এই স্থান, নিরবতা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু ক্যামেরার শাটার শব্দ করে ফেলেছে। চ্যাপেলের গায়ে লেখা 1906। চ্যাপেলটির গঠন কাঠামো অন্যান্য গীর্জার মত নয়।

অনেকটা স্থানীয় দরগা বা মাজারের মতো। সামনের দিকে ফুল ও লতাপাতা খচিত। সেন্ট আন্তোনি’র তীর্থস্থান: তুলেছেন গাজী লেনিন চ্যাপেলের সামনে প্রাঙ্গনে একটা ত্রিকোণাকৃতির সমাধিস্থম্ভ রয়েছে। তাতে বাংলা, ইংরেজি আর পর্তুগীজ ভাষায় খোদিত আছে ক্যাথরিন পিরিচ এর পূণ্যকামনা, যিনি ১৮১৫ সালে পর্তূর্গীজ যাজকদের পানজোরা ও মাধবপুর এলাকায় বেশ কিছু জমি দিয়েছিলেন ধর্মপ্রচারের জন্য। চ্যাপেলের পশ্চিমে রয়েছে একটি স্কুল।

এইখানেই আমি প্রথম হলুদ রঙের জবা দেখেছিলাম। পুরো এলাকাটি নির্জন ও শান্ত। এবার গন্তব্য মঠবাড়ী। এবং এইপথেই মুড়াপাড়া, কাঞ্চন হয়ে ঢাকায় ফিরতে হবে। মঠবাড়ী পানজোরা থেকে দক্ষিণে মোটামুটি দূরে, রুপগঞ্জের বাইপাস রাস্তার কাছে।

সেখানো এখনো কোনো গীর্জা নেই। খুব শিঘ্রই নাকি গীর্জার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। সেখানে অবশ্য আমরা সাদর অভ্যর্থনা পাই নি। এক জন বলে দিলেন এখানে বেশিক্ষণ কাটানো যাবে না, তাছাড়া দেখারও কিছু নেই। তার সাথে লেনিন ভাইয়ের কথা হয়েছে।

এই মিশন সম্পর্কে কিছুই জানি না, তাছাড়া এখানে বেশিক্ষণ থাকতেও ইচ্ছে করে নি। এখানে একটি দিঘি, একটি কবরস্থান, ও বিশাল একটি মাঠ রয়ছে। হয়তো এই মাঠের কোথাও হবে প্রস্তাবিত গির্জাটি। এখানকার পরিবেশ মনোরম। মঠবাড়ী প্রাঙ্গনে রাস্তাটি নতুন তাই এখনো মসৃণ।

যানবাহন চলাচল কম, তাই এইবেলা লেনিন ভাই ঘোড়া ছোটালেন উর্ধ্বশ্বাসে। ইতোমধ্যে আমরা নারায়ণগঞ্জে ঢুকে গেছি। যতই পথ যাই মুড়াপাড়া আর দেখি না। পথে এক লোক জানালেন মুড়াপাড়া তিন কিলোমিটার দূরে, তারচেয়েও অনেক বেশি পথ যাবার পর আর এক লোক জানালেন ওটা তিন মিনিটের পথ। অসলে মুড়াপাড়া তার নিজের যায়গাই ছিল, কিন্তু আমরা মানুষের মুখে শুনে শুনে ওটাকে কাছে নিয়ে এসেছিলাম, আর কল্পনা মত না পাওয়াতে কিছুটা অস্থির হয়ে ছিলাম।

ডানে শীতলক্ষ্যা নদী আর রাস্তার দুইপাশে কারখানার সারি। এই পথে একটি বাজারের মাঝে সাক্ষাৎ হল রূপগঞ্জের এক জমিদারের সাথে। দোকানপাটের মাঝে অপ্রশস্ত রাস্তা, তার উপর লেক। দুইপাশ থেকে গাড়ী অগম্য জ্যাম সৃষ্টি করে রেখেছে। জ্যামের উৎস সন্ধানে নেমে গিয়ে সাক্ষাৎ পেলাম সেই জমিদারের।

তিনি তার মোটারসাইকেলটি পেছাবেন না, যার বিপরীতে দাড়িয়ে আছে অনেকগুলো ট্রাক, প্রাইভেট কার, অন্যান্য যানবাহন। এক ব্যক্তি তাকে বোঝাতে সক্ষম হলেন যে তিনি পেছালে এই গাড়ীগুলো বেরিয়ে যেতে পারবে আর তিনিও আগাতে পারবেন। তিনি আমাদের উদ্ধার করে পিছিয়ে গেলেন। এরপর কিছুটা এগোলে পেলাম আকাঙ্খিত মুড়াপাড়া কলেজ যা একসময় ছিল জমিদার বাড়ী। বিশাল মাঠের পাশে জমিদার বাড়ীটি তার বিশাল দেহ নিয়ে অতীত গৌরব ছড়িয়ে যাচ্ছে।

সড়ক থেকে ফটক পর্যন্ত যায়গাটি আম বাগান। জমিদারী আমলর অহংকার নিয়ে ডালপালা ছড়িয়ে সারি সারি দাড়িয়ে আছে দানবীয় গাছগুলো। একসময় হয়তো এই মাঠ, এই আম বাগান জমিদারের লোক-লস্কর, ঘোড়া, পাইক-বরকন্দাজে মুখরিত থাকত। বৃটিশ শাসনের (শোষণেরও) প্রতিভূ হয়ে দাড়িয়ে তাদের কাজ দেখতেন জমিদার। আর এখন এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘সংগ্রামী’ ছাত্র নেতারা প্রতিপক্ষের গোষ্ঠী উদ্ধার করেন, চামড়া তুলে নেবার প্রতিশ্রূতি দেন, বালক বালিকারা হৃদয় লেনদেন করে, তার ফাঁকে ফাঁকে হয়তো চলে পড়ালেখা।

জমিদার বাড়ীটি এখন ‘মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ’। বাইরের তিন রঙে রাঙানো সুদৃশ্য ভবনটি পেরিয়ে ভেতরের চত্বরে পা রাখলাম। চারদিকে চারটি ভবন ঘিরে বর্গাকার চত্বর। তিনটি ভবনই জীর্ণদশায় এসে উপনীত হয়ছে। মাঠের অপর পাশে দীঘি, দীঘি নিয়মিত পরিচর্যা করা হয় না, পানির অবস্থা তথৈবচ।

জমিদারবাড়ীর অম্রকানন বিকেল হয়ে গেছে, এবার বাড়ী ফেরার পালা। মোবাইল সেটে গুগল আর্থে রাস্তা খুঁজলাম। এখন যে পথে আছি সেটে কিছু দূরে গিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মিশেছে, তারপর সেই মহসড়ক মিশেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে শীতলক্ষ্যা বৃজ পেরিয়ে ডেমরা পৌছুলাম। এইক্ষণে লেনিন ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিলাম।

তিনি আমাকে কিছুটা পথ এগিয়ে দিলেন। ফিরতে ফিরতে সন্ধা। যারা ডেমরা-সায়েদাবাদ-গুলিস্তান পথে যাতায়ত করেন তাদের গ্লোরি পরিবহনে না উঠার সুপরামর্শ রইল। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।