আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এটা শুধুই একটা গল্প। কারো জীবনের সাথে মিলে গেলে অনভিপ্রেত কাকতাল মাত্র!!! ( পর্ব -১)

কি লিখি!!! অর্ককে আমি প্রথম দেখি ইউ সি সি তে। ইউ সি সির ভর্তি কোচিং এ ক্লাস করতে না গেলে অর্কের সাথে কখনও দেখা হতো কিনা কে জানে। অথচ আমার ভার্সিটি ভর্তি কোচিং করার জন্য ইউসিসিতে ভর্তি হওয়ার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা ছিল না। কারণ আমার দুই ফ্রেন্ড শিলা এবং শায়লা দুই জনই ইউনিএইডে ভর্তি হয়েছিল। তাই আমারও খুব ইচ্ছে ছিল ইউনিএইডে ভর্তি হওয়ার।

কিন্তু আব্বু আমাকে ধরে- বেঁধে ইউ সি সিতে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিল। যাইহোক, প্রথম কয়েকদিন খুব মন খারাপ করে ক্লাস করতে যেতাম। কিন্তু আস্তে আস্তে কয়েকটা মেয়ের সাথে আলাপ -পরিচয় জমিয়ে ফেলি। তারপরও কেন জানি ভালো লাগতো না। সে যাক গে।

অর্কের কথায় ফিরে আসি। আমরা একই ব্যাচে ক্লাস করতাম। অথচ কখনও আমাদের কথা হয় নি। আমি অনেকদিন ওর দিকে ভালমতো তাকিয়ে পর্যন্ত দেখি নি। অনেকদিন ওর নাম ও জানতাম না।

হঠাৎ করে একদিন তাকিয়েছিলাম। ইংরেজি ক্লাস ছিল। খুব সম্ভবত সকাল সাড়ে আটটায় ছিল। ক্লাস চলাকালীন সময়ে হঠাৎ দেখি শুকনো করে দেখতে একটা ছেলে দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে। যার চোখেমুখে আত্মবিশ্বাস ঝরে ঝরে পড়ছে, আর সেই সাথে চোখে-মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম।

গায়ে হাল্কা মেরুন কালারের শার্ট আর জিন্স। ছেলেটার সাথে আরেকটা মোটা করে ছেলে যার নাম পরে জেনেছিলাম আজমল। ওরা মোটামুটি আধা ঘণ্টা লেট করে ক্লাসে ঢুকল। কিন্তু ঢুকার মুখেই ভাইয়ার জেরার মুখে পড়ল । আর আমরা পুরো ক্লাস সব কিছু বন্ধ করে ভাইয়া এবং ওদের কথা শুনছিলাম।

ওইদিনই আমি প্রথম অর্ককে দেখি। মেরুন শার্ট পরা ছেলেটাই ছিল অর্ক। ওইদিনই আমি ওর দিকে প্রথম ভালভাবে তাকিয়েছিলাম। কিন্তু অতটুকুই। আরেকদিন বাংলা ক্লাসের ঘটনা।

যে ভাইয়া বাংলা ক্লাস নিতেন উনি অনেক চমৎকার পড়াতেন। পুরোদমে ক্লাস চলছে এমন সময় শুনলাম একটা ছেলে খুব অদ্ভুত একটা প্রশ্ন করেছে ভাইয়াকে। প্রশ্নটা কি ছিল মনে নেই। কিন্তু এতটুকু মনে আছে যে প্রশ্নটা আউট বুক টপিক ছিল। তবে এমন প্রশ্ন যে কেউ করতে পারে অথবা এই প্রশ্ন করার জন্য যে পরিমাণ নলেজ থাকা লাগে সেটা তখনও আমাদের ছিল না।

আমি এত অবাক হয়েছিলাম যে সাথে সাথে জ্ঞানী ছেলেটাকে খুঁজতে লাগলাম। বেশিদূর খুঁজতে হয় নি। বাম পাশে সামনের দিকেই বসে ছিল । তাকিয়ে দেখি অর্ক। কিন্তু তখনও জানতাম যে ওর নাম অর্ক।

খুব মন দিয়ে ভাইয়া আর অর্কের কথা শুনছিলাম। হঠাৎ কি একটা কারণে ভাইয়া ওর নাম ধরে সম্বোধন করেছিল। তখনই ওর নামটা মাথায় ঢুকে গেল। মনে মনে উচ্চারণ করলাম,” বাহ, অনেক সুন্দর নাম তো!!!” ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষার প্রায় এক মাস আগে ইউসিসিতে বড়সড় করে একটা পরীক্ষা হয়েছিল। সায়েন্স- আর্টস- কমার্স সব গ্রুপের এক সাথে এবং এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল ভালো ভালো ছেলেমেয়েদের নিয়ে স্পেশাল ব্যাচ গঠন করা।

কিন্তু যেদিন পরীক্ষা সেদিন সকাল থেকেই প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। কোনমতে ছাতা মাথায় দিয়ে ,বৃষ্টিতে ভিজে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছলাম। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। আমি আর আব্বু পাগলের মতো রুম নাম্বার খুঁজতে লাগলাম। খুব সম্ভবত প্রশ্ন দেয়ার দুই-তিন মিনিট আগে পরীক্ষা হলে পৌঁছলাম।

রুমে যে ভাইয়া ছিলেন তিনি আমাকে সিট দেখিয়ে দিলেন। আমি সিটের দিকে যাচ্ছিলাম কিন্তু কি মনে করে জানি বাম পাশে তাকালাম। তাকানো মাত্রই অর্ককে দেখলাম। দেখি অর্ক ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে ফেললাম।

ততক্ষণে সিটের কাছে চলে এসেছি। ওই পরীক্ষার পর অর্ক স্পেশাল ব্যাচে চান্স পেয়ে ওই ব্যাচে চলে যায়। আর আমি আগের ব্যাচেই রয়ে গেলাম। বাসার লোকজনের পীড়াপীড়িতে পড়াশুনায় মনোযোগ বাড়িয়ে দিলাম। কারণ এর মাত্র কয়েকদিন পরই আসল পরীক্ষা।

কিছু স্বপ্ন, কিছু শঙ্কা আর কিছু অনিশ্চয়তার হাতছানি!!! Click This Link (২য় পর্ব) Click This Link ( ৩য় পর্ব)  ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।