আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই লেখাটি পড়িতে ৩০১ টাকা নগদ ব্যাঙ্ক ড্রাফট লাগিবে।

বুদ্ধিজীবী হতে ডিগ্রী লাগেনা। এই লেখাটি পড়িতে ৩০১ টাকা নগদ ব্যাঙ্ক ড্রাফট লাগিবে। সাবধান। আগে নিজের পকেট চেক করে দেখেন। পড়া শেষে বলবেন টাকা নেই তা হবে না।

মূল গল্প শুরু করার আগে বাচ্চারা জোরে এওক্টা তালিয়া বাজাও তো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ পরীক্ষা দিয়ে বুক ভরে একটা নিঃশ্বাস নিলে। নিঃশ্বাস টি ছেড়ে দিয়ে বললে, আর পড়া নয়, এখন শুধুই ঘোরা। কয়েকদিন শুধু ঘুরব আর ঘুরব। পাহাড়ে যাব, চাকমাদের ব্যাং ভাজা খাওয়া দেখব, মগ মেয়ের ঝরণা থেকে কলস ভরে পানি নেওয়া দেখব।

সাগরে যাব, ডলফিনের সাথে সাঁতার কাটব, সুটকি ভরতা আর রূপচাঁদা ফ্রাই দিয়ে ভাত খেয়ে রৌদ্রে গা ড্রাই করে নেব। তুমি যদি অতি অবাস্তববাদী হয়ে থাকো তবেই শুধুমাত্র উপরের ঐ ডায়ালগ খানা আপনার দ্বারা দেওয়া সম্ভব। কারন, ছাত্র থাকা অবস্থাতেই আমাদেরকে পড়াশুনার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে হয়। চাক্রীর পড়াশুনা। যে পড়া আমরা নিজের গরজেই করি।

বাবা-মা পড়ার জন্য আর বকাবকি করে না, তবু নিজ দায়িত্বে বইয়ে মুখ গুঁজে থাকি। ধৈয্য আমাদের অসীম। তবু শুধু পড়াশুনা করে যদি চাকরী হত তাহলে একটা কথা ছিল। মাম-খালুদেরও দিন ফুরিয়েছে, সময় এখন মন্ত্রী এমপিদের। বেকার হওয়ার অনেক ঝামেলা।

এলাকায় বের হতে লজ্জা লাগে। মুরুব্বি বা পরিচিত কারো সাথে দেখা হলে অবশ্যই জ়িজ্ঞেস করবে whats up- তাও বাংলায় জিজ্ঞেস করবে। অথচ এই সহজ প্রশ্নটার উত্তর যে প্রায়ই সময় খুঁজে পাইনা। যা তা কিছু একটা বলে পাশ কাটাতে হয়। এ যেন রাবনের দাদার নাম জিজ্ঞেস করা।

জানি বাট খুঁজে পাচ্ছিনা। রামায়ন থেকে করা প্রশ্নের উত্তর দেই মহাভারত থেকে। এই সময়টাতে পত্রিকাওয়ালার সাথে আমার দারুন খাতির হয়ে যায়। সাপ্তাহিক চাকুরীর খবরের আমি রেগুলার কাস্তমার। চান্সে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে দ্রুত সবগুলো পত্রকার প্রতিটা পাতার প্রতিটা কোনায় দ্রুত চোখ বুলিয়ে নেয়ার সুযোগ পাওয়া যায়।

খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রতিটা বিজ্ঞাপণের প্রতিটা লাইন পড়ি। ধৈয্য আমার আকাশ সমান। একটুও বিরক্তি নাই। অথচ কলেজের সেই দিনগুলোতে প্রথম আলোর পাতায় বিজ্ঞাপ্ন দেখলে প্রচন্ড বিরক্ত হতাম। সমায় মানুষকে বদলে দেয় , নাকি মানুষই সময়কে বদলে নেয়।

সরকারী চাকরীর বিজ্ঞাপন দেখলে চোখটা চকচক করে ওঠে। নিজের সাবজেক্ট মিলে গেলে তো মনটাও চকচক করে ওঠে। ভীরু মনে বিজ্ঞাপণের নিচের অংশ খুঁজি। চাহিদা কি কি সেটাই খুঁজি। কত টাকার চালান বা ব্যাংক ড্রাফট লাগবে।

সরকারী বিজ্ঞাপণে এই এক ফ্যাঁকড়া। প্রতিটা দরখাস্তের সাথে সেটার চাহিদা অনুযায়ী তিন চারশ টাকার চালান দিতে হয়। হঠাত করে যেন বড় হয়ে গেছি। বাবার কাছে টাকা চাইতে লজ্জা লাগে। অথচ আগে টাকার লাগার আগেই বাবার কাছে আবদার পৌঁছে দিতাম।

দিন যেন বদলে গেল। আমাদের সরকারগুলো কেন এত দরিদ্র হয় বুঝিনা। মন্ত্রী এম্পিদের চায়ের চামচ কেনা থেকে শুরু করে টয়লেটের টিস্যু পেপার কেনার তহবিল আসে সরকারী কোষাগার থেকে, অথচ সরকারী নিয়োগ বা অন্যান্য পরীক্ষাগুলো আয়োজনের আগেই আমাদের সরকার গুলো সুপার পূওর হয়ে পড়ে। তারা বেকারদের কাছেই হাত পাতে। কিন্তু এটা কতটা যৌক্তিক তা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে কুলায় না।

বিসিএস এর পরীক্ষার কথা ধরাযাক। প্রতিবছর লাখ দেড়েক বেকারের কাছ থেকে বিসিএস পরীক্ষাবাবদ মাথাপ্রতি (৭০০+২০০)=৯০০ টাকা জমা হয়। অথচ দুই থেকে তিন হাজার জনের বেকারত্ব হারিয়ে যায়। তাহলে সরকারী থলেতে এই পরীক্ষাবাবদ যে সাড়ে তের লক্ষ টাকা জমা হল সেটার যৌক্তিকতা কি? আমাদের মহান রাষ্ট্রপতি কি এই অধম বেকারদের দিকে একটিবার নজর দিতে পারেন না। চালান নামক এই বোঝাটা কি সরকার বেকারদের কাঁধ থেকে নামিয়ে দিতে পারেন না।

এক পাতা ছাপানো ফরমের মূল্য কেন এক বা দুইশত টাকা হবে! এটা কি দশ টাকায় নামিয়ে আনা যায় না? এটা আমাদের উপর বোঝার উপর শাকের আঁটি নাকি শাকের উপর বোঝার বাটি! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।