আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়

প্রতিদিনের খাবার যেন স্বাস্থ্যসম্মত হয় ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখুন। ইফতারে বিকল্প চিনি দিয়ে ইসবগুলের ভুষি, তোকমা, লেবু কাঁচা আম বা তেঁতুল শরবত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। ডাব ছাড়া অন্যান্য মিষ্টি ফলের রস না খাওয়াই ভালো। টক ও মিষ্টি উভয় ধরনের ফলের সালাদ খাওয়া যেতে পারে, এতে খনিজলবণ ও ভিটামিনের অভাব পূরণ হবে। কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদাকুচি, টমেটো কুচি, পদিনা পাতা ও লবণের মিশ্রণ বেশ সুস্বাদু খাবার।

কাঁচা ছোলা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। সন্ধ্যা রাতে (ইফতার পরবর্তী) খাবার একেবারে বাদ দেয়া উচিত নয়। কম করে হলেও খেতে হবে। অন্য সময়ের রাতের খাবারের সমপরিমাণ হবে রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার। রোগী ভাত খেতে পারবে তবে চিকিৎসক কর্তৃক বরাদ্দ খাবারের পরিমাণের দিকে সর্বদা সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

হালকা মসলায় রান্না যে কোনো ছোট-বড় মাছ এবং সবজি নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে। সেহরিতে (ভোররাতের খাবারে) রুটি অথবা ভাত রুচি অনুযায়ী গ্রহণ করুন। সেহরির খাবারের পরিমাণ হওয়া উচিত অন্যদিনের দুপুরের খাবারের সমপরিমাণ। সেহরিতে মাছ ও সবজি থাকতে পারে। দুধ অথবা ডাল যে কোনো একটা থাকলে ভালো হয়।

সর্তকতা : ডায়াবেটিসের সঙ্গে অন্য কোনো জটিলতা, যেমন- কিডনির রোগ, উচ্চমাত্রার ইউরিক ইত্যাদি থাকে তাহলে ডালের তৈরি খাবার থেকে বিরত থাকুন। আলসার বা গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা থাকলে ডুবো তেলে ভাজা ও ঝাল যুক্ত খাবার পরিহার করুন। শরীরের ওজন বেশি থাকলে যতটা সম্ভব কম খাবার গ্রহণ করুন এবং খাবারে তেলের পরিমাণ কমিয়ে দিন। রোজা রেখে অত্যধিক হাঁটা বা ভারী ব্যায়াম থেকে বিরত থাকুন। কারণ এতে আপনার শরীরে রক্তের শর্করার মাত্রা নিচে নেমে গিয়ে বিপদ হতে পারে।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের ওষুধের ব্যবহার : আপনার চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী ওষুধের ডোজ ঠিক করে নিন। যারা দিনে ১ বার ডায়াবেটিসের ওষুধ (সালফোনাইলইউরিয়া) খান, তারা ইফতারের শুরুতে পানি খেয়ে ওই ওষুধ একটু কম মাত্রায় খেয়ে নিন। দিনে ২ বার (সালফোনাইলইউরিয়া) ডোজের ক্ষেত্রে_ সকালের মাত্রাটি ইফতারের শুরুতে এবং রাতের মাত্রাটি সেহরিতে তথা ভোররাতের খাবারের আধাঘণ্টা আগে অর্ধেক-ডোজ খেয়ে নেবেন। দিনে ৩ বার (মেটফরমিন ৫০০/৮৫০ মি.গ্রা.) ডোজের ক্ষেত্রে_ ইফতারের পর ১০০০ মি.গ্রা. এবং সেহরির পর ভরা পেটে ৫০০/৮০০ মি.গ্রা. খেতে পারেন। যেসব রোগী থায়াজলিডিনডিয়ন গ্রহণ করেন তারা ওষুধটি একই মাত্রায় রাতের যে কোনো সময় খেতে পারেন।

যারা রিপাগি্লনাইড অথবা নেটিগি্লনাইড গ্রহণ করেন তারা ইফতারের শুরুতে ও সেহরির আগে খেতে পারেন। রমজানের প্রথম এবং শেষদিনে ওষুধকে সমন্বয় করে নিতে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ রমজানে খাবার এবং জীবন যাত্রায় বিশেষ পরিবর্তন আসে তাই এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে আপনাকে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা উচিত। রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের ইনসুলিনের ব্যবহার : আপনার চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী রমজান মাসের জন্য ইনসুলিনের মাত্রা ও ধরন ঠিক করে নিন। দিনে ৩ বার ইনসুলিন গ্রহণকারীরা_ ইফতারে দুই ভাগ এবং সেহরিতে রাতের অর্ধেক ইনসুলিন নিবেন।

দিনে ২ বার ইনসুলিন গ্রহণকারীরা_ ইফতারে সকালের ডোজ এবং সেহরিতে রাতের অর্ধেক ডোজ নেবেন। দিনে ১ বার ইনসুলিন গ্রহণকারীরা_ ইফতারের সময় নির্ধারিত ডোজ নিয়ে নেবেন। আধুনিক ইনসুলিন গ্রহণের মাধ্যমে রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা অধিক সুবিধা পেতে পারেন। তথ্যসূত্র : রমজানে ডায়াবেটিক খাবার, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি; তথ্য সংগ্রহে_ এস.এম. হাসান। সর্বোপরি রমজানে শরীরের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া উচিত।

কারণ শরীর সুস্থ না থাকলে রোজা রাখা আপনার জন্য নিরাপদ না ও হতে পারে। আর তাই শরীর সুস্থ রাখতে দৈনন্দিন খাবারের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে আপনাকেই। [এই লেখাটি দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে- ০৯/০৮/১১ রমযান প্রতিদিন পাতায়] ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।