করিম সাহেব নতুন অফিসে জয়েন করেছেন দুই মাস আগে। করপোরেট অফিস, সবকিছু টাইমলি হয়। নিয়মানুযায়ী, ছয় মাস না হলে বোনাস হয় না। করিম সাহেব একা নন, তাঁরা কয়েকজন একসঙ্গে জয়েন করেছিলেন। করিম সাহেব মানুষটা বেশ বুদ্ধিমান।
বলতে গেলে বুদ্ধি বেচে খান। এতে অবশ্য তাঁর কোনো আলাদা অভিব্যক্তি নেই। বুদ্ধি বেচে তো অনেকেই খায়। তিনি তো আর গতর খাটিয়ে খান না! ঈদের আগে বোনাস পাবেন না! এটা কি হয়? বাসায় বউ-বাচ্চা আছে। আর কিছু না ভেবেই বড় সাহেবের রুমে গেলেন তিনি।
‘স্যার, আমার ঈদের বোনাস লাগবে। ’
‘জয়েনের সময় তো আমি বলেই দিয়েছি, ছয় মাস না হলে বোনাস হবে না। আপনার ছয় মাস হয়েছে?’
‘না, স্যার। তবে আগামী চার মাস পর ছয় মাস হবে। ’
‘আগে ছয় মাস হোক।
আমি তো আপনার জন্য অফিসের নিয়ম বদলাতে পারব না। ’
‘ঠিক আছে! আমি তাহলে সবাইকে গিয়ে বলছি, স্যার আমাকে এই ঈদে ফুল বোনাস দিয়েছেন!’
‘আচ্ছা, তোমাকেই দিলাম, আর কেউ যেন না জানে!’
যথাসময়ে অফিস থেকে ঈদের বোনাস ও বেতন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন করিম সাহেব। মনটা বেশ ফুরফুরে। অফিসের বসকে কেমন ফাঁদে ফেলে বোনাসটা বাগিয়ে নিয়েছেন। অফিস থেকে বাসের লাইন পর্যন্ত পথটা কম নয়।
প্রতিদিন হেঁটেই যেতেন। আজ পকেট গরম। একটা রিকশা ডেকে কিচ্ছু না বলে রওনা দিলেন। বাসস্ট্যান্ডে এসে রিকশাওয়ালাকে ১০ টাকার একটি নোট দিলেন। রিকশাওয়ালা এমনভাবে চোখ বড় করে তাকাল, করিম সাহেব রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলেন।
‘ঈদের বোনাসটা দেবেন না?’
করিম সাহেবের বুকের ব্যথা আগে ছিল না, কিন্তু আজ মনে হয় একটু ব্যথা করল। রিকশাওয়ালা কী করে টের পেল ঈদের বোনাসের কথা!
দেন, আরও ১০ টাকা দেন।
বাসের লাইনে লম্বা ভিড়। পকেটটা আজ বেশ গরম, আবহাওয়া গরম। বাসে ঝুলে আজ আর বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না তার।
অনেকক্ষণ হাত তুলে রাখার পর একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসে থামল পায়ের কাছে।
‘যাবেন?’
‘যাওনের জন্যই তো থামছি। কই যাইবেন?’
‘মিরপুর। ’
‘২০০ টাকা। ’
‘গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা! আগে তুমি আমাকে বুঝিয়ে বলো, কেন ২০০ টাকা?’
‘যাবেন কি না, সেইটা কন! এত কিছু বুঝাইতে পারুম না।
যাইলে ওঠেন, না যাইলে যাই। ’
সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রায় টান দিতে যাবে। এদিকে বাসের লাইনের এত মানুষের সামনে মান-ইজ্জত হারানো ঠিক হবে না। বরং ২০০ টাকার মায়া ত্যাগ করে সবাইকে নিজের জাতটা একটু চেনাতে পারলে ক্ষতি কী! মনে মনে সিএনজিওয়ালাকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে সিএনজিতে উঠে পড়লেন।
‘আচ্ছা, এইবার বলো, গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা ভাড়া কেমনে হয়!’
‘শুনেন, যে জ্যাম, মিটারে আসবে ১০০ টাকার ওপরে।
এদিকে গ্যাসের দাম বাড়াইছে, তার জন্য আরও ৫০ টাকা। ’
করিম সাহেব মনে মনে খুশি হয়ে উঠলেন। যাক, ৫০ টাকা বাঁচল।
‘আর ধরেন স্যার, ঈদের বোনাস ৫০! মোট ২০০। আমাগোও ঘরে বউ-বাচ্চা আছে।
খালি আফনেরা ঈদ করবেন, আমরা করুম না? আফনারা তো অফিসে বোনাস পান, আমরা কই পাই। আফনেরাই তো ভরসা। ’
করিম সাহেবের বুকটা আবার ধক করে উঠল।
এ সময় বাসা থেকে ফোন!
‘এই, তুমি কই?’
‘সিএনজিতে বাসায় আসছি। ’
‘বাসায় আসতে হবে না।
জলদি রেলস্টেশনে যাও। টিকিট করা লাগবে না?’
করিম সাহেব ভুলেই গিয়েছিলেন টিকিটের কথা।
সিএনজিওয়ালাকে মোট ৩০০ টাকা দিয়ে তিনি কমলাপুরে নামলেন।
টিকিট নেই। টিকিট শেষ।
কী করা! টিকিট না হলে বাড়ি যাওয়া হবে না। আর বাড়ি না গেলে ঈদটাই মাটি। এর মধ্যে একজন লোককে বেশ হাসিখুশি চেহারায় এগিয়ে আসতে দেখে তাঁর একটু কৌতূহল হলো। একি! লোকটার হাতে আবার ট্রেনের টিকিট!
‘ভাই, টিকিট কই পাইলেন!’
‘পাইছি! একটু সিস্টেম কইরা পাইছি। ’
‘সিস্টেমটা কী, ভাই?’
লোকটি ভিড়ের মধ্যে কালো টি-শার্ট গায়ে একজনকে দেখিয়ে বললেন, ‘কিছু ঈদ বোনাস দিয়ে দেবেন।
পৃথিবীর যেকোনো জায়গার টিকিট আছে তার কাছে। ’
করিম সাহেব মনে মনে বললেন, কালো টি-শার্ট। এ জন্যই কি বলে ব্ল্যাকে টিকিট!
টিকিট কেটে এবার বাসে। সিএনজি আর না। ৩০০ টাকা দিয়ে বাসে গোটা ঢাকা দুই দিন চক্কর মারা যেত।
বাস কারওয়ান বাজার পার হয়ে ফার্মগেট যেতে না যেতেই আবার ফোন।
‘এই, তুমি কই?’
‘বাসে, ফার্মগেটে। বাসায় যাচ্ছি। ’
‘আর বাসায় যেতে হবে না। মার্কেটে আসো।
আমরাও আছি। ’
ঘড়ির দিকে তাকালেন। রাত ১০টা। এখন এখান থেকে আবার মার্কেটে।
অগত্যা রিকশা! রিকশা তখন পান্থপথের আগের গলিতে।
এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। আশপাশে রিকশা-গাড়ি দ্রুত ছুটে যাচ্ছে। সবার অনেক তাড়া। একটা মোটরসাইকেল এসে থামল।
‘স্লামালাইকুম, আংকেল।
’
‘ওয়ালাইকুম। কিন্তু আমি তো...’
‘ওই ব্যাটা, রিকশা টানস ক্যান! দেখস না আংকেলের সাথে কথা বলছি। আংকেল, বেশি কিচ্ছু বলার নেই, ঈদের বোনাসটা...। ’
হাত বাড়িয়ে দিল ছেলেগুলো। বলেছিলাম না, করিম সাহেব বুদ্ধিমান।
বেতন আর বোনাস পেয়ে সোজা গিয়েছিলেন অফিসের বাথরুমে। পুরো টাকা মোট চার ভাগ করে দুই পায়ের মোজায় দুই ভাগ, প্যান্টের ভেতরের গোপন পকেটে এক ভাগ, আর মানিব্যাগে এক ভাগ।
মানিব্যাগটা বের করলেন তিনি। ভদ্রঘরের সন্তান। মানিব্যাগে হাতও দেয়নি, তবে পুরো টাকাটা করিম সাহেব নিজেই দিয়ে দিয়েছেন।
‘আংকেল, শপিংয়ে যাচ্ছেন বুঝি! যান।
এই ব্যাটা, তোর রিকশাভাড়া। খবরদার, আংকেলের কাছে আর চাইবি না। আংকেল, স্লামালাইকুম। ’
আশপাশের যাত্রীরা দেখল, এক আংকেল তাঁর আদরের ভাইস্তাদের ঈদ বোনাস দিলেন।
পথে রিকশাওয়ালা জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, আফনের ভাতিজা লাগে?’
করিম সাহেব কিছু বললেন না। নিজের বুদ্ধির কারণে এতগুলো টাকা এখনো নিজের কাছে রয়ে গেছে ভেবেই তিনি খুশি।
‘হ্যাঁ, আমার ভাতিজাই তো!’
এরপর শপিং। একে একে নিজের সব গোপন জায়গার টাকা বেরিয়ে গেল করিম সাহেবের।
একটা সিএনজি নিয়ে বাসায় গেলেন।
এই ব্যাটা আবার মিটারে রাজি হয়েছে। ভাড়া দেওয়ার পর দেখলেন, আরও ৫০ টাকা তখনো পকেটে। সিএনজিওয়ালার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘সবাই ঈদ বোনাস নিল, তুই নিবি না!’ বলেই নোটটা বাড়িয়ে দিলেন।
বাসায় গিয়ে করিম সাহেব ভাবতে লাগলেন। ভেবে ভেবে এক ঐতিহাসিক সূত্র বের করলেন।
ঈদ বোনাসের টাকা কখনো একা ভোগ করা যায় না, সবাই মিলেমিশে ভোগ করতে হয়। তিনি খুব বেশি দুশ্চিন্তা করলেন না। নিজের বুদ্ধির ওপর এখনো তাঁর পুরো আস্থা আছে। ।
Notice (8): Undefined variable: next_posts [APP/View/Posts/view.ctp, line 142]Code Context
<?php
if(count($next_posts)>0){
$viewFile = '/www/wwwroot/amader-kotha/app/View/Posts/view.ctp'
$dataForView = array(
'post_keyword' => array(
'SearchPost' => array(
'id' => '32510',
'user_id' => '0',
'keyword_id' => '1017',
'post_id' => '222801',
'created' => '2023-04-24'
)
),
'breadcrumb' => array(
(int) 0 => '<a class='' href='https://amader-kotha.com/'>প্রথম পাতা</a>',
(int) 1 => '<a class='' href='https://amader-kotha.com//channels'>কথার গতিপথ</a>',
(int) 2 => 'ঈদ বোনাস ।'
),
'user_id' => null,
'meta_description' => 'করিম সাহেব নতুন অফিসে জয়েন করেছেন দুই মাস আগে। করপোরেট অফিস, সবকিছু টাইমলি হয়। নিয়মানুযায়ী, ছয় মাস না হলে বোনাস হয় না। করিম সাহেব একা নন, তাঁরা কয়েকজন একসঙ্গে জয়েন করেছিলেন। করিম সাহেব',
'webpage' => array(
'Post' => array(
'id' => '222801',
'category_id' => '63',
'site_name' => 'http://www.somewhereinblog.net',
'link' => '/blog/arif2011/29433654',
'image' => '',
'title' => 'ঈদ বোনাস ।',
'content' => ' করিম সাহেব নতুন অফিসে জয়েন করেছেন দুই মাস আগে। করপোরেট অফিস, সবকিছু টাইমলি হয়। নিয়মানুযায়ী, ছয় মাস না হলে বোনাস হয় না। করিম সাহেব একা নন, তাঁরা কয়েকজন একসঙ্গে জয়েন করেছিলেন। করিম সাহেব মানুষটা বেশ বুদ্ধিমান। বলতে গেলে বুদ্ধি বেচে খান। এতে অবশ্য তাঁর কোনো আলাদা অভিব্যক্তি নেই। বুদ্ধি বেচে তো অনেকেই খায়। তিনি তো আর গতর খাটিয়ে খান না! ঈদের আগে বোনাস পাবেন না! এটা কি হয়? বাসায় বউ-বাচ্চা আছে। আর কিছু না ভেবেই বড় সাহেবের রুমে গেলেন তিনি।
‘স্যার, আমার ঈদের বোনাস লাগবে।’
‘জয়েনের সময় তো আমি বলেই দিয়েছি, ছয় মাস না হলে বোনাস হবে না। আপনার ছয় মাস হয়েছে?’
‘না, স্যার। তবে আগামী চার মাস পর ছয় মাস হবে।’
‘আগে ছয় মাস হোক। আমি তো আপনার জন্য অফিসের নিয়ম বদলাতে পারব না।’
‘ঠিক আছে! আমি তাহলে সবাইকে গিয়ে বলছি, স্যার আমাকে এই ঈদে ফুল বোনাস দিয়েছেন!’
‘আচ্ছা, তোমাকেই দিলাম, আর কেউ যেন না জানে!’
যথাসময়ে অফিস থেকে ঈদের বোনাস ও বেতন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন করিম সাহেব। মনটা বেশ ফুরফুরে। অফিসের বসকে কেমন ফাঁদে ফেলে বোনাসটা বাগিয়ে নিয়েছেন। অফিস থেকে বাসের লাইন পর্যন্ত পথটা কম নয়। প্রতিদিন হেঁটেই যেতেন। আজ পকেট গরম। একটা রিকশা ডেকে কিচ্ছু না বলে রওনা দিলেন। বাসস্ট্যান্ডে এসে রিকশাওয়ালাকে ১০ টাকার একটি নোট দিলেন। রিকশাওয়ালা এমনভাবে চোখ বড় করে তাকাল, করিম সাহেব রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলেন।
‘ঈদের বোনাসটা দেবেন না?’
করিম সাহেবের বুকের ব্যথা আগে ছিল না, কিন্তু আজ মনে হয় একটু ব্যথা করল। রিকশাওয়ালা কী করে টের পেল ঈদের বোনাসের কথা!
দেন, আরও ১০ টাকা দেন।
বাসের লাইনে লম্বা ভিড়। পকেটটা আজ বেশ গরম, আবহাওয়া গরম। বাসে ঝুলে আজ আর বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না তার। অনেকক্ষণ হাত তুলে রাখার পর একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসে থামল পায়ের কাছে।
‘যাবেন?’
‘যাওনের জন্যই তো থামছি। কই যাইবেন?’
‘মিরপুর।’
‘২০০ টাকা।’
‘গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা! আগে তুমি আমাকে বুঝিয়ে বলো, কেন ২০০ টাকা?’
‘যাবেন কি না, সেইটা কন! এত কিছু বুঝাইতে পারুম না। যাইলে ওঠেন, না যাইলে যাই।’
সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রায় টান দিতে যাবে। এদিকে বাসের লাইনের এত মানুষের সামনে মান-ইজ্জত হারানো ঠিক হবে না। বরং ২০০ টাকার মায়া ত্যাগ করে সবাইকে নিজের জাতটা একটু চেনাতে পারলে ক্ষতি কী! মনে মনে সিএনজিওয়ালাকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে সিএনজিতে উঠে পড়লেন।
‘আচ্ছা, এইবার বলো, গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা ভাড়া কেমনে হয়!’
‘শুনেন, যে জ্যাম, মিটারে আসবে ১০০ টাকার ওপরে। এদিকে গ্যাসের দাম বাড়াইছে, তার জন্য আরও ৫০ টাকা।’
করিম সাহেব মনে মনে খুশি হয়ে উঠলেন। যাক, ৫০ টাকা বাঁচল।
‘আর ধরেন স্যার, ঈদের বোনাস ৫০! মোট ২০০। আমাগোও ঘরে বউ-বাচ্চা আছে। খালি আফনেরা ঈদ করবেন, আমরা করুম না? আফনারা তো অফিসে বোনাস পান, আমরা কই পাই। আফনেরাই তো ভরসা।’
করিম সাহেবের বুকটা আবার ধক করে উঠল।
এ সময় বাসা থেকে ফোন!
‘এই, তুমি কই?’
‘সিএনজিতে বাসায় আসছি।’
‘বাসায় আসতে হবে না। জলদি রেলস্টেশনে যাও। টিকিট করা লাগবে না?’
করিম সাহেব ভুলেই গিয়েছিলেন টিকিটের কথা।
সিএনজিওয়ালাকে মোট ৩০০ টাকা দিয়ে তিনি কমলাপুরে নামলেন।
টিকিট নেই। টিকিট শেষ। কী করা! টিকিট না হলে বাড়ি যাওয়া হবে না। আর বাড়ি না গেলে ঈদটাই মাটি। এর মধ্যে একজন লোককে বেশ হাসিখুশি চেহারায় এগিয়ে আসতে দেখে তাঁর একটু কৌতূহল হলো। একি! লোকটার হাতে আবার ট্রেনের টিকিট!
‘ভাই, টিকিট কই পাইলেন!’
‘পাইছি! একটু সিস্টেম কইরা পাইছি।’
‘সিস্টেমটা কী, ভাই?’
লোকটি ভিড়ের মধ্যে কালো টি-শার্ট গায়ে একজনকে দেখিয়ে বললেন, ‘কিছু ঈদ বোনাস দিয়ে দেবেন। পৃথিবীর যেকোনো জায়গার টিকিট আছে তার কাছে।’
করিম সাহেব মনে মনে বললেন, কালো টি-শার্ট। এ জন্যই কি বলে ব্ল্যাকে টিকিট!
টিকিট কেটে এবার বাসে। সিএনজি আর না। ৩০০ টাকা দিয়ে বাসে গোটা ঢাকা দুই দিন চক্কর মারা যেত।
বাস কারওয়ান বাজার পার হয়ে ফার্মগেট যেতে না যেতেই আবার ফোন।
‘এই, তুমি কই?’
‘বাসে, ফার্মগেটে। বাসায় যাচ্ছি।’
‘আর বাসায় যেতে হবে না। মার্কেটে আসো। আমরাও আছি।’
ঘড়ির দিকে তাকালেন। রাত ১০টা। এখন এখান থেকে আবার মার্কেটে।
অগত্যা রিকশা! রিকশা তখন পান্থপথের আগের গলিতে। এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। আশপাশে রিকশা-গাড়ি দ্রুত ছুটে যাচ্ছে। সবার অনেক তাড়া। একটা মোটরসাইকেল এসে থামল।
‘স্লামালাইকুম, আংকেল।’
‘ওয়ালাইকুম। কিন্তু আমি তো...’
‘ওই ব্যাটা, রিকশা টানস ক্যান! দেখস না আংকেলের সাথে কথা বলছি। আংকেল, বেশি কিচ্ছু বলার নেই, ঈদের বোনাসটা...।’
হাত বাড়িয়ে দিল ছেলেগুলো। বলেছিলাম না, করিম সাহেব বুদ্ধিমান। বেতন আর বোনাস পেয়ে সোজা গিয়েছিলেন অফিসের বাথরুমে। পুরো টাকা মোট চার ভাগ করে দুই পায়ের মোজায় দুই ভাগ, প্যান্টের ভেতরের গোপন পকেটে এক ভাগ, আর মানিব্যাগে এক ভাগ।
মানিব্যাগটা বের করলেন তিনি। ভদ্রঘরের সন্তান। মানিব্যাগে হাতও দেয়নি, তবে পুরো টাকাটা করিম সাহেব নিজেই দিয়ে দিয়েছেন।
‘আংকেল, শপিংয়ে যাচ্ছেন বুঝি! যান।
এই ব্যাটা, তোর রিকশাভাড়া। খবরদার, আংকেলের কাছে আর চাইবি না। আংকেল, স্লামালাইকুম।’
আশপাশের যাত্রীরা দেখল, এক আংকেল তাঁর আদরের ভাইস্তাদের ঈদ বোনাস দিলেন।
পথে রিকশাওয়ালা জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, আফনের ভাতিজা লাগে?’
করিম সাহেব কিছু বললেন না। নিজের বুদ্ধির কারণে এতগুলো টাকা এখনো নিজের কাছে রয়ে গেছে ভেবেই তিনি খুশি।
‘হ্যাঁ, আমার ভাতিজাই তো!’
এরপর শপিং। একে একে নিজের সব গোপন জায়গার টাকা বেরিয়ে গেল করিম সাহেবের।
একটা সিএনজি নিয়ে বাসায় গেলেন। এই ব্যাটা আবার মিটারে রাজি হয়েছে। ভাড়া দেওয়ার পর দেখলেন, আরও ৫০ টাকা তখনো পকেটে। সিএনজিওয়ালার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘সবাই ঈদ বোনাস নিল, তুই নিবি না!’ বলেই নোটটা বাড়িয়ে দিলেন।
বাসায় গিয়ে করিম সাহেব ভাবতে লাগলেন। ভেবে ভেবে এক ঐতিহাসিক সূত্র বের করলেন। ঈদ বোনাসের টাকা কখনো একা ভোগ করা যায় না, সবাই মিলেমিশে ভোগ করতে হয়। তিনি খুব বেশি দুশ্চিন্তা করলেন না। নিজের বুদ্ধির ওপর এখনো তাঁর পুরো আস্থা আছে। ',
'display_link' => '0',
'read_flag' => '0',
'is_active' => '1',
'delflag' => '0',
'created' => '2013-07-19 00:00:00',
'modified' => '2013-07-19 00:00:00'
),
'Category' => array(
'id' => '63',
'parent_id' => '29',
'domain' => '',
'category_name' => 'Archive',
'landing_links' => '',
'link_title' => '',
'link_title_offset' => '0',
'link_description' => '',
'link_description_offset' => '0',
'link_description_loop' => '0',
'link_img' => '',
'link_img_offset' => '0',
'domain_with_link' => '0',
'domain_with_image' => '0',
'url' => '',
'is_link_segment' => '0',
'num_link_segment' => '0',
'category_description' => '',
'category_image' => '',
'category_icon' => '',
'page_crawl' => '15',
'sort_order' => null,
'iscrawled' => '0',
'is_active' => '0',
'delflag' => '0',
'created' => '2013-05-02 17:05:06',
'modified' => '2013-05-25 14:41:18'
),
'BookmarkLink' => array(
'id' => null,
'bucket_id' => null,
'user_id' => null,
'link_id' => null,
'created' => null,
'modified' => null
),
'WebHistory' => array(
'id' => null,
'user_id' => null,
'link_id' => null,
'created' => null,
'modified' => null
)
),
'fb_user' => (int) 0,
'landing_url' => 'page|222801|%E0%A6%88%E0%A6%A6-%E0%A6%AC%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B8-',
'mobile_detect' => (int) 0,
'site_role_id' => null,
'site_action' => 'view',
'site_controller' => 'posts'
)
$post_keyword = array(
'SearchPost' => array(
'id' => '32510',
'user_id' => '0',
'keyword_id' => '1017',
'post_id' => '222801',
'created' => '2023-04-24'
)
)
$breadcrumb = array(
(int) 0 => '<a class='' href='https://amader-kotha.com/'>প্রথম পাতা</a>',
(int) 1 => '<a class='' href='https://amader-kotha.com//channels'>কথার গতিপথ</a>',
(int) 2 => 'ঈদ বোনাস ।'
)
$user_id = null
$meta_description = 'করিম সাহেব নতুন অফিসে জয়েন করেছেন দুই মাস আগে। করপোরেট অফিস, সবকিছু টাইমলি হয়। নিয়মানুযায়ী, ছয় মাস না হলে বোনাস হয় না। করিম সাহেব একা নন, তাঁরা কয়েকজন একসঙ্গে জয়েন করেছিলেন। করিম সাহেব'
$webpage = array(
'Post' => array(
'id' => '222801',
'category_id' => '63',
'site_name' => 'http://www.somewhereinblog.net',
'link' => '/blog/arif2011/29433654',
'image' => '',
'title' => 'ঈদ বোনাস ।',
'content' => ' করিম সাহেব নতুন অফিসে জয়েন করেছেন দুই মাস আগে। করপোরেট অফিস, সবকিছু টাইমলি হয়। নিয়মানুযায়ী, ছয় মাস না হলে বোনাস হয় না। করিম সাহেব একা নন, তাঁরা কয়েকজন একসঙ্গে জয়েন করেছিলেন। করিম সাহেব মানুষটা বেশ বুদ্ধিমান। বলতে গেলে বুদ্ধি বেচে খান। এতে অবশ্য তাঁর কোনো আলাদা অভিব্যক্তি নেই। বুদ্ধি বেচে তো অনেকেই খায়। তিনি তো আর গতর খাটিয়ে খান না! ঈদের আগে বোনাস পাবেন না! এটা কি হয়? বাসায় বউ-বাচ্চা আছে। আর কিছু না ভেবেই বড় সাহেবের রুমে গেলেন তিনি।
‘স্যার, আমার ঈদের বোনাস লাগবে।’
‘জয়েনের সময় তো আমি বলেই দিয়েছি, ছয় মাস না হলে বোনাস হবে না। আপনার ছয় মাস হয়েছে?’
‘না, স্যার। তবে আগামী চার মাস পর ছয় মাস হবে।’
‘আগে ছয় মাস হোক। আমি তো আপনার জন্য অফিসের নিয়ম বদলাতে পারব না।’
‘ঠিক আছে! আমি তাহলে সবাইকে গিয়ে বলছি, স্যার আমাকে এই ঈদে ফুল বোনাস দিয়েছেন!’
‘আচ্ছা, তোমাকেই দিলাম, আর কেউ যেন না জানে!’
যথাসময়ে অফিস থেকে ঈদের বোনাস ও বেতন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন করিম সাহেব। মনটা বেশ ফুরফুরে। অফিসের বসকে কেমন ফাঁদে ফেলে বোনাসটা বাগিয়ে নিয়েছেন। অফিস থেকে বাসের লাইন পর্যন্ত পথটা কম নয়। প্রতিদিন হেঁটেই যেতেন। আজ পকেট গরম। একটা রিকশা ডেকে কিচ্ছু না বলে রওনা দিলেন। বাসস্ট্যান্ডে এসে রিকশাওয়ালাকে ১০ টাকার একটি নোট দিলেন। রিকশাওয়ালা এমনভাবে চোখ বড় করে তাকাল, করিম সাহেব রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলেন।
‘ঈদের বোনাসটা দেবেন না?’
করিম সাহেবের বুকের ব্যথা আগে ছিল না, কিন্তু আজ মনে হয় একটু ব্যথা করল। রিকশাওয়ালা কী করে টের পেল ঈদের বোনাসের কথা!
দেন, আরও ১০ টাকা দেন।
বাসের লাইনে লম্বা ভিড়। পকেটটা আজ বেশ গরম, আবহাওয়া গরম। বাসে ঝুলে আজ আর বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না তার। অনেকক্ষণ হাত তুলে রাখার পর একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসে থামল পায়ের কাছে।
‘যাবেন?’
‘যাওনের জন্যই তো থামছি। কই যাইবেন?’
‘মিরপুর।’
‘২০০ টাকা।’
‘গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা! আগে তুমি আমাকে বুঝিয়ে বলো, কেন ২০০ টাকা?’
‘যাবেন কি না, সেইটা কন! এত কিছু বুঝাইতে পারুম না। যাইলে ওঠেন, না যাইলে যাই।’
সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রায় টান দিতে যাবে। এদিকে বাসের লাইনের এত মানুষের সামনে মান-ইজ্জত হারানো ঠিক হবে না। বরং ২০০ টাকার মায়া ত্যাগ করে সবাইকে নিজের জাতটা একটু চেনাতে পারলে ক্ষতি কী! মনে মনে সিএনজিওয়ালাকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে সিএনজিতে উঠে পড়লেন।
‘আচ্ছা, এইবার বলো, গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা ভাড়া কেমনে হয়!’
‘শুনেন, যে জ্যাম, মিটারে আসবে ১০০ টাকার ওপরে। এদিকে গ্যাসের দাম বাড়াইছে, তার জন্য আরও ৫০ টাকা।’
করিম সাহেব মনে মনে খুশি হয়ে উঠলেন। যাক, ৫০ টাকা বাঁচল।
‘আর ধরেন স্যার, ঈদের বোনাস ৫০! মোট ২০০। আমাগোও ঘরে বউ-বাচ্চা আছে। খালি আফনেরা ঈদ করবেন, আমরা করুম না? আফনারা তো অফিসে বোনাস পান, আমরা কই পাই। আফনেরাই তো ভরসা।’
করিম সাহেবের বুকটা আবার ধক করে উঠল।
এ সময় বাসা থেকে ফোন!
‘এই, তুমি কই?’
‘সিএনজিতে বাসায় আসছি।’
‘বাসায় আসতে হবে না। জলদি রেলস্টেশনে যাও। টিকিট করা লাগবে না?’
করিম সাহেব ভুলেই গিয়েছিলেন টিকিটের কথা।
সিএনজিওয়ালাকে মোট ৩০০ টাকা দিয়ে তিনি কমলাপুরে নামলেন।
টিকিট নেই। টিকিট শেষ। কী করা! টিকিট না হলে বাড়ি যাওয়া হবে না। আর বাড়ি না গেলে ঈদটাই মাটি। এর মধ্যে একজন লোককে বেশ হাসিখুশি চেহারায় এগিয়ে আসতে দেখে তাঁর একটু কৌতূহল হলো। একি! লোকটার হাতে আবার ট্রেনের টিকিট!
‘ভাই, টিকিট কই পাইলেন!’
‘পাইছি! একটু সিস্টেম কইরা পাইছি।’
‘সিস্টেমটা কী, ভাই?’
লোকটি ভিড়ের মধ্যে কালো টি-শার্ট গায়ে একজনকে দেখিয়ে বললেন, ‘কিছু ঈদ বোনাস দিয়ে দেবেন। পৃথিবীর যেকোনো জায়গার টিকিট আছে তার কাছে।’
করিম সাহেব মনে মনে বললেন, কালো টি-শার্ট। এ জন্যই কি বলে ব্ল্যাকে টিকিট!
টিকিট কেটে এবার বাসে। সিএনজি আর না। ৩০০ টাকা দিয়ে বাসে গোটা ঢাকা দুই দিন চক্কর মারা যেত।
বাস কারওয়ান বাজার পার হয়ে ফার্মগেট যেতে না যেতেই আবার ফোন।
‘এই, তুমি কই?’
‘বাসে, ফার্মগেটে। বাসায় যাচ্ছি।’
‘আর বাসায় যেতে হবে না। মার্কেটে আসো। আমরাও আছি।’
ঘড়ির দিকে তাকালেন। রাত ১০টা। এখন এখান থেকে আবার মার্কেটে।
অগত্যা রিকশা! রিকশা তখন পান্থপথের আগের গলিতে। এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। আশপাশে রিকশা-গাড়ি দ্রুত ছুটে যাচ্ছে। সবার অনেক তাড়া। একটা মোটরসাইকেল এসে থামল।
‘স্লামালাইকুম, আংকেল।’
‘ওয়ালাইকুম। কিন্তু আমি তো...’
‘ওই ব্যাটা, রিকশা টানস ক্যান! দেখস না আংকেলের সাথে কথা বলছি। আংকেল, বেশি কিচ্ছু বলার নেই, ঈদের বোনাসটা...।’
হাত বাড়িয়ে দিল ছেলেগুলো। বলেছিলাম না, করিম সাহেব বুদ্ধিমান। বেতন আর বোনাস পেয়ে সোজা গিয়েছিলেন অফিসের বাথরুমে। পুরো টাকা মোট চার ভাগ করে দুই পায়ের মোজায় দুই ভাগ, প্যান্টের ভেতরের গোপন পকেটে এক ভাগ, আর মানিব্যাগে এক ভাগ।
মানিব্যাগটা বের করলেন তিনি। ভদ্রঘরের সন্তান। মানিব্যাগে হাতও দেয়নি, তবে পুরো টাকাটা করিম সাহেব নিজেই দিয়ে দিয়েছেন।
‘আংকেল, শপিংয়ে যাচ্ছেন বুঝি! যান।
এই ব্যাটা, তোর রিকশাভাড়া। খবরদার, আংকেলের কাছে আর চাইবি না। আংকেল, স্লামালাইকুম।’
আশপাশের যাত্রীরা দেখল, এক আংকেল তাঁর আদরের ভাইস্তাদের ঈদ বোনাস দিলেন।
পথে রিকশাওয়ালা জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, আফনের ভাতিজা লাগে?’
করিম সাহেব কিছু বললেন না। নিজের বুদ্ধির কারণে এতগুলো টাকা এখনো নিজের কাছে রয়ে গেছে ভেবেই তিনি খুশি।
‘হ্যাঁ, আমার ভাতিজাই তো!’
এরপর শপিং। একে একে নিজের সব গোপন জায়গার টাকা বেরিয়ে গেল করিম সাহেবের।
একটা সিএনজি নিয়ে বাসায় গেলেন। এই ব্যাটা আবার মিটারে রাজি হয়েছে। ভাড়া দেওয়ার পর দেখলেন, আরও ৫০ টাকা তখনো পকেটে। সিএনজিওয়ালার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘সবাই ঈদ বোনাস নিল, তুই নিবি না!’ বলেই নোটটা বাড়িয়ে দিলেন।
বাসায় গিয়ে করিম সাহেব ভাবতে লাগলেন। ভেবে ভেবে এক ঐতিহাসিক সূত্র বের করলেন। ঈদ বোনাসের টাকা কখনো একা ভোগ করা যায় না, সবাই মিলেমিশে ভোগ করতে হয়। তিনি খুব বেশি দুশ্চিন্তা করলেন না। নিজের বুদ্ধির ওপর এখনো তাঁর পুরো আস্থা আছে। ',
'display_link' => '0',
'read_flag' => '0',
'is_active' => '1',
'delflag' => '0',
'created' => '2013-07-19 00:00:00',
'modified' => '2013-07-19 00:00:00'
),
'Category' => array(
'id' => '63',
'parent_id' => '29',
'domain' => '',
'category_name' => 'Archive',
'landing_links' => '',
'link_title' => '',
'link_title_offset' => '0',
'link_description' => '',
'link_description_offset' => '0',
'link_description_loop' => '0',
'link_img' => '',
'link_img_offset' => '0',
'domain_with_link' => '0',
'domain_with_image' => '0',
'url' => '',
'is_link_segment' => '0',
'num_link_segment' => '0',
'category_description' => '',
'category_image' => '',
'category_icon' => '',
'page_crawl' => '15',
'sort_order' => null,
'iscrawled' => '0',
'is_active' => '0',
'delflag' => '0',
'created' => '2013-05-02 17:05:06',
'modified' => '2013-05-25 14:41:18'
),
'BookmarkLink' => array(
'id' => null,
'bucket_id' => null,
'user_id' => null,
'link_id' => null,
'created' => null,
'modified' => null
),
'WebHistory' => array(
'id' => null,
'user_id' => null,
'link_id' => null,
'created' => null,
'modified' => null
)
)
$fb_user = (int) 0
$landing_url = 'page|222801|%E0%A6%88%E0%A6%A6-%E0%A6%AC%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B8-'
$mobile_detect = (int) 0
$site_role_id = null
$site_action = 'view'
$site_controller = 'posts'
$service_message = '%E0%A6%B2%E0%A6%97+%E0%A6%87%E0%A6%A8+%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A8+%E0%A6%85%E0%A6%A5%E0%A6%AC%E0%A6%BE+%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%A8+%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A8'
$content_id = '222801'
$favurl = '<a class='btn btn-warning' href='/proceed_login/%E0%A6%B2%E0%A6%97+%E0%A6%87%E0%A6%A8+%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A8+%E0%A6%85%E0%A6%A5%E0%A6%AC%E0%A6%BE+%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%A8+%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A8/save|222801'>Bookmark it!</a>'
$read_value = (int) 0
$bn_read_value = '০'
$num_of_bookmark = (int) 0
$bn_num_of_bookmark = '০'
$space_chars = array(
(int) 0 => '”',
(int) 1 => '“',
(int) 2 => ',',
(int) 3 => '—',
(int) 4 => ''',
(int) 5 => '"',
(int) 6 => '?',
(int) 7 => '/',
(int) 8 => '_',
(int) 9 => ':',
(int) 10 => ',',
(int) 11 => '(',
(int) 12 => ')',
(int) 13 => '*',
(int) 14 => '~',
(int) 15 => '!',
(int) 16 => '@',
(int) 17 => '#',
(int) 18 => '$',
(int) 19 => '%',
(int) 20 => '^',
(int) 21 => '&',
(int) 22 => '*',
(int) 23 => '__',
(int) 24 => '+',
(int) 25 => '=',
(int) 26 => '|',
(int) 27 => '\',
(int) 28 => ';',
(int) 29 => '<',
(int) 30 => '>',
(int) 31 => '.',
(int) 32 => '{',
(int) 33 => '}',
(int) 34 => '[',
(int) 35 => ']'
)
$char = ']'
$search_text = 'ঈদ+বোনাস+।'
$page_content = ' করিম সাহেব নতুন অফিসে জয়েন করেছেন দুই মাস আগে। করপোরেট অফিস, সবকিছু টাইমলি হয়। নিয়মানুযায়ী, ছয় মাস না হলে বোনাস হয় না। করিম সাহেব একা নন, তাঁরা কয়েকজন একসঙ্গে জয়েন করেছিলেন। করিম সাহেব মানুষটা বেশ বুদ্ধিমান। বলতে গেলে বুদ্ধি বেচে খান। এতে অবশ্য তাঁর কোনো আলাদা অভিব্যক্তি নেই। বুদ্ধি বেচে তো অনেকেই খায়। তিনি তো আর গতর খাটিয়ে খান না! ঈদের আগে বোনাস পাবেন না! এটা কি হয়? বাসায় বউ-বাচ্চা আছে। আর কিছু না ভেবেই বড় সাহেবের রুমে গেলেন তিনি।
‘স্যার, আমার ঈদের বোনাস লাগবে।’
‘জয়েনের সময় তো আমি বলেই দিয়েছি, ছয় মাস না হলে বোনাস হবে না। আপনার ছয় মাস হয়েছে?’
‘না, স্যার। তবে আগামী চার মাস পর ছয় মাস হবে।’
‘আগে ছয় মাস হোক। আমি তো আপনার জন্য অফিসের নিয়ম বদলাতে পারব না।’
‘ঠিক আছে! আমি তাহলে সবাইকে গিয়ে বলছি, স্যার আমাকে এই ঈদে ফুল বোনাস দিয়েছেন!’
‘আচ্ছা, তোমাকেই দিলাম, আর কেউ যেন না জানে!’
যথাসময়ে অফিস থেকে ঈদের বোনাস ও বেতন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন করিম সাহেব। মনটা বেশ ফুরফুরে। অফিসের বসকে কেমন ফাঁদে ফেলে বোনাসটা বাগিয়ে নিয়েছেন। অফিস থেকে বাসের লাইন পর্যন্ত পথটা কম নয়। প্রতিদিন হেঁটেই যেতেন। আজ পকেট গরম। একটা রিকশা ডেকে কিচ্ছু না বলে রওনা দিলেন। বাসস্ট্যান্ডে এসে রিকশাওয়ালাকে ১০ টাকার একটি নোট দিলেন। রিকশাওয়ালা এমনভাবে চোখ বড় করে তাকাল, করিম সাহেব রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলেন।
‘ঈদের বোনাসটা দেবেন না?’
করিম সাহেবের বুকের ব্যথা আগে ছিল না, কিন্তু আজ মনে হয় একটু ব্যথা করল। রিকশাওয়ালা কী করে টের পেল ঈদের বোনাসের কথা!
দেন, আরও ১০ টাকা দেন।
বাসের লাইনে লম্বা ভিড়। পকেটটা আজ বেশ গরম, আবহাওয়া গরম। বাসে ঝুলে আজ আর বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না তার। অনেকক্ষণ হাত তুলে রাখার পর একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসে থামল পায়ের কাছে।
‘যাবেন?’
‘যাওনের জন্যই তো থামছি। কই যাইবেন?’
‘মিরপুর।’
‘২০০ টাকা।’
‘গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা! আগে তুমি আমাকে বুঝিয়ে বলো, কেন ২০০ টাকা?’
‘যাবেন কি না, সেইটা কন! এত কিছু বুঝাইতে পারুম না। যাইলে ওঠেন, না যাইলে যাই।’
সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রায় টান দিতে যাবে। এদিকে বাসের লাইনের এত মানুষের সামনে মান-ইজ্জত হারানো ঠিক হবে না। বরং ২০০ টাকার মায়া ত্যাগ করে সবাইকে নিজের জাতটা একটু চেনাতে পারলে ক্ষতি কী! মনে মনে সিএনজিওয়ালাকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে সিএনজিতে উঠে পড়লেন।
‘আচ্ছা, এইবার বলো, গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা ভাড়া কেমনে হয়!’
‘শুনেন, যে জ্যাম, মিটারে আসবে ১০০ টাকার ওপরে। এদিকে গ্যাসের দাম বাড়াইছে, তার জন্য আরও ৫০ টাকা।’
করিম সাহেব মনে মনে খুশি হয়ে উঠলেন। যাক, ৫০ টাকা বাঁচল।
‘আর ধরেন স্যার, ঈদের বোনাস ৫০! মোট ২০০। আমাগোও ঘরে বউ-বাচ্চা আছে। খালি আফনেরা ঈদ করবেন, আমরা করুম না? আফনারা তো অফিসে বোনাস পান, আমরা কই পাই। আফনেরাই তো ভরসা।’
করিম সাহেবের বুকটা আবার ধক করে উঠল।
এ সময় বাসা থেকে ফোন!
‘এই, তুমি কই?’
‘সিএনজিতে বাসায় আসছি।’
‘বাসায় আসতে হবে না। জলদি রেলস্টেশনে যাও। টিকিট করা লাগবে না?’
করিম সাহেব ভুলেই গিয়েছিলেন টিকিটের কথা।
সিএনজিওয়ালাকে মোট ৩০০ টাকা দিয়ে তিনি কমলাপুরে নামলেন।
টিকিট নেই। টিকিট শেষ। কী করা! টিকিট না হলে বাড়ি যাওয়া হবে না। আর বাড়ি না গেলে ঈদটাই মাটি। এর মধ্যে একজন লোককে বেশ হাসিখুশি চেহারায় এগিয়ে আসতে দেখে তাঁর একটু কৌতূহল হলো। একি! লোকটার হাতে আবার ট্রেনের টিকিট!
‘ভাই, টিকিট কই পাইলেন!’
‘পাইছি! একটু সিস্টেম কইরা পাইছি।’
‘সিস্টেমটা কী, ভাই?’
লোকটি ভিড়ের মধ্যে কালো টি-শার্ট গায়ে একজনকে দেখিয়ে বললেন, ‘কিছু ঈদ বোনাস দিয়ে দেবেন। পৃথিবীর যেকোনো জায়গার টিকিট আছে তার কাছে।’
করিম সাহেব মনে মনে বললেন, কালো টি-শার্ট। এ জন্যই কি বলে ব্ল্যাকে টিকিট!
টিকিট কেটে এবার বাসে। সিএনজি আর না। ৩০০ টাকা দিয়ে বাসে গোটা ঢাকা দুই দিন চক্কর মারা যেত।
বাস কারওয়ান বাজার পার হয়ে ফার্মগেট যেতে না যেতেই আবার ফোন।
‘এই, তুমি কই?’
‘বাসে, ফার্মগেটে। বাসায় যাচ্ছি।’
‘আর বাসায় যেতে হবে না। মার্কেটে আসো। আমরাও আছি।’
ঘড়ির দিকে তাকালেন। রাত ১০টা। এখন এখান থেকে আবার মার্কেটে।
অগত্যা রিকশা! রিকশা তখন পান্থপথের আগের গলিতে। এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। আশপাশে রিকশা-গাড়ি দ্রুত ছুটে যাচ্ছে। সবার অনেক তাড়া। একটা মোটরসাইকেল এসে থামল।
‘স্লামালাইকুম, আংকেল।’
‘ওয়ালাইকুম। কিন্তু আমি তো...’
‘ওই ব্যাটা, রিকশা টানস ক্যান! দেখস না আংকেলের সাথে কথা বলছি। আংকেল, বেশি কিচ্ছু বলার নেই, ঈদের বোনাসটা...।’
হাত বাড়িয়ে দিল ছেলেগুলো। বলেছিলাম না, করিম সাহেব বুদ্ধিমান। বেতন আর বোনাস পেয়ে সোজা গিয়েছিলেন অফিসের বাথরুমে। পুরো টাকা মোট চার ভাগ করে দুই পায়ের মোজায় দুই ভাগ, প্যান্টের ভেতরের গোপন পকেটে এক ভাগ, আর মানিব্যাগে এক ভাগ।
মানিব্যাগটা বের করলেন তিনি। ভদ্রঘরের সন্তান। মানিব্যাগে হাতও দেয়নি, তবে পুরো টাকাটা করিম সাহেব নিজেই দিয়ে দিয়েছেন।
‘আংকেল, শপিংয়ে যাচ্ছেন বুঝি! যান।
এই ব্যাটা, তোর রিকশাভাড়া। খবরদার, আংকেলের কাছে আর চাইবি না। আংকেল, স্লামালাইকুম।’
আশপাশের যাত্রীরা দেখল, এক আংকেল তাঁর আদরের ভাইস্তাদের ঈদ বোনাস দিলেন।
পথে রিকশাওয়ালা জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, আফনের ভাতিজা লাগে?’
করিম সাহেব কিছু বললেন না। নিজের বুদ্ধির কারণে এতগুলো টাকা এখনো নিজের কাছে রয়ে গেছে ভেবেই তিনি খুশি।
‘হ্যাঁ, আমার ভাতিজাই তো!’
এরপর শপিং। একে একে নিজের সব গোপন জায়গার টাকা বেরিয়ে গেল করিম সাহেবের।
একটা সিএনজি নিয়ে বাসায় গেলেন। এই ব্যাটা আবার মিটারে রাজি হয়েছে। ভাড়া দেওয়ার পর দেখলেন, আরও ৫০ টাকা তখনো পকেটে। সিএনজিওয়ালার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘সবাই ঈদ বোনাস নিল, তুই নিবি না!’ বলেই নোটটা বাড়িয়ে দিলেন।
বাসায় গিয়ে করিম সাহেব ভাবতে লাগলেন। ভেবে ভেবে এক ঐতিহাসিক সূত্র বের করলেন। ঈদ বোনাসের টাকা কখনো একা ভোগ করা যায় না, সবাই মিলেমিশে ভোগ করতে হয়। তিনি খুব বেশি দুশ্চিন্তা করলেন না। নিজের বুদ্ধির ওপর এখনো তাঁর পুরো আস্থা আছে। '
$arr = array(
(int) 0 => ' করিম সাহেব নতুন অফিসে জয়েন করেছেন দুই মাস আগে',
(int) 1 => ' করপোরেট অফিস, সবকিছু টাইমলি হয়',
(int) 2 => ' নিয়মানুযায়ী, ছয় মাস না হলে বোনাস হয় না',
(int) 3 => ' করিম সাহেব একা নন, তাঁরা কয়েকজন একসঙ্গে জয়েন করেছিলেন',
(int) 4 => ' করিম সাহেব মানুষটা বেশ বুদ্ধিমান',
(int) 5 => ' বলতে গেলে বুদ্ধি বেচে খান',
(int) 6 => ' এতে অবশ্য তাঁর কোনো আলাদা অভিব্যক্তি নেই',
(int) 7 => ' বুদ্ধি বেচে তো অনেকেই খায়',
(int) 8 => ' তিনি তো আর গতর খাটিয়ে খান না! ঈদের আগে বোনাস পাবেন না! এটা কি হয়? বাসায় বউ-বাচ্চা আছে',
(int) 9 => ' আর কিছু না ভেবেই বড় সাহেবের রুমে গেলেন তিনি',
(int) 10 => '
‘স্যার, আমার ঈদের বোনাস লাগবে',
(int) 11 => '’
‘জয়েনের সময় তো আমি বলেই দিয়েছি, ছয় মাস না হলে বোনাস হবে না',
(int) 12 => ' আপনার ছয় মাস হয়েছে?’
‘না, স্যার',
(int) 13 => ' তবে আগামী চার মাস পর ছয় মাস হবে',
(int) 14 => '’
‘আগে ছয় মাস হোক',
(int) 15 => ' আমি তো আপনার জন্য অফিসের নিয়ম বদলাতে পারব না',
(int) 16 => '’
‘ঠিক আছে! আমি তাহলে সবাইকে গিয়ে বলছি, স্যার আমাকে এই ঈদে ফুল বোনাস দিয়েছেন!’
‘আচ্ছা, তোমাকেই দিলাম, আর কেউ যেন না জানে!’
যথাসময়ে অফিস থেকে ঈদের বোনাস ও বেতন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন করিম সাহেব',
(int) 17 => ' মনটা বেশ ফুরফুরে',
(int) 18 => ' অফিসের বসকে কেমন ফাঁদে ফেলে বোনাসটা বাগিয়ে নিয়েছেন',
(int) 19 => ' অফিস থেকে বাসের লাইন পর্যন্ত পথটা কম নয়',
(int) 20 => ' প্রতিদিন হেঁটেই যেতেন',
(int) 21 => ' আজ পকেট গরম',
(int) 22 => ' একটা রিকশা ডেকে কিচ্ছু না বলে রওনা দিলেন',
(int) 23 => ' বাসস্ট্যান্ডে এসে রিকশাওয়ালাকে ১০ টাকার একটি নোট দিলেন',
(int) 24 => ' রিকশাওয়ালা এমনভাবে চোখ বড় করে তাকাল, করিম সাহেব রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলেন',
(int) 25 => '
‘ঈদের বোনাসটা দেবেন না?’
করিম সাহেবের বুকের ব্যথা আগে ছিল না, কিন্তু আজ মনে হয় একটু ব্যথা করল',
(int) 26 => ' রিকশাওয়ালা কী করে টের পেল ঈদের বোনাসের কথা!
দেন, আরও ১০ টাকা দেন',
(int) 27 => '
বাসের লাইনে লম্বা ভিড়',
(int) 28 => ' পকেটটা আজ বেশ গরম, আবহাওয়া গরম',
(int) 29 => ' বাসে ঝুলে আজ আর বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না তার',
(int) 30 => ' অনেকক্ষণ হাত তুলে রাখার পর একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসে থামল পায়ের কাছে',
(int) 31 => '
‘যাবেন?’
‘যাওনের জন্যই তো থামছি',
(int) 32 => ' কই যাইবেন?’
‘মিরপুর',
(int) 33 => '’
‘২০০ টাকা',
(int) 34 => '’
‘গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা! আগে তুমি আমাকে বুঝিয়ে বলো, কেন ২০০ টাকা?’
‘যাবেন কি না, সেইটা কন! এত কিছু বুঝাইতে পারুম না',
(int) 35 => ' যাইলে ওঠেন, না যাইলে যাই',
(int) 36 => '’
সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রায় টান দিতে যাবে',
(int) 37 => ' এদিকে বাসের লাইনের এত মানুষের সামনে মান-ইজ্জত হারানো ঠিক হবে না',
(int) 38 => ' বরং ২০০ টাকার মায়া ত্যাগ করে সবাইকে নিজের জাতটা একটু চেনাতে পারলে ক্ষতি কী! মনে মনে সিএনজিওয়ালাকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে সিএনজিতে উঠে পড়লেন',
(int) 39 => '
‘আচ্ছা, এইবার বলো, গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা ভাড়া কেমনে হয়!’
‘শুনেন, যে জ্যাম, মিটারে আসবে ১০০ টাকার ওপরে',
(int) 40 => ' এদিকে গ্যাসের দাম বাড়াইছে, তার জন্য আরও ৫০ টাকা',
(int) 41 => '’
করিম সাহেব মনে মনে খুশি হয়ে উঠলেন',
(int) 42 => ' যাক, ৫০ টাকা বাঁচল',
(int) 43 => '
‘আর ধরেন স্যার, ঈদের বোনাস ৫০! মোট ২০০',
(int) 44 => ' আমাগোও ঘরে বউ-বাচ্চা আছে',
(int) 45 => ' খালি আফনেরা ঈদ করবেন, আমরা করুম না? আফনারা তো অফিসে বোনাস পান, আমরা কই পাই',
(int) 46 => ' আফনেরাই তো ভরসা',
(int) 47 => '’
করিম সাহেবের বুকটা আবার ধক করে উঠল',
(int) 48 => '
এ সময় বাসা থেকে ফোন!
‘এই, তুমি কই?’
‘সিএনজিতে বাসায় আসছি',
(int) 49 => '’
‘বাসায় আসতে হবে না',
(int) 50 => ' জলদি রেলস্টেশনে যাও',
(int) 51 => ' টিকিট করা লাগবে না?’
করিম সাহেব ভুলেই গিয়েছিলেন টিকিটের কথা',
(int) 52 => '
সিএনজিওয়ালাকে মোট ৩০০ টাকা দিয়ে তিনি কমলাপুরে নামলেন',
(int) 53 => '
টিকিট নেই',
(int) 54 => ' টিকিট শেষ',
(int) 55 => ' কী করা! টিকিট না হলে বাড়ি যাওয়া হবে না',
(int) 56 => ' আর বাড়ি না গেলে ঈদটাই মাটি',
(int) 57 => ' এর মধ্যে একজন লোককে বেশ হাসিখুশি চেহারায় এগিয়ে আসতে দেখে তাঁর একটু কৌতূহল হলো',
(int) 58 => ' একি! লোকটার হাতে আবার ট্রেনের টিকিট!
‘ভাই, টিকিট কই পাইলেন!’
‘পাইছি! একটু সিস্টেম কইরা পাইছি',
(int) 59 => '’
‘সিস্টেমটা কী, ভাই?’
লোকটি ভিড়ের মধ্যে কালো টি-শার্ট গায়ে একজনকে দেখিয়ে বললেন, ‘কিছু ঈদ বোনাস দিয়ে দেবেন',
(int) 60 => ' পৃথিবীর যেকোনো জায়গার টিকিট আছে তার কাছে',
(int) 61 => '’
করিম সাহেব মনে মনে বললেন, কালো টি-শার্ট',
(int) 62 => ' এ জন্যই কি বলে ব্ল্যাকে টিকিট!
টিকিট কেটে এবার বাসে',
(int) 63 => ' সিএনজি আর না',
(int) 64 => ' ৩০০ টাকা দিয়ে বাসে গোটা ঢাকা দুই দিন চক্কর মারা যেত',
(int) 65 => '
বাস কারওয়ান বাজার পার হয়ে ফার্মগেট যেতে না যেতেই আবার ফোন',
(int) 66 => '
‘এই, তুমি কই?’
‘বাসে, ফার্মগেটে',
(int) 67 => ' বাসায় যাচ্ছি',
(int) 68 => '’
‘আর বাসায় যেতে হবে না',
(int) 69 => ' মার্কেটে আসো',
(int) 70 => ' আমরাও আছি',
(int) 71 => '’
ঘড়ির দিকে তাকালেন',
(int) 72 => ' রাত ১০টা',
(int) 73 => ' এখন এখান থেকে আবার মার্কেটে',
(int) 74 => '
অগত্যা রিকশা! রিকশা তখন পান্থপথের আগের গলিতে',
(int) 75 => ' এলাকায় বিদ্যুৎ নেই',
(int) 76 => ' আশপাশে রিকশা-গাড়ি দ্রুত ছুটে যাচ্ছে',
(int) 77 => ' সবার অনেক তাড়া',
(int) 78 => ' একটা মোটরসাইকেল এসে থামল',
(int) 79 => '
‘স্লামালাইকুম, আংকেল',
(int) 80 => '’
‘ওয়ালাইকুম',
(int) 81 => ' কিন্তু আমি তো...’
‘ওই ব্যাটা, রিকশা টানস ক্যান! দেখস না আংকেলের সাথে কথা বলছি',
(int) 82 => ' আংকেল, বেশি কিচ্ছু বলার নেই, ঈদের বোনাসটা...',
(int) 83 => '’
হাত বাড়িয়ে দিল ছেলেগুলো',
(int) 84 => ' বলেছিলাম না, করিম সাহেব বুদ্ধিমান',
(int) 85 => ' বেতন আর বোনাস পেয়ে সোজা গিয়েছিলেন অফিসের বাথরুমে',
(int) 86 => ' পুরো টাকা মোট চার ভাগ করে দুই পায়ের মোজায় দুই ভাগ, প্যান্টের ভেতরের গোপন পকেটে এক ভাগ, আর মানিব্যাগে এক ভাগ',
(int) 87 => '
মানিব্যাগটা বের করলেন তিনি',
(int) 88 => ' ভদ্রঘরের সন্তান',
(int) 89 => ' মানিব্যাগে হাতও দেয়নি, তবে পুরো টাকাটা করিম সাহেব নিজেই দিয়ে দিয়েছেন',
(int) 90 => '
‘আংকেল, শপিংয়ে যাচ্ছেন বুঝি! যান',
(int) 91 => '
এই ব্যাটা, তোর রিকশাভাড়া',
(int) 92 => ' খবরদার, আংকেলের কাছে আর চাইবি না',
(int) 93 => ' আংকেল, স্লামালাইকুম',
(int) 94 => '’
আশপাশের যাত্রীরা দেখল, এক আংকেল তাঁর আদরের ভাইস্তাদের ঈদ বোনাস দিলেন',
(int) 95 => '
পথে রিকশাওয়ালা জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, আফনের ভাতিজা লাগে?’
করিম সাহেব কিছু বললেন না',
(int) 96 => ' নিজের বুদ্ধির কারণে এতগুলো টাকা এখনো নিজের কাছে রয়ে গেছে ভেবেই তিনি খুশি',
(int) 97 => '
‘হ্যাঁ, আমার ভাতিজাই তো!’
এরপর শপিং',
(int) 98 => ' একে একে নিজের সব গোপন জায়গার টাকা বেরিয়ে গেল করিম সাহেবের',
(int) 99 => '
একটা সিএনজি নিয়ে বাসায় গেলেন',
(int) 100 => ' এই ব্যাটা আবার মিটারে রাজি হয়েছে',
(int) 101 => ' ভাড়া দেওয়ার পর দেখলেন, আরও ৫০ টাকা তখনো পকেটে',
(int) 102 => ' সিএনজিওয়ালার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘সবাই ঈদ বোনাস নিল, তুই নিবি না!’ বলেই নোটটা বাড়িয়ে দিলেন',
(int) 103 => '
বাসায় গিয়ে করিম সাহেব ভাবতে লাগলেন',
(int) 104 => ' ভেবে ভেবে এক ঐতিহাসিক সূত্র বের করলেন',
(int) 105 => ' ঈদ বোনাসের টাকা কখনো একা ভোগ করা যায় না, সবাই মিলেমিশে ভোগ করতে হয়',
(int) 106 => ' তিনি খুব বেশি দুশ্চিন্তা করলেন না',
(int) 107 => ' নিজের বুদ্ধির ওপর এখনো তাঁর পুরো আস্থা আছে',
(int) 108 => ''
)
$new_str = ' করিম সাহেব নতুন অফিসে জয়েন করেছেন দুই মাস আগে। করপোরেট অফিস, সবকিছু টাইমলি হয়। নিয়মানুযায়ী, ছয় মাস না হলে বোনাস হয় না। করিম সাহেব একা নন, তাঁরা কয়েকজন একসঙ্গে জয়েন করেছিলেন। করিম সাহেব মানুষটা বেশ বুদ্ধিমান। <br/><br/> বলতে গেলে বুদ্ধি বেচে খান। এতে অবশ্য তাঁর কোনো আলাদা অভিব্যক্তি নেই। বুদ্ধি বেচে তো অনেকেই খায়। তিনি তো আর গতর খাটিয়ে খান না! ঈদের আগে বোনাস পাবেন না! এটা কি হয়? বাসায় বউ-বাচ্চা আছে। আর কিছু না ভেবেই বড় সাহেবের রুমে গেলেন তিনি। <br/><br/>
‘স্যার, আমার ঈদের বোনাস লাগবে। ’
‘জয়েনের সময় তো আমি বলেই দিয়েছি, ছয় মাস না হলে বোনাস হবে না। আপনার ছয় মাস হয়েছে?’
‘না, স্যার। তবে আগামী চার মাস পর ছয় মাস হবে। ’
‘আগে ছয় মাস হোক। <br/><br/> আমি তো আপনার জন্য অফিসের নিয়ম বদলাতে পারব না। ’
‘ঠিক আছে! আমি তাহলে সবাইকে গিয়ে বলছি, স্যার আমাকে এই ঈদে ফুল বোনাস দিয়েছেন!’
‘আচ্ছা, তোমাকেই দিলাম, আর কেউ যেন না জানে!’
যথাসময়ে অফিস থেকে ঈদের বোনাস ও বেতন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন করিম সাহেব। মনটা বেশ ফুরফুরে। অফিসের বসকে কেমন ফাঁদে ফেলে বোনাসটা বাগিয়ে নিয়েছেন। অফিস থেকে বাসের লাইন পর্যন্ত পথটা কম নয়। <br/><br/> প্রতিদিন হেঁটেই যেতেন। আজ পকেট গরম। একটা রিকশা ডেকে কিচ্ছু না বলে রওনা দিলেন। বাসস্ট্যান্ডে এসে রিকশাওয়ালাকে ১০ টাকার একটি নোট দিলেন। রিকশাওয়ালা এমনভাবে চোখ বড় করে তাকাল, করিম সাহেব রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলেন। <br/><br/>
‘ঈদের বোনাসটা দেবেন না?’
করিম সাহেবের বুকের ব্যথা আগে ছিল না, কিন্তু আজ মনে হয় একটু ব্যথা করল। রিকশাওয়ালা কী করে টের পেল ঈদের বোনাসের কথা!
দেন, আরও ১০ টাকা দেন।
বাসের লাইনে লম্বা ভিড়। পকেটটা আজ বেশ গরম, আবহাওয়া গরম। বাসে ঝুলে আজ আর বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না তার। <br/><br/> অনেকক্ষণ হাত তুলে রাখার পর একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসে থামল পায়ের কাছে।
‘যাবেন?’
‘যাওনের জন্যই তো থামছি। কই যাইবেন?’
‘মিরপুর। ’
‘২০০ টাকা। ’
‘গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা! আগে তুমি আমাকে বুঝিয়ে বলো, কেন ২০০ টাকা?’
‘যাবেন কি না, সেইটা কন! এত কিছু বুঝাইতে পারুম না। <br/><br/> যাইলে ওঠেন, না যাইলে যাই। ’
সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রায় টান দিতে যাবে। এদিকে বাসের লাইনের এত মানুষের সামনে মান-ইজ্জত হারানো ঠিক হবে না। বরং ২০০ টাকার মায়া ত্যাগ করে সবাইকে নিজের জাতটা একটু চেনাতে পারলে ক্ষতি কী! মনে মনে সিএনজিওয়ালাকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে সিএনজিতে উঠে পড়লেন।
‘আচ্ছা, এইবার বলো, গুলশান থেকে মিরপুর ২০০ টাকা ভাড়া কেমনে হয়!’
‘শুনেন, যে জ্যাম, মিটারে আসবে ১০০ টাকার ওপরে। <br/><br/> এদিকে গ্যাসের দাম বাড়াইছে, তার জন্য আরও ৫০ টাকা। ’
করিম সাহেব মনে মনে খুশি হয়ে উঠলেন। যাক, ৫০ টাকা বাঁচল।
‘আর ধরেন স্যার, ঈদের বোনাস ৫০! মোট ২০০। আমাগোও ঘরে বউ-বাচ্চা আছে। <br/><br/> খালি আফনেরা ঈদ করবেন, আমরা করুম না? আফনারা তো অফিসে বোনাস পান, আমরা কই পাই। আফনেরাই তো ভরসা। ’
করিম সাহেবের বুকটা আবার ধক করে উঠল।
এ সময় বাসা থেকে ফোন!
‘এই, তুমি কই?’
‘সিএনজিতে বাসায় আসছি। ’
‘বাসায় আসতে হবে না। <br/><br/> জলদি রেলস্টেশনে যাও। টিকিট করা লাগবে না?’
করিম সাহেব ভুলেই গিয়েছিলেন টিকিটের কথা।
সিএনজিওয়ালাকে মোট ৩০০ টাকা দিয়ে তিনি কমলাপুরে নামলেন।
টিকিট নেই। টিকিট শেষ। <br/><br/> কী করা! টিকিট না হলে বাড়ি যাওয়া হবে না। আর বাড়ি না গেলে ঈদটাই মাটি। এর মধ্যে একজন লোককে বেশ হাসিখুশি চেহারায় এগিয়ে আসতে দেখে তাঁর একটু কৌতূহল হলো। একি! লোকটার হাতে আবার ট্রেনের টিকিট!
‘ভাই, টিকিট কই পাইলেন!’
‘পাইছি! একটু সিস্টেম কইরা পাইছি। ’
‘সিস্টেমটা কী, ভাই?’
লোকটি ভিড়ের মধ্যে কালো টি-শার্ট গায়ে একজনকে দেখিয়ে বললেন, ‘কিছু ঈদ বোনাস দিয়ে দেবেন। <br/><br/> পৃথিবীর যেকোনো জায়গার টিকিট আছে তার কাছে। ’
করিম সাহেব মনে মনে বললেন, কালো টি-শার্ট। এ জন্যই কি বলে ব্ল্যাকে টিকিট!
টিকিট কেটে এবার বাসে। সিএনজি আর না। ৩০০ টাকা দিয়ে বাসে গোটা ঢাকা দুই দিন চক্কর মারা যেত। <br/><br/>
বাস কারওয়ান বাজার পার হয়ে ফার্মগেট যেতে না যেতেই আবার ফোন।
‘এই, তুমি কই?’
‘বাসে, ফার্মগেটে। বাসায় যাচ্ছি। ’
‘আর বাসায় যেতে হবে না। মার্কেটে আসো। <br/><br/> আমরাও আছি। ’
ঘড়ির দিকে তাকালেন। রাত ১০টা। এখন এখান থেকে আবার মার্কেটে।
অগত্যা রিকশা! রিকশা তখন পান্থপথের আগের গলিতে। <br/><br/> এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। আশপাশে রিকশা-গাড়ি দ্রুত ছুটে যাচ্ছে। সবার অনেক তাড়া। একটা মোটরসাইকেল এসে থামল।
‘স্লামালাইকুম, আংকেল। <br/><br/>’
‘ওয়ালাইকুম। কিন্তু আমি তো...’
‘ওই ব্যাটা, রিকশা টানস ক্যান! দেখস না আংকেলের সাথে কথা বলছি। আংকেল, বেশি কিচ্ছু বলার নেই, ঈদের বোনাসটা...। ’
হাত বাড়িয়ে দিল ছেলেগুলো। বলেছিলাম না, করিম সাহেব বুদ্ধিমান। <br/><br/> বেতন আর বোনাস পেয়ে সোজা গিয়েছিলেন অফিসের বাথরুমে। পুরো টাকা মোট চার ভাগ করে দুই পায়ের মোজায় দুই ভাগ, প্যান্টের ভেতরের গোপন পকেটে এক ভাগ, আর মানিব্যাগে এক ভাগ।
মানিব্যাগটা বের করলেন তিনি। ভদ্রঘরের সন্তান। মানিব্যাগে হাতও দেয়নি, তবে পুরো টাকাটা করিম সাহেব নিজেই দিয়ে দিয়েছেন। <br/><br/>
‘আংকেল, শপিংয়ে যাচ্ছেন বুঝি! যান।
এই ব্যাটা, তোর রিকশাভাড়া। খবরদার, আংকেলের কাছে আর চাইবি না। আংকেল, স্লামালাইকুম। ’
আশপাশের যাত্রীরা দেখল, এক আংকেল তাঁর আদরের ভাইস্তাদের ঈদ বোনাস দিলেন। <br/><br/>
পথে রিকশাওয়ালা জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, আফনের ভাতিজা লাগে?’
করিম সাহেব কিছু বললেন না। নিজের বুদ্ধির কারণে এতগুলো টাকা এখনো নিজের কাছে রয়ে গেছে ভেবেই তিনি খুশি।
‘হ্যাঁ, আমার ভাতিজাই তো!’
এরপর শপিং। একে একে নিজের সব গোপন জায়গার টাকা বেরিয়ে গেল করিম সাহেবের।
একটা সিএনজি নিয়ে বাসায় গেলেন। <br/><br/> এই ব্যাটা আবার মিটারে রাজি হয়েছে। ভাড়া দেওয়ার পর দেখলেন, আরও ৫০ টাকা তখনো পকেটে। সিএনজিওয়ালার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘সবাই ঈদ বোনাস নিল, তুই নিবি না!’ বলেই নোটটা বাড়িয়ে দিলেন।
বাসায় গিয়ে করিম সাহেব ভাবতে লাগলেন। ভেবে ভেবে এক ঐতিহাসিক সূত্র বের করলেন। <br/><br/> ঈদ বোনাসের টাকা কখনো একা ভোগ করা যায় না, সবাই মিলেমিশে ভোগ করতে হয়। তিনি খুব বেশি দুশ্চিন্তা করলেন না। নিজের বুদ্ধির ওপর এখনো তাঁর পুরো আস্থা আছে। । '
$j = (int) 110
$arr_el = ''
include - APP/View/Posts/view.ctp, line 142
View::_evaluate() - CORE/Cake/View/View.php, line 971
View::_render() - CORE/Cake/View/View.php, line 933
View::render() - CORE/Cake/View/View.php, line 473
Controller::render() - CORE/Cake/Controller/Controller.php, line 968
Dispatcher::_invoke() - CORE/Cake/Routing/Dispatcher.php, line 200
Dispatcher::dispatch() - CORE/Cake/Routing/Dispatcher.php, line 167
[main] - APP/webroot/index.php, line 108
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।