আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাসপোর্ট করার বিরম্বনা!!!!!!!!!!

নতুন এমআরপি পাসপোর্ট করার জন্য সকল তথ্যাদিসহ ২কপি ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে যাই। ব্যাংকে গিয়ে ২টি লাইন দেখি। একটি জরুরীভিত্তিতে যাদের পাসপোর্ট প্রয়োজন আর অন্যটি সাধারণ নিয়মের মানে এক মাসের। আমার পাসপোর্টটি জরুরী প্রয়োজন। তাই দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ৬০০০/- টাকা জমা দিয়ে জমাকৃত টাকার রশিদটি পাসপোর্টের ফরমে আঠা দিয়ে লাগানোর জন্য (পাশেই আঠা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা) ছোট ছেলেকে ৫ টাকা দিয়ে তারপর ফরমে রশিদটি লাগাই।

পাসপোর্ট ফরমটি যথাযথপূরণ করা হয়েছে কিনা তা যাচাইবাছাই শেষে কম্পিউটারে সকল তথ্য এন্টি হওয়ার পর ছবি তোলার জন্য ঘন্টা দুয়েক লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ছবি তুলে মনের আনন্দে বাড়ি ফিরলাম। আমার বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা দুটি আলাদা হওয়ায় ভেরিফিকেশন দুই জায়গা থেকেই হবে সেটা আমি আগেই জানতাম। জরুরী পাসপোর্ট করতে দিলাম অথচ এখনও কোন আমার মোবাইলে এসএমএস পেলাম না। খুবই চিন্তায় পড়লাম। যাহোক ৭দিন অতিবাহিত হওয়ার পর এক সাব-ইন্সপেক্টর আমাকে ফোন দিয়ে এসবি অফিসে আসার জন্য বলেন।

আমি জানতে চাইলে বলে আপনার পাসপোর্ট সংক্রান্ত। এসবি অফিসে জীবনের প্রথমবার গিয়ে তাকে ফোন দিয়ে খুঁজে পেতে কোন কষ্ট হলো না। কিন্তু রোজার মধ্যে মালিবাগ-মগবাজারঁ পেরিয়ে এসবি অফিসে যাওয়া খুবই কষ্টকর। এসবি অফিসের রিসিপশন থেকে গেট পাস নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলাম। আমার অরিজিনাল ভোটার আইডি কার্ড এবং অন্যান্য পেপার যথাযথভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সব ঠিক আছে বলে জানালেন সাব-ইন্সপেক্টর সাহেব।

সামনে ঈদ কিছু একটা ইঙ্গিত করা মাত্রই তাকে আমি বললাম ভাই আমার কাজটা একটু দ্রুত করার ব্যবস্থা করেন। আমি আপনাকে খুশি করব। তাকে নিয়ে এসবি অফিস থেকে বেরিয়ে মালিবাগ বাসষ্ট্যান্ট এসে কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে আবার বললাম ভাই আমার কাজ একটু তাড়াতাড়ি করবেন। সে বলল আমার কাজ আমি শেষ করে ফেলেছি এখন আপনার স্থায়ী ঠিকানা থেকে বার্তা এলে আমি তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিব। যেদিন পাবো সেদিনই ছেড়ে দিব।

তিনি আবারও বললেন আমি অলরেডি বার্তা পাঠিয়েছি। আপনি আপনার এলাকার থানায় যোগাযোগ করুন। চাকুরি করি বিধায় ছুটি সহজেই পাওয়া যায় না তাই বাধ্য হয়ে আমার এক আত্মীয়কে দিয়ে খোঁজ নিতে থানায় পাঠালে তারা বলে আপনার বার্তা আমরা এখনও পাই নাই। আত্মীয়টি আমাকে জানালে আমি আবার সেই এসবি অফিসের সাব-ইন্সপেক্টরকে ফোন দিলে সে আবার এসবি অফিসে আসার জন্য বলে। অফিস ফাকি দিয়ে যথারীতি আবার এসবি অফিসে যাই।

সাব-ইন্সপেক্টর থেকে বার্তার একটি ফটোকপি নিয়ে তাকে ধন্যবাদ দিয়ে আবার স্থায়ী ঠিকানায় পাঠাই। সেখানে আমার আত্মীয় ফটোকপি করা পেপারটি নিয়ে সেখানকার কর্মকর্তাকে দেন। ভেরিফিকেশন করে রিপোর্ট দেয়ার জন্য সেখান থেকে ১০০০/- টাকা দাবি করেন এবং এটাই তাদের রেট বলে জানায়। অনেক অনুনয় বিনয় করেও আমার আত্মীয়টি কমাতে না পেরে ১০০০/- টাকা দিয়ে কাজটি দ্রুত করার জন্য অনুরোধ করেন। এরপর ফরম জমা দেয়ার ২০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আজ অবধি ইমিগ্রেশেনের ওয়েব সাইটে আমার পাসপোর্ট অফিস স্লিপ নম্বর দিয়ে স্টেটাসে দেখতে পাই Permanent Address Verification ।

স্থায়ী ঠিকানা ভেরিফিকেশন করতে কতদিন লাগে আমার জানা নেই। তারা কোন মাইক্রোসকপি দিয়ে খোঁজ করছেন তাও আমার জানা নেই। আমি অপেক্ষায় আছি আমার নতুন মেশিন রিডেবল পাসপোর্টটি পাওয়ার জন্য। অপেক্ষা করতে করতে আবার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে খোঁজ করি। তাদের জানাই যে আমার তো পাসপোর্ট দেয়ার ডেলিভারী ডেট চলে গেছে।

আমি তো এখনও আমার মোবাইলে কোন এসএমএস পাইনি। তারা আমার পাসপোর্ট স্লিপ নম্বরটি দিয়ে খোঁজ নিয়ে জানান যে আমার পুলিশ ভেরিফিকেশনের কাগজ এখনও তারা হাতে পাননি। রাগে দু:খে ক্ষোভে পাসপোর্ট অফিস থেকে চলে এলাম। জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট করতে দিয়ে ২২ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও পাসপোর্ট পেলাম না। তাহলে জরুরী পাসপোর্ট কেন??????? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.