আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিলো মেগা গিগা টেরা টো.. কত বড় হতে পারে এই হিসাব??? কোথায় এর সীমানা?

দিল ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা। আজকাল আমরা হরদমই ব্যবহার করি মেগাবাইট গিগাবাইট, এমনকি টেরাবাইটও আজকাল সাধারন জিনিস হয়ে যাচ্ছে। আর এ পরিমাপ পদ্ধতিগুলোর পরিচিতিতে বিশেষ অবদান রাখছে তথ্য প্রযুক্তি। তথ্য ধারন এবং তথ্য চলাচল পদ্ধতির পরিমাপে সবসময়েই ব্যবহার হয়েছে এই পরিমাপ মান গুলো। ইন্টারনেটের স্পীড বোঝাতে আমরা ব্যবহার করি বিট মানটি।

যেমন কিলোবিট, মেগাবিট ইত্যাদি। আটটি বিট এ হয় একটি বাইট। তার মনে হল, আপনার আই এস পি যে আপনাকে ৫১২ কিলোবিট স্পীড দিচ্ছে, আপনি বাইট হিসেবে আসলে পাচ্ছেন ৮/৫১২=৬৪ কিলোবাইট। তথ্য ধারন ক্ষমতা কিংবা হার্ডড্রাইভ স্পেস বোঝাতে আমরা ব্যবহার করি বাইট। মেগাবাইট, গিগাবাইট. আজকাল টেরাবাইট এর হার্ডড্রাইভ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে অনেক কম দামে।

কিভাবে হিসাব করা হয় কিলো, মেগা, গিগা? এই নিয়ে আছে বেশ কয়েকটি প্রমিত মান। আই বি এম এর মতে এক কিলোবাইট হল ১০০০ বাইট, এক মেগাবাইট হল ১০০০ কিলোবাইট, এক গিগাবাইট হল ১০০০ মেগাবাইট। কিন্তু আমরা বাস্তব হিসাব নিকাশ করতে গিয়ে দেখতে পাই ব্যপারটি অন্য রকম। আমরা একটি ২৫০ গিগা হার্ডড্রাইভ কিনে আনবার পরে সেটাকে উইনডোজ ফাইল সিস্টেম এ ফরম্যাট করলে দেখতে পাই, সেটার আকার দাড়ায় প্রায় ২৩২ গিগাবাইট এর মত। কেন এই পার্থক্য? হার্ডডাইভ এর ম্যনুফ্যাকচারার রা হার্ডড্রাইভ স্পেস হিসাব করার জন্য ব্যবহার করেন ডেসিমাল পদ্ধতি।

অর্থাৎ. ১০০০ কিলো সমান এক মেগা, ১০০০ মেগা এক গিগা ইত্যাদি। কিন্তু উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর ফাইল সিস্টেম স্পেস এর হিসাব করে বাইনারী পদ্ধতিতে। মানে হল, ১০২৪ কিলোবাইট সমান এক মেগা, ১০২৪ মেগা সমান এক গিগা ইত্যাদি। এর ফলে আপনি একটা ২৫০ গিগা হার্ডড্রাইভ কিনেও পাচ্ছেন ২৩২ গিগা। কম পাচ্ছেন কি? না, আপনি ঠিক পরিমান স্পেসই পাচ্ছেন, তবে হিসাবটা হচ্ছে একটু অন্যরকম ভাবে।

এত কথা থাক, এবারে আসি এই পরিমাপ পদ্ধতিগুলোর আকার সুচক এর দিকে। মেগা গিগা টেরা এমনকি পেটাবাইট পর্যন্ত শুনে থাকি আমরা, হিসাবটা অবশ্য এখানেই শেষ নয়, আরও আছে। ঠিক কত বড় এই মেগা গিগা কিংবা টেরা? কতটুকু তথ্য রাখতে পারে তারা? আসুন, দেখা যাক। কিলোবাইট: ১০০০ বাইট এর সমান হল এক কিলোবাইট। তবে আরেক হিসেবে এটা ১০২৪ বাইট এর সমান।

এই যে প্যরাগ্রাফটি পড়ছেন আপনি, এর আকার প্রায় এক কিলোবাইট এর মত। পুরো লেখাটি হবে প্রায় ৫০ থেকে ১০০ কিলোবাইট এর সমান। মেগাবাইট: ১০০০ কিলোবাইট অথবা ১০২৪ কিলোবাইট এর সমান হল এক মেগাবাইট। কম্পিইটার যুগের প্রথম দিকে যে হার্ডড্রাইভগুলো ছিল, সেগুলোর আকার ছিল এক মেগা থেকে পাচ মেগা। অধুনা বিলুপ্ত ফ্লপিডিস্কে ধরত ১.৪৪ মেগাবাইট পরিমান তথ্য।

১০০ মেগাবাইট পরিমান জায়গায় প্রিন্টেড এনসাইক্লোপিডিয়া এর কয়েক ভলিউম ডিজিটাইজড টেক্সট এবং ইমেজ ধরে যাবে। ১০০০ পাতার বই এর সমপরিমান টেক্সট এক মেগার মধ্যে সহজেই রাখা যাবে। ৭০০ মেগা তে আবার একটি অপটিক্যাল ডিস্ক বা সিডির পরিমান জায়গা হয়। গিগাবাইট: ১০০০ মেগা বা ১০২৪ মেগাবাইট পরিমান জায়গায় এক গিগা হয়। আজকাল ৫০০ গিগা হার্ডড্রাইভই কম্পিউটারের জন্য স্ট্যান্ডার্ড।

এক গিগা মানে প্রায় ১০০০ ফ্লপি ডিস্ক এর সমপরিমান তথ্য, এক গিগাতে একটি লাইব্রেরির দশটি শেলফের বই ধরে রাখা যাবে, ১০ গিগাতে একটি আস্ত স্ট্যান্ডার্ড লাইব্রেরির সকল বই এবং অনান্য রিডিং ম্যাটেরিয়াল রাখা যাবে। টেরাবাইট: ১০০০ বা ১০২৪ গিগাবাইট এ হয় এক টেরাবাইট। আজকাল বাজারে এক টেরাবাইট কিংবা দুই টেরাবাইট এর হার্ডড্রাইভও পাওয়া যাচ্ছে। এক টেরাবাইট প্রায় এক ট্রিলিয়ন বাইট। এক টেরাবাইট এ ৩০০ কিলোবাইট আকারের ৩৬ লাখ ছবি সেভ করে রাথা যায়।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ লাইব্রেরি অভ কংগ্রেস এর সকল টেক্সট কালেকশন ১০ টেরাবাইট এর মধ্যে রাখা সম্ভব। পেটাবাইট: টেরার পরে ধাপ হল পেটা। ১০০০ অথবা ১০২৪ টেরাবাইট এর সমান হল এক পেটাবাইট। আবার বলা যায়, এক পেটাবাইট সমান ১০০ লক্ষ গিগাবাইট। ৫০ কোটি পেজ এর সমান বই এর ডিজিটাইজ টেক্সট রাখা যেতে পারে, ছয় ফুট উচু চার ড্রয়ার বিশিষ্ট দুই কোটি ফাইল কেবিনেট এর তথ্য রাখা যাবে এতে।

এক্সাবাইট: ১০০০ পেটাবাইট বা ১০২৫ পেটাবাইট সমান হল এক এক্সাবাইট। আরেক দিকে বলা যায়, ১০০ কোটি গিগাবাইট সমান হল এক এক্সাবাইট। মানবসভ্যতার শুরু থেকে যতজন মানুষ বেঁচেছে, তারা যত কথা বলেছে বর্তমান সময় পর্যন্ত তার লিখিত রুপ রাখা যাবে ৫ এক্সাবাইট এর মধ্যে। জিটাবাইট: ১০০০ বা ১০২৪ এক্সাবাইট সমান এক জিটাবাইট। এটি কতবড়, সে সম্পর্কে ধারনা দিতে বলা যায়, ৩৫ জেটাবাইট তথ্য যদি ডিভিডি এর মধ্যে রাখা য়ায়, সেই ডিভিডিগুলো একটার উপরে আরেকটা রাখলে সেটার উচ্চতা হবে পৃথিবী থেকে চাদ পর্যন্ত।

ইয়োটাবাইট; ১০০০ বা ১০২৪ জিটাবাইট সমান এক ইয়োটাবাইট। এটা নিয়ে এক কথায় বলা যায়, বর্তমান সমযের সবথেকে গতিশীল ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করে এক ইয়োটাবাইট সমান ফাইল ডাউনোলড করতে সময লাগবে ১১ ট্রিলিয়ন বছরের কাছাকাছি। ব্রন্টোবাইট: ১০০০ বা ১০২৪ ইয়োটাবাইট সমান এক ব্রন্টোবাইট। কেন যে এই মাপটা তৈরি করেছে সেটাই আশ্চর্য... অন্তত আগামী কযেক হাজার বছরে এই সাইজ দিযে কোনকিছু হিসাব করা যাবে না, কিংবা এক ব্রন্টোবাইট সমান হাড্রডাইভ বার হবে না। এক ব্রন্টোবাইট গনিতে লেখার জন্য ১ এর পরে ২৭ টা শুন্য বসাতে হবে।

চিন্তা করুন এবার... আমাদের ছেলেপুলেদের পরে এক হাজার প্রজন্ম জন্ম নেবার পরে এই মাপগুলো হয়ত তাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হযে যাবে, কে বলতে পারে, কি হবে তখনকার মুভি সাইজ কিংবা একটা গান এর সাইজ, কত হবে তখনকার ইন্টারনেট স্পীড। তবে এটুকু অনুমান করাই যায়, কয়েকশ বছর আগে অনেক মানুষ আমাদের বর্তমান অবস্থা কল্পনা করে বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলেছেন। সুতরাং সেই একই কাজ আমাদের করার মানে হয় না, কারন যে সময়েই থাকুন না কেন আপনি, তার থেকেও উন্নততর সময়ের সম্ভাবনা থেকে যাবে সবসময়ই। তাই সন্তুষ্ট থাকুন বর্তমানেই। বর্তমানটাই বাস্তব, বাকিটুক এখনও ধোঁয়াশা..।

আমি একটা ব্লগ টাইপ সাইট ডেভলপ করছি। পাবলিক ব্লগ না, ব্যক্তিগত ব্লগ। সেখানে নিয়মিত মুভি রিভিউ, ই রিভিউ, পিসি গেম রিভিউ সহ টুকটাক লেখারিখি পাবলিশ করি আমি। একবার দেখবেন নাকি? আমার সাইটটার একটা ফেবু পেজও আছে। সাইটটি ভাল লাগলে, এবং প্রতিদিন নিয়মিত পোস্ট আপডেট পেতে আগ্রহ বোধ করলে একটা লাইক দিন প্লিজ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।