আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গোল চেয়ার [১]

পড়ালেখা ছাড়া আর সব কিছুই অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে করি........... ভদ্রলোককে আমার নামটা বলতেই এমনভাবে আমার দিকে এমনভাবে তাকালেন যে আমি ভয়ই পেয়ে গেলাম। ফারুক আমার নাম;খুবই সাধারণ নাম,অনেকেরই আছে। তবু তিনি আমার দিকে কিছুক্ষণ হা করে তাকিয়ে বললেন,"আসুন"। ঘটনাটা দুই দিন আগের। ভাড়া নেবার জন্য নতুন বাসা খু্ঁজতে গিয়েই এই বিপত্তি।

বাড়িওয়ালা লোকটার মুরুব্বী ধরণের ভালমানুষ চেহারা। প্রথমে আমার নাম জিজ্ঞাসা করেই তো থতমত খেলেন। তারপর রুম দেখাতে নিয়ে গেলেন। আমি একা মানুষ। লেখালেখি করি।

দুই রুমের ছোট্ট ফ্লাট টা পছন্দ হয়ে গেল। বাসাটা নিয়ে নিলাম। কিন্তু বাড়িওয়ালা যেন কিছু বলতে চাইছিলেন। তারপর বলেই ফেললেন,"আসলে.....মানে ঐযে চেয়ারটা"। ঘরের কোনে একটা চেয়ার রাখা ছিল।

ভেবেছিলাম হয়ত উনাদের চেয়ার,আমি উঠার সময় সরিয়ে নেবেন। বললাম,"তো?" "ও..ওটা অভিশপ্ত!'' আমার অবাক দৃষ্টি উপেক্ষা করে উনি আমার হাত ধরে টেনে উনাদের ঘরে নিয়ে গেলেন। তারপর শুরুকরলেন এক আষাঢ়ে গল্প [অন্তত তখন তাই মনে হয়েছিল],''বারো বছর ধরে ঐ ফ্লাটে এক ভদ্রলোক থাকতেন। ফারুক সাহেব। চেয়ারটা তার খুব প্রিয় ছিল।

কিন্তু দুই বছর আগে তিনি গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। আশ্চর্য হল চেয়ারটা কোনমতেই ঐ ঘর থেকে বের করা যাচ্ছে না। প্রথম যেবার বের করতে গেলাম,তখনই আমার ছেলেটা সিড়ি থেকে পড়ে গেল। পরেরবার আমার স্ত্রীর হাত পুড়ে গেল। তারপর আমি আর চেষ্টা করিনি।

আপনার আগে এক ভাড়াটে ছিল। চেয়ারটা ঘরে রাখতে রাজি করিয়েছিলাম। কিন্তু একের পর এক দুর্ঘটনায় সে থাকতে পারেনি। আপনার নামও ফারুক শুনে অবাক হয়েছিলাম। এখন আপনিই সিদ্ধান্ত নিন কী করবেন।

' আজ সকালে বাড়িটাতে উঠেছি। এখনও পর্যন্ত কোন ঝামেলা করেনি। আবশ্য আআমিও চেয়ারটা সরানোর কোন চেষ্টা করিনি। বলতে কি আমার খানিকটা কৌতুহলই হচ্ছে চেয়ারটার ব্যাপারে। তবে আমার অ্যালার্ম ঘড়িটা পাচ্ছিনা।

স্পষ্ট মনে আছে ঘড়িটা সাথে নিয়ে এসেছি। যাকগে কালকের জন্য অনেক কাজ পড়ে আছে। তাই তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম। কানফাটা অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। চোখ না খুলেই অ্যালার্ম বন্ধ করলাম।

পরক্ষণেই লাফ দিয়ে উঠ বসলাম। ঘড়িটা খাটের পাশে রহস্যময় চেয়ারটার উপর। চট করে দরজার দিকে তাকালাম। বন্ধ। আমি যে অ্যালার্ম দিই নি এটা শিওর।

তাহলে কে দিল?চেয়ারটাই বা কি করে এল?ঘড়িটাই বা কি করে...............। হঠাৎ করেই আমার কেমন যেন শীত শীত লাগছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।