আল্লাহর উপর আস্থা রাখ সব ঠিক হয়ে যাবে। বিশ্বের ১০৯তম মৌল ‘মেইটনারিয়াম’-এর নাম রাখা হয়েছে এক নারী বিজ্ঞানীর নামে। মেয়েটির ডাকনাম ছিল এলিসা। পুরো নাম লিজা মাইটনার। এলিসার বাবা ছিলেন অস্ট্রিয়ার বিখ্যাত আইনজীবী ও দাবাড়ু।
তাই অনেকের ধারণা ছিল, এলিসা বড় হয়ে বাবার মতো আইনজীবী হবেন। কিন্তু ১৮৭৮ সালে জন্ম নেওয়া মেয়েটি সবাইকে অবাক করে দিয়ে বিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানী হয়ে ওঠেন। ছোটবেলায় গণিত ও দাবার প্রতি আগ্রহ থাকলেও লিজা শুধু বাড়িতে পড়াশোনা করে ১৯০১ সালে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে পড়াশোনার সুযোগ পান।
১৯০৫ সালে তিনি বিখ্যাত তাপ-পদার্থবিদ বোল্টজম্যানের অধীনে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯০৮ সালে তিনি প্রথম নারী হিসেবে বিখ্যাত পদার্থবিদ ম্যাক্স প্ল্যাংকের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
একই সময় তিনি রসায়নবিদ অটো হানের সঙ্গে কাজ শুরু করেন।
১৯১৭ সালে তাঁদের যৌথ গবেষণায় আবিষ্কৃত হয় প্রথম দীর্ঘস্থায়ী আইসোটোপ কণা প্রোটেক্টিনিয়াম। ১৯২৬ সালে তিনি প্রথম নারী অধ্যাপক হিসেবে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে নিয়োগ লাভ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৩৮ সালে তিনি উদ্বাস্তু হিসেবে সুইডেনে চলে যান এবং ডেনমার্কের পদার্থবিজ্ঞানী নিলস বোরের সঙ্গে কাজ শুরু করেন।
১৯৩৮ সালের শেষের দিকে তিনি অটো হান ও ফ্রিটজ স্ট্যাসম্যান নিউক্লিয়ার ফিশন-সংক্রান্ত পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করেন।
মাইটনার ফিশন-সংক্রান্ত তাত্ত্বিক তথ্যাবলি অটো হানকে প্রদান করেন। লিজারই তাত্ত্বিক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে বার্লিনে অটো হান ফিশন-সংক্রান্ত পরীক্ষা সফলভাবে পরিচালনা করেন। ১৯৩৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাইটনার তাঁর ফিশন-সংক্রান্ত গবেষণা বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচার-এপ্রকাশ করেন।
১৯৪৪ সালে নোবেল প্রাইজ কমিটি নিউক্লিয়ার ফিশন-সংক্রান্ত গবেষণার জন্য শুধু অটো হানকে রসায়নে নোবেল পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৪৯ সালে তিনি সুইডেনের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৬৬ সালে লিজা ‘মাদার অব অ্যাটমিক বোম’ উপাধি পেয়ে অটো হান ও স্ট্যাসম্যানের সঙ্গে আমেরিকার বিখ্যাত ‘এনরিকো ফার্মি পুরস্কার’ লাভ করেন।
১৯৬৮ সালে তিনি ৮৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানে মাইটনারের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৭ সালে ১০৯তম মৌলের নাম রাখা হয়েছে ‘মেইটনারিয়াম’। আইনস্টাইন-রাদারফোর্ড-বোর-হানদের আলোয় লিজার অবদান সব সময় ঢাকা পড়ে যায়। তার পরও নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানে তাঁর অবদানের জন্য আলবার্ট আইনস্টাইন লিজা মাইটনারকে ‘জার্মানির মেরি কুরি’ নাম দিয়েছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।