আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

’৭২-এর সংবিধান : আওয়ামী লীগের শক্তি এবং দুর্বলতার সন্ধান

বাংলা আমার দেশ ‘বাহাত্তরের সংবিধান - অনস্বীকার্যভাবেই বাংলাদেশের, বিশেষত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-শক্তির এবং সবিশেষ কারণেই আওয়ামী লীগ রাজনীতির ‘ম্যাগনা-কার্টা’ হয়ে উঠেছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিটাও এখন ১৭শ শতকের ইংল্যান্ডের ‘রয়েল-ব্যারন-চার্চ’ দ্বন্দ্বের মতোই, সব পক্ষই নিজের দিকে টানে। ‘বাহাত্তরের সংবিধান’ পুরোপুরি ফিরে পেতে চান, এমন রাজনীতিবিদ এবং সুধীজনরা বিপ...ুল-সংখ্যায় রয়েছেন সমাজে-রাজনীতিতে, আবার একেবারেই চান না যারা, তাঁরাও আছেন দৃশ্যতই প্রকটভাবে। রয়েছেন তাঁরাও, যারা ‘সময়ের প্রয়োজন’ বলে দু’কূলই বাঁচাতে চান। ‘দুই নৌকায় পা’Ñ সাময়িক কৌশল বা ‘আপস-ফর্মুলা’ হিসাবে মন্দ নয়, কিন্তু দীর্ঘযাত্রায় অকার্যকর এবং বিপজ্জনকও বটে।

সরাসরি কথাটি হচ্ছে, সংবিধানের ‘পঞ্চদশ সংশোধনী’ নামে যা করা হয়েছে, শত্রু-মিত্র নির্বিশেষেই ভাবছেন, ‘দুই নৌকায় পা’ দিয়ে চলার কৌশল। যারা বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরতে চান, তাঁরা খুশি না হলেও, একেবারে হতাশ হননি। অপরদিকে যারা বাহাত্তরের সংবিধানের মৌলিক আদর্শকেই বাতিল-বর্জন করতে চান, আপাতত কিছুটা স্বস্তি পেলেও নিতান্তই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ভবিষ্যৎ-ভাবনায়। উভয়পক্ষই জানেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বাংলাদেশ এবং বাষট্টি বছরের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির ঐতিহ্যের আওয়ামী লীগ বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরতেই হবে, আজ কিংবা আগামীকাল। এমন পরিস্থিতিতেই আনুষঙ্গিক বাস্তবতায়, সরকারের তথা প্রধান দল আওয়ামী লীগের শক্তি এবং দুর্বলতাগুলোও দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশের একাত্তরের জন্ম-যুদ্ধকে বলা হয় মুক্তিযুদ্ধ। স্মরণ করুন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের অবিস্মরণীয় ভাষণের শেষ দুটি কথা, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তিনি স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছিলেন, মুক্তি এবং স্বাধীনতা-সমার্থবোধক নয়, যথার্থই ভিন্ন তাৎপর্যবহ। সরাসরি শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধজয় করলেই স্বাধীনতা পাওয়া যেতে পারে, স্থুলার্থে জয়টা শুধুই শাসক-বদলের। অপরদিকে মুক্তি অর্জন করতে হলে শুধু বাইরের শত্রুর সাথেই নয়, আদর্শিক অবস্থান এবং দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের অপরিহার্য যুদ্ধটা ভেতরেও করতেই হয়, কারণ একইসঙ্গে ব্যক্তিগত এবং সমাজ-মনস্তত্ত্বটাও পাল্টাতে হয়।

রাজনৈতিক এবং সামাজিক আদর্শগত মূল্যবোধের ইতিবাচক পরিবর্তন ছাড়া মুক্তি মেলে না। একাত্তরের যুদ্ধ-জয়ে স্বাধীনতা পেলেও মুক্তি এখনো যথার্থই দূরের পথ। সাতচল্লিশে জিন্নাহর সা¤প্রদায়িক দ্বিজাতি-তত্ত্বের ভিত্তিতে ‘মুসলিম রাষ্ট্র’ হিসেবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কি মুসলিম রাষ্ট্র পরিচয়েই শুধু শাসক-বদল করতে চেয়েছিলেন একাত্তরে? ইতিহাস সাক্ষী, ধর্ম-সা¤প্রদায়িক রাষ্ট্র-চিন্তা এবং ঔপনিবেশিক শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে আধুনিক জাতি-রাষ্ট্র হিসেবেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মুক্তি চেয়েছিলেন। সব মিলিয়ে এটাই ছিল বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির যুদ্ধ।

একাত্তরে প্রত্যক্ষ শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর, বঙ্গবন্ধু বাহাত্তরের রচিত সংবিধানে প্রত্যাশিত মুক্তির লক্ষ্যটাই চিহ্নিত করেছিলেন চারটি মৌলিক আদর্শের ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সমাজতন্ত্র। ক্ষমতা জবরদখলকারী সেনাশাসকরা আপন-স্বার্থে সেই আদর্শ-ভিত্তিটারই বিনাশ ঘটিয়েছিলেন। আদালতে জিয়া-এরশাদের ৫ম এবং ৮ম সংশোধনী অবৈধ-বাতিল ঘোষিত হওয়ায় এবং আওয়মী লীগ সুবিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকারে থাকায়, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ-বিশ্বাসীদের একান্ত প্রত্যাশা ছিল, বাহাত্তরের সংবিধানের আদর্শ-ভিত্তি সরাসরি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। কিন্তু হয়নি, বরং পঞ্চদশ সংশোধনীতে সর্বতোভাবেই দুকূল রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে, যাকে অনেকেই বলছেন, আওয়ামী লীগ, নেতৃত্বের ‘দুর্বলতা’। একটা কথা সকলেই, বিশেষত যারা বলছেন, আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে আওয়ামী লীগ-সরকার নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করছে, তারা এড়িয়ে যাচ্ছেন।

পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের পরেই ৪র্থ সংশোধনী অর্থাৎ ‘বাকশাল’-এ ফেরার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু আ.লীগ সে পথেই যায়নি। কারণ গণতন্ত্রে আস্থাই আ.লীগের শক্তির উৎস। পঞ্চদশ সংশোধনীর পরও আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য’। প্রাসঙ্গিক একটি জনমত জরিপ (ভো.কা, ৫-০৭-১১) জানিয়েছে, বিপুল-সংখ্যক মানুষ আ.লীগ সম্পাদকের কথায় আস্থাশীল। উত্তরদাতাদের ৮২% ‘হ্যাঁ’ এবং মাত্র ১% ‘না’ বলেছেন।

এে ক্ষত্রে স্পষ্টতই লক্ষণীয় যে, ‘পঞ্চদশ সংশোধনী’র পরেও আ.লীগ মূল রাজনৈতিক আদর্শে-অবস্থানে অবিচল রয়েছে। দ্বিতীয়ত, জনগণের বৃহদাংশই বাহাত্তরের সংবিধানের পুনঃপ্রতিষ্ঠা চান এবং এ বিষয়ে আ.লীগের ওপর আস্থাও রাখেন। বর্তমান সরকারের নানামুখী তীব্র সমালোচনা করেও, প্রবীণ সাংবাদিক এ বি এম মূসা বলছেন, আ.লীগ ‘আবার ক্ষমতায় না এলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হারিয়ে যাবে। পাকিস্তানি...ধর্মীয় উন্মাদনার প্রত্যাবর্তন ঘটবে...’ (প্র.আ,৭-০৭-১১)। অনস্বীকার্য যে, ৬২ বছরের আয়ুষ্কালে আমজনতার এবং সুধীজনের আস্থা-প্রত্যাশাই দলটির মূল শক্তি-সম্পদ।

পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু-হত্যা এবং জেলখানায় চার-নেতা হত্যার মাধ্যমে আ.লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা লক্ষণীয়ভাবেই সফল হয়েছিল। আ.লীগের নেতৃত্ব-শূন্যতার সুযোগেই মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী চরম প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি পঁচাত্তরে রাষ্ট্রক্ষমতা জবরদখল করে প্রত্যক্ষভাবেই টিকে ছিল ঊননব্বই অবধি। এখনো তাদের অনুসারী-উপকারভোগীরা প্রকটভাবেই রাজনীতির মাঠে বিদ্যমান। ধারাবাহিক এমন প্রবল বিরূপ পরিস্থিতিতেই বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা তিন-দশক যাবৎ দলসহ দেশের গণতান্ত্রিক-শক্তির নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। রাজনৈতিক আদর্শ-নিষ্ঠা, রাষ্ট্র পরিচালনার গণতান্ত্রিক দূরদৃষ্টি এবং সততা-দক্ষতায় তিনি দেশ-দুনিয়ার বিপুল প্রশংসাও পাচ্ছেন।

সভানেত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই দলটির সম্পদ এবং শক্তি হিসেবেও স্বীকৃত। তবু অনস্বীকার্য, এখন সাধারণ মানুষই বলাবলি করে, সরকার যথেষ্ট ভালো চললেও দলটি ক্রমশই পিছিয়ে যাচ্ছে, আগোছালো-দুর্বল হয়ে পড়ছে। ‘আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী দল, কারণ মাত্র একটি- বঙ্গবন্ধুর আদর্শ’ (বেলাল বেগ, জনকণ্ঠ, ৫-০৭-১১), বক্তব্যটি আ.লীগ ঘরানার সকলের নিশ্চয়ই ভালো লাগে। কিন্তু আ.লীগ নামক দলটি “বিশাল...নিজভারে অসহায় পড়ে আছে, কেবল নির্বাচন এলেই একটু নড়েচড়ে উঠে”Ñ এমন কথা ভালো না লাগলেও, ভাবনার দরকার অনস্বীকার্য বটে। বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধার সাথেই অতুলনীয় ‘ক্যারিশমেটিক’ একক-নেতা বলা হয়।

কিন্তু তাঁর সময়েও তাজউদ্দিন-নজরুল-কামরুজ্জামান-ম​নসুর আলী প্রমুখ অনেক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব আ.লীগেই ছিলেন। প্রতিটি জেলাতেও ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত-সম্পৃক্ত অসংখ্য ত্যাগী নেতা-কর্মীগণ, ছিল আস্থাযোগ্য এবং শক্তিশালী ছাত্র সংগঠনেও। তাই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের অসহযোগ এবং মুক্তিযুদ্ধে প্রায় সমগ্র জনগণকেই অবিচল একতাবদ্ধ করা সম্ভব হয়েছিল। অথচ এখন আম-জনতারই মন্তব্য, আজকের আ.লীগ তেমন সুসংগঠিত অবস্থানে নেই। কেন এমন হয়েছে এবং হচ্ছে, সেটা আ.লীগ নেতৃবর্গ, বিশেষত সভানেত্রীরই বস্তুনিষ্ঠ বিবেচনার বিষয়।

দলীয় পরিস্থিতির গুণগত পরিবর্তন এখন সময়েরই প্রযোজন। সদ্য-সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল থেকে একই সাথে আ.লীগের আদর্শিক শক্তি এবং সাংগঠনিক দুর্বলতার পরিচয় মিলবে। ইউনিয়ন-নির্বাচন ‘নির্দলীয়’ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে, দলীয় মনোনয়নের বা সাংগঠনিক প্রচারণারও সুযোগ ছিল না। কিন্তু পত্রপত্রিকার খবরে, প্রার্থীদের দল-পরিচয় উল্লেখ থাকায় লক্ষণীয়, দেশজুড়ে নির্বাচিত প্রায় সাড়ে-সাত হাজার চেয়ারম্যনের মধ্যে আ.লীগ এবং বিএনপি-জামাতের সংখ্যা প্রায় সমানে-সমান। এতে স্পষ্টতই দুটি বিষয় প্রতিপন্ন হয়েছে, প্রথমত, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টা শুধুই মুখের কথা নয়, যথার্থই সরকারের ‘কমিটমেন্ট’ এবং আ.লীগের আদর্শিক অবস্থানগত শক্তিও বটে।

দ্বিতীয়ত, অনেক স্থানেই আ.লীগের প্রার্থী ছিলেন একাধিক, কোথাওবা অনেক। আর তাতেই স্থানীয় নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থীদের পরাজয় ঘটেছে। এটা অবশ্যই সাংগঠনিক দুর্বলতার লক্ষণ। বর্তমান পরিস্থিতিতেও একমাত্র আ.লীগেই এখনো জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী রয়েছেন, যারা দক্ষতায় এবং আদর্শ-নিষ্ঠায় দলীয় এবং জাতীয় রাজনীতিতে গঠনমূলক ইতিবাচক অবদান রাখতে এবং দেশ-জনগণকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে ফেরাতে সক্ষম। এঁরা দলের এবং দেশেরও রাজনৈতিক শক্তি-সম্পদ হিসেবেই বিবেচ্য।

কিন্তু অনস্বীকার্য যে, সঠিকভাবে বিনিয়োজিত না হলে শক্তি-সম্পদের অপচয়-বিনাশ ঘটাই স্বাভাবিক। আ.লীগ-অভ্যন্তরের এমন পরিস্থিতি একান্তই অবাঞ্ছিত শুধু দলের নয়, দেশের জন্যও। পরীক্ষিত নেতৃবৃন্দের দৃশ্যমান নিষ্ক্রিয়তা, অনেক অবমূল্যায়নের কথা বলেন এবং নানা পর্যায়ে শৃঙ্খলার দৃশ্যমান ঘাটতি, বর্তমান পরিস্থিতিতে আ.লীগের ‘অন্যতম’ দুর্বলতা নয়, বরং বাস্তব কারণেই, ‘প্রধানতম’ দুর্বলতা হিসেবে বিবেচ্য। কিছুকাল যাবৎই শৃঙ্খলা এবং ইতিবাচক সক্রিয়তার প্রকট অভাব দেখা দিয়েছিল ‘ছাত্র লীগ’ নামক ঐতিহ্যবাহী এবং বিপুল-প্রসারিত ছাত্র সংগঠনটিতে। সংগঠনটির সা¤প্রতিক জাতীয় সম্মেলন এবং নেতৃত্ব নির্বাচনের কর্মকা- আবার আশা জাগিয়েছে।

ছাত্র লীগই হতে পারে, জাতীয় রাজনীতির দায়িত্বশীল পথ-প্রদর্শক এবং পাহারাদার। পরিবর্তন-সংশোধনের দায়িত্ব নিতে হবে আ.লীগ সভানেত্রীকেই। এ কথা ঠিক, সময়টা ফেরানো যায় না, তবু এ কথাও ঠিক যে, রাজনৈতিক বৃত্তের বাইরের লক্ষকোটি আমজনতা, বঙ্গবন্ধুর আ.লীগকে, ষাটের দশকের উজ্জীবীত আ.লীগকেই ফিরে পেতে চায় রাষ্ট্র-রাজনীতির মঞ্চে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং বঙ্গবন্ধুর আজীবনের রাজনৈতিক আদর্শ সর্বার্থেই অভিন্ন ছিল, যার প্রতিফলন-সমন্বয় ঘটেছিল বাহাত্তরের সংবিধানে। সুতরাং সরাসরি বলা চলে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করলে এবং দলীয় ‘কমিটমেন্ট’ থেকে বিচ্যুত না হলে, আ.লীগকে ফিরতেই হবে বাহাত্তরের সংবিধানে।

একান্তই সরাসরি বলা দরকার, একমাত্র ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শই বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান নামক দু’টি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য নির্দেশ করে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শের, মুক্তিযুদ্ধের এবং বাহাত্তরের সংবিধানের ব্যতিক্রমী একক বৈশিষ্ট্য-ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে আস্থাই আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের অপরাপর রাজনৈতিক দল থেকে পৃথক এবং বিশিষ্ট হিসেবে চিহ্নিত করে। সকলেই জানেন, পাকিস্তানে সরকারের এবং মুসলিম লীগের ধর্ম-সা¤প্রদায়িক রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেই জন্ম হয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষতায় আস্থাশীল আ.লীগের। বাহাত্তরের সংবিধানের প্রতি নাখোশ-বিরূপতা দেখান যারা, সেটাও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি বিরূপতার কারণেই।

বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং বাহাত্তরের সংবিধানের আদর্শে প্রত্যাবর্তন যতোদিন না ঘটবে, ততোদিন আ.লীগের দুর্বলতাই চিহ্নিত করবে। অপরদিকে আ.লীগের শক্তিও এখানেই যে, জনগণ বিপুল আস্থা রাখে, আস্থা সুধী-সমাজেরও, সমাজের সর্বস্তরেই একান্ত প্রত্যাশিত এবং অপরিহার্য এ লক্ষ্যের অর্জন আ.লীগের পক্ষেই সম্ভব। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.