আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কবি নজরুল রক্ত দিতে চাইলেন, কিন্তু তার রক্ত নেয়া হলো না। কেন?

তরুণ নামের জয়মুকুট শুধু তাহার, বিপুল যাহার আশা, অটল যাহার সাধনা প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে লিখছি বেশ কয়েকটি পর্বে। তার কাব্য সাহিত্য আলোচনার বাইরে গিয়ে আমি চেষ্টা করেছি তার ব্যক্তিত্ব ও মন মানসিকতা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে। কাজী নজরুলের প্রিয় বন্ধুদের একজন ছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন। তাকে লেখা অনেক চিঠি আজো সংরক্ষিত রয়েছে। সেসব চিঠিতে কবি বারবার তার প্রিয়তমার মতো সম্বোধন করে কারো কথা লিখেছেন।

কখনো ..... দিয়ে দিয়ে তাকে বুঝিয়েছেন। কবির যৌবনের কে সেই তার প্রিয়তমা? আমি এখনও তা উদ্ধার করতে পারি নি। তবে একটি দুর্লভ চিঠি আমার কাছে এসেছে। কবি প্রথম যাকে বিয়ে করেছিলেন সেই নার্গিসকে লেখা কবির একটি চিঠি, যা তিনি বিচ্ছেদের পনের ষোলো বছর পর লিখেছিলেন। কাজী মোতারহার ও অন্যান্য বন্ধুবান্ধবদেরকে লেখা সেসব চিঠি কবিকে জানার এক বিরাট উৎস।

কবি তার এসব চিঠিতে নিজের সুখ দুঃখ অবলীলায় লিখেছেন। তার দুরন্ত ও চঞ্চল মনের অপূর্ব পরিচয় পাওয়া যায় এসব পত্র পড়ে। ১০-০৩-২৮ তারিখে রাত ২ টায় লেখা কাজী মোতাহার এর কাছে চিঠিতে কবি তাকে জানাচ্ছেন, তিনি একজন হিন্দু ব্রাক্ষণের জন্য রক্ত দিবেন। সেজন্য ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন। দৈনিক বসুমতী পত্রিকায় ঐ ব্রাক্ষণ তার জন্য রক্ত চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছে।

এ কথা লিখে কবি তাকে অনুরোধ জানাচ্ছেন, একটি আমার- তোমার বন্ধুর অনুরোধ, এ কথা কাউকে জানিয়ো না যেন। কাউকে মানে- তাঁকেও জানিয়ো না। ’ এই ‘তাকে’ কে? তার সবচিঠিতে এই অজানা প্রিয়তমার কথায় ভরা। চিঠির ভাবে মনে হয়, কবি তার কাছ থেকে বিচ্ছেদ পেয়েছেন, তবে এখনও তাকে ভুলতে পারছেন না। পরের চিঠিতে কবি কাজী মোতাহারকে জানাচ্ছেন, তার রক্ত নেয়া হয়নি।

কবির ভাষায়, ‘রক্তদান করিনি। ডাক্তার শালা বলে, হার্ট দুর্বল। শালার মাথা। মনে হচ্ছিল, একটি ঘুষি দিয়ে দেখিয়ে দিই কেমন হার্ট দুর্বল। ভিতরের কথা তা নয়।

ব্রাক্ষণ ভদ্রলোক ‘মুসলমানে’র রক্ত নিতে রাজী হলেন না। হায়রে মানুষ, হায়রে তার ধর্ম। কিন্তু কোনো হিন্দু যুবক আজো রক্ত দিলেনা। লোকটা মরছে, তবুও নেবে না ‘নেড়ে’র রক্ত। ’’ এমন অজানা অসংখ্য কান্ডকীর্তি বিবৃত রয়েছে কবির এসব চিঠিতে।

নজরুলপ্রেমীদের জন্য তা তুলে ধরব আমার এ ধারাবাহিকে। অল্প অল্প করে লিখি, যাতে তা পড়তে গিয়ে কারো অস্থিরতা চলে না আসে। আমাদের জাতীয় কবি, প্রাণের কবি নজরুল। তার লেখা পড়–ন মনের আনন্দে। আমাদের কবি আমাদের গর্ব।

আগের পর্বগুলো-পাগলকে দিয়ে গান গাইয়ে কবি নজরুল বললেন, হুজুগে বাংলায় এসব একবারই চলে......... যে ঘটনা কবি নজরুলকে বদলে দিল, কবি কাঁদলেন, এরপর থেকে বিষণ্ণ হয়ে গেলেন.. আরও পর্ব- Click This Link Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।