আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডেঙ্গু ঠেকাবে এডিস মশা

পৃথিবীর কাছে তুমি হয়তো কিছুই নও, কিন্তু কারও কাছে তুমিই তার পৃথিবী" ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশা দিয়েই হয়তো এবার ডেঙ্গু ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো যাবে। অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাঁরা ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস প্রতিহত করতে পারে এ ধরনের মশা ‘উত্পাদন’ করেছেন। বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার-এ প্রকাশিত দুটি গবেষণা প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, তাঁরা এডিস মশার শরীরে উলবাকিয়া নামের একধরনের ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করিয়ে ডেঙ্গু ভাইরাস বিস্তার রোধে সক্ষম হয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত স্ত্রী মশারা এ জীবাণু সহজেই তাদের পোনাদের মধ্যে সংক্রমিত করে। ওই ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে সেগুলো সম্পূর্ণভাবে ডেঙ্গু ভাইরাসমুক্ত হয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের দেহে ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রকৃতিতে এ মশা অবমুক্ত করা যেতে পারে। গবেষক দলের প্রধান মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন স্কট ও’নীল বলেন, ‘আমরা উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া আক্রান্তপ্রধান যে বৈশিষ্ট্য লক্ষ করেছি, তা হচ্ছে তাদের ডেঙ্গু ছড়ানো কমিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা। ’ গবেষক ও’নীল ও তাঁর সহযোগীরা পরীক্ষামূলকভাবে আড়াই হাজারেরও বেশি এডিস মশার ভ্রূণে ব্যাকটেরিয়াটি প্রবেশ করান। ভ্রূণগুলো পোনায় রূপ নেওয়ার পর সেগুলোকে খাদ্য হিসেবে ডেঙ্গু ভাইরাসসমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহ করা হয়। কিন্তু তাদের কারও শরীরেই এ ভাইরাস যায়নি।

গবেষক ও’নীল বলেন, উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া কেন মশার মধ্যে ডেঙ্গু বিস্তারের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করে, তা ব্যাখ্যা করতে দুটি তত্ত্ব আছে। এক. উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া মশার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং ডেঙ্গুর মতো ভাইরাস থেকে তাকে রক্ষা করে। দুই. ব্যাকটেরিয়াটি মশার শরীরের অভ্যন্তরে খাদ্যের জন্য ডেঙ্গু ভাইরাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। ফলে ডেঙ্গু ভাইরাসের জন্য বংশবিস্তার ও টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে প্রতিবছর পাঁচ কোটিরও বেশি লোক প্রতিবছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়।

এর মধ্যে ২০ হাজার লোক মারা যায়। এ রোগের জন্য আজ পর্যন্ত কোনো টিকা বা সুনির্দিষ্ট ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। বর্তমানে ডেঙ্গু প্রতিরোধের একমাত্র পথ হচ্ছে এডিস মশার বংশবিস্তার রোধ করা। ও’নীলের নেতৃত্বাধীন গবেষক দলটি উত্তর-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার কয়েক শ স্থানে উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত প্রায় দুই লাখ ৯৯ হাজার মশা ছেড়েছেন। সেগুলো থেকে বন্য মশাদের মধ্যে সফলভাবে এই ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়েছে।

তিন মাসের মধ্যে তাদের পোনাদের মধ্যেও এ ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়েছে। গবেষক দলটি এখন বেশি ডেঙ্গুপ্রবণ দেশ ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিলে এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মশা অবমুক্ত করার অনুমতি চাইছেন, যাতে মানুষের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়া হ্রাসে এটি কতটা কার্যকর তা বোঝা যায়। টেলিগ্রাফ অনলাইন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।