আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাভ ইস নাথিং জাস্ট মিসিং...

তবু তুই রয়েছিস বলে, ঘাসফুলে জল দোলে... কী তুমুল বর্ষণ! সব মেঘ যেনো মিছিলে নেমেছে; বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে তাই। শেষ হয়ে যাওয়ার কী চাহিদা তাদের! নি:শেষিত হওয়ার কী শখ তাদের! অবাক হয়ে যাই একেবারে... এমনই তো এক বর্ষণমুখর সময়ে তোমাকে পেয়েছিলাম। পেয়েছিলাম কি? নাকি- তুমিই এসেছিলে? তুমিই এসেছিলে; আর আমি প্রতীক্ষিত ধন পাওয়ার মতো করে লুফে নিয়েছিলাম তোমায়। সবটুকু ভালোবাসা নিংড়ে দিয়ে তোমাকে বুকের পাঁজরে টেনে নিয়েছিলাম। জীবনটাকে আখ বানিয়ে তোমাকে দিয়েছিলাম আমার সবটুকু রস! আমার টেস্ট তুমি নিয়েছিলে প্রাণভরে।

লালচে চোখের কোটর তোমার গভীর আবেগে বন্ধ হয়ে এসেছিলো। অদ্ভুদ-ভয়ংকর সৌন্দর্যে কাঁপছিলো তোমার অধর। তা দেখেই আমার প্রথম কামনার অনুভূতি- আহ, মানুষের ঠোট এতো সুন্দর করে কাঁপতে পারে! কী তুমুল বর্ষণ আজও। অথচ তুমি হাজার আলোকবর্ষ দূরে! তুমি নেই। নি:শ্বাস তাই গাঢ় খুব।

ভিতরে যেতে চায়না। আবার বের হয়ে আসতেও চরম অনীহা। নি:শ্বাসে যেনো মিশে থাকে- ক্যাকটাসের সবুজ কাঁটা! চোখ বন্ধ করে একবার চিন্তা করো তো! তুমি নি:শ্বাস নেয়ার জন্য বুক খালি করেছো। তারপর প্রাণভরে নি:শ্বাস নিবে বলে বাতাসকে টানছো; আর বাতাসের সাথে তোমার নাকে আসছে কাঁটা..! ক্যাকটাসের সবুজ কাটা! তোমাকে ছাড়া এই বর্ষণমুখর বৃষ্টিবেলায় আমার নি:শ্বাসেও অমন কাঁটা... সন্ধ্যা সবই আধার কালো ঢাকার সন্ধ্যার মানে তুমি খুবই ভালো জানো- বিদ্যুৎহীন ঘন আধার। যেই আধারে- লোড শেডিঙের সন্ধ্যায় তুমি আমি নিয়মিত মিলতাম।

আমাদের উষ্ণ কথোপকথনে কিছুটা হলেও আলোকিত হতো সন্ধ্যারা। কিন্তু এখন... এখনও হয়তো সন্ধ্যায় চটপটি খাবে বলে তুমি দেরি করে বাইরে থেকে আসো। কিংবা তোমার হয়তো হঠাৎ করেই জিন্স ফতুয়া পড়তে মন চায়; চাচাতো ভাইয়ের সাথে দেখা করবে বলে। আমি আর এই জন্য বকিনা তোমাকে। কোনো বাধনেই তোমাকে আর কাছে টানিনা।

কিংবা টানতে পারিনা আসলে। তোমাকে এখন আর “কনসার্ভেটিভ ভালোবাসা”র জালে বন্দি থাকতে হয়না। এতো না’র ভিড়ে সন্ধ্যাগুলো রঙ হারায় প্রতিদিনই। আধারে ভরা সন্ধ্যারা আরো বেশি করে গাঢ় হয়... তুমি দূরে চলে গেছো ঠিকই; কিন্তু সন্ধ্যার অন্ধকারে তুমি যে মায়া মাখিয়ে গেছো, তা নিয়ে যাওনি। ফলে অভিভাবকহীন সন্ধ্যারা আমার কাছেই আশ্রয় খুজে।

সন্ধ্যারা হয়তো ভুল করেও ভাবতে পারেনা- আধার আর ভালো লাগেনা আমার... আলোতেই অলিক সুখ খুজি আমি। তবু এই ভালো না লাগা সন্ধ্যাতেও আমি আনমনে তোমাকেই খুজে পাই। আলো আধারীর এই মায়াবী সন্ধ্যায় যেনো তুমি চুপটি করে মিশে আছো। যেনো যে কোনো সময় কানের একেবারে কাছে মুখটা এনে ভোসসসস করে ফুঁ দিয়ে চমকে দিবে আমাকে! আমি লাফ দিয়ে উঠে তোমাকেই জড়িয়ে ধরবো। তখন তোমার মুখে বিজয়ীর হাসি।

আর মুখে ফিসফিস- “বলেছি না- শোয়ার আগেই তোমাকে আরো একবার বুকে টেনে নিবো!” আমি পরাজিতের মতো করে মুখটা কালো করে নেই, আর তুমি উল্লসিত! আমি তোমার উল্লাসে দারুণ আনন্দ পাই! মায়া বিষয়টা বড়ই অদ্ভুদ! কোথায় কে কতো দূরে, অথচ তার ছোঁয়ায় লোম সব দাঁড়িয়ে যায়..! সন্ধ্যার আধারেই তাই আমি সব হারিয়ে ফেলি। নিজের হাতটাও দেখি আবছা আবছা, ঠিক যেমন করে তুমি এখন মনের আয়নায় আসো... তুমি আমার সারাদিন মান শুধু বর্ষণমুখর অনাকাঙ্খিত বৃষ্টিবেলা কিংবা লোডশেডিঙের একটা সন্ধ্যা- এতেই কি শুধু মিস করি তোমাকে! নাহ... তুমি তো আমার সর্বাঙ্গে লেপটে থাকো সারাটাদিনই। খুব যখন ছোট আমি; মা আমার কপালের এক কোণে কাজলের কালো টিপ দিয়ে দিতো। আমি সারাটা দিন খুব যত্ন করে রাখতাম সেই টিপ। যত্ন করতে গিয়ে বারবার টিপটাকে হাত দিয়ে মুছে মুছে দিতাম।

বুঝতেই পারতাম না; টিপটা তাতে নষ্ট হয়ে শেষই হয়ে যাচ্ছে... ঠিক তেমনই হয়েছে। তুমি থাকো বুকের ভিতর। আমি বারবার তোমাকে দেখতে গিয়ে তোমাকে ছড়িয়ে নিয়েছি- হাতে, মুখে, ঠোটে... সর্বাঙ্গে! আমার মাঝে তোমার কোনো শরীরী অস্তিত্ব নেই, তবুও আমি তোমার একটা ওজন ফিল করি... সকাল থেকে শুরু করে সারাটাদিন। সারাটারাত। এভাবে আরো একটা নতুন সকালে-দুপুরে... চলতেই থাকে এভাবে।

যখন খেতে বসি- একেবার মেন্টাল সিক’র মতো করেই আমি নলা বাড়িয়ে দেই শূন্যে! দেখি- তুমি হা করে চোখের তাকিয়ে বলছো- “শায়ের!” তোমার গলা অস্বাভাবিক। যেনো নলাটা না দিলে চিমটি দিয়ে ঠিকই রক্ত পরীক্ষা করে ছাড়বে! আচ্ছা, তুমি তো কতোবারই চিমটি দেবার ভয় দেখাতে; কিন্তু একটাবারও কেনো দাওনি? তোমার পাশে দাঁড়ানোর অযোগ্য ছিলাম বলে কি তোমার চিমটি খাওয়ার যোগ্যতাও আমার ছিলোনা!? আসলে অদ্ভুদ সব যুক্তি তোমার কথায়! এখন হয়তো বলবে- আমি নখ ছোট করে রাখতে বলতাম বলেই তুমি আমাকে তোমার চিমটি থেকে বঞ্চিত করেছো...! কী জানি, হয়তোবা এরচেয়েও আরো ভালো কোনো যুক্তি তোমার আছে! যা এখন আর আমি আঁচই করতে পারিনা... তোমাকে এই যে এতো মিস করা; এতেই কি তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা নয়?! আমার কাছে আসার জন্য তোমার নি:শ্বাস যেমন বন্ধ হয়ে যেতো, ঠিক তেমনি বহুদিন আমার সাথে থাকার পরও তোমার নি:শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিলো! ভালোবাসা তাই নিজের মতো করেই একটা ব্রেক এনে দিলো তোমাকে। তুমি চলে গেলে ঠিক; কিন্তু ভালোবাসা ঠিকই জড়িয়ে থাকলো তোমাকে এবং আমাকেও... ভালোবাসা হয়তো একই সাথে তোমাকে আমাকে সুযোগ করে দিলো ভালোবাসাকে চিনে নেওয়ার! আফটার অল; এখন মনে হয়- এই ই আসলে ভালোবাসা। মিলনে কেবল ভালোলাগা। সুতরাং- জোর গলায় বলা যেতেই পারে; লাভ ইস নাথিং জাস্ট মিসিং... কী বললাম, কী-ই বা বুঝলে তুমি! দেরি করো; তোমাকে একটা দারুণ চিঠি লেখবো এই “তথাকথিত” মিসিং নিয়ে... ভালো থাকো।

টাটা বাইবাই...  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।